এখানে কয়েকটি বিধি নিয়ে আলোচনা করা হলো। তবে পাঠকদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, এই “প্রকিউরমেন্টবিডি” তে উল্লেখিত আইন বা বিধির কোন ধারা বা বিধিমালার কোন বিষয় যাচাই ব্যতীত ব্যবহার না করার জন্য সতর্ক করা হচ্ছে। এখানে ব্যবহৃত যে কোন ধারা বা বিধি শুধু মাত্র বিভিন্ন আলোচনা ও সংশ্লিষ্ট প্রেক্ষাপট বোধগম্য করার জন্য উল্লেখ করা হয়েছে। বাস্তবিক প্রয়োজনে সিপিটিইউ এর ওয়েব-সাইটে সংযুক্ত আইন বা বিধিমালা থেকে তা ব্যবহার করতে হবে।
অংশ-১: সাধারণ
১৩। ক্রয় সংক্রান্ত আইন, ইত্যাদি সাধারণের প্রাপ্যতা।-
আইন এবং তদধীনে প্রণীত বিধি, আদেশ, নির্দেশ, নীতিমালা বা অন্যান্য দলিলপত্র সর্বসাধারণের নিকট সহজ প্রাপ্য করা ও উহার যথাযথ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে, সিপিটিইউ নিম্নরুপ দায়িত্ব পালন করিবে, যথা –
(ক) আইন ও তদধীনে প্রণীত বিধিমালার বাংলা ভাষ্য এবং ইংরেজীতে অনুদিত নির্ভরযোগ্য পাঠ মুদ্রণ ও প্রকাশ করা;
(খ) ক্রয়কারী কর্তৃক ক্রয়কার্য পরিচালনা সহজতর করণার্থ ক্রয় সংক্রান্ত দলিলপত্র পর্যায়ক্রমিকভাবে প্রকাশ করা;
(গ) দফা (ক) ও (খ) এর অধীন প্রকাশিত আইনের বাংলা ও ইংরেজী পাঠ, বিধিমালা, সংশ্লিষ্ট দলিলপত্র সর্বসাধারণের সহজ প্রাপ্তির ব্যবস্থা করা এবং উহা সিপিটিইউ এর ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা; এবং
(ঘ) উক্ত দলিল সমূহের হালনাগাদকরণ ও সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা।
১৪। যোগাযোগের ধরণ।-
(১) আইন ও এই বিধিমালার অধীন ক্রয়কারী ও ক্রয় কার্যে অংশগ্রহণকারী পক্ষের মধ্যে (যেমন-আবেদনকারী, দরপত্রদাতা, সরবরাহকারী, ঠিকাদার বা পরামর্শক) যাবতীয় যোগাযোগ লিখিত হইতে হইবে এবং উক্ত যোগাযোগের আইনগত বাধ্যবাধকতা নিশ্চিত করার জন্য উহা প্রেরক বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা বা প্রতিনিধি কর্তৃক স্বাক্ষরিত হইতে হইবে।
(২) ফ্যাক্স বা ইলেকট্রনিক মেইলে কোন যোগাযোগ করিবার পর উহার সমর্থনে প্রেরক বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা প্রতিনিধির স্বাক্ষরযুক্ত দলিল দাখিল করিতে হইবে।
(৩) ইলেকট্রনিক পরিচালন পদ্ধতিতে ক্রয়ের ক্ষেত্রে এই বিধিমালার অষ্টম অধ্যায়ের বিধান প্রযোজ্য হইবে।
১৫। ক্রয় পরিকল্পনা (procurement plan) এবং ক্রয় পদ্ধতি নির্বাচন।-
(১) কোন একক কাজকে একাধিক প্যাকেজে বিভক্তকরণের ক্ষেত্রে, ক্রয়কারী, কোন ক্রয় পরিকল্পনা প্রণয়নের পূর্বে, প্রস্তাবিত ক্রয়কার্য এবং ক্রয়ের বিষয় সতর্ক তার সহিত পর্যালোচনা করিয়া এবং ক্রয়ের বৈশিষ্ট্য ও পরিমাণ বিবেচনা করিয়া প্যাকেজে বিভক্তকরণ এবং প্রয়োগযোগ্য ক্রয় পদ্ধতি সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিবে।
(২) ক্রয়কারী ক্রয় পদ্ধতি নির্ধারণ এবং পণ্যের প্যাকেজ একত্রীকরণের ক্ষেত্রে, নিম্নবর্ণিত বিষয়সমূহ বিবেচনা করিবে –
(ক) ক্রয়তব্য পণ্যের ধরণ;
(খ) ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধান বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত অন্য কোন কর্মকর্তা কর্তৃক অনুমোদিত প্রাক্কলিত ব্যয়;
(গ) স্থানীয় বাজারে সংশ্লিষ্ট পণ্যের প্রাপ্যতা;
(ঘ) স্থানীয় বাজারে প্রাপ্য সংশ্লিষ্ট পণ্যের মান, উৎস এবং ব্র্যান্ড;
(ঙ) মনোনীত পণ্যের মূল্য;
(চ) প্রয়োজনীয় পরিমাণ পণ্য সরবরাহে স্থানীয় সরবরাহকারীদের সামর্থ্য;
(ছ) সংশ্লিষ্ট জাতীয় শিল্প প্রতিষ্ঠানের সামর্থ্য এবং উৎপাদিত পণ্যের মান;
(জ) বাজার পরিস্থিতি এবং প্রত্যাশিত প্রতিযোগিতা;
(ঝ) ক্রয়ের জরুরী প্রয়োজনীয়তা;
(ঞ) প্রাপকের ভাণ্ডারের ধারণ ক্ষমতা এবং প্রস্তাবিত সরবরাহের শর্তাদি ও সময়-তালিকা; এবং
(ট) স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে সরবরাহ সংক্রান্ত ঝুঁকি।
(৩) ক্রয়কারী, পুনঃপুন- আবশ্যক এইরূপ পণ্য সরবরাহের জন্য, বিধি ৮৯ অনুযায়ী ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিতে পারে এবং সুবিধাজনক হইলে লটভিত্তিক বা আইটেমভিত্তিক দরপত্র আহবান করিতে পারে।
(৪) ক্রয়কারী প্যাকেজ প্রণয়নে যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করিবে এবং সম্ভাব্য সরবরাহকারীদের সংখ্যা যেন হ্রাস না পায় উহা নিশ্চিত করিবার জন্য একটি প্যাকেজে বেশী সংখ্যক আইটেম অন্তর্ভুক্ত করিবে না।
(৫) সাধারণত- একই ধরনের সরবরাহকারীগণ কর্তৃক সরবরাহ করা হইয়া থাকে, শুধু এইরূপ আইটেম সমূহের সমন্বয়ে ক্রয়কারী প্রতিটি লট সুবিন্যস্ত করিবে।
(৬) দরপত্র প্রক্রিয়ায় উৎপাদনকারীর অংশগ্রহণ উৎসাহিত করিবার অভিপ্রায় থাকিলে, বিশেষ ধরনের সরবরাহের (যেমন-স্বাস্থ্য সেক্টরের পণ্য) জন্য আইটেমভিত্তিক দরপত্র আহবান করা যাইবে।
(৭) ক্রয়কারী, কার্যের ক্ষেত্রে, ক্রয় পদ্ধতি নির্ধারণে নিম্নবর্ণিত বিষয়সমূহ বিবেচনা করিবেঃ
(ক) ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধান কর্তৃক অনুমোদিত প্রাক্কলিত ব্যয়;
(খ) ঠিকাদারী সেক্টরের বিদ্যমান অবস্থা;
(গ) স্থানীয় ঠিকাদারদের সামর্থ্য;
(ঘ) প্রত্যাশিত প্রতিযোগিতা;
(ঙ) ভৌগলিক অবস্থান;
(চ) কার্য সমাপনের প্রত্যাশিত তারিখ;
(ছ) প্রাসঙ্গিক অন্যান্য বিষয়।
১৬। ক্রয় পরিকল্পনা প্রণয়ন, ইত্যাদি।-
(১) ক্রয় পরিকল্পনা প্রণয়ন সকল ক্রয়কারীর জন্য বাধ্যতামূলক হইবে।
(২) ক্রয় পরিকল্পনায় মূল্য বা পদ্ধতি নির্বিশেষে ক্রয়ের জন্য নির্ধারিত সকল অভীষ্ট বস্তু বা বিষয়, যথা, পণ্য ও সংশ্লিষ্ট সেবা, কার্য, ভৌত সেবা এবং বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত সেবার শ্রেণীভিত্তিক বিন্যাসপূর্বক অন্তর্ভুক্ত করিতে হইবে।
(৩) উন্নয়ন প্রকল্প বা কর্মসূচী এবং রাজস্ব বাজেটের জন্য আলাদাভাবে ক্রয় পরিকল্পনা প্রণয়ন করিতে হইবে।
(৪) ক্রয়কারী উন্নয়ন প্রকল্প বা কর্মসূচীর অধীন ক্রয়ের ক্ষেত্রে, তফসিল-৫ এর অংশ-ক অনুসারে, প্রকল্পের পূর্ণ মেয়াদকালের জন্য সার্বিক ক্রয় পরিকল্পনা প্রণয়ন করিবে এবং উহা উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (DPP) বা কারিগরী সহায়তা প্রকল্প (TPP) এর সঙ্গে সংযুক্ত করিতে হইবে।
(৫) ক্রয়কারী, প্রত্যেক অর্থ বৎসরের শুরুতে, অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে প্রত্যাশিত তহবিল প্রবাহের বিষয়টি বিবেচনাক্রমে, কোন উন্নয়ন প্রকল্প বা কর্মসূচীর সার্বিক ক্রয় পরিকল্পনা এবং দাপ্তরিক প্রাক্কলিত ব্যয় (cost estimate) বাৎসরিক ভিত্তিতে এবং যুক্তিসঙ্গতভাবে হালনাগাদ করিবে।
(৫ক) উপ-বিধি (৫) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, ক্রয়কারী দরপত্র বা প্রস্তাব দাখিলের অনুরোধ সম্বলিত দলিল চূড়ান্তকরণের পূর্বে বা দরপত্র বা প্রস্তাব আহ্বানের পূর্বে উন্নয়ন বা রাজস্ব বাজেট নির্বিশেষে ক্রয়কারী কর্তৃক নিজ এবং অন্য ক্রয়কারীর প্রতিনিধিসহ ৩ (তিন) জন সদস্য সমন্বয়ে গঠিত কমিটি দ্বারা কোন নির্দিষ্ট ক্রয়ের দাপ্তরিক প্রাক্কলিত ব্যয় (official cost estimat) প্রস্তুত করিবে এবং দাপ্তরিক প্রাক্কলিত ব্যয় প্রস্তুতকালে পরিবহন ব্যয়, ওভারহেড, মুনাফা, ঝুঁকি, ভৌগোলিক অবস্থান, জটিলতা (complexity), অনগ্রসরতা, জেলা সদর বা ক্রয় কার্যস্থল হইতে দূরত্ব, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, মূল্য সংযোজন কর (VAT) এবং অগ্রিম আয়করসহ (AIT) আনুষঙ্গিক অন্যান্য প্রযোজ্য বিষয়সমূহ আবশ্যিকভাবে বিবেচনা করিবে।
(৫খ) উপ-বিধি (৫ক) এর অধীন প্রস্তুতকৃত দাপ্তরিক প্রাক্কলিত ব্যয় কোন উন্নয়ন প্রকল্প বা কর্মসূচীর সার্বিক বা বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনায় উল্লিখিত প্রাক্কলিত ব্যয় হইতে অধিক হইলে ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধান এবং অধিক না হইলে ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধান কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ (যদি অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধানের নিম্নে হন) কর্তৃক অনুমোদনপূর্বক সীমিত দরপত্র পদ্ধতিতে অভ্যন্তরীণ কার্য ক্রয়ের ক্ষেত্র ব্যতীত, অনুমোদনকারীসহ উপ-বিধি (৫ক) তে উল্লিখিত কমিটির সকল সদস্যের স্বাক্ষরযুক্ত দাপ্তরিক প্রাক্কলিত ব্যয় সীলগালা করিয়া রাখিবে, যাহা দরপত্র উন্মুক্তকরণ কমিটির নিকট দরপত্র খোলার প্রাক্কালে হস্তান্তর করিবে এবং দরপত্র উন্মুক্তকরণ কমিটি দরপত্র উন্মুক্তকরণ সভায় দাপ্তরিক প্রাক্কলিত মূল্য ঘোষণাপূর্বক দরপত্র উন্মুক্তকরণ সীটে উহা লিপিবদ্ধ করিবে।
(৬) ক্রয়কারী, প্রত্যেক অর্থ বৎসরের শুরুতে, রাজস্ব বাজেটের অধীন ক্রয়ের জন্য শুধু একটি বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনা প্রণয়ন করিবে।
(৭) কোন উন্নয়ন প্রকল্প বা কর্মসূচীর জন্য হালনাগাদকৃত বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনা ও দাপ্তরিক প্রাক্কলিত ব্যয় এবং রাজস্ব বাজেটের জন্য প্রণীত বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনা ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধান বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা কর্তৃক অনুমোদিত হইতে হইবে।
(৮) উন্নয়ন প্রকল্প বা কর্মসূচীর জন্য সামগ্রিক ক্রয় পরিকল্পনা ও হালনাগাদকৃত বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনা এবং রাজস্ব বাজেটের জন্য বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনা প্রণয়নের ক্ষেত্রে ক্রয়কারী ক্ষেত্রমত তফসিল-৫ (Schedule-V) এর অংশ-ক, অংশ-খ, অংশ-গ, অংশ-ঘ এবং অংশ-ঙ তে বর্ণিত ছক অনুসরণ করিবে।
(৯) প্রত্যেক অর্থ বৎসরের শুরুতে ক্রয়কারী, উন্নয়ন প্রকল্প বা কর্মসূচীর জন্য উপ-বিধি (৭) এর অধীন অনুমোদিত সামগ্রিক ক্রয় পরিকল্পনা ও হালনাগাদকৃত বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনা, এবং রাজস্ব বাজেটের জন্য অনুমোদিত বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনা, উহার নোটিশ বোর্ডে ও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, উহার ওয়েবসাইটে এবং সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর বা পরিদপ্তর বা সংস্থার ওয়েবসাইটে, বুলেটিন বা রিপোর্টে প্রকাশের ব্যবস্থা করিবে।
(১০) ক্রয় প্রক্রিয়ায় বিলম্ব, পুন- দরপত্র আহবান এবং অন্যান্য অদৃষ্টপূর্ব (unforeseen) পরিবর্তন বা সীমাবদ্ধতা বিবেচনাক্রমে ক্রয়কারী নিজস্ব প্রয়োজনে ক্রয় পরিকল্পনায় প্রয়োজনীয় সামঞ্জস্য বিধানপূর্বক ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে উহা হালনাগাদ করিবে।
(১১) ক্রয়কারী, তফসিল-২ এ বর্ণিত মূল্যসীমার ঊর্ধ্বের উন্নয়ন প্রকল্প বা কর্মসূচীর জন্য,উহার সামগ্রিক ক্রয় পরিকল্পনা ও হালনাগাদকৃত বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনা এবং রাজস্ব বাজেটের জন্য বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনা সিপিটিইউ-কে অন- লাইন (on-line) বা অন-লাইন এ সম্ভব না হইলে অফ-লাইন (off-line) মাধ্যমে অবহিত করিবে, যাহা সিপিটিইউ’র ওয়েবসাইটেও নিয়মিতভাবে প্রকাশ করিতে হইবে।
১৭। একক কাজকে একাধিক প্যাকেজে বিভক্তকরণ।-
