Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

পিপিআর এর সর্বশেষ সংশোধনী: একটি সাম্প্রতিক ভাবনা

Facebook
Twitter
LinkedIn

পিপিআর এর সর্বশেষ সংশোধনী
একটি সাম্প্রতিক ভাবনা !

২০১০ সালে ডিজিটাল ইনোভেটিভ মেলাতে আমি একিট ষ্টলে বসেছিলাম। তখন এলজিইডির বিভিন্ন সফটওয়্যার এর ব্যবহারের উপর আলোকপাত করছিলাম। বিশেষ করে জিআইএসের উপর ভিত্তি করে কিভাবে আমাদের রোড নেটওয়ার্ক তৈরি এবং এর ব্যবহার কে কেন্দ্র করে মেলাতে পাওয়ার পয়েন্টে প্রদর্শনী চালাচ্ছিলাম। তখন ঐ মেলাতে আমাকে একজন উচ্চপদস্থ কর্তাব্যক্তি জিজ্ঞেস করেছিলেন আপনারা কি অনলাইনে টেন্ডার করেন? আমরা জানি, যেকোন টেন্ডার এর স্বতস্ফুর্ত অংশগ্রহণের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য দুটি বহুল প্রচারিত দৈনিক, এলজিইডির ওয়েবসাইট এবং এক কোটি টাকার উপরে দরপত্র হলে সিপিটিইউতে প্রকাশ করতে হয়। যেহেতু আমার ইন্টারেনেটের ব্যবহার ছাড়া আমাদের দরপত্র প্রক্রয়া অসম্পূর্ণ তাই আমি তাকে হ্যাঁ বোধক উত্তর দিয়ে দিলাম। উত্তর পেয়ে তিনি আমাকে সম্পূরক প্রশ্নের মুখোমুখি করলেন,”আপনারা কি অনলাইনে টেন্ডার বিক্রি করতে পারেন?” তখন আমি কল্পনাতে অনলাইনে কিভাবে টেন্ডার বিক্রি করা যায় তা ভেবে পূণরায় হ্যাঁ বোধক উত্তর দিলাম এবং অতিরিক্ত সাপোর্ট হিসেবে যোগ করলাম যে আমরা সকল টেন্ডার অনলানের সহায়তায় বিক্রি করি। তিনি আরেকটু আগ্রহী হয়ে উঠলেন, তখন আমি ভাবলাম তিনি হয়তো বিদেশে কোথাও অনলাইনের টেন্ডারের অভিজ্ঞতা নিয়ে এসে এখানে বুলি আওরাচ্ছেন, এবং বুঝতে পারলাম আমার কল্পিত অনলাইন সেই অনলাইন না। তিনি বুঝাচ্ছিলেন সবিকছুই অনলাইনে হবে, কারো হাতের ছোঁয়া লাগবে না। ভাবতে থাকলাম এ-ও কি সম্ভব?

