ইইউ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিশ্বের সবচেয়ে উন্মুক্ত বাজার। কিন্তু অন্যদিকে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরে সরকারি ক্রয় কার্যে অংশ নেয়ার জন্য EU প্রতিষ্ঠানগুলো সব সময় সমান প্রবেশাধিকার পায় না। অনেক দেশ আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার জন্য তাদের পাবলিক প্রকিউরমেন্ট মার্কেট খুলতে নারাজ। এটি ইইউ কোম্পানিগুলির জন্য একটি অসম প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র তৈরি করে এবং ব্যবসার সুযোগ সীমিত করে।
ঠিক এরকমই এক প্রেক্ষাপটে, সরকারি ক্রয়ের বিষয়ে গত ২২ অক্টোবর ২০২৪ ইং তারিখে ইউরোপীয় সর্বোচ্চ আদালত রায় জারি করেছে যে শর্ত সাপেক্ষে তৃতীয় কোন দেশের ঠিকাদার/সরবরাহকারীদের EU পাবলিক প্রকিউরমেন্ট মার্কেটে অংশগ্রহণের অধিকার সীমিত থাকবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন পাবলিক প্রকিউরমেন্টের এক বিশাল বাজার। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভূক্ত মোট ২৭ টি দেশের মোট দেশজ উৎপাদন (GDP) প্রায় ২.৫ ট্রিলিয়ন ইউরো যার প্রায় ১৪% সরকারি ক্রয়ে (পাবলিক প্রকিউরমেন্ট) ব্যবহৃত হয়। এই বাজার হারানো যে কোন দেশ বা আন্তর্জাতিক ঠিকাদার/সরবরাহকারীদের জন্য এক বিরাট ধাক্কা। সরকারি ক্রয়ের বিষয়ে ইউরোপীয় সর্বোচ্চ আদালত এই রায়কে একদিকে বিতর্কিত এবং অন্যদিকে যুগান্তকারি হিসেবে দেখা হচ্ছে। এরফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া সহ অন্যান্য বিদেশী সরবরাহকারীদের জন্য অনেক ক্ষেত্রেই ব্যবসার সুযোগ সীমিত হয়ে পরবে।
এরই মধ্যে খবর হলো ট্রাম্প ২য় বারের মতো প্রেসিডেন্ট হয়েছেন। প্রথমবার ক্ষমতায় এসে ট্রাম্প যখন আমদানি করা পণ্যে শুল্ক আরোপ করেছিলেন তখন চীন, কানাডা ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন সেই দেশটির বিরুদ্ধেও পাল্টা ব্যবস্থা নিয়েছিল। এখন ট্রাম্প নির্বাচিত হবার প্রাক্কালে এরকম একটি রায় নতুন করে বানিজ্য যুদ্ধকে উস্কে দিতে পারে।
ঘটনার উদ্ভব ২০২২ সালে, একটি ক্রোয়েশিয়ান ক্রয়কারী সংস্থা (Procuring Entity) একটি দরপত্র আহবান করে এবং পরবর্তীতে স্ট্র্যাবাগ গ্রুপের সাথে চুক্তি সম্পন্ন হয়। তখন দরপত্রে অংশগ্রহনকারী অন্য একটি প্রতিষ্ঠান অভিযোগ করে যে দরপত্র জমা দেওয়ার সময়সীমার পরে সংশ্লিষ্ট ক্রয়কারী উক্ত স্ট্র্যাবাগ গ্রুপের নিকট থেকে এমন অতিরিক্ত কিছু তথ্য সংগ্রহ করেছে যা দরপত্র মূল্যায়নে ব্যবহৃত হয়েছে। এর ফলে দরপত্রের ফলাফল প্রভাবিত হয়েছে বলে তারা আশংকা করে। তখন তারা ন্যায়বিচারের আশায় ক্রোয়েশিয়ার আদালতের দারস্থ হয়।
তাদের দাবি ছিল ক্রয়কারী সংস্থা দরপত্র জমা দেওয়ার সময়সীমা অতিক্রান্ত হবার পরে কোন পরিস্থিতিতে এবং কেন স্ট্র্যাবাগ গ্রুপকে অতিরিক্ত নতুন তথ্য প্রদানের সুযোগ দিয়েছিল তা তদন্ত করে দেখতে হবে। এতে ক্রয় কার্যের সম অধিকারের নীতি লংঘন করা হয়েছে বলে তাদের অভিযোগ।
অবস্থাদৃষ্টে বোঝা যাচ্ছিলো যে তাদের দাবী যৌক্তিক।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের ক্রয় আইনের সাথে সাংঘর্ষিক কিছু হলে অবশ্যই খতিয়ে দেখা উচিত। কিন্তু ঘটনা চলে গেল ভিন্ন খাতে।
কি সেই ভিন্ন খাত ? কি ঘটেছিল ঘটনার আড়ালে ?
পুরো তদন্তকার্য টা ছিল চমকপ্রদ, ইন্টারেস্টিং।
বিস্তারিত জানতে দেখুনঃ EU ক্রয়ে প্রবেশাধিকার সীমিতঃ আদালত এমন রায় কেন ?