(১) ক্রয়কারী উহার ক্রয় পরিকল্পনা প্রণয়নের সময় কোন নির্দিষ্ট ক্রয় পদ্ধতি বা ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তার অনুমোদনের বাধ্যবাধকতা পরিহারের উদ্দেশ্যে, সাধারণত- একটি প্রকল্প বা কর্মসূচীর কোন অংশ নিন্মতর মূল্যমানের একাধিক প্যাকেজে বিভক্ত করিবে না।
(২) ক্রয়কারী, মূল্যায়নের সময় আড়াআড়ি অবহার (cross-discounts) প্রদান সংক্রান্ত বিধানের প্রয়োগ সহজ করার উদ্দেশ্যে, সার্বিক ক্রয় পরিকল্পনায় অনুমোদিত কোন প্যাকেজ সাধারণত ৫ (পাঁচ) টির অধিক লটে বিভক্ত করিবে না।
(২ক) প্যাকেজ বা, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, লটের ক্ষেত্রে দরপত্রদাতা শতকরা হারে মূল্যছাড় (discount) প্রদান করিতে পারিবে:
তবে শর্ত থাকে যে, প্রদত্ত মূল্যছাড় (discount) প্যাকেজ বা লটের সকল আইটেমের উপর সমভাবে প্রযোজ্য হইবে:
আরও শর্ত থাকে যে, প্রদত্ত মূল্যছাড় (discount) দরপত্রের গাণিতিক ত্রুটি সংশোধনের পর বিবেচিত হইবে।
(৩) ক্রয়কারী কোন একক কাজ ক্ষুদ্রতর একাধিক প্যাকেজে বা প্যাকেজকে একাধিক ক্ষুদ্রতর লটে বিভক্ত করিবার সময় নিম্নবর্ণিত বিষয়গুলি বিবেচনা করিবে –
(ক) সুপারিশকৃত আকারের প্যাকেজ বা লটের জন্য রেসপন্সিভ দরপত্র দাখিলের ক্ষেত্রে স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক বাজারের সামর্থ্য; এবং
(খ) সম্ভাব্য কার্য চুক্তির ক্ষেত্রে, উক্ত কার্যের জন্য নির্ধারিত স্থানের ভৌগোলিক অবস্থানের বিবেচনায় উহার বাস্তবায়নজনিত সুবিধা।
(৪) ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধান বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা, যথোপযুক্ত কারণ থাকা সাপেক্ষে, ক্ষুদ্রাকার প্যাকেজ বা লটে বিভক্তিকরণ অনুমোদন করিবেন।
(৫) উপ-বিধি (১), (২) ও (৩) এর অধীন কোন একক ক্রয়কার্য একাধিক প্যাকেজে বা কোন প্যাকেজ একাধিক লটে বিভক্ত করা হইলে, উহার কোন একটি প্যাকেজ বা লটের জন্য চুক্তি সম্পাদনের নোটিশ প্রদানের পূর্বে, প্যাকেজসমূহ বা লটসমূহের মোট মূল্যের সমষ্টি যে কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের এখতিয়ারভুক্ত সেই কর্তৃপক্ষের নিকট প্রতিটি প্যাকেজ বা লটের দরপত্র অনুমোদনের জন্য পেশ করিতে হইবে।
উদাহরণ ১।− যদি ৮০ (আশি) কোটি টাকা ব্যয় সাপেক্ষ ৫০ কি- মি- দীর্ঘ রাস্তা-কাম-বাধ নির্মাণের জন্য কোন ক্রয় প্যাকেজকে ৪(চার) টি লটে বিভক্ত করিয়া দরপত্র আহবান করা হয়, তাহা হইলে উহার কোন একটি লটের জন্য চুক্তি সম্পাদনের পূর্বে ৪(চার) টি দরপত্রেরই হালনাগাদ অগ্রগতি সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির নিকট পেশ করিতে হইবে।
উদাহরণ ২। যদি ১০০ (একশত) কোটি টাকা মূল্যের ক্রয়ের দরপত্র আইটেম ভিত্তিক আহবান করা হইয়া থাকে, তাহা হইলে বিলম্ব এড়ানোর জন্য পর্যায়ক্রমে উহার বাস্তবায়ন যুক্তিযুক্ত বিবেচিত হইলে উহার যে কোন একটি আইটেমের জন্য চুক্তি সম্পাদনের পূর্বে উক্ত টেন্ডারের ভিত্তিতে সম্পাদিতব্য সকল চুক্তি সংক্রান্ত হালনাগাদ অগ্রগতি সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির নিকট পেশ করিতে হইবে।
১৮। ক্রয়কার্যে প্রতিযোগিতা।-
(১) ক্রয়কারী-
(ক) সম্ভাব্য দরপত্রদাতাগণ কর্তৃক প্রকল্প বা কার্যের জন্য নির্ধারিত স্থান পরিদর্শনের যুক্তিসঙ্গত সুযোগ প্রদান করিবে;
(খ) কার্য বা জটিল সরবরাহ চুক্তির ক্ষেত্রে, বিশেষত- বিদ্যমান কার্য বা যন্ত্রপাতির নবরূপদানের (refurbishing) জন্য, সম্ভাব্য দরপত্রদাতাগণ ক্রয়কারীর প্রতিনিধিদের সহিত সাক্ষাত করিয়া যাহাতে কোন বিষয়ে প্রশ্ন উত্থাপন বা ব্যাখ্যা চাহিতে পারে তজ্জন্য প্রাক-দরপত্র সভা আহবান করিবে;
(গ) দফা (খ) এর অধীন কোন প্রাক-দরপত্র সভা অনুষ্ঠিত হইলে, উক্ত সভার কার্যবিবরণী যে সকল সম্ভাব্য দরপত্রদাতা দরপত্র দলিল ক্রয় করিয়াছেন এবং যাহারা দরপত্র দলিল ক্রয় করিয়াছেন কিন্তু সভায় যোগদান করেন নাই তাহাদের সকলকে তফসিল-২ এ বর্ণিত সময়সীমার মধ্যে প্রদান করিতে হইবে; এবং
(ঘ) দরপত্র দলিলের ভুলত্রুটি সংশোধন বা প্রদত্ত অতিরিক্ত তথ্য পরিশিষ্ট (addendum) আকারে বিধি ৯৫ অনুযায়ী সকল দরপত্রদাতাদের নিকট বিতরণ করিতে হইবে।
(২) যে মানদণ্ডের ভিত্তিতে আবেদনকারী, দরপত্রদাতা বা পরামর্শকদের যোগ্যতা নিরূপণ করা হইবে উহা সংশ্লিষ্ট দলিলে স্পষ্টভাবে উল্লেখকরিয়া আবেদনকারী বা দরপত্রদাতাকে আহবানে সাড়া প্রদানের জন্য পর্যাপ্ত সময় প্রদান করিতে হইবে এবং উক্ত সময় প্রযোজ্য দলিলে সুনির্দিষ্টভাবে ঊল্লেখ করিতে হইবে।
অংশ-২: দরপত্র বা প্রস্তাবের বৈধতার মেয়াদ নির্ধারণ এবং নিরাপত্তা জামানত
১৯। দরপত্র বা প্রস্তাবের বৈধতার মেয়াদ নির্ধারণ।-
(১) দরপত্র বা প্রস্তাবের বৈধতার মেয়াদ, দরপত্র বা প্রস্তাবের জটিলতা (complexity) এবং উহা মূল্যায়ন ও অনুমোদনের জন্য আবশ্যক সময় বিবেচনায় নির্ধারণ করিতে হইবে, তবে উহা নির্ধারণের ক্ষেত্রে তফসিল-২ এ বর্ণিত সময়সীমা অনুসরণ করিতে হইবে।
(২) উপ-বিধি (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোন বিশেষ ক্রয় কর্মকাণ্ডের শর্তের সহিত সঙ্গতি রক্ষার প্রয়োজনে ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধান বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা, দরপত্র বা প্রস্তাবের বৈধতার মেয়াদ কমাইতে বা বাড়াইতে পারিবেন।
২০। দরপত্র বা প্রস্তাব মূল্যায়নের সময়সীমা।-
(১) ক্রয়কারী, বিধি ১৯ অনুযায়ী প্রাথমিকভাবে নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যে দরপত্র বা প্রস্তাবের মূল্যায়ন এবং চুক্তি সম্পাদনের কার্যাদি সম্পন্ন করিবে।
(২) ক্রয়কারী, দরপত্র বা প্রস্তাবের বৈধতার মেয়াদ নির্ধারণের ক্ষেত্রে, দরপত্র বা প্রস্তাব পরীক্ষণ প্রক্রিয়া, মূল্যায়ন, অনুমোদন ও চুক্তি সম্পাদনের জন্য বিধি ৩৬ এর বিধান অনুসরণ করিবে।
২১। বৈধতার মেয়াদ বৃদ্ধি।-
(১) ব্যতিক্রমী পরিস্থিতিতে যুক্তিযুক্ত বিবেচিত হইলে, দরপত্র বা প্রস্তাবের জন্য নির্ধারিত মেয়াদ অতিক্রান্তের পূর্বে, উহার বৈধতার মেয়াদ সর্বোচ্চ ২ (দুই) বার বৃদ্ধির জন্য ক্রয়কারী কোন দরপত্রদাতা বা আবেদনকারীকে লিখিতভাবে অনুরোধ করিতে পারিবে –
তবে শর্ত থাকে যে, প্রথমবার মেয়াদ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে, ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধান এবং দ্বিতীয়বার মেয়াদ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে, পরবর্তী উচ্চতর পর্যায়ের অনুমোদন গ্রহণ করিতে হইবে।
(২) উপ-বিধি (১) এর অধীন বৈধতার মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য কোন অনুরোধ করা হইলে উক্ত অনুরোধপত্রে দরপত্র বা প্রস্তাবের মেয়াদ অবসানের নূতন তারিখ উল্লেখ করিতে হইবে, এবং মেয়াদ বৃদ্ধির উক্ত অনুরোধপত্র তফসিল-২ এ বর্ণিত সময়সীমার মধ্যে দরপত্রদাতা বা আবেদনকারীগণের নিকট প্রেরণ করিতে হইবে।
২২। দরপত্র জামানত।-
(১) অসদুদ্দেশ্যে দরপত্র দাখিল নিরুৎসাহিত করার উদ্দেশ্যে, ক্রয়কারী দরপত্র দলিলে এই মর্মে শর্ত আরোপ করিতে পারিবে যে, প্রতিটি দরপত্রের সহিত, দরপত্রদাতার পছন্দ অনুযায়ী, বাংলাদেশের কোন তফসিলি ব্যাংক কর্তৃক ইস্যুকৃত ব্যাংক ড্রাফট, পে-অর্ডার, বা দরপত্র দলিলে নির্দি ষ্টকৃত ছকে ব্যাংক গ্যারান্টি, জামানত হিসাবে দাখিল করিতে হইবে।
তবে শর্ত থাকে যে, তফসিল-২ এ উল্লিখিত মূল্যসীমা পর্যন্ত কার্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে দরপত্রের সহিত জামানত হিসাবে বাংলাদেশের কোন তফসিলি ব্যাংক কর্তৃক ইস্যুকৃত ব্যাংক ড্রাফ্ট বা পে-অর্ডার হিসাবে দাখিল করিতে হইবে।
(২) আন্তর্জাতিক ক্রয়ের ক্ষেত্রে, কোন সুখ্যাতিপূর্ণ আন্তর্জাতিক ব্যাংক কর্তৃক দরপত্র দলিলে নির্দিষ্টকৃত ছকে ব্যাংক গ্যারান্টি দাখিল করিতে হইবে, যাহা বলবৎযোগ্য করার জন্য বাংলাদেশে উহার কোন সহযোগী ব্যাংক কর্তৃক সমর্থিত হইতে হইবে;
তবে শর্ত থাকে যে, আন্তর্জাতিক দরপত্রের ক্ষেত্রে দরপত্রদাতা দেশীয় হইলে উক্ত দরপত্রদাতা দরপত্রের সহিত বাংলাদেশের যে কোন তফসিলি ব্যাংক হইতে ব্যাংক গ্যারান্টি দাখিল করিতে পারিবে।
(৩) অহেতুক অংশগ্রহণকারী দরপত্রদাতাদের নিরুৎসাহিত করার জন্য দরপত্র জামানতের অংক পর্যাপ্তভাবে নির্ধারণ করিতে হইবে এবং উহা দরপত্র দলিলে মোটামুটি স্থির অংকে (rounded fixed amount) উল্লেখ করিতে হইবে এবং কখনও প্রাক্কলিত চুক্তি মূল্যের শতকরা হারে উল্লেখ করা যাইবে না এবং উক্ত স্থির অংক তফসিল-২ অনুসারে নির্ধারণ করিতে হইবে।
(৩ক) দরপত্রদাতা কর্তৃক দরপত্র জামানত প্রদত্ত হইবে।
উদাহরণ।− যদি কোন দরপত্রের প্রাক্কলিত চুক্তি মূল্য ৫(পাঁচ) লক্ষ টাকা হয়, তাহা হইলে উক্ত চুক্তি মূল্যের ৩% হারে দরপত্র জামানত হইবে ১৫(পনের) হাজার টাকা, ২% হারে ১০(দশ) হাজার টাকা এবং ১% হারে ৫(পাঁচ) হাজার টাকা এবং দরপত্রদাতা যাহাতে প্রাক্কলিত চুক্তি মূল্যের পরিমাণ সম্পর্কে কোন নির্ভরযোগ্য ধারণা লাভ করিতে না পারে, সেই জন্য দরপত্র জামানত উল্লিখিত হারের ভিত্তিতে উপনীত টাকার পরিমাণ হইতে কিছুটা কম পরিমাণ নির্ধারণ করিতে হইবে। এই ক্ষেত্রে ৩% হারে ১৪(চৌদ্দ) হাজার টাকা, ২% হারে ৯(নয়) হাজার টাকা ও ১% হারে ৬(ছয়) হাজার টাকা নির্ধারণ করা যাইতে পারে।
(৪) এক বা একাধিক আইটেমের জন্য আইটেম ভিত্তিক দরপত্র আহবান করা হইলে, তফসিল-২ উল্লিখিত হারে দরপত্র দাতা কর্তৃক প্রস্তাবিত আইটেমসমূহের মোট মূল্যের শতকরা হারে একটি দরপত্র জামানত দাখিল করিবার জন্য বলা যাইতে পারে –
তবে শর্ত থাকে থাকে যে, উক্ত ক্ষেত্রে দরপত্র জামানত একটি আলাদা খামে দাখিল করিতে হইবে।
(৫) দরপত্র লট ভিত্তিক আহবান করা হইলে, প্রত্যেকটি লটের জন্য ভিন্ন ভিন্ন শতকরা হারের ভিত্তিতে দরপত্র জামানতের পরিমাণ নির্ধারণ করা যাইবে, তবে দরপত্র দলিলে উক্ত জামানতের পরিমাণ, উপ-বিধি (৪) এর ক্ষেত্র ব্যতীত, তফসিল-২ এ উল্লিখিত স্থির অংকে উল্লেখ করিতে হইবে।
(৬) সরাসরি দরপত্র পদ্ধতি এবং কোটেশন প্রদানের অনুরোধ জ্ঞাপন পদ্ধতির অধীন পণ্য ও সংশ্লিষ্ট সেবা, এবং কার্য ও ভৌত সেবা ক্রয়ের ক্ষেত্রে, দরপত্র জামানত দাখিলের জন্য অনুরোধ জ্ঞাপন করা যাইবে না।
(৭) বিধি ২৫ এ বর্ণিত পরিস্থিতিতে কোন দরপত্রদাতার নিকট যথাসময়ে কোন দাবী উত্থাপনের প্রয়োজনে দরপত্রের বৈধ মেয়াদ পূর্তির তারিখের পর কমপক্ষে ২৮ (আটাশ) দিন পর্যন্ত দরপত্র জামানত বৈধ থাকিতে হইবে।
(৮) এই বিধির অধীন বর্ধিত মেয়াদের দরপত্র জামানত কোন তারিখ পর্যন্ত গ্রহণ করা হইবে, তদ্বিষয়ে সে সম্পর্কে ক্রয়কারী দরপত্রদাতাকে অবহিত করিবে।
২৩। দরপত্র জামানতের মেয়াদ বৃদ্ধি।-
(১) দরপত্রদাতা, দরপত্রের বৈধতার মেয়াদ বৃদ্ধিতে সম্মত হওয়া সাপেক্ষে, উক্ত মেয়াদ বৃদ্ধির সহিত সামঞ্জস্য রাখিয়া প্রযোজ্য ক্ষেত্রে উপ-বিধি (৩) অনুসারে দরপত্র জামানতের বৈধতার মেয়াদও বৃদ্ধি করিতে হইবে।
(২) কোন দরপত্রদাতা দরপত্র বৈধতার মেয়াদ বৃদ্ধি করিতে সম্মত না হইলে, তাহার দরপত্র পরবর্তীতে মূল্যায়নের জন্য বিবেচিত হইবে না এবং উক্ত ক্ষেত্রে দরপত্র জামানত, যতশীঘ্র সম্ভব, দরপত্রদাতাকে ফেরত প্রদান করিতে হইবে।
(৩) দরপত্রের বৈধতার মেয়াদ বৃদ্ধি করা হইলে, দরপত্র জামানতের মেয়াদ দরপত্রের নূতন মেয়াদ পূর্তির তারিখের পর কমপক্ষে ২৮(আটাশ) দিন বৃদ্ধি করিতে হইবে।