পরবর্তীতে ২০১২ সালের মে মাসের দিকে ই-জিপির উপরে একটা পাচঁদিনের অরিয়েন্টেশন কোর্স করে মনে হলো, এতদিনে আসল অনলাইন শুরু হলো। কত সুন্দর একটা সিস্টেম! এরকমটি আরো আগে চালু হলে সংবাদপত্রে টেন্ডারবাজির কারণে আহত নিহত হওয়ার খবর অনেকাংশেই কমে যেত। ২০০২ সালে বুয়েটে সাবেকুন্নাহার সনির প্রাণটাও অন্ততঃ বেঁচে যেত। একইসাথে আমরা যারা এই অনাকাংখিত টেন্ডারবাজির মধ্যে তথৈবচ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছি তারা অনেকটা হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম। কিভাবে বাঁচলাম এর একটা উদাহরণ না দিলে বোঝাটা একটু মুশিকলই। একজন ক্রয়কারী এবং মূল্যায়ন কমিটির চেয়্যারমান হিসেবে একটি টেন্ডার মূল্যায়ন করছিলাম। এক প্রভাবশালী পক্ষ থেকে চাপ প্রয়োগ হলো তৃতীয় দরদাতাকে কাজ পাইয়ে দিতে হবে। এতে সরকারের দশ লক্ষ টাকা ক্ষতি হবে দেখে আমি কিছুতেই রাজি হইনি। কিন্তু তারা একইসাথে তদবিরবাজ, নাছোড়বান্দা, বলপ্রয়োগকারী এবং সীমালংগনকারী-ও বটে। তারা বিভিন্ন অযুহাতে এবং কায়দাকানুন অবলম্বনে আমাকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন। আমাকে পিপিআর মেনেই আমার কাছ থেকে তারা কাজ চাচ্ছিলেন এবং পরামর্শ হিসেবে নতুন করে ওপেনিং মেমো তৈরি করার জন্য চাপ দিলেন। আমি তাদেরকে বোঝাতে চেষ্টা করলাম যে এটা কিছুতেই চেঞ্জ করা সম্ভব নয়, কারণ ইহা ইতিমধ্যেই HOPE (ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধান) বরাবর ফ্যাক্স মারফত প্রেরণ করা হয়ে গেছে। দড়িটানাটানির এক পর্যায়ে আমাকে তারা রাস্তাঘাট পর্যন্ত ফলো করা শুরু করেছিলো। এমন অবস্থায় নিজের নিরাপত্তা নিয়েও অনেকটা শঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম। তারপরও এমন প্রতিকূল পরিবেশে তাদের প্রস্তাব অগ্রাহ্য করতে আমাকে অনেক সূক্ষ-বুদ্ধিসহ বিভন্ন সাহসী পদক্ষেপ নিতে হয়েছিলো। এরকম অযাচিত হস্তক্ষেপ থেকে মুক্তি পেতে যেমন পরিশ্রম করতে হয়েছে তেমনি প্রচুর সময়ও ব্যায় করতে হয়েছে। এর ফলে দরপত্র মূল্যায়নের বাইরে অন্যান্য কাজকর্মের স্বাভাবিক অবস্থা মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হয়েছিলো।

বর্তমানে ই-জিপির সৌজন্যে ঠিকাদাররা যেমন ঘরে বসেই দরপত্র দাখিল করতে পারছেন আবার ঘরে বসেই ওপেনিং মেমোসহ এর রেজাল্ট দেখতে পারছেন। তার মনের ভিতরে যাই থাকুক সে এখন আর অযাচিত হস্তক্ষেপ করে দরপত্রের তথ্য পরিবর্তন করার জন্য কোন চাপ দেন না। LTM (সীমিত দরপত্র পদ্ধতি) সিস্টেমে প্রথম প্রথম লটারী প্রক্রিয়ার বিষয়ে তাদের যথেষ্ঠ সন্দেহ থাকাতে তারা অনেক সময় অভিযোগ করতো এবং দাবী করতো এটা অস্বচ্ছ প্রক্রিয়া। সময়ের ব্যবধানে এই মানসিকতাও পাল্টে গেছে। এখন আর দরপত্র বিক্রি, ওপেনিং,মূল্যায়ন বা লটারীর বিষয়ে কারো কোন অভিযোগ নাই, একইসাথে দরপত্র বাক্স দখল করা নিয়ে শত শত মটরসাইকেলের মহড়া নিয়ে ক্রয়কারীর কার্যালয়ের অফিস ঘেরাওয়ের মত কোন গ্যাদারিং নাই, তাই পুলিশ মোতায়েনের প্রয়োজনও নাই। অনেকটা সেলফ সার্ভিসে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও আপাত বিতর্কের উর্দ্ধেই চলছে সকল প্রক্রিয়া।

এই প্রক্রিয়াকে সফল করার জন্য এখানে অনেকের প্রচুর সময়, শ্রম, মেধা, আলোচনা, সমালোচনা জড়িত। একটি সাধারণ দরপত্র মূল্যায়ন করার জন্য চৌদ্দ দিন সময় থাকে। এই কাজটি একটি কমিটি সম্পাদন করে থাকে, অনলাইনে হওয়াতে কাজটি কমিটি যেকোন সুবিধামতো সময়ে যেকোন স্থানে বসেই করতে পারে, যদি না মুখোমুখি আলোচনা বা কাগজ-কলমে স্বাক্ষরের প্রয়োজন পড়ে। এখানে একটি বিষয় উল্লেখ না করলেই নয় যে, দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির মূল্যায়নের বাইরেও দৈনিন্দন যে কাজ কর্ম থাকে তা একটি দরপত্র মূল্যায়নের চেয়ে কোন অংশেই কম নয়। তারপরও কখনো কখনো ডজন ডজন দরপত্র মূল্যায়নের চাপে কমিটির সদস্যদের অন্য কোন কাজের প্রতি নজর দেয়া খুবই দূরুহ ব্যাপার হয়ে দাড়ায়। শুধু তাই নয়, উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের ডেডলাইনের চাপে চোখে শর্ষে ফুলও দেখা যায়। চোখের ব্যাপারটা বলা সহজ, কারণ মাঝে মাঝেই চোখে একটাকে দুইটা মনে হয়। এমতাবস্থায়, পিপিআর ২০০৮ এর চতুর্থ সংশোধনী এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

এই সংশোধনীতে ওপেন টেন্ডার সিস্টেমে (OTM) ১০%এর একটি সীমাদ্ধতা সংযোজন করা হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে ১০% এর বেশী বা কম দর দাখিল করলে সে টেন্ডার বিবেচনায় আসবে না। যেহেতু OTM এ লটারী করার সুযোগ নাই, তাই একাধিক প্রতিষ্ঠান ঠিক একই দর দাখিল করে সর্বনিম্ন দরদাতা হলে বিজয়ী নির্বাচন করা কঠিন বিষয়ে পরিণত হবে। এই সমস্যা সমাধানকল্পে চতুর্থ সংশোধনী সংযোজন করে ইতিমধ্যেই একটি গেজেট প্রকাশিত করা হয়েছে। এখানে অতিরিক্ত আটটি ফর্মূলা সংযোজন করা হয়েছে। এই ফর্মুলাগুলো মূলতঃ একটি প্রতিষ্ঠানের বিগত পাঁচ বছরের কর্মকান্ডের মাপকাঠির একেকটি সূচক নির্দেশ করে। আর্থিক মূল্যায়নে যদি সর্বনিম্ন দরদাতার সংখ্যা একাধিক হয় তবে এই পয়েন্টের সূঁচকে যে সর্বোচ্চ স্কোর করবেন সে-ই বিজয়ী হবেন। আটটি বিষয়ে সর্বোচ্চ এক হাজার পয়েন্ট পাওয়া যাবে আর সর্বনিম্ন শূন্য। এখানে উল্লেখ্য যে, যদিও বলা আছে যে দাপ্তরিক প্রাক্কলন গোপন থাকবে কিন্তু এটা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে গোপন রাখা সম্ভব হবে কিনা তা না হয় আজ গোপন-ই থাকল। তাহলে না চাইলেও যা হতে পারে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে-ই সর্বনিম্ন দরদাতা একাধিক (দুই বা তিন হতে পারে, দশের অধিক-ও হতে পারে) পাওয়া যাবে বলে আশংকা করা যায়।

প্রথমতঃ পয়েন্টের সূচকে বলা হয়েছে যে, যদি কোন দরদাতা পাঁচ বা ততোধিক মামলা করে থাকে বা একই সংখ্যক মামলায় হেরে থাকে তবে এই মামলা করার জন্য বা হারার (শাস্তি স্বরূপ) জন্য সে শূন্য পয়েন্ট অর্জন করবেন। মামলার সংখ্যা কম হলে বেশি পয়েন্ট আর বেশি হলে কম পয়েন্ট। আবার যিনি কোন মামলাই করেননি বা পাঁচের অধিক মামলায় জয়লাভ করেছেন তিনি (রিওয়ার্ড স্বরূপ) পাবেন একশ পয়েন্ট। আমাদের দেশে কিছু মামলাবাজ মানুষ আছে, যারা পাছে মামলা করার প্রয়োজনে থানায় আসার শক্তিসামর্থ্য শেষ হয়ে যায় এই ভেবে, থানার সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় মামুর বিরুদ্ধেও মামলা দিতে কুন্ঠাবোধ করে না। এ পয়েন্ট সিস্টেম প্রচলন হলে এমন ব্যাক্তিরা নিরুৎসাহিত হবে। অপরদিকে, আমাদের সংবিধানের মৌলিক অধিকার এ বলা আছে প্রতিটি নাগরিক আইনের আশ্রয় লাভের ক্ষেত্রে সমান সুযোগ লাভের অধিকারী হবেন, এবং মৌলিক অধিকারের সাথে সংঘর্ষিক সকল আইন null and void হয়ে যাবে। তাই প্রকিউরিং এন্টিটির বিরুদ্ধে এরূপ মামলা করার ফলে বা মামলায় হারার ফলে বা চলমান থাকলেও একজন সংক্ষুদ্ধ ব্যাক্তি বৈষম্য মূলক আচরণের শিকার হতে পারে। এছাড়া মামলা ক্রয়কারীর কারনে-ও হতে পারে। PPR-08 এর বিধি ৫৬ বা ৫৭ বা চুক্তি দলিলের বিষয়গুলো না জানার কারনেও অনেক মামলার উদ্ভব হয়ে থাকে। এর ফলে ঠিকাদাররা মামলা করতে অনুৎসাহিত হবে ও সরকারী দপ্তরগুলোর অবস্থান শক্তিশালী করবে যা তাদের ন্যায়বিচার লাভের ক্ষেত্রে অদৃশ্য বাধা হয়ে থাকবে।

দ্বিতীয়তঃ poor performance জন্য কাজ বাতিল হয়ে থাকলে একজন কম পয়েন্ট লাভ করবেন। একইভাবে ক্রয়কারী কর্তৃক debar ঘোষিত হয়ে থাকলেও বিবেচ্য দরপত্রের মূল্যায়নে নিম্ন স্কোরের অধিকারী হবেন। এই পয়েন্ট দুটি খুবই কার্যকরী ভূমিকা রাখবে মাঠ পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের সততা, সময়ানুবর্তিতা এবং তড়িৎকর্মা হিসেবে চুক্তি সম্পাদন করার জন্য। সাধারণ খোলা দরপত্র পদ্ধতিতে এরকম ভাল ঠিকাদারের কাজের মূল্যায়ন হতো না। এই পয়েন্টের কারণে প্রফেশনালিজমের কম্পিটিশন এবং এন্টারপ্রেনারশিপ ডেপেলপ করবে। কিন্তু সমস্যা অন্য জায়গায়। ক্রয়কারী যে completion certificate ইস্যূ করে থাকে সেখানে কি কারনে বাতিল হয়েছিল তা কি উল্লেখ করা থাকে ?

তৃতীয়তঃ, চতুর্থ, পঞ্চমতঃ বিষয়ে যথাক্রমে ক্রয়কারী কর্তৃক চুক্তির বিপরীতে সময় বৃদ্ধির পরিমাণ, জরিমানা আরোপের পরিমাণ ও ডিফেক্ট liability পিরিয়ড বৃদ্ধির পরিমাণের সাথে তার পয়েন্টের স্কেল বিপরীতক্রমে উঠানামা করবে। অর্থাৎ যেকোন একটির পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে পয়েন্ট কমতে থাকবে, আবার অপরিবর্তিত থাকলে সবোর্চ্চ পয়েন্ট অর্জন করবেন। এক্ষেত্রে সম্পর্কিত চুক্তির সংখ্যার কোন উল্লেখ নাই। একটি প্রতিষ্ঠান বিগত পাচঁ বছরে দশটি কাজ করে একটির ক্ষেত্রে এরূপ সমস্যার সম্মুখীন হলে যা অন্যদিকে দশটি কাজের মধ্যে সবগুলোতেই অদক্ষতার প্রমাণ থাকলেও এক কাতারে বিবেচিত হবে। অর্থাৎ যে ছাত্র একদিন কোন কারণে দেরিতে স্কুলে আসে সে প্রতিদিন বিলম্ব করা ছাত্রের সমান পানিশমেন্ট পাবে! এখানে বাস্তবায়নকৃত চুক্তির সংখ্যার সাথে পয়েন্টকে সমন্বয় না করার দরুণ একটি তেল আর পানি মিলে মিশে একাকার হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে পিপিআর ২০০৮ এর মতো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডে ফেয়ার প্লে থেকে প্রফেশনাল ব্যবসায়ীরা বৈষম্যের শিকার হবে। চুক্তির বিপরীতে সময় বৃদ্ধির পরিমাণ, ডিফেক্ট liability পিরিয়ড বৃদ্ধির পরিমান অনেক সময় ক্রয়কারীর কারনেও হয়ে থাকে। কাজেই এরূপ ক্ষেত্রে ঠিকাদারকেই ভূক্তভোগি হতে হবে বলে মনে হচ্ছে। এছাড়া, আগের প্রশ্ন আবার করা যায়, ক্রয়কারী যে completion certificate ইস্যূ করে থাকে সেখানে কি কারনে বা কার কারনে এগুলা হয়েছিল তা কি উল্লেখ করা থাকে ?

পিপিআর-২০০৮ এর য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডে মূল্যায়ন সময়মতো করতে গিয়ে মূল্যায়ন কমিটির দৈনন্দিন কাজ যেখানে বিঘ্নিত হচ্ছে, সেখানে এই ১০০০ পয়েন্টে এর ক্যালকুলেশনের কাজটি হয়ে যাবে ইতিহাসের খোড়াখুরির মতোই জটিল এবং সময়সাপেক্ষ, আর এ্যওয়ার্ড প্রদান প্রক্রিয়াটা হবে সৎপাত্রে কন্যাদানের মতোই দূরূহ কাজ। কেননা এই সৎপাত্রের পয়েন্ট সংগ্রহ করা আর তুলনা করা নিয়ে তৈরি হবে নতুন বিরম্বনার। যদি এমন হয় যে, একটি টেন্ডারে ১০ জন অংশগ্রহন করেছেন, ২জন পয়েন্ট সম্পর্কিত সকল তথ্য সন্নিবেশন করেছেন বাকী আটজন করেননি। যেহেতু ই-জিপি সিস্টেমে অর্থনতিকভাবে সমতা অর্জন করলেই শুধুমাতো পয়েন্টের গননা শুরু হবে আবার আমরা এও জানি যে, কারিগরি মূল্যায়ন অতিক্রম করে কারো কাছ থেকে অতিরিক্ত তথ্য সংযোজন করা যায় না। তাই এমন পরিস্থিতিতে কারিগরি ও আর্থিক মূল্যায়নে গ্রহণযোগ্য আটজনের দরপত্র বাতিল হয়ে যাবে শুধুমাত্র দর সমতার ক্ষেত্রে যোগ্যতা প্রমানের জন্য অতিরিক্ত দলিলাদি সঠিকভাবে দাখিল না করার কারনে। আমাদের দেশের বেশিরভাগ দরপত্রদাতাই ব্যক্তি প্রতিষ্টান। অনেকেই নিজের দরপত্র নিজে সঠিকভাবে পূরণ করতে পারে না। অনেকের-ই আইন বিধি অনুযায়ি প্রশিক্ষণ নাই। এখন এই দূরূহ বিষয়গুলো বোধগোম্য হবার আগে পর্যন্ত এই নতুন ক্রয়বিধি কোন ভাবেই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ট তৈরী করবে না তা বোঝাই যায়। এছাড়া, যদি পূর্বেকার আশংকা মোতাবেক, যদি একাধিক (দুই বা তিন হতে পারে, দশের অধিক-ও হতে পারে) দরের সমতার ক্ষেত্রে এবং বিশেষ করে যুগপৎভাবে ডজন ডজন দরপত্র মূল্যায়নের ক্ষেত্রে ,কতটুকু অতিরিক্ত সময়ের প্রয়োজন হবে, তা নিয়ে একটি গবেষণার প্রয়োজন হবে। এমন পরিস্থিতে এই নতুন সংশোধনীর ফলে সামনের দিনগুলি কেমন যাবে তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট সকলের মধ্যেই সংশয়ের দেখা দিয়েছে।

পরিশেষঃ পিপিআর এর রুলসকে ভিত্তি করে সরকারের সিংহভাগ উন্নয়ন ,অনুন্নয়ন বাজেট বাস্তবায়নে সরকারী-বেসরকারী পর্যায়ে হাজার হাজার চুক্তি সম্পাদন হয় এবং লক্ষাধিক মানুষ এই কর্মকান্ডের সাথে ওতোপ্রত সম্পৃক্ত। সরকারের এরূপ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রভাব ছড়িয়ে পড়ে দেশের আনাচে কানাচে, প্রবৃদ্ধির চাকা সচল হয় আর জিডিপি উদ্ধমুখী হয়। আমাদের বাংলাদেশের মতো ওয়েলফেয়ার ওরিয়েন্টেড দেশে পিপিআর অনেকের জীবিকার উৎস। তাই আমরা আশা করি এর আইনগুলি ও সংশ্লিষ্ট সংশোধনীসমূহ উপকারভোগীসহ এর ব্যবহারকারীর পথকে করবে সহজ, সরল, বোধগম্য ও সকল বৈষম্যের উর্দ্ধে।

ফুলকাম বাদশা

তারিখঃ ২৪ ডিসেম্বর ২০১৬

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই লেখকের অন্যান্য লেখা

new year, christmas, decoration-1911483.jpg
ঠিকাদারী ফোরাম

ই-জিপিতে অনলাইনে যে সব পেমেন্ট দেয়া যায়

দরপত্রদাতা বা ঠিকাদারগন ঘরে বসেই অনলাইনে ই-জিপি সিস্টেমে তাদের ই-জিপি একাউন্ট রেজিষ্ট্রেশন (Registration), রেজিষ্ট্রেশন নবায়ন (Renewal), দরপত্র দলিল ক্রয়, ইত্যাদি

Read More »
Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors
গ্রাহক হোন

শুধুমাত্র Registered ব্যবহারকারিগন-ই সব ফিচার দেখতে ও পড়তে পারবেন। এক বছরের জন্য Registration করা যাবে। Registration করতে এখানে ক্লিক করুন

ফ্রী রেজিস্ট্রেশন

“প্রকিউরমেন্ট বিডি news”, “সমসাময়িক”, “সূ-চর্চা”, “প্রশিক্ষণ” অথবা “ঠিকাদারী ফোরাম” ইত্যাদি বিষয়ে কমপক্ষে ২টি নিজস্ব Post প্রেরণ করে এক বছরের জন্য Free রেজিষ্ট্রেশন করুণ। Post পাঠানোর জন্য “যোগাযোগ” পাতা ব্যবহার করুণ।

Scroll to Top