বীমা (Insurance) কি ?
বীমা হল অর্থের বিনিময়ে জীবন, সম্পদ বা মালামালের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতির ন্যায়সঙ্গত ও নির্দিষ্ট ঝুঁকির স্থানান্তর। এর মাধ্যমে ব্যক্তি বা বীমা প্রতিষ্ঠান অর্থের (প্রিমিয়ামের) বিনিময়ে মক্কেলের আংশিক বা সমস্ত সম্ভাব্য ঝুঁকি গ্রহণ করে থাকে। এটি অনিশ্চিত ক্ষয়ক্ষতি এড়ানোর জন্য ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার একটি অংশ।
বীমা একটি চুক্তি। এটা দুই পক্ষের মধ্যে একটি আইন সম্মত চুক্তি। এক পক্ষ অন্য পক্ষকে ক্ষতিপূরণ দিবে বলে নিশ্চয়তা দিয়ে চুক্তিতে আবদ্ধ হয়। অন্যপক্ষ ক্ষতিপূরণ পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট হারে প্রিমিয়াম প্রদানের নিশ্চয়তা দিয়ে চুক্তিতে আবদ্ধ হয়। প্রথম পক্ষ বীমাকারী এবং দ্বিতীয় পক্ষ বীমাগ্রহীতার মধ্যে যথাক্রমে ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং প্রিমিয়াম প্রদানের নিশ্চয়তা সম্বলিত একটি চুক্তি। জীবন বীমার ক্ষেত্রে ক্ষতি পূরণ হয় না, মানুষের জীবনের কোন মূল্য পরিমাণ করা যায় না। তাই জীবন বীমার ক্ষেত্রে আর্থিক নিরাপত্তা প্রদান করা হয়ে থাকে।
যেকোন দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বীমা শিল্প অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বীমা জনসাধারণের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সঞ্চয় (প্রিমিয়াম) সংগ্রহ করে মূলধন গঠনে সাহায্যে করে। মানুষের জীবন, ঋণ ও সম্পত্তির ক্ষতিপূরণের নিশ্চয়তা দিয়ে থাকে। এরূপ নিশ্চয়তা পাওয়ার ফলে লোকজন তাদের কার্যক্ষেত্রে নিরাপত্তা অনুভব করে এবং কার্যে মনোনিবেশ করতে পারে। ফলশ্রুতিতে, ব্যক্তিক উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। এভাবে ব্যক্তিক উৎপাদন বৃদ্ধি পেলে জাতীয় উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। উৎপাদন বৃদ্ধি পেলে জনসাধারণের জীবন যাত্রার মান উন্নত হয় এবং সামগ্রিকভাবে দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ঘটে। উদাহরণঃ জীবন বীমা চুক্তি,অগ্নি বীমা চুক্তি।
আরও পড়ুনঃ ক্রয় চুক্তিতে বীমার প্রয়োজনীয়তা কি ?
বীমা কোম্পানিগুলোকে প্রিমিয়াম প্রদানের মাধ্যমে বীমাকৃত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সব ধরনের সম্ভাব্য ক্ষতির হাত থেকে মুক্ত থাকে এবং অসংখ্য বীমাকৃত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে প্রিমিয়াম সংগ্রহ করে বীমা কোম্পানিগুলো মূলধন বৃদ্ধি করে। বীমাকারী প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা ছাড়াও ব্যাক্তিগতভাবে অর্থ সঞ্চয় করে সম্ভাব্য ঝুঁকির দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত থাকা যায়।
বিভিন্ন ধরনের বীমা আছে, যেমনঃ
বীমা করলে কী কী সুবিধা ?
বীমা করার সুবিধাবলী:
(১) ইহা জীবনের ও সম্পদের নিরাপত্তা দেয়।
(২) ইহা মূলধন সৃষ্টি করে।
(৩) ইহা বৃদ্ধ বয়সের এবং আপদকালীন সম্বল।
(৪) ইহা মানসিক প্রশান্তি দেয়।
(৫) ইহা ব্যবসায়ে অর্থ যোগান দেয়।
(৬) ইহা মুদ্রা স্ফীতি হ্রাস করে।
(৭) ইহা সামাজিক সম্পত্তির নিরাপত্তা বিধান করে।
বীমা করার ধাপ সমূহ কী কী ?
বীমা করার ধাপ সমূহ হলো:
- বীমা প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় প্রতিনিধি অথবা ওয়েব সাইট হতে গ্রাহকের বিভিন্ন পরিকল্প সম্পর্কে অবহিত হওয়া এবং বিভিন্ন পরিকল্প পর্যালোচনা করতঃ পছন্দ মত পরিকল্প নিবার্চন করা।
- বীমা গ্রাহকের পছন্দমত পরিকল্প গ্রহণের নিমিত্ত বীমা প্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত ফরমে আবেদন করা।
- বীমাগ্রাহকের আবেদন ও দাখিলকৃত আনুসাংগিক কাগজপত্র পর্যালোচনা করতঃ বীমাকারী প্রতিষ্ঠানের অবলিখন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা।
- বীমা প্রতিষ্ঠানের সিদ্ধান্ত প্রাপ্তির পর বীমা গ্রাহক কর্তৃক প্রিমিয়াম পরিশোধ করা।
- বীমা গ্রাহক কর্তৃক প্রিমিয়াম পরিশোধের পর বীমা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক এফ.পি.আর এর মাধ্যমে বীমা চুক্তি চূড়ান্তভাবে সম্পাদন করা।
- বীমা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক এফ.পি.আর সম্পাদনের পর গ্রাহক কর্তৃক বীমা দলিল সংগ্রহ করা।
আরও দেখুনঃ কার্য চুক্তি স্বাক্ষরের সময় বীমার শর্তগুলো কিভাবে ঠিক করবেন ?
এই লেখকের অন্যান্য লেখা
Supply Chain VS Procurement
Supply Chain Management (SCM) and Procurement are two closely related but distinct functions in business operations. While procurement focuses on
ট্রাম্পের শুল্ক আরোপ: সরকারি ক্রয় এবং বিশ্ব বানিজ্য
শুল্ক আরোপ (Tariff Imposition) এবং সরকারি ক্রয় (Public Procurement) অর্থনীতির দুটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র, যা একে অপরকে সরাসরি প্রভাবিত করে। শুল্ক
সরকারি ক্রয় কার্যক্রমে ‘বাংলা’ কতটুকু গূরুত্ব পাচ্ছে
অন্তত একটি জায়গায় বিতর্ক তুলনামূলক কম, তা হলো ৫২ এর ভাষা আন্দোলন। মাতৃভাষার জন্য আত্মত্যাগের ইতিহাসে বাঙালির তুলনা বিশ্ব-ইতিহাসে নেই।
UN Contract Types within the UN common system
Interested in UN jobs but not sure where you fit in? UN agencies offers various categories of employment requiring different