২৪। দাখিলকৃত দরপত্র জামানতের সঠিকতা যাচাইকরণ।-
(১) মূল্যায়ন কমিটি কর্তৃক, মূল্যায়ন প্রতিবেদন চূড়ান্তকরণের পূর্বে, জামানত ইস্যুকারী ব্যাংকের নিকট হইতে দরপত্রদাতা কর্তৃক দাখিলকৃত দরপত্র জামানতের সঠিকতা লিখিতভাবে যাচাই করিতে হইবে।
(২) কোন দরপত্র জামানত সঠিক বলিয়া পাওয়া না গেলে, উক্ত জামানত সংশ্লিষ্ট দরপত্র পরবর্তীতে মূল্যায়নের জন্য বিবেচনা করা যাইবে না এবং এইক্ষেত্রে ক্রয়কারী আইনের ধারা ৬৪ (৫) অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে।
২৫। দরপত্র জামানত বাজেয়াপ্তকরণ।-
(১) কোন দরপত্র জামানত বাজেয়াপ্ত করা যাইবে, যদি দরপত্রদাতা-
(ক) দরপত্র উন্মুক্তকরণের পর দরপত্র জামানতের বৈধতার মেয়াদের মধ্যে দরপত্র প্রত্যাহার করে;
(খ) চুক্তি সম্পাদনের নোটিশ গ্রহণ করিতে অস্বীকার করে;
(গ) প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, কার্য সম্পাদন জামানত দিতে ব্যর্থ হয়;
(ঘ) চুক্তি সম্পাদন করিতে অস্বীকার করে; বা
(ঙ) বিধি ৯৮ (১১) এর অধীন কোন গাণিতিক ভুল সংশোধনের কারণে দরপত্র মূল্যের সংশোধন গ্রহণ করিতে অস্বীকার করে।
২৬। দরপত্র জামানত ফেরত প্রদান।-
(১) দরপত্র উন্মুক্তকরণের পরে দরপত্র উন্মুক্তকরণ কমিটি কর্তৃক কোন দরপত্র জামানত দরপত্রদাতাকে ফেরত দেওয়া যাইবে না।
(২) ক্রয়কারী কর্তৃক মূল্যায়ন প্রতিবেদন অনুমোদনের অব্যবহিত পওে অগ্রহণযোগ্য দরপত্রসমূহের দরপত্র জামানত, ধারা ৫৩ এর বিধান সাপেক্ষে, ফেরত দিতে হইবে
(৩) ক্রয়কারী কর্তৃক মূল্যায়ন প্রতিবেদন অনুমোনের পর মূল্যায়িত গ্রহণযোগ্য ১ম, ২য় এবং ৩য় সর্বনিম্ন দরপত্রের জামানত ব্যতীত অন্যান্য মূল্যায়িত গ্রহণযোগ্য দরপত্রদাতাদেও দরপত্র জামানত, ধারা ৫৩ এর বিধান সাপেক্ষে, তাহাদেও আবেদনের প্রেক্ষিতে, ফেরত দেওয়া যাইবে।
(৪) সর্বনিম্ন মূল্যায়িত গ্রহণযোগ্য দরপত্রের দরপত্রদাতার সহিত চুক্তিস্বাক্ষরের পরেই কেবল অবশিষ্ট দরপত্রসমূহের দরপত্র জামানত ফেরত দেওয়া যাইবে, তবে সকল ক্ষেত্রেই দরপত্র জামানত বৈধতার মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পূর্বেই ফেরত দিতে হইবে।
২৭। কার্য-সম্পাদন জামানত (Performance Security)।-
(১) কৃতকার্য দরপত্রদাতাকে তফসিল-২ এ বর্ণিত হার অনুসরণক্রমে দরপত্র উপাত্ত শীট (tender data sheet) এ নির্দিষ্টকৃত পরিমাণের কার্য-সম্পাদন জামানত প্রদান করিতে হইবেঃ
তবে শর্ত থাকে যে, তফসিল-২ এর বিধি ২৮ এর উপ-বিধি (১) এর বিপরীতে উল্লিখিত কার্য ও ভৌত সেবাক্রয় চুক্তির ক্ষেত্রে অনুমিত রক্ষনযোগ্য অর্থ (Retention Money) কার্য-সম্পাদন জামানত হিসাবে গণ্য হইবেঃ
আরো শর্ত থাকে যে, সরকারের নিজস্ব তহবিলের অর্থ দ্বারা সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত, বা আধা-শ্বাসিত প্রতিষ্ঠান হইতে পণ্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে কার্য সম্পাদন জামানত গ্রহণের পরিবর্তে তফসিল-২ এ বর্ণিত হারে, পরিশোধযোগ্য বিল থেকে, নিরাপত্তা জামানত হিসাবে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ কর্তন করা যাইবে এবং পরবর্তীতে দরপত্র দলিল এ বর্ণিত শর্ত মোতাবেক উহা সংরক্ষন এবং ফেরত প্রদান করিতে হইবে।
(২) ফ্রন্ট লোডিং এর কারণে দরপত্রে ভারসাম্যহীনতার সৃষ্টি হইয়াছে বলিয়া দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির নিকট প্রতীয়মান হইলে, উক্ত কমিটি তফসিল-২ এ নির্দিষ্টকৃত কার্যস¤পাদন জামানতের পরিমাণ বৃদ্ধির জন্য ক্রয়কারীর নিকট সুপারিশ করিতে পারিবে এবং ক্রয়কারী উক্ত সুপারিশ অনুসারে কার্যসম্পাদন জামানত বৃদ্ধি করিবে।
(৩) ক্রয়কারীর নিকট গ্রহণযোগ্য ব্যাংক কর্তৃক ইস্যুকৃত ব্যাংক ড্রাফট, পে-অর্ডার বা ব্যাংক গ্যারান্টি আকারে কার্য-সম্পাদন জামানত দাখিল করিতে হইবে।
(৪) আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে, বাংলাদেশে সহযোগী ব্যাংক আছে এইরূপ আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাত কোন ব্যাংক কর্তৃক কার্য-সম্পাদন জামানত ইস্যু করিতে হইবে যাহাতে উহা বলবৎযোগ্য হয়।
(৫) রক্ষণযোগ্য অর্থ (retention money) জমা রাখার শর্ত না থাকিলে, প্রত্যাশিত কার্যসমাপ্তির তারিখের পর ২৮ (আটাশ) দিন পর্যন্ত কার্য-সম্পাদন জামানত বৈধ থাকিতে হইবে।
(৬) যদি কার্য সমাপ্তির তারিখ বৃদ্ধি করা আবশ্যক হয়, তাহা হইলে প্রত্যাশিত কার্য সমাপ্তির নূতন তারিখের পরবর্তী ২৮ (আটাশ) দিনের জন্য কার্য-সম্পাদন জামানতের বৈধতা বৃদ্ধি করিতে হইবে।
(৭) ত্রুটিজনিত দায়ের মেয়াদ (defects liability period) পূরণের লক্ষ্যে কার্য-সম্পাদন জামানতের ৫০% (শতকরা পঞ্চাশ ভাগ) অর্থ সম্বলিত নূতন জামানত দ্বারা কার্য- সম্পাদন জামানত প্রতিস্থাপন করিতে হইবে।
(৮) উপ-বিধি (৭) এর অধীন প্রদেয় নূতন জামানত চূড়ান্ত চুক্তিমূল্যের ভিত্তিতে হিসাব করিতে হইবে।
(৯) মূল প্রস্তুতকারী বা উহার একমাত্র এজেন্টের নিকট হইতে যন্ত্রাংশ সরাসরি ক্রয়ের ক্ষেত্রে, কার্য-সম্পাদন জামানত প্রদান বাধ্যতামূলক হইবে না।
(১০) পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হইতে বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত সেবা ক্রয়ে, ক্রয়কারী তফসিল-২ এ বর্ণিত হার অনুসরণপূর্বক, প্রয়োজন ও বাস্তবতার নিরিখে কার্য-সম্পাদন জামানত নির্ধারণক্রমে প্রস্তাব দলিলে উল্লিখিত নির্দিষ্ট হারে কার্য-স¤পাদন জামানত আরোপ করিতে পারিবে।
(১১) বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত সেবা ক্রয়ে ব্যক্তি পরামর্শকের উপর কার্যস¤পাদন জামানত আরোপ করা যাইবে না।
২৮। রক্ষণযোগ্য অর্থ (retention money)।-
(১) সমুদয় কার্য বা সরবরাহ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত প্রত্যেক বিলে ঠিকাদারের প্রাপ্য অর্থ হইতে তফসিল-২ অনুসারে নির্ধারিত শতকরা হারে রক্ষণযোগ্য অর্থ কর্তনযোগ্য হইবে।
(২) সমুদয় কার্য সমাপ্তির পর রক্ষিত মোট অর্থের অর্ধেক ঠিকাদারকে পরিশোধ করিতে হইবে এবং অবশিষ্ট অর্থ বাবদ ঠিকাদার শর্তহীন ব্যাংক গ্যারান্টি প্রদান করিলে উক্ত অর্থও ঠিকাদারকে পরিশোধ করা যাইবে।
(৩) প্রকল্প পরিচালক বা অন্য কোন উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বিধি ৩৯ (২৯) অনুযায়ী সকল ত্রুটি সংশোধন সংক্রান্ত সনদপত্র (defects correction certificate) প্রদানের পর তফসিল-২ বর্ণিত সময়সীমার মধ্যে উপ-বিধি (২) এ বর্ণিত বাকী সমুদয় অর্থ পরিশোধ করা হইবে বা ব্যাংক গ্যারান্টি ফেরত দিতে হইবে।
(৪) ঠিকাদারকে কোন অগ্রিম অর্থ প্রদান করা না হইলে, ছোট আকারের কার্যচুক্তির ক্ষেত্রে কোন অর্থ রক্ষণযোগ্য হইবে না, তবে সেই ক্ষেত্রে বিধি ২৭ এর উপ-বিধি (৭) ও (৮) এর বিধান প্রযোজ্য হইবে।
অংশ-৩: বিনির্দেশ প্রস্তুতকরণ এবং গোপনীয়তা রক্ষা
২৯। পণ্য, ইত্যাদির কারিগরী বিনির্দেশ প্রস্তুতের ক্ষেত্রে অনুসরণীয় কার্যপ্রণালী।-
(১) ক্রয়কারী কোন সুনির্দ্দিষ্ট ক্রয়ের প্রয়োজনীয় শর্তসমূহের বিবরণ প্রদানের সময়, অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে,নিম্নবর্ণিত তথ্যাদি প্রদান করিবে-
(ক) ক্রয়ের জন্য নির্ধারিত পণ্য, কার্য বা সেবার নাম ও বিবরণ;
(খ) পণ্য, কার্য বা সেবার মান;
(গ) প্রার্থিত কার্য-সম্পাদন যোগ্যতা (required performance standard); এবং কর্মক্ষমতার মেয়াদকাল;
(ঘ) নিরাপত্তার মান ও মাত্রা;
(ঙ) ক্রয়ের জন্য নির্ধারিত পণ্য মোড়কজাতকরণ, চিহ্নিতকরণ ও লেবেল আঁটার জন্য ব্যবহার্য প্রতীক ও পরিভাষা;
(চ) প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, ক্রয়ের জন্য নির্ধারিত পণ্য উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত পদ্ধতি এবং প্রক্রিয়া;
(ছ) পণ্যের উপযোগিতা নিরূপণের জন্য কোন পরীক্ষা পদ্ধতি থাকিলে তাহার উল্লেখ।
(২) ক্রয়কারী কর্তৃক প্রস্তুতকৃত কারিগরী বিনির্দেশে, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে-
(ক) প্রতিযোগিতা সীমিত করিতে পারে এইরূপ সরাসরি সম্পর্কযুক্ত নকশা বা বর্ণনামূলক বৈশিষ্ট্য উল্লেখনা করিয়া, কার্য-সম্পাদন যোগ্যতা বা উৎপাদন ক্ষমতা স্পষ্টভাবে বর্ণনা করিতে হইবে;
উদাহরণ।− জেনারেটর ক্রয়ের জন্য উহার কারিগরী বিনির্দেশ প্রস্তুতের সময় উহার কার্য-সম্পাদন যোগ্যতার শর্তাদি নিম্নরুপ নির্ধারণ করা যাইেতপারে, যথা –
(১) জেনারেটরের প্রতি ঘন্টায় বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ;
(২) জেনারেটর চালু থাকা অবস্থায় প্রতি কিলোওয়াট ঘন্টায় ব্যবহৃত জ্বালানীর সর্বোচ্চ পরিমাণ;
(৩) জেনারেটর চালু থাকা অবস্থায় উহার সর্বোচ্চ শব্দ নিঃসরণ মাত্রা (noise level)।
(খ) আন্তর্জাতিক মান নির্ধারিত থাকিলে উহার ভিত্তিতে বা স্বীকৃত জাতীয় মান বা কোডবা বর্গনাম (generic name) এর স্পষ্ট বর্ণনা প্রদান করিতে হইবে।
(৩) কারিগরী বিনির্দেশে কোন পণ্যের ট্রেডমার্ক বা পণ্যের ব্যবসায়িক নাম (trade name), পেটেন্ট, নকশা বা ধরন, নির্দিষ্ট উৎস দেশের নাম (country of origin), উৎপাদনকারী বা সেবা সরবরাহকারীর নাম সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখকরা যাইবে না।
উদাহরণ ।-(১) ফোর হুইল ড্রাইভ গাড়ী ক্রয়ের ক্ষেত্রে, ক্রয়কারী কোন নির্দিষ্ট গাড়ীর নাম উল্লেখ করিয়া (named vehicle) দরপত্র আহবান করিতে পারিবে না বা কোন নির্দিষ্ট প্রস্তুতকারীর গাড়ীর কারিগরী বিনির্দেশের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত বিস্তারিত কারিগরী বিনির্দেশ উল্লেখ করিতে পারিবে না, যাহাতে উক্তরূপে উল্লিখিত কারিগরী বিনির্দেশের কঠিন (tight) শর্তের কারণে অন্যান্য গাড়ী প্রস্তুতকারীগণ দরপত্র দাখিল করিতে সক্ষম না হয়; ভিন্ন ভিন্ন প্রস্তুতকারীগণের গাড়ী এক ও অভিন্ন নয়, কিন্তু অনেক গাড়ীর গুণাগুণ ও কার্য সম্পাদন যোগ্যতা খুব কাছাকাছি হইতে পারে। এইক্ষেত্রে গাড়ীর কারিগরী বিনির্দেশ সাধারণভাবে প্রস্তুত করা হইলে উক্ত ধরনের সকল গাড়ী প্রস্তুতকারীগণ বা তাহাদের এজেন্ট দরপত্রে অংশগ্রহণ করিতে সক্ষম হইবে। যেমন-কোন গাড়ীর ওজন ১,০২১ কেজি হইতে হইবে, তাহা সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখনা করিয়া কারিগরী বিনির্দেশে এইভাবে উল্লেখকরা সমীচীন যে, গাড়ীর ওজন ১,০০০ কেজি হইতে ১,০৫০ কেজির মধ্যে হইতে হইবে।
উদাহরণ।-(২) কম্পিউটার ক্রয়ের ক্ষেত্রে, কারিগরী বিনির্দেশে “শুধুমাত্র আইএসও কর্তৃক সনদপ্রাপ্ত কম্পিউটার গ্রহণযোগ্য হইবে” মর্মে উল্লেখকরা যাইবে, কিন্তু কোনক্রমেই কোন সুনির্দিষ্ট ব্র্যান্ডের কম্পিউটারের নাম উল্লেখকরা যাইবে না।
(৪) উপ-বিধি (৩) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, যদি বিনির্দেশের সাধারণরূপ প্রস্তুতক্রমে উহা দরপত্রদাতাগণের নিকট সহজে বোধগম্য করিয়া উপস্থাপন করিবার জন্য ক্রয়কারীর পর্যাপ্ত কারিগরী দক্ষতা না থাকে, তাহা হইলে ক্রয়কারী কারিগরী বিনির্দেশে কোন সুনির্দিষ্ট ব্র্যান্ডের পণ্যের বিবরণ উল্লেখ করিতে পারিবে, তবে এই ক্ষেত্রে উহাতে “বা একইরূপ বা সমতুল্য” শব্দগুচ্ছ যোগ করিতে হইবে।
(৫) ক্রয়কারী, যতদূর সম্ভব, পণ্য, কার্য বা সেবা সংশ্লিষ্ট ব্যবহারকারী বা সুবিধাভোগীগণের নিবিড় সহযোগিতা গ্রহণক্রমে বিনির্দেশ প্রস্তুত করিবে এবং অন্যান্যের মধ্যে নিম্নবর্ণিত প্রতিষ্ঠান বা প্রতিষ্ঠানসমূহ কর্তৃক অনুমোদিত বা প্রকাশিত মানদণ্ড অনুসরণ করিবে, যথা —
(ক) ইন্টারন্যাশনাল স্টান্ডার্ড অর্গানাইজেশন (International Organisation for Standardisation);
(খ) ইন্টারন্যাশনাল ইলেকট্রোটেকনিক্যাল কমিশন (International Electrotechnical Commission); এবং
(গ) বাংলাদেশ স্টান্ডার্ড এন্ড টেষ্টিং ইনষ্টিটিউট (BSTI) বা অন্য কোন জাতীয় বা আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত কোন মানদণ্ড।
(৬) পুন: পুন: ক্রয় করা হইয়া থাকে এইরূপ সাধারণভাবে ব্যবহার্য পণ্য (যেমন-কাগজ, অফিস সরঞ্জামাদি বা দৈনন্দিন ব্যবহৃত অন্য কোন পণ্য) ক্রয়ের ক্ষেত্রে, ক্রয়কারী উক্ত পণ্য প্রস্তুতকারীর সহিত আলোচনাক্রমে বিনির্দেশের মানদণ্ড নির্দিষ্ট করিয়া উহা ক্রয়কারীর ওয়েব সাইটে, যদি থাকে, প্রকাশ করিতে পারিবে।
৩০। পরামর্শক সেবার কর্মপরিধি নির্ধারণ।-
(১) আবেদনকারীদেরকে প্রস্তাব প্রস্তুতিতে সহায়তা প্রদানের জন্য, বিধি ১১৬ অনুসারে পরামর্শকদের কর্মপরিধি নির্ধারণ করিতে হইবে।
৩১। ক্রয় প্রক্রিয়া সংশ্লিষ্ট তথ্য প্রকাশে বাধা-নিষেধ, ইত্যাদি।-
(১) আবেদনপত্র, দরপত্র,কোটেশন, আগ্রহব্যক্তকরণপত্র বা প্রস্তাবসমূহ উন্মুক্তকরণের পর চুক্তি সম্পাদনের নোটিশ জারী না করা পর্যন্ত, কোন দরপত্রদাতা বা আবেদনকারী, উহার আবেদনপত্র, দরপত্র বা প্রস্তাব সম্পর্কে স্পষ্টীকরণের জন্য অনুরোধ জ্ঞাপন করা না হইয়া থাকিলে বা অভিযোগ দাখিলের জন্য আবশ্যক না হইলে, সংশ্লিষ্ট ক্রয়কারীর সহিত কোনরূপ যোগাযোগ করিবে না।
(২) দরপত্রদাতা বা আবেদনকারী কোনক্রমেই আবেদনপত্র, দরপত্র, আগ্রহ ব্যক্তকরণপত্র বা প্রস্তাবসমূহের পরীক্ষা ও মূল্যায়ন প্রক্রিয়া কোনভাবে প্রভাবিত করিবার চেষ্টা করিবে না।
(৩) কোন দরপত্রদাতা বা আবেদনকারী দরপত্র, কোটেশন, আবেদনপত্র, আগ্রহব্যক্তকরণপত্র বা প্রস্তাব মূল্যায়ন বা চুক্তি সম্পাদন সংক্রান্ত ক্রয়কারীর সিদ্ধান্ত প্রভাবিত করিবার চেষ্টা করিলে উক্ত দরপত্রদাতা বা আবেদনকারীর দরপত্র, আবেদন বা প্রস্তাব বাতিলক্রমে আইনের ধারা ৬৪ (৫) এর অধীন ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে।
৩২। গৃহীত দরপত্র, ইত্যাদির নিরাপদ হেফাজত।-
ক্রয়কারী, তফসিল-২ এ বর্ণিত সময়সীমা অনুযায়ী মূল্যায়ন কমিটির সভাপতির নিকট হস্তান্তরিত না হওয়া পর্যন্ত, গৃহীত সকল আবেদনপত্র, দরপত্র, কোটেশন বা প্রস্তাব নিরাপদ হেফাজতে রাখার নিশ্চয়তা বিধান করিবে এবং উক্ত দলিলপত্র মূল্যায়ন কমিটির সভাপতির নিকট হস্তান্তরিত হওয়ার পর উহার নিরাপত্তার জন্য উক্ত কমিটির সভাপতি দায়ী থাকিবেন।
অংশ-৪: দরপত্র, প্রস্তাব, ইত্যাদি বাতিলকরণ
৩৩। দরপত্র, প্রস্তাব বা কোটেশন বাতিলের ক্ষেত্রে অনুসরণীয় কার্যপ্রণালী।-
(১) ক্রয়কারী উপ-বিধি (২) এ উল্লিখিত পরিস্থিতিতে মূল্যায়ন কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে এবং তৎসংক্রান্ত সুপারিশ ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধান কর্তৃক অনুমোদনের পর সকল দরপত্র, প্রস্তাব বা কোটেশন বাতিল করিতে পারিবে।
(২) নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে, সকল দরপত্র, প্রস্তাব বা কোটেশন বাতিল করা যাইবে, যদি-
(ক) দাপ্তরিক প্রাক্কলিত ব্যয় বাস্তবসম্মত হওয়া সত্ত্বেও সর্বনিন্ম মূল্যায়িত দরপত্র বা কোটেশন উক্ত প্রাক্কলিত ব্যয় অপেক্ষা অধিক হয়;
(খ) ক্রয় প্রক্রিয়ায় কার্যকর প্রতিযোগিতার অভাব থাকার প্রমান পাওয়া যায় (যথা-সম্ভাব্য কতিপয় দরপত্রদাতা কর্তৃক অংশগ্রহণ না করা); বা
(গ) কোন সরবরাহ বা কার্য সমাপ্তির জন্য নির্ধারিত সময় যুক্তিসঙ্গত বা বাস্তবসম্মত হওয়া সত্ত্বেও, দরপত্রদাতাগণ তাহাদের প্রস্তাবে উক্ত নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উহা সম্পন্ন করিবার প্রস্তাব দাখিল করিতে সক্ষম না হয়; বা
(ঘ) সকল দরপত্র, প্রস্তাব বা কোটেশন অগ্রহণয্যো হয়; বা
(ঙ) ক্রয় প্রক্রিয়াকে গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে এইরূপ পেশাগত অসদাচরণের বিষয়টি সপ্তম অধ্যায় অনুসারে প্রমাণিত হয়; বা
(চ) বিধি ১২৩ অনুযায়ী নিগোসিয়েশন ব্যর্থ হয়।
(৩) উপ-বিধি ২ (ক) তে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, সর্বনিন্ম মূল্যায়িত দর বাজার মূল্যের সহিত সংগতিপূর্ণ হইলে উক্ত দরপত্র বা কোটেশন বাতিল বাধ্যতামূলক হইবে না।
(৩ক) উপ-বিধি(২) ও (৩) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, সীমিত দরপত্র পদ্ধতির ক্ষেত্রে ধারা ১৯ এর উপ-ধারা (১ক) এর বিধান অনুসৃত হইবে।
উদাহরণ।-কোন কার্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে দরপত্র দলিলে প্রাক্কলিত মূল্য ১০০.০০ লক্ষ টাকা উল্লেখ করা হইলে, কোন দরদাতা + ৫% বা ৯৫.০০ লক্ষ টাকা হইতে ১০৫.০০ লক্ষ টাকা দরে দরপত্র দাখিল করিতে পারিবে। তবে দরদাতা ৯৫.০০ লক্ষ টাকা কম বা ১০৫.০০ লক্ষ টাকার বেশী দরে দরপত্র দাখিল করিলে তাহার দরপত্র বাতিল হইয়া যাইবে।
(৪) সকল গ্রহণযোগ্য দরপত্রদাতা বা আবেদনকারী দরপত্র, প্রস্তাব বা কোটেশন দাখিল-উত্তর যোগ্যতা যাচাই নির্ণায়ক অনুসারে গ্রহণযোগ্য হইতে ব্যর্থ হওয়ার কারণ ব্যতীত, অন্য কোন কারণে কোন দরপত্র, প্রস্তাব বা কোটেশন বাতিলের সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে ক্রয়কারী উক্ত কারণসমূহ সতর্কতার সহিত পর্যালোচনা করিবে।
৩৪। বাতিল পরবর্তী গৃহীতব্য ব্যবস্থা।-
(১) কোন দরপত্র, কোটেশন বা প্রস্তাব বাতিলের পর উহা নূতনভাবে আহ্বানের ক্ষেত্রে, ক্রয়কারী-
(ক) দাপ্তরিক প্রাক্কলন বা বাজেট বা উভয়ই সম্মিলিতভাবে পুনঃনির্ধারণ করিবে; এবং
(খ) তৎপরবর্তীতে চুক্তির শর্ত, নকশা ও বিনির্দেশ এবং চুক্তির পরিধি, পৃথকভাবে বা প্রয়োজনে সম্মিলিতভাবে, সংশোধন করিবার বিষয়টি বিবেচনা করিবে।
(২) যদি বিধি ৩৩(২)(খ) তে উল্লিখিত কারণে সকল দরপত্র, কোটেশন বা প্রস্তাব বাতিল করা হয়, তাহা হইলে ক্রয়কারী নূতন দরপত্র, কোটেশন বা আগ্রহব্যক্তকরণের আবেদনপত্র আহ্বানের ক্ষেত্রে, এই মর্মে নিশ্চয়তা বিধান করিবে যে-
(ক) দরপত্র বা আগ্রহব্যক্তকরণের অনুরোধ সম্বলিত বিজ্ঞপ্তির ক্ষেত্রে স্থানীয়ভাবে, এবং মূল্য সীমার ভিত্তিতে আন্তর্জাতিকভাবে, অধিকতর ব্যাপকভাবে প্রচার করা হয়; এবং
(খ) কোটেশনের ক্ষেত্রে, কোটেশনের অনুরোধ সম্বলিত দলিল ইতঃপূর্বে যাহাদের প্রদান করা হইয়াছিল তাহাদের অতিরিক্ত অন্যান্য ব্যক্তিগণের নিকটও জারী করা হয়।
(৩) গ্রহণযোগ্য না হওয়ার কারণে কোন দরপত্র, কোটেশন বা প্রস্তাব বিধি ৩৩(২) অনুসারে বাতিল করা হইলে, সংশোধিত দলিলের ভিত্তিতে নূতনভাবে দরপত্র, কোটেশন, আগ্রহব্যক্তকরণের অনুরোধ সম্বলিত আবেদনপত্র বা প্রস্তাব আহবান করা যাইতে পারে, যাহাতে ইতঃপূর্বে যাহারা অংশগ্রহণ করিয়াছে বা প্রাক-যোগ্য বা সংক্ষিপ্ত তালিকাভুক্ত হইয়াছে তাহারা সকলে অংশগ্রহণের সুযোগ পায় বা তাহাদেরকে পুন- আহ্বান জানানো যায়।
(৪) সপ্তম অধ্যায় অনুসারে পেশাগত অসদাচরণের বিষয়টি প্রমাণিত হইলে, বিধি ১২৭(৪) অনুসারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে হইবে।
৩৫। বাতিলের কারণ অবহিতকরণ।-
(১) ক্রয়কারী, সকল দরপত্র, প্রস্তাব বা কোটেশন বাতিলের সিদ্ধান্ত গ্রহণের, পর তফসিল-২ এ বর্ণিত সময়সীমার মধ্যে, তৎসম্পর্কে সংশ্লিষ্ট সকল দরপত্রদাতা ও আবেদনকারীকে অবহিত করিবে।
(২) ক্রয়কারী, আবেদনকারী বা দরপত্রদাতার লিখিত অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে, দরপত্র, কোটেশন বা প্রস্তাব বাতিলের কারণ অবহিত করিবে।
(৩) ক্রয়কারী, যুক্তিসংগত কারণে ও ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধানের পূর্ব অনুমোদনক্রমে, দরপত্র, কোটেশন বা প্রস্তাব দাখিলের সর্বশেষ সময়সীমা উত্তীর্ণের পূর্বে, যে কোন সময়, সংশ্লিষ্টক্রয় প্রক্রিয়া বাতিল করিতে পারিবে, এবং উক্তরূপে কোন ক্রয় প্রক্রিয়া বাতিল করা হইলে ক্রয়কারী কর্তৃক গৃহীত সকল আবেদন, দরপত্র, কোটেশন বা প্রস্তাব উন্মুক্ত না করিয়া সংশ্লিষ্ট দরপত্রদাতা বা আবেদনকারীকে ফেরত প্রদান করিবে।
অংশ-৫: ক্রয় অনুমোদন প্রক্রিয়া, চুক্তি সম্পাদন নোটিশ এবং উহা প্রকাশ
৩৬। ক্রয় অনুমোদন প্রক্রিয়া।-
(১) ক্রয়কারী, মূল্যায়ন কমিটি এবং অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ, আইনের অধীন কোন ক্রয় চুক্তি সম্পাদনের উদ্দেশ্যে চুক্তি সম্পাদনের নোটিশ জারী করা পর্যন্ত, এই বিধিতে উল্লিখিত অনুমোদন পদ্ধতি যথাযথভাবে অনুসরণ করিবে।
(১ক) অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষের জন্য ক্রয় প্রস্তাবের সঙ্গে
(ক) ক্রয়কারী এই মর্মে ঘোষণা প্রদান করিবে যে, সংশ্লিষ্ট ক্রয়ের ক্ষেত্রে বিধি ১৬ এর উপ-বিধি (৫ক) অনুসরণে দাপ্তরিক প্রাক্কলিত ব্যয় প্রস্তুত করা হইয়াছে; এবং
(খ) উপস্থাপিত মূল্যায়ন প্রতিবেদনে দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি এই মর্মে ঘোষণা প্রদান করিবে যে, দরপত্র মূল্যায়নে দাপ্তরিক প্রাক্কলিত ব্যয়ের সহিত সর্বনিম্ন মূল্যায়িত দর সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না উহা যৌক্তিকতাসহ নিশ্চিত করা হইয়াছে।
(২) বিধি ১০ (১)(খ) তে উল্লিখিত উপজেলা বা অন্যান্য পর্যায় ব্যতীত, কোন অবস্থাতেই মূল্যায়ন কমিটির চেয়ারপারসন ও অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ একই ব্যক্তি হইতে পারিবে না।
(৩) ক্রয় প্রক্রিয়া অনুমোদনের ক্ষেত্রে, নিম্নবর্ণিত পদ্ধতি অনুসরণ করিতে হইবে, যথা–
(ক) মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর বা অধিদপ্তরের ক্ষেত্রে,-
(১) আর্থিক ক্ষমতা অর্পণ আদেশ অনুযায়ী অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ, ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধান, প্রকল্প পরিচালক, প্রকল্প ব্যবস্থাপক, বা কোন ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হইলে-
(অ) মূল্যায়ন কমিটি, আইন ও এই বিধিমালার বিধান অনুসারে মূল্যায়ন কার্যাদি সম্পন্নের পর, দরপত্র মূল্যায়ন প্রতিবেদন ও ক্রয় চুক্তি সম্পাদন সম্পর্কে উহার সুপারিশ, দরপত্র বা প্রস্তাব দলিল ব্যতীত, একটি সীলমোহরযুক্ত বন্ধ খামে ক্ষেত্রমত, ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধান, প্রকল্প পরিচালক, প্রকল্প ব্যবস্থাপক বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নিকট অনুমোদনের জন্য সরাসরি দাখিল করিবে;
(আ) উপ-দফা (অ) এর অধীন প্রাপ্ত মূল্যায়ন প্রতিবেদন বিধি ১১ অনুযায়ী অনুমোদন বা অন্য কোন সিদ্ধান্ত প্রদানের পর ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধান, প্রকল্প পরিচালক, প্রকল্প ব্যবস্থাপক বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উহাতে স্বাক্ষর প্রদান করিয়া উক্ত বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ক্রয়কারীর নিকট ফেরত দিবে;
(ই) উপ-দফা (অ) এবং (আ) তে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, ক্রয়কারী আঞ্চলিক, উপ-আঞ্চলিক, জেলা বা উপ-জেলা পর্যায়ের হইলে, মূল্যায়ন কমিটি উহার সুপারিশসহ মূল্যায়ন প্রতিবেদন ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কাগজপত্র, দরপত্র বা প্রস্তাব দলিল ব্যতীত, একটি সীলমোহরযুক্ত বন্ধ খামে সরাসরি অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করিবে এবং উক্ত কর্তৃপক্ষ উক্ত প্রতিবেদনে উহার সিদ্ধান্ত লিপিবদ্ধ করিবার পর পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ক্রয়কারীর নিকট ফেরত দিবে।
(২) অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ মন্ত্রণালয় হইলে-
(অ) মূল্যায়ন কমিটি, “ক্রয় প্রস্তাব” শিরোনামে একটি সার-সংক্ষেপ, মূল্যায়ন প্রতিবেদন ও চুক্তি সম্পাদন সম্পর্কে উহার সুপারিশ, দরপত্র বা প্রস্তাব দলিল ব্যতীত, একটি সীলমোহরযুক্ত বন্ধ খামে সরাসরি ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধানের নিকট দাখিল করিবে;
(আ) ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধান পরবর্তীতে উহা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবের নিকট প্রেরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেনঃ
তবে শর্ত থাকে যে, ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধান নিজেই যদি মূল্যায়ন কমিটির চেয়ারপারসন হন, তাহা হইলে তিনি ক্রয় প্রস্তাবের সার-সংক্ষেপ,মূল্যায়ন প্রতিবেদন ও সুপারিশ সরাসরি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবের নিকট প্রেরণ করিবেন এবং সচিব উক্ত প্রস্তাবের উপর স্বীয় মন্তব্য লিপিবদ্ধক্রমে উহা অনুমোদনের জন্য মন্ত্রীর নিকট উপস্থাপন করিবেন;
(ই) উপ-দফা (আ) এর অধীন উপস্থাপিত ক্রয় প্রস্তাবের সার-সংক্ষেপ ও মূল্যায়ন প্রতিবেদন বিধি ১১ অনুযায়ী অনুমোদন বা উক্ত বিষয়ে অন্য কোন সিদ্ধান্ত প্রদানের পর, মন্ত্রী উক্ত বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উহা ক্রয়কারীর নিকট ফেরত দিবেন।
(৩) সুপারিশকারী কর্তৃপক্ষ সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি হইলে-
(অ) মূল্যায়ন কমিটির প্রতিবেদন ও চুক্তি সম্পাদন সম্পর্কে উহার সুপারিশসহ ক্রয় প্রস্তাব উপ-বিধি (৩) এর দফা (ক) এর উপ-দফা (২)(অ) ও (আ) তে বর্ণিত পদ্ধতি অনুসরণক্রমে মন্ত্রীর নিকট উপস্থাপন করিতে হইবে;
(আ) উক্তরূপে উপস্থাপিত ক্রয় প্রস্তাব বিবেচনান্তে মন্ত্রী উহার উপর তাঁহার মন্তব্য সন্নিবেশিত করিয়া সংশ্লিষ্ট দলিলসমূহ সচিবের নিকট প্রেরণ করিবেন এবং সচিব উক্ত ক্রয় প্রস্তাবের বিষয়ে তফসিল-১৪ অনুসারে (নমুনা ছক) একটি স্বয়ং সম্পূর্ণ সার-সংক্ষেপ প্রস্তুত করিয়া সংশ্লিষ্ট দলিলপত্রসমূহ সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে উপস্থাপনের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে প্রেরণ করিবেন;
(ই) উপ-দফা (অ) এবং (আ) এর অধীন উপস্থাপিত ক্রয় প্রস্তাব বিধি ১১ অনুযায়ী অনুমোদন বা উক্ত বিষয়ে অন্য কোন সিদ্ধান্ত প্রদানের পর, সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সিদ্ধান্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ক্রয়কারীর নিকট প্রেরণ করিতে হইবে;
(৪) মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব ক্রয়ের ক্ষেত্রে সচিব উক্ত ক্রয়ের অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ হইলে-
(অ) মূল্যায়ন কমিটি, মূল্যায়ন প্রতিবেদন, দরপত্র বা প্রস্তাবের তুলনামূলক বিবরণী সম্বলিত শীট ও চুক্তি সম্পাদনের বিষয়ে সুপারিশ, দরপত্র বা প্রস্তাব দলিল ব্যতীত, একটি সীলমোহরকৃত বন্ধ খামে সরাসরি সচিবের নিকট দাখিল করিবে;
(আ) উপ-দফা (অ) এর অধীন দাখিলকৃত মূল্যায়ন প্রতিবেদন সচিব পর্যালোচনা করিয়া তাহার সিদ্ধান্ত প্রদান করিবেন এবং উহা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ক্রয়কারীর নিকট ফেরত দিবেন।
(খ) সংবিধিবদ্ধ সংস্থা, স্বায়ত্তশাসিত বা আধা-স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার ক্ষেত্রে,
(১) আর্থিক ক্ষমতা অর্পণ আদেশ অনুযায়ী অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রকল্প পরিচালক, প্রকল্প ব্যবস্থাপক বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা হইলে-
(অ) বিধি ১১ অনুযায়ী মূল্যায়ন প্রতিবেদন অনুমোদন বা অন্য কোন সিদ্ধান্ত প্রদানের ক্ষেত্রে উপ-বিধি (৩) এর দফা (ক) এর উপ-দফা (১) (অ) ও (আ) তে বর্ণিত পদ্ধতি অনুসরণ করিতে হইবে;
(২) অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ উক্ত সংস্থার পরিচালনা পর্ষদ হইলে-
(অ) মূল্যায়ন কমিটি “ক্রয় প্রস্তাব” শিরোনামে একটি সার-সংক্ষেপ প্রস্তুত করিবে এবং উক্ত সার-সংক্ষেপ, মূল্যায়ন প্রতিবেদন ও ক্রয় চুক্তি সম্পর্কে উহার সুপারিশ, দাখিলকৃত দরপত্র বা প্রস্তাব দলিল ব্যতীত, একটি সীলমোহরযুক্ত বন্ধ খামে সরাসরি ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধান বা উক্ত সংস্থার প্রধান নির্বাহীর নিকট দাখিল করিবে;
(আ) ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধান বা প্রধান নির্বাহী সংশ্লিষ্ট দলিলপত্র সহ উক্ত ক্রয় প্রস্তাব পরিচালনা পর্ষদের নিকট উপস্থাপন করিবে –
তবে শর্ত থাকে যে, ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধান বা উক্ত সংস্থার প্রধান নির্বাহী নিজেই যদি মূল্যায়ন কমিটির চেয়ারপারসন হন, তাহা হইলে সংশ্লিষ্ট দলিলপত্রসহ ক্রয় প্রস্তাব উক্ত পরিচালনা পর্ষদের নিকট সরাসরি প্রেরণ করিতে হইবে; এবং
(ই) উপদফা (অ) ও (আ) এর অধীন উপস্থাপিত ক্রয় প্রস্তাব বিধি ১১ অনুযায়ী অনুমোদন, বা অন্য কোন সিদ্ধান্ত প্রদানের পর পরিচালনা পর্ষদ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ক্রয় প্রস্তাবটি ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধান বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট ফেরত দিবে।
(৩) অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ মন্ত্রণালয় হইলে, ক্রয় প্রস্তাব বিধি ১১ অনুযায়ী অনুমোদন বা অধীন অন্য কোন সিদ্ধান্ত প্রদানের জন্য, উপ-বিধি (৩) এর দফা (ক) এর উপ-দফা (২) এ বর্ণিত পদ্ধতি অনুসরণ করিতে হইবে।
(৪) সুপারিশকারী কর্তৃপক্ষ সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি হইলে, উক্ত কমিটির নিকট ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উপস্থাপনের ক্ষেত্রে উপ-বিধি (৩) এর দফা (ক) এর উপ-দফা (৩) এ বর্ণিত পদ্ধতি অনুসরণ করিতে হইবে এবং যে পদ্ধতি অনুসরণক্রমে র্সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির নিকট প্রস্তাব প্রেরণ করা হইয়াছিল, সেই একই পদ্ধতি অনুসরণক্রমে উক্ত কমিটির সিদ্ধান্ত ক্রয়কারীর নিকট প্রেরণ করিতে হইবে।
(৪) উপ-বিধি (৩) এর দফা (ক) ও (খ) এর অধীন কোন ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদিত হইলে, ক্রয়কারী উক্ত বিষয়ে নিম্নবর্ণিত পদক্ষেপসমূহ গ্রহণ করিবে-
(ক) ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদনের সিদ্ধান্ত প্রাপ্তির পর তফসিল-২ এ বর্ণিত সময়ের মধ্যে ক্রয়কারী, উক্ত দরপত্র বা প্রস্তাবের বিষয়ে আইন বা এই বিধিমালার অধীন কোন অভিযোগ বা আপীল বিবেচনাধীন না থাকিলে, চুক্তি সম্পাদনের নোটিশ জারী করিবে; এবং
(খ) ক্রয় প্রস্তাব প্রক্রিয়ার সহিত প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারী ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন বিষয়ে গোপনীয়তা রক্ষা করিবে।
(৫) ক্রয়কারী, ক্রয় মুল্য তফসিল-২ এ উল্লিখিত পরিমাণ বা তদূর্ধ্ব পরিমাণের হইলে, ক্রয় প্রক্রিয়ায় কোন পর্যায়ে কতটা সময় ব্যয়িত হইয়াছে উহা এবং কোন বিলম্ব হইয়া থাকিলে, উক্ত বিলম্বের কারণ ঊল্লেখপূর্বক ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট ক্রয় সংক্রান্ত প্রতিবেদন সিপিটিইউ এর নিকট প্রেরণ করিবে।
(৬) দরপত্র উন্মুক্ত করিবার সময় হইতে চুক্তি সম্পাদনের নোটিশ জারীর সময় পর্যন্ত কার্যাদি সম্পন্নের জন্য ক্রয়কারী, মূল্যায়ন কমিটি ও অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ তফসিল-৩ এর ‘ক’ অংশ উল্লিখিত সময়সীমা অনুসরণ করিবে।
(৭) সকল ক্রয়কারী ক্রয় প্রস্তাব প্রক্রিয়াকরণ ও অনুমোদনের ক্ষেত্রে তফসিল-৩ এ প্রদত্ত চেকলিষ্টসমূহ অনুসরণ করিবে।
৩৭। চুক্তি সম্পাদন নোটিশ প্রকাশকরণ।-
(১) তফসিল-২ এ বর্ণিত মূল্যসীমার ঊর্ধ্বের ক্রয় সংক্রান্ত সকল চুক্তি সম্পাদনের নোটিশ তফসিল-৬ (Schedule-VI) এ বর্ণিত ছকে সিপিটিইউ এর নিজস্ব ওয়েব সাইটে প্রকাশের জন্য প্রেরণ করিতে হইবে এবং উক্ত নোটিশ তফসিল-২ এ বর্ণিত সময়ের জন্য ওয়েবসাইটে সংরক্ষণ করিতে হইবে।
(২) তফসিল-২ এ বর্ণিত মূল্যসীমার নিম্নের চুক্তি সম্পাদনের নোটিশ ক্রয়কারীর নোটিশ বোর্ডে এবং উহার নিজস্ব ওয়েবসাইটে, যদি থাকে, প্রকাশ করিতে হইবে এবং উক্ত নোটিশ তফসিল২ এ বর্ণিত সময়ের জন্য ওয়েবসাইটে সংরক্ষণ করিতে হইবে।
(৩) চুক্তি সম্পাদনের নোটিশ জারীর জন্য তফসিল-৭ (Schedule-VII) এ উল্লিখিত আদর্শ ছক ব্যবহার করিতে হইবে।
(৪) কোন দরপত্রদাতা বা পরামর্শক তাহার দাখিলকৃত দরপত্র বা প্রস্তাব গৃহীত না হওয়ার কারণ সম্পর্কে ক্রয়কারীর নিকট জানিতে চাহিলে, ক্রয়কারী উক্ত দরপত্রদাতা বা আবেদনকারীকে শুধু তাহার দাখিলকৃত দরপত্র বা প্রস্তাবের আপেক্ষিক অবস্থান ও ঘাটতিসমূহ অবহিত করিবে, কিন্তু তাহার নিকট অন্য কোন দরপত্রদাতা বা আবেদনকারী সম্পর্কে কোন তথ্য প্রকাশ করিবে না।
(৫) উপ-ধারা (৪) এর অধীন অবহিতকরণের ক্ষেত্রে, মূল্যায়ন প্রক্রিয়ার গোপনীয়তা রক্ষা করিতে হইবে।
অংশ-৬: চুক্তি পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা
৩৮। চুক্তি পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা।-
(১) চুক্তি সম্পাদনের পর হইতে উক্ত চুক্তি সফলভাবে সম্পন্ন বা বাতিল এবং উহার অধীনে মূল্য পরিশোধ অথবা বিরোধ বা দাবী নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ক্রয়কারী কর্তৃক সম্পাদিতব্য সকল প্রশাসনিক, আর্থিক, ব্যবস্থাপনাগত ও কারিগরী বিষয়াদি চুক্তি পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার অন্তর্ভুক্ত থাকিবে।
(২) সরবরাহ, মূল্য পরিশোধ, মান নিয়ন্ত্রণ, চুক্তি বাস্তবায়ন, ক্ষতিপূরণ (liquidated damage) প্রদান এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি নিষ্পত্তির জন্য সম্মত শর্তাদি সম্বলিত স্বাক্ষরিত চুক্তির যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিতকল্পে ক্রয়কারী কার্যকর চুক্তি পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার কলাকৌশল অবলম্বনের লক্ষ্যে পেশাগত রীতি-নীতি প্রয়োগ করিবে।
(৩) ক্রয়কারী নিশ্চিত করিবে যে, ক্রয়তব্য পণ্য, কার্য বা সেবা ক্রয়-চুক্তিতে নির্ধারিত কারিগরী শর্তাবলী পূরণ করে এবং এতদুদ্দেশ্যে ক্রয়কারী পরিদর্শন ও পরীক্ষণের (testing) সুবিধা সৃষ্টি, পরিদর্শন টীম গঠন, পরীক্ষাগার (laboratory) এবং পরিদর্শন ও পরীক্ষণ ব্যবস্থাদির যৌথ বা সম্মিলিত ব্যবহারের ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা এবং প্রয়োজন অনুসারে পরিদর্শন ও পরীক্ষণ কাজের জন্য অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সহিত চুক্তি সম্পাদন করিতে পারিবে।
(৪) চুক্তি পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে নিম্নবর্ণিত বিষয়াদি অন্তর্ভুক্ত থাকিবে –
(ক) কর্ম পরিকল্পনা পুনরীক্ষণ ও অনুমোদন;
(খ) গুণগত মান পরিদর্শন ও পরীক্ষণ এবং কর্ম পরিকল্পনা অনুসারে, নির্দিষ্ট সময় অন্তর-অন্তর, কার্য-সম্পাদনের পরিমাণ নির্ণয়সহ চুক্তি বাস্তবায়নের অগ্রগতি পরিবীক্ষণ;
(গ) ভেরিয়েশন অর্ডার, চুক্তি স্থগিতকরণ বা অবসান, মূল্য পুনঃনির্ধারণ, চুক্তির প্রতিবিধানমূলক ব্যবস্থাদি (যথা: ক্ষতিপূরণ আরোপ, বিলম্বে প্রাপ্য পরিশোধ) প্রয়োগ এবং বিরোধ বা দাবী নিষ্পত্তি পদ্ধতির ব্যবস্থাপনা;
(ঘ) মূল্য পরিশোধসহ চুক্তি বাস্তবায়ন সংক্রান্ত আর্থিক বিষয়াদি এবং বাজেট, মূল্য বিশ্লেষন ও হিসাবরক্ষণ সংক্রান্ত ব্যবস্থাপনা;
(ঙ) চুক্তি বাস্তবায়ন সংক্রান্ত দলিলাদির বিন্যাস ও ব্যবস্থাপনা এবং নির্দিষ্ট সময় অন্তর চুক্তির বাস্তবায়ন সম্পর্কিত প্রতিবেদন প্রণয়ন।
(৫) প্রকল্প ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ চুক্তির দায়বদ্ধতা প্রতিপালন, সময়, ব্যয় ও মান নিয়ন্ত্রণকল্পে সূচনা হইতে সমাপ্তি এবং হস্তান্তর অবধি নির্মাণকার্যের তত্ত্বাবধান ছাড়াও প্রকল্পের ডিজাইনের পুনরীক্ষণ করিতে পারিবে।
(৬) কার্যের বাস্তবায়ন তত্ত্বাবধানের উদ্দেশ্যে ক্রয়কারী, একজন সুযোগ্য প্রকল্প পরিচালক, প্রকল্প ব্যবস্থাপক বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, অতঃপর এই বিধিতে যাহাকে প্রকল্প ব্যবস্থাপক বলিয়া অভিহিত করা হইয়াছে, তাহার নিকট প্রকল্প বা চুক্তি ব্যবস্থাপনা ন্যস্ত করিবে।
(৭) কার্যকরভাবে চুক্তি পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার জন্য ক্রয়কারী প্রয়োজনীয় ভৌত সুবিধাদি এবং কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সংস্থান করিবে এবং উক্তরূপ পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনায় নিম্নবর্ণিত বিষয়গুলি অন্তর্ভুক্ত থাকিতে পারে, তবে কেবল উহাদের মধ্যেই সীমিত থাকিবে না
(ক) চুক্তি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের জন্য ডিজাইন ও পরিবীক্ষণমূলক কার্যাবলীর সংস্থানসহ প্রয়োজন অনুযায়ী প্রকৌশল ও ডিজাইন সার্ভিস প্রদান;
(খ) মূল্য পরিশোধ এবং আর্থিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা;
(গ) চুক্তি পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা কার্যে নিয়োজিত সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য তথ্যের সমন্বিত প্রক্রিয়াকরণ এবং সংশ্লিষ্ট তথ্যের আদান-প্রদান ও প্রবেশগম্যতা নিশ্চিত করিবার লক্ষ্যে তথ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি; এবং
(ঘ) আইনগত পরামর্শ গ্রহণ।
(৮) দরপত্রদাতাদের জন্য নির্দেশনায় বর্ণিত ভিত্তিতে চুক্তি-মূল্য হিসাব করিতে হইবে, যাহা প্রকৃত সরবরাহকৃত পণ্য বা প্রকৃত বাস্তবায়িত কার্য বা প্রকৃত সম্পাদিত সেবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য একক দর, অথবা প্রকৃত সরবরাহকৃত পণ্য বা প্রকৃত বাস্তবায়িত কার্য বা প্রকৃত সম্পাদিত সেবা নির্বিশেষে সামগ্রিক চুক্তি বা উহার অংশ বিশেষের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য থোক মূল্যের ভিত্তিতে হইতে পারে।
(৯) মূল্য-সমন্বয়নের সংস্থান সম্বলিত কার্য-চুক্তি ব্যতীত, সাধারণত- চুক্তিমূল্য অপরিবর্তনীয় হইবে এবং এই সকল ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক বা বাণিজ্যিক পরিস্থিতির পরিবর্তনের কারণে একক দর পরিবর্তন করা যাইবে না।
(১০) চুক্তিতে মূল্য সমন্বয়ের বিধান থাকিলে, যে সকল শর্ত সাপেক্ষে মূল্য সমন্বয়ের অনুমতি দেয়া যাইবে (যেমন- দ্রব্যাদি, শ্রম এবং জ্বালানী বাবদ ব্যয় বৃদ্ধি), মূল্য সমন্বয়ের সমর্থনে অর্থনৈতিক বা বাণিজ্যিক পরিস্থিতি তাৎপর্যপূর্ণ মাত্রায় পরিবর্তিত হইয়াছে কিনা এবং হইয়া থাকিলে বৃদ্ধির পরিমাণ কত, কতবার মূল্য সমন্বয় করা যাইবে এবং কি পদ্ধতি অনুসরণক্রমে তাহা করা হইবে, এতদ্সংক্রান্ত ফরমূলা ও সূচক চুক্তিতে উল্লেখ করিতে হইবে।
(১১) মূল চুক্তিমূল্যে অনুমোদিত শতকরা হার অপেক্ষা অধিক হারে পণ্য বা কার্যের চাহিদার পরিমাণগত হিসাব এবং সেবার ব্যাপ্তি বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হইলে, একটি নূতন ক্রয়-প্রক্রিয়া সূচিত করিতে হইবে, অথবা সরাসরি বা একক উৎস হইতে ক্রয়ের সমর্থনে যৌক্তিকতা প্রদর্শন করিতে হইবে।
(১২) ক্রয়কারী বিধি ৭৮, ৭৯ এবং ৮০ অনুযায়ী চুক্তির মূল শর্তাবলীতে আনীত পরিবর্তনসমূহ প্রতিফলিত করিবার উদ্দেশ্যে আর্থিক ক্ষমতা অর্পণ আদেশ অনুসারে চুক্তি সংশোধন করিবে ।
(১৩) চুক্তির সংশোধনীতে সাধারণত বিধি ৩৯ এর উপ বিধি (৩) ও (৪) অনুসারে প্রত্যাশিত কার্য সমাপ্তির তারিখ সম্প্রসারণ এবং অন্য কোন গ্রহণীয় পরিবর্তনের বিষয়সমূহ অন্তর্ভুক্ত থাকিবে।
(১৪) যে সকল ক্ষেত্রে সরবরাহকারী বা ঠিকাদার, কার্য সম্পাদনে বিলম্বের কারণে চুক্তির বিশেষ শর্তাবলীতে (Perticular Condition of Contract) উল্লিখিত সম্মত অংকের অর্থ পরিশোধে বাধ্য থাকে, সেই সমস্ত দায় পরিশোধের ব্যাপারে ক্রয়কারী নিম্নরূপ অনুবর্তী ব্যবস্থাসমূহ গ্রহণ করিবে, যথাঃ
(ক) বিলম্বের সময়-এককের ভিত্তিতে প্রদেয় সম্মত অর্থ আদায়;
(খ) ক্ষতিপূরণ হিসাবে প্রদেয় অর্থ আদায়; এবং
(গ) বিলম্বজনিত ক্ষতিপূরণ হিসাবে অর্থ প্রদানের কারণে, সরবরাহকারী বা ঠিকাদারকে চুক্তির কার্য সম্পাদনের দায়-দায়িত্ব হইতে অব্যাহতি প্রদান না করা।
(১৫) ক্রয়কারী চুক্তি পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার পরিবীক্ষণের প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির চাহিদা মোতাবেক দলিলাদি, প্রতিবেদন এবং অন্যান্য তথ্য সরবরাহ করিবে।
৩৯। কার্যচুক্তি পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা।-
(১) সময়, ব্যয় ও মান নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে প্রকল্প ব্যবস্থাপক কর্ম-পরিকল্পনা এর ব্যাপারে অনুবর্তী ব্যবস্থাসমূহ গ্রহণ করিবে এবং এই মর্মে নিশ্চয়তা বিধান করিবে যে, চুক্তি মোতাবেক নির্ধারিত সময়-সীমার মধ্যে ঠিকাদার যেন-
(অ) কার্যসম্পাদনের সাধারণ পদ্ধতি, ব্যবস্থা, ধারাবাহিকতা এবং সময়সূচী প্রদর্শনপূর্বক প্রকল্প ব্যবস্থাপকের বরাবরে একটি কর্মসূচী দাখিল করে;
(আ) চুক্তির শর্তাবলীতে বর্ণিত সময়সীমা অতিক্রম না করিয়া নির্দিষ্ট সময় অন্তর প্রকল্প ব্যবস্থাপকের বরাবরে কর্ম-পরিকল্পনার হালনাগাদ বিবরণী দাখিল করে; এবং
(ই) কর্ম-পরিকল্পনার হালনাগাদকরণকালে প্রকল্প ব্যবস্থাপকের বরাবরে নগদ অর্থ প্রবাহের একটি হালনাগাদকৃত অর্থ প্রবাহ (cash flow) এর পূর্বাভাষ দাখিল করে।
(২) উপ-বিধি (১) এর অধীন কর্ম-পরিকল্পনা দাখিল না করা পর্যন্ত প্রকল্প ব্যবস্থাপক পরিশোধ সংক্রান্ত সনদসমূহ (payment certificates) হইতে চুক্তির বিধান অনুযায়ী কোন অর্থ পরিশোধ স্থগিত করিতে পারিবে।
(৩) যদি ক্ষতিপূরণের কোন ঘটনা ঘটে বা ভেরিয়েশন অর্ডার জারী করা হয়, যাহার দরুণ ঠিকাদার কর্তৃক অতিরিক্ত ব্যয় নির্বাহ ব্যতিরেকে প্রত্যাশিত কার্য সমাপ্তির তারিখের মধ্যে কার্য সমাপ্ত করা সম্ভব না হয়, সেইক্ষেত্রে ক্রয়কারী তফসিল-২ এ বর্ণিত শতকরা হারের ভিত্তিতে প্রত্যাশিত কার্য সমাপ্তির তারিখ সম্প্রসারিত করিবে।
(৪) ক্রয়কারী প্রত্যাশিত কার্য-সমাপ্তির তারিখ সম্প্রসারণ করা হইবে কিনা এবং হইলে কতদিন হইবে সেই ব্যাপারে তফসিল-২ এ বর্ণিত সময়সীমার মধ্যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিবে।
(৫) প্রকল্প ব্যবস্থাপক ঠিকাদার কর্তৃক সম্পাদিত কার্য পরীক্ষা করিবে এবং কার্যের মান সংক্রান্ত চুক্তির দায়বদ্ধতা হইতে ঠিকাদারকে অব্যাহতি প্রদান ব্যতিরেকে দৃষ্ট ত্রুটিপূর্ণ কার্যের ব্যাপারে ঠিকাদারকে অবহিত করিবে।
(৬) প্রকল্প ব্যবস্থাপক ঠিকাদারকে কোন ত্রুটি অনুসন্ধান বা প্রকল্প ব্যবস্থাপকের বিবেচনায় ত্রুটি রহিয়াছে এইরূপ সন্দেহযুক্ত কোন কার্য উদঘাটন ও পরীক্ষণের জন্য ঠিকাদারকে নির্দেশ দিতে পারিবে।
(৭) চুক্তির বাস্তবায়ন সমাপ্ত হওয়ার পর হইতে সূচিত এবং চুক্তিতে যথাযথভাবে নির্ধারিত ত্রুটিজনিত দায়ের মেয়াদ উত্তীর্ণ হইবার পূর্বে কোন ত্রুটি পরিলক্ষিত হইলে প্রকল্প ব্যবস্থাপক তদ্বিষয়ে ঠিকাদারকে নোটিশ প্রদান করিবে এবং ত্রুটি সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত ত্রুটিজনিত দায়ের মেয়াদ সম্প্রসারিত হইবে।
(৮) যদি প্রকল্প ব্যবস্থাপক কর্তৃক প্রদত্ত নোটিশের সময়-সীমার মধ্যে ঠিকাদার ত্রুটি সংশোধন না করে, তাহা হইলে প্রকল্প ব্যবস্থাপক উক্ত ত্রুটি সংশোধনের ব্যয় নিরূপণ করিবে এবং ঠিকাদার উক্তরূপে নিরূপিত ব্যয় পরিশোধ করিবেন।
(৯) চুক্তিতে অগ্রিম প্রদানের কোন বিধান থাকিলে, ক্রয়কারীর নিকট গ্রহণযোগ্য ছকে ও গ্রহণযোগ্য কোন ব্যাংক কর্তৃক প্রদত্ত ব্যাংক গ্যারান্টি দাখিল সাপেক্ষে, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, চুক্তিতে নির্ধারিত পরিমাণে এবং নির্ধারিত তারিখের মধ্যে প্রকল্প ব্যবস্থাপক ঠিকাদারের অনুকূলে অগ্রিম অর্থ প্রদান করিতে পারিবেন।
(১০) ঠিকাদার উক্ত অগ্রিম প্রদত্ত অর্থ শুধু চুক্তি সম্পাদনের জন্য সুনির্দিষ্টভাবে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি, যন্ত্রপাতি, দ্রব্যাদি এবং আয়োজনের ব্যয় (mobilisation) বাবদ ব্যবহার করিতে পারিবেন, এবং প্রদত্ত অগ্রিম যে উক্তরূপে ব্যয় হইয়াছে তাহা প্রকল্প ব্যবস্থাপকের নিকট চালান বা দলিলাদি দাখিলের মাধ্যমে প্রমাণ করিবেন।
(১১) প্রকৃত কার্যসম্পাদনের শতকরা হারের ভিত্তিতে ঠিকাদারের পাওনা হইতে আনুপাতিক হারে কর্তন করত- প্রদত্ত অগ্রিম আদায় করিতে হইবে।
(১২) প্রদত্ত অগ্রিম পূর্ণ সমন্বয় না হওয়া পর্যন্ত ব্যাংক গ্যারান্টি বলবৎ থাকিবে, তবে ঠিকাদার কর্তৃক অগ্রিম সমন্বয়ের অনুপাতে উক্ত ব্যাংক গ্যারান্টির পরিমাণ হ্রাস পাইতে থাকিবে এবং প্রদত্ত অগ্রিমের উপর কোন সুদ আরোপিত হইবে না।
(১৩) চুক্তিমূল্য নিরূপণে ব্যবহৃত কার্যের পরিমাণগত হিসাব সম্বলিত তফসিল মূল্য পরিশোধের ভিত্তি হইবে।
(১৪) ঠিকাদার সম্পাদিত কার্যের প্রাক্কলিত মূল্য হইতে পূর্ববর্তী সনদে প্রত্যায়িত ক্রমপুঞ্জিত মূল্য বাদ দিয়া মাসিক বিবরণী প্রকল্প ব্যবস্থাপকের নিকট দাখিল করিবেন।
(১৫) প্রকল্প ব্যবস্থাপক ঠিকাদারের মাসিক বিবরণী পরীক্ষা করিবেন এবং ঠিকাদারের অনুকূলে পরিশোধযোগ্য অর্থের পরিমাণ প্রত্যায়িত করিবেন।
(১৬) প্রকল্প ব্যবস্থাপক কার্যের পরিমাণগত হিসাব সম্বলিত তফসিলে উল্লেখিতদর মোতাবেক সম্পন্ন আইটেমসমূহের মূল্য নিরূপণ করিবেন।
(১৭) পরবর্তী সময়ে প্রাপ্ত কোন তথ্যের ভিত্তিতে প্রকল্প ব্যবস্থাপক পূর্ববর্তী কোন সনদে প্রত্যায়িত কোন আইটেম বাদ দিতে বা পূর্ববর্তী কোন সনদে প্রত্যায়িত কোন আইটেমের অনুপাত হ্রাস করিতে পারিবেন।
(১৮) বিধি ৭৮, ৭৯ এবং ৮০ এর বিধান অনুসরণক্রমে প্রকল্প ব্যবস্থাপক কর্তৃক ভেরিয়েশন অর্ডার প্রণয়ন করিতে হইবে।
(১৯) সম্পাদিত কার্যের মূল্যে ভেরিয়েশন ও ক্ষতিপূরণজনিত ঘটনার (compensation events) মূল্য অন্তর্ভুক্ত থাকিবে।
(২০) যদি কোন আইটেমের বিপরীতে সম্পাদিত কার্যের চূড়ান্ত পরিমাণ, কার্যের পরিমাণগত হিসাব সম্বলিত বিবরণ (bill of quantity) এ বর্ণিত পরিমাণ অপেক্ষা শতকরা ২৫ ভাগের অধিক হয়, সেইক্ষেত্রে প্রকল্প ব্যবস্থাপক ভেরিয়েশন অর্ডার এর প্রেক্ষাপট এবং সীমা বিবেচনাক্রমে উক্ত বিশেষ আইটেমের একক দরের সমন্বয় সাধন করিবেন –
তবে শর্ত থাকে উক্তরূপে পরিবর্তন প্রতিটি ক্ষেত্রে মূল চুক্তিমূল্যের শতকরা ১ (এক) ভাগের অধিক হইতে হইবে।
(২১) অগ্রিম প্রদত্ত অর্থ এবং অনুমিত রক্ষণযোগ্য অর্থ বাবদ, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, পরিশোধযোগ্য অর্থের প্রয়োজনীয় সমন্বয় করিতে হইবে।
(২২) ক্রয়কারী, প্রকল্প ব্যবস্থাপক কর্তৃক প্রত্যায়িত অর্থ, তফসিল-২ এ বর্ণিত সময়সীমার মধ্যে, পরিশোধ করিবে।
(২৩) ভিন্নরূপ কোন কিছু উল্লেখনা থাকিলে, সকল পরিশোধ এবং কর্তন চুক্তিমূল্যে বর্ণিত মুদ্রা বা মুদ্রাসমূহের অনুপাত অনুযায়ী হইবে।
(২৪) কার্যের পরিমাণগত হিসাব সম্বলিত তফসিলে সংখ্যায় ব্যক্ত করা হইয়াছে এইরূপ আইটেমসমূহের মূল্য বা হার উদ্ধৃত করা না হইয়া থাকিলে, সেই সকল আইটেমের মূল্য চুক্তির অন্যান্য হার এবং মূল্যে অন্তর্ভুক্ত রহিয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।
(২৫) সম্পাদিত কার্যের মূল্য, ভেরিয়েশন, মূল্য সমন্বয়, ক্ষতিপূরণজনিত ঘটনা, বোনাস বা ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রদেয় অর্থ নিরূপণে অগ্রিম প্রদত্ত অর্থ বা উহা পরিশোধের বিষয় বিবেচ্য হইবে না।
(২৬) ক্ষতিপূরণজনিত ঘটনা সমূহের ক্ষেত্রে চুক্তির সাধারণ ও বিশেষ শর্তাদি অনুসরণ করিতে হইবে।
(২৭) মূল চুক্তিতে প্রত্যাশিত বা সম্প্রসারিত সমাপ্তির তারিখ হইতে প্রতিদিন বিলম্বের জন্য ঠিকাদার চুক্তিতে নির্ধারিত দৈনিক বা সাপ্তাহিক হারে বিলম্বজনিত ক্ষতিপূরণ প্রদান করিতে হইবে –
তবে শর্ত থাকে যে,-
(ক) বিলম্বজনিত ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রদেয় জরিমানার মোট পরিমাণ চুক্তিতে নির্ধারিতপরিমাণ অপেক্ষা অধিক হইবে না; এবং
(খ) ক্রয়কারী কর্তৃক ঠিকাদারের পাওনা হইতে বিলম্বজনিত ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রদেয়অর্থ কর্তন করিতে হইবে।
(২৭ক) উপ-বিধি (২৭) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, মূল চুক্তিতে উল্লিখিত প্রত্যাশিত সমাপ্তির তারিখ যুক্তিসঙ্গত কারণে সম্প্রসারণ করা হইলে বিলম্বজনিত ক্ষতিপূরণ আরোপযোগ্য হইবে না।
(২৮) বিলম্বজনিত ক্ষতিপূরণ পরিশোধ ঠিকাদারকে উহার দায়-দায়িত্ব হইতে অব্যাহতি প্রদান করিবে না।
(২৯) প্রকল্প ব্যবস্থাপক, সংশ্লিষ্ট কার্য সমাপ্ত হইয়া থাকিলে এবং ঠিকাদারের দাবী অনুযায়ী প্রদেয় টাকার অংক সঠিক হইলে, তফসিল-২ এ বর্ণিত সময়সীমার মধ্যে, চূড়ান্ত পাওনা প্রত্যায়ন করিবেন –
তবে শর্ত থাকে যে,-
(ক) যদি উক্ত হিসাব সঠিক না থাকে, তাহা হইলে প্রয়োজনীয় সংশোধন বা সংযোজনের বর্ণনাসহ প্রকল্প ব্যবস্থাপক তফসিল-২ এ বর্ণিত সময়সীমার মধ্যে ত্রুটিজনিত দায়ের একটি তালিকা প্রদান করিবেন;
(খ) যদি প্রকল্প ব্যবস্থাপকের নির্দেশ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সংশোধন বা সংযোজন সম্পন্ন করা হইয়া থাকে, তাহা হইলে তিনি একটি ত্রুটি সংশোধন সংক্রান্ত সনদ (defects correction certificate) প্রদান করিবেন; এবং
(গ) পুনঃদাখিলের পরও যদি চূড়ান্ত হিসাব বিবরণী অসন্তোষজনক থাকে, তাহা হইলে প্রকল্প ব্যবস্থাপক পরিশোধযোগ্য অর্থের পরিমাণ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করত- একটি পরিশোধ সনদ জারী করিবেন।
(৩০) যেরূপে নির্মিত হইয়াছে উহার নকশা বা পরিচালন এবং রক্ষণাবেক্ষণ ম্যানুয়াল প্রয়োজন হইলে ঠিকাদার চুক্তিপত্রে নির্ধারিত তারিখের মধ্যে তাহা সরবরাহ করিবেন।
(৩১) ঠিকাদার চুক্তিপত্রে নির্ধারিত তারিখের মধ্যে উপ-বিধি (৩০) এ উল্লিখিত অঙ্কন বা ম্যানুয়াল সরবরাহ না করিলে, বা উহা প্রকল্প ব্যবস্থাপকের অনুমোদন প্রাপ্ত না হইলে, প্রকল্প ব্যবস্থাপক ঠিকাদারের পাওনা হইতে চুক্তিতে নির্ধারিত অর্থ পরিশোধ স্থগিত করিবেন।
(৩২) প্রকল্প ব্যবস্থাপক কর্তৃক কার্য সমাপ্তির সনদ প্রদান করা হইবে, এবং প্রকল্প ব্যবস্থাপক উপ-বিধি (২৯) অনুসারে কার্য সমাপ্ত হইয়াছে মর্মে সিদ্ধান্তে উপনীত হইলে উহা জারী করিবেন।
(৩৩) ক্রয়কারী, তফসিল-২ এ বর্ণিত সময়সীমার মধ্যে কার্যস্থল এবং কার্য বুঝিয়া লইবে।
(৩৪) ত্রুটিজনিত দায়ের মেয়াদ সমাপ্ত হইবার পূর্বেই ঠিকাদার তাহার বিবেচনায় চুক্তি মোতাবেক পরিশোধযোগ্য অর্থের পরিমাণ উল্লেখ করত- প্রকল্প ব্যবস্থাপকের নিকট একটি বিস্তারিত হিসাব দাখিল করিবেন।
৪০। পণ্য চুক্তি ব্যবস্থাপনা।-
(১) প্রকল্প ব্যবস্থাপক কারিগরী বিনির্দেশের সঙ্গে পণ্যের সামঞ্জস্য পরীক্ষা করিয়া দেখিবেন এবং উহার মান ও পরিমাণ পরিদর্শনের ব্যবস্থা করিবেন।
(২) ক্রয়কারী, চুক্তিবদ্ধ পণ্যের প্রাক-জাহাজীকরণ পরিদর্শন সম্পাদন করিবার জন্য বহিঃস্থ এজেন্ট নিয়োগ করিতে পারিবে।
(৩) প্রকল্প ব্যবস্থাপক সরবরাহের সময় তালিকা (delivery schedule) এবং শর্তাবলী প্রতিপালিত হইতেছে কিনা তাহা পরীক্ষা করিয়া দেখিবেন এবং বিলম্ব নিস্পত্তির ব্যবস্থা করিবেন।
(৩ক) যদি ক্ষতিপূরণের কোন ঘটনা ঘটে বা ভেরিয়েশন অর্ডার জারি করা হয়, যাহার দরুন সরবরাহকারী কর্তৃক অতিরিক্ত ব্যয় নির্বাহ ব্যতিরেকে প্রত্যাশিত সরবরাহ সমাপ্তির তারিখের মধ্যে সরবরাহ সমাপ্ত করা সম্ভব না হয়, সেই ক্ষেত্রে ক্রয়কারী তফসিল-২ এ বর্ণিত শতকরা হারের ভিত্তিতে প্রত্যাশিত সরবরাহ সমাপ্তির তারিখ সম্প্রসারিত করিবে।
(৩খ) প্রত্যাশিত সরবরাহের তারিখ সম্প্রসারণ করা হইবে কিনা এবং হইলে কত দিন হইবে ক্রয়কারী সেই বিষয়ে তফসিল-২ এ বর্ণিত সময়সীমার মধ্যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিবে।
(৪) প্রকল্প ব্যবস্থাপক, চুক্তির শর্তাদি এবং অপ্রত্যাহারযোগ্য ঋণপত্র অনুসারে, যথাসময়ে মূল্য পরিশোধ করিবার ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন।
(৫) প্রকল্প ব্যবস্থাপক রক্ষণাবেক্ষণ গ্যারান্টি, বিক্রয়োত্তর সেবা এবং নির্ভরপত্র মোতাবেক দায়বদ্ধতার প্রতিপালন নিশ্চিত করিবেন;
(৬) প্রকল্প ব্যবস্থাপক চুক্তির সাধারণ শর্তাবলী (General Condition of Contract) এবং বিশেষ শর্তাবলীতে উল্লিখিত অন্যান্য শর্ত প্রতিপালনের নিশ্চয়তা বিধান করিবেন।
৪১। পরামর্শক সেবা সংক্রান্ত চুক্তি ব্যবস্থাপনা।-
(১) সেবা ক্রয়ের ক্ষেত্রে সময়, ব্যয় এবং মান নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে চুক্তি পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনায় সূচনা হইতে সমাপ্তি পর্যন্ত নিম্নবর্ণিত বিষয়াদি অন্তর্ভুক্ত হইতে পারে-
(ক) নির্ধারিত দায়িত্বের আওতায় প্রণীত ডিজাইন, সমীক্ষা এবং অন্যান্য বিষয়াদির মান পরীক্ষণ;
(খ) থোক মূল্যের চুক্তির ক্ষেত্রে সেবা প্রদানের অগ্রগতি এবং সময়মত উহা সম্পাদনের বিষয় এবং সময়-ভিত্তিক চুক্তির ক্ষেত্রে জনমাসের কাজের অগ্রগতি পরিবীক্ষণ;
(গ) সকল প্রকার পরামর্শক সেবা সংক্রান্ত চুক্তির ক্ষেত্রে পরামর্শকের প্রতিবেদন এবং চুক্তির পরিশিষ্টে বর্ণিত মুখ্য জনবলের প্রাপ্যতা পরিবীক্ষণ;
(ঘ) চুক্তির সংস্থান মোতাবেক পরামর্শকের প্রতিবেদনের উপর সময়মত মন্তব্য এবং ভববফনধপশ প্রদান;
(ঙ) কর্ম-পরিকল্পনা এবং নির্ধারিত কাজের জন্য বরাদ্দকৃত সময় এর প্রতি অনুবর্তিতা;
(চ) চুক্তির সংস্থান মোতাবেক পরামর্শককে সময়মত সহায়তা প্রদান;
(ছ) মাসিক মূল্য পরিশোধ বা প্রদত্ত সেবার বিপরীতে মূল্য পরিশোধ;
(জ) কাজের ব্যাপ্তির কোনরূপ পরিবর্তন যথাযথ কিনা তাহা নির্ধারণ;
(ঝ) বিলম্ব, অতিরিক্ত কাজ এবং চুক্তি বর্ধিতকরণের প্রয়োজন পরিবীক্ষণ;
(ঞ) ক্ষতিপূরণ (indemnification) সংক্রান্ত বিষয়াদি; এবং
(ট) চুক্তির সাধারণ শর্তাবলী, চুক্তির বিশেষ শর্তাবলী এবং প্রস্তাব দাখিলের অনুরোধসম্বলিত দলিলে বর্ণিত অন্যান্য শর্ত।
(২) যদি ক্ষতিপূরণের কোন ঘটনা ঘটে বা ভেরিয়েশন অর্ডার জারি করা হয়, যাহার দরুণ পরামর্শক কর্তৃক অতিরিক্ত ব্যয় নির্বাহ ব্যতিরেকে প্রত্যাশিত সেবা সমাপ্তির তারিখের মধ্যে সেবা সমাপ্ত করা সম্ভব না হয়, সেই ক্ষেত্রে ক্রয়কারী তফসিল-২ এ বর্ণিত শতকরা হারের ভিত্তিতে প্রত্যাশিত সেবা সমাপ্তির তারিখ সম্প্রসারিত করিবে।
(৩) প্রত্যাশিত সেবা-সমাপ্তির তারিখ সম্প্রসারণ করা হইবে কিনা এবং হইলে কতদিন হইবে ক্রয়কারী সেই বিষয়ে তফসিল-২ এ বর্ণিত সময়সীমার মধ্যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিবে।
৪২। চুক্তি বাতিল এবং বিরোধ নিষ্পত্তি।-
(১) কোন পক্ষ কর্তৃক চুক্তির মৌলিক কোন শর্ত লংঘন করা হইলে ক্রয়কারী, ঠিকাদার বা পরামর্শক চুক্তির সাধারণ শর্তাবলী অনুসারে চুক্তি বাতিল করিতে পারিবে।
(২) ক্রয়কারী চুক্তির সাধারণ শর্তের সংস্থান অনুসারে চুক্তি অবসানের কারণ উল্লেখকরিবে, যাহার মধ্যে বিশেষত- নিম্নবর্ণিত কারণসমূহ অন্তর্ভুক্ত থাকিতে পারে –
(ক) চুক্তি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সরবরাহকারী, ঠিকাদার বা পরামর্শকের ত্রুটির কারণে ক্রয়কারী কর্তৃক চুক্তি বাতিল;
(খ) জনস্বার্থে ক্রয়কারী কর্তৃক চুক্তি বাতিল;
(গ) দৈব দুর্ঘটনা (Force Majeure) এর কারণে চুক্তির অবসান; এবং
(ঘ) ক্রয়কারীর নিজস্ব স্বার্থে চুক্তির অবসান।
(৩) কোন চুক্তির অবসান হইলে, উক্ত চুক্তি বাস্তবে এবং আর্থিকভাবে সমাপ্তকরণের জন্য পরবর্তী কার্যধাপসমূহ চুক্তির শর্তাদিতে সুস্পষ্টভাবে লিপিবদ্ধ করিতে হইবে।
(৪) চুক্তি বাস্তবায়ন হইতে উদ্ভুত বিরোধ বা অন্যবিধ দাবীসমূহ চুক্তির সংস্থান অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে আপস-মীমাংসা এবং সালিস এর মাধ্যমে নিস্পত্তি করিতে হইবে।
(৫) উপ-বিধি (৪) এর অধীন আপস-মীমাংসা এবং সালিস এর রূপরেখা এবং পদ্ধতি সিপিটিইউ সাধারণ বা ক্ষেত্রমত, বিশেষ আদেশ দ্বারা নির্ধারণ করিবে।
অংশ-৭: ক্রয় সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র সংরক্ষণ
৪৩। ক্রয়সংক্রান্ত রেকর্ড সংরক্ষণের মেয়াদ, ইত্যাদি।-
(১) ক্রয়কারী, আইনের ধারা ৬৭ এর অধীন সিপিটিইউ’কে ক্রয়সংক্রান্ত বিষয়াদির পরিবীক্ষণের দায়িত্ব পালন এবং অর্থবহ ক্রয় প্রক্রিয়া-উত্তর পুনরীক্ষণ এবং হিসাব নিরীক্ষণ কাজ সম্পাদনে সহায়তা করার উদ্দেশ্যে তফসিল-২ এ বর্ণিত সময়ের জন্য সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত সকল কর্মকাণ্ডের রেকর্ড ও দলিলপত্র সংরক্ষণ করিবে।
(২) ক্রয় পরিকল্পনা গ্রহণের শুরু হইতে চুক্তিবদ্ধ দায়দায়িত্ব সম্পূর্ণভাবে পালিত হওয়া পর্যন্ত সময়ের ক্রয়কার্য সংক্রান্ত রেকর্ড সংরক্ষণ করিতে হইবে।
(৩) ক্রয়কার্য সংক্রান্ত রেকর্ডে নিম্নবর্ণিত কাগজপত্র ও তথ্যাদি অন্তর্ভুক্ত থাকিবে-
(ক) পণ্য ও সংশ্লিষ্ট সেবা, কার্য ও ভৌত সেবা বা বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত সেবা ক্রয়ের সংক্ষিপ্ত বিবরণ এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, উন্মুক্ত ক্রয় পদ্ধতি ব্যতীত অন্য ক্রয়পদ্ধতি ব্যবহারের যৌক্তিকতা;
(খ) আবেদনপত্র, দরপত্র, প্রস্তাব, কোটেশন বা অন্য কোন অনুরোধ সম্বলিত আহ্বানপত্রের কপিসহ প্রকাশিত বিজ্ঞাপনের কপি;
(গ) সংশ্লিষ্ট চুক্তির মূল প্রাক্কলিত ব্যয়ের কপি;
(ঘ) দরপত্র, প্রস্তাব বা কোটেশন দাখিলকারী দরপত্রদাতা বা আবেদকারীদের নাম ও ঠিকানা এবং চুক্তিমূল্যসহ চুক্তি সম্পাদনকারী দরপত্রদাতা বা পরামর্শকের নাম ও ঠিকানা;
(ঙ) প্রাক-যোগ্যতা, দরপত্র, প্রস্তাব বা অন্য কোন অনুরোধ সম্বলিত আহবানপত্রের (solicitation documents) কপি;
(চ) দরপত্র বা প্রস্তাব উন্মুক্তকরণ সভার কার্য-বিবরণী;
(ছ) দরপত্রদাতা বা আবেদনকারীদের সহিত সকল পত্র যোগাযোগের কপি;
(জ) মূল্যায়নের জন্য পূর্ব-ঘোষিত নির্ণায়কসমূহ ও উহার প্রয়োগ, মূল্যায়ন প্রতিবেদন এবং গৃহীত দরপত্র, কোটেশন বা প্রস্তাবসমূহের তুলনামূলক বিবরণীর কপি;
(ঝ) মূল্যায়ন প্রতিবেদন ও চুক্তি দলিল অনুমোদন সম্পর্কিত কাগজপত্র;
(ঞ) কোন ক্রয় কার্যক্রম শুরু করিবার পর উক্ত কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত বা বাতিলের কোন সিদ্ধান্ত গৃহীত হইয়া থাকিলে তৎসম্পর্কিত তথ্য;
(ট) ক্রয় কার্যক্রম সংক্রান্ত অভিযোগ ও আপীলের কাগজপত্র;
(ঠ) পণ্য সরবরাহ ও গ্রহণের প্রতিবেদন, কার্য সমাপ্তির প্রতিবেদন ও কার্যের পরিমাপ বহি (measurement book) এবং সেবা প্রদান সম্পন্ন হওয়ার প্রতিবেদন;
(ড) চুক্তিতে আনীত সংশোধনীসমূহ, এবং চুক্তিমূল্য, সরবরাহ বা কার্য সমাপ্তির সময়সূচী সংক্রান্ত চুক্তির শর্তাদি প্রভাবিত করে এইরূপ কোন অতিরিক্ত কাজ বা ভেরিয়েশন অর্ডার এর কপিসমূহ; এবং
(ঢ) পণ্য, কার্য এবং সেবা ক্রয় বাবদ মূল্য পরিশোধ সংক্রান্ত বিল ও ইনভয়েসসহ সকল রেকর্ডপত্র।
(৪) এই বিধি মোতাবেক ক্রয় সংক্রান্ত রেকর্ডপত্রসমূহ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে, ক্রয়কারী, ক্ষেত্রমত তফসিল-৮ (Schedule-VIII) এর অংশ-ক এবং অংশ-খ এর নির্দেশনা ও চেকলিস্ট অনুসরণ করিতে হইবে।
৪৪। ক্রয় সংক্রান্ত কার্যক্রমের রেকর্ডপত্র প্রাপ্তিসাধ্যকরণ।-
(১) চুক্তি স্বাক্ষর বা চুক্তি স্বাক্ষরের পূর্বে ক্রয় কার্যক্রম বাতিলের মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট কোন ক্রয় কার্যক্রম সমাপ্ত হইলে, উক্ত কার্যক্রমের রেকর্ডপত্র সংশ্লিষ্ট কোন ব্যক্তির প্রাপ্তিসাধ্য করিতে হইবে।
(২) উপ-বিধি (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোন উপযুক্ত আদালতের আদেশ ব্যতীত ক্রয়কারী নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে কোন তথ্য প্রকাশ করিবে না, যদি উহা-
(ক) বাংলাদেশের প্রচলিত আইনের পরিপন্থী হয়; বা
(খ) আইন প্রয়োগকে বাধাগ্রস্ত করে; বা
(গ) জনস্বার্থের পরিপন্থী হয়; বা
(ঘ) ক্রয় কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী পক্ষসমূহের আইনসঙ্গত ব্যবসায়িক স্বার্থ ক্ষুণ্ন করে; বা
(ঙ) অবাধ প্রতিযোগিতাকে বাধাগ্রস্ত করে; এবং
(চ) প্রাপ্ত দরপত্র, কোটেশন বা প্রস্তাব মূল্যায়ন সংক্রান্ত সার-সংক্ষেপ ব্যতীত, উক্ত দরপত্র, কোটেশন বা প্রস্তাব পরীক্ষা ও মূল্যায়ন এবং উহার অন্তঃস্থ বিষয়বস্তু সংক্রান্ত হয়।
অংশ-৮: ক্রয় প্রক্রিয়া-উত্তর পুনরীক্ষণ
৪৫। ক্রয় প্রক্রিয়া-উত্তর পুনরীক্ষণ।-
(১) নিরপেক্ষ পরামর্শক কর্তৃক নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর ক্রয় কার্যের রেকর্ড পুনরীক্ষণ করিতে হইবে এবং উহার ফলাফল সিপিটিইউ’কে অবহিত করিতে হইবে, যাহাতে সিপিটিইউ উহার পরিবীক্ষণ সংক্রান্ত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করিতে পারে এবং সংশ্লিষ্ট বিধি-বিধানের প্রতিপালন, চুক্তি ব্যবস্থাপনা, বিলম্ব ও উক্ত বিষয়ে প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা হিসাবে করণীয় সম্পর্কে উহার সুপারিশ সরকার ও সর্বসাধারণকে অবহিত করিতে পারে।
(২) পরামর্শক নিম্নবর্ণিত বিষয়গুলি নিশ্চিত করিবেন-
(ক) আইন ও এই বিধিমালার বিধান অনুসরণক্রমে ক্রয়কারী কর্তৃক ক্রয় কর্মকান্ড পরিচালিত ও বাস্তবায়িত হইয়াছে কিনা; এবং
(খ) আইন ও এই বিধিমালার উদ্দেশ্য বাস্তবায়নকল্পে, অর্থের সুষ্ঠু ব্যবহার হইয়াছে কিনা।
৪৬। নিরপেক্ষ পরামর্শক কর্তৃক ক্রয় প্রক্রিয়া-উত্তর পুনরীক্ষণ।-
(১) ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধান, তফসিল-২ এ উল্লিখিত পরিমাণের ক্রয় সম্পাদিত হইয়া থাকিলে, নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে, নিরপেক্ষ পরামর্শক দ্বারা উহার নিয়ন্ত্রণাধীন ক্রয়কারী কর্তৃক সম্পাদিত ক্রয়কার্যের ক্রয় প্রক্রিয়া-উত্তর পুনরীক্ষণ সম্পন্ন করার ব্যবস্থা করিবে।
(২) বিধি ১০৩ ও ১০৪ এর বিধান অনুসরণক্রমে যথাযথ যোগ্যতাসম্পন্ন নিরপেক্ষ পরামর্শক নিয়োগ করিতে হইবে।
(৩) কোন অর্থ বৎসরে সম্পাদিত চুক্তির মোট সংখ্যা ও মূল্যের ন্যূনতম এমন একটি সমানুপাতিক অংশ পুনরীক্ষণের আওতায় আনিতে হইবে, যাহাতে কমপক্ষে তফসিল-২ এ উল্লিখিত ন্যূনতম সংখ্যা ও মূল্যের চুক্তি পুনরীক্ষণের আওতায় আসে।
(৪) পরামর্শক তাহার সহিত সম্পাদিত নিয়োগ চুক্তিতে বর্ণিত কর্মের পরিধি ও সীমার আওতায় স্বাধীনভাবে পুনরীক্ষণের জন্য যে কোন ক্রয় চুক্তি বাছাই করিতে পারিবে।
(৫) ক্রয়কারী নিরপেক্ষ পরামর্শক নির্বাচন এবং ক্রয় প্রক্রিয়া-উত্তর পুনরীক্ষণ কাজ সম্পাদনের ক্ষেত্রে, সিপিটিইউ কর্তৃক জারীকৃত ক্রয় প্রক্রিয়া-উত্তর পুনরীক্ষণ কার্যপ্রণালী অনুসরণ করিবে।
(৬) ক্রয়কারী এই মর্মে নিশ্চয়তা বিধান করিবে যে, তফসিল-২ এ বর্ণিত সময়সীমার মধ্যে যেন পুনরীক্ষণ সম্পন্ন করিয়া ক্রয়কারী এবং সিপিটিইউ এর নিকট প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
(৭) আইন ও এই বিধিমালার অধীন পরিবীক্ষণের দায়িত্ব পালনকল্পে, সিপিটিইউ নিজস্ব লোকবল দ্বারা, যদি থাকে, বা নিরপেক্ষ পরার্মশক নিযুক্তির মাধ্যমে কোন ক্রয়কারীর ক্রয় কর্মকান্ডের নমুনা ভিত্তিক পুনরীক্ষণের ব্যবস্থা করিতে পারিবে।
(৮) ক্রয় প্রক্রিয়া-উত্তর পুনরীক্ষণ কাজ সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যয়ের সংস্থান ক্রয়কারী এবং সিপিটিইউ এর বাজেটে রাখিতে হইবে।
(৯) সিপিটিইউ ক্রয় প্রক্রিয়া-উত্তর পুনরীক্ষণের ফলাফল এবং সুপারিশ উহার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করিবে।
অংশ-৯: ব্যক্তির যোগ্যতা
৪৭। বৈষম্যহীনতা সংক্রান্ত অনুসরণীয় বিধান।-
(১) সরকার কর্তৃক জারীকৃত কোন স্থায়ী আদেশ বা স্বাক্ষরিত চুক্তিতে নিম্নবর্ণিত কোন ক্ষেত্রে ক্রয়কার্যে অংশগ্রহণ সীমিত বা নিষিদ্ধ করা হইলে, সেই ক্ষেত্রে বৈষম্যহীনতার নীতি প্রযোজ্য হইবে না, যথা –
(ক) কোন দ্বি-পাক্ষিক চুক্তির অধীন সংশ্লিষ্ট উন্নয়ন সহযোগী কর্তৃক প্রদত্ত তহবিলের অর্থ দ্বারা সম্পাদিতব্য ক্রয়কার্যে অংশগ্রহণের বিষয়টি শুধু বাংলাদেশ বা তহবিল প্রদানকারী রাষ্ট্রের দরপত্রদাতা বা আবেদনকারীদের মধ্যে সীমিত করা হইলে; বা
(খ) কোন বহুপাক্ষিক উন্নয়ন সংস্থা কর্তৃক প্রদত্ত তহবিলের অর্থদ্বারা সম্পাদিতব্য ক্রয়কার্যে অংশগ্রহণের যোগ্যতা শুধু সংশ্লিষ্ট উন্নয়ন সহযোগী কর্তৃক নির্ধারিত দরপত্র দাতা বা আবেদনকারীদের মধ্যে সীমিত করা হইলে; বা
(গ) ইতঃপূর্বে কোন চুক্তির অধীন ত্রুটিপূর্ণ কার্য সম্পাদনের কারণে কোন ব্যক্তিকে ক্রয়কার্যে অংশগ্রহণ করা হইতে বিরত রাখা বা নিষিদ্ধ করা হইলে; বা
(ঘ) দুর্নীতি, প্রতারণা, চক্রান্ত বা জবরদস্তিমূলক কোন কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার কারণে কোন ব্যক্তিকে ক্রয়কার্যে অংশগ্রহণ করা হইতে বিরত রাখা বা নিষিদ্ধ করা হইলে; এবং
(ঙ) সরকার কর্তৃক কোন দেশের সহিত বাণিজ্যিক সম্পর্ক না রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হইলে, সেই দেশের উৎপাদিত পণ্য বা দরপত্রদাতাদের ক্ষেত্রে।
(২) ক্রয়কারী কর্তৃক সাধারণভাবে বা সুনির্দিষ্টভাবে কোন দরপত্র বা প্রস্তাবে অংশগ্রহণ করা হইতে বিরত রাখা হইয়াছে এইরূপ সরবরাহকারী, ঠিকাদার বা পরামর্শক সংক্রান্ত তথ্য বিরত রাখার কারণ সংক্ষেপে ঊল্লেখপূর্বক উহার নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশ করিবে এবং উক্ত তথ্যাদি যুগপৎ সিপিটিইউ এর ওয়েবসাইটে প্রকাশের জন্য প্রেরণ করিবে।
৪৮। ব্যক্তির যোগ্যতা।-
(১) ক্রয়কার্যে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক ব্যক্তিকে এই মর্মে প্রামাণিক তথ্য উপস্থাপন করিতে হইবে যে,
(ক) তাহারা আইন ও এই বিধিমালায় উল্লিখিত পেশাগত ও নৈতিকতার মানদন্ড মানিয়া চলিতে সক্ষম; এবং
(খ) তাহারা যে চুক্তি সম্পাদনের উদ্দেশ্যে দরপত্র বা সেবা প্রদানের প্রস্তাব দাখিল করিয়াছে উহা বাস্তবায়ন করিতে সক্ষম।
(২) ক্রয়ের ধরন ও আকারের ভিত্তিতে ক্রয়কার্যে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক ব্যক্তি কর্তৃক অবশ্য পূরণীয় যোগ্যতার শর্ত দরপত্র দলিলে বিশদভাবে উল্লেখ করিতে হইবে এবং উহাতে, অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে, নিম্নবর্ণিত বিষয়সমূহ অন্তর্ভুক্ত থাকিবে, যথা –
(ক) পেশাগত ও কারিগরী সক্ষমতার ক্ষেত্রে, ক্ষেত্রমত, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এই মর্মে প্রামাণিক তথ্য প্রদান করিবে যে, তাহার-
(অ) প্রস্তাবিত কার্য সম্পাদন, পণ্য সরবরাহ বা সেবা প্রদানের জন্য পেশাগত ও কারিগরী যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা রহিয়াছে;
(আ) যথোপযুক্ত যন্ত্রপাতি ও অন্যান্য ভৌত সুবিধা থাকাসহ প্রয়োজনে, কোন চুক্তির অধীন উক্ত যন্ত্রপাতি ও অন্যান্য ভৌত সুবিধাদি ভাড়া বা লীজের মাধ্যমে সংগ্রহের সামর্থ্য রহিয়াছে;
(ই) সন্তোষজনকভাবে উৎপাদন বা তৈরীর সামর্থ্য রহিয়াছে;
(ঈ) বিক্রয় পরবর্তী সেবা প্রদানের সুবিধাদি রহিয়াছে;
(উ) ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা রহিয়াছে;
(ঊ) কার্য সম্পাদন, পণ্য সরবরাহ বা সেবা প্রদান সংক্রান্ত অনুরূপ কাজে, প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে বা ক্রয়কারী কর্তৃক নির্ধারিত, পূর্ব অভিজ্ঞতা রহিয়াছে;
(ঋ) কোনরূপ সমস্যা সৃষ্টি ব্যতিরেকে সতর্কতা ও কঠোর শ্রমের মাধ্যমে কোন ক্রয় চুক্তির অধীন কার্য সম্পাদনের সুনাম রহিয়াছে; এবং
(এ) চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য সংখ্যা ও দক্ষতার বিচারে উপযুক্ত লোকবল রহিয়াছে;
(খ) আইনগত সক্ষমতার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি নিশ্চয়তা প্রদান করিবে যে প্রস্তাবিত ক্রয়কার্য সম্পাদনের নিমিত্ত কোন ক্রয়কারীর সহিত তাহার চুক্তি সম্পাদনের আইনগত অধিকার রহিয়াছে;
(গ) আর্থিক সামর্থ্য ও অবস্থান নির্ধারণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সন্তোষজনক আর্থিক সামর্থ্যরে সমর্থনে প্রয়োজনীয় তথ্যাদি (যথা- প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ব্যালান্স সীট, বাৎসরিক টার্ন ওভার ও নগদ অর্থ সংক্রান্ত তথ্যাদি) প্রদান করিবে এবং এই মর্মে নিশ্চয়তা প্রদান করিবে যে-
(অ) তাহারা অসচ্ছল নন অর্থাৎ প্রস্তাবিত ক্রয়কার্য সম্পাদনের জন্য তাহাদের প্রয়োজনীয় আর্থিক সামর্থ্য আছে;
(আ) সংকটজনক আর্থিক অবস্থার কারণে পাওনাদারদের অনুরোধে তাহাদের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কার্য পরিচালনার জন্য আদালত কর্তৃক কোন রিসিভার বা স্বাধীন নিরীক্ষক নিয়োগ করা হয় নাই;
(ই) তাহাদের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে দেউলিয়া ঘোষণা করা হয় নাই বা দেউলিয়া ঘোষণার জন্য কোন প্রক্রিয়া চালু নাই, অর্থাৎ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির আর্থিক অবস্থা এইরূপ নহে যে উহার আয়ের অপেক্ষা ঋণ বেশী এবং তাহারা ব্যবসায়িক কার্য পরিচালনায় সক্ষম নহেন;
(ঈ) আর্থিক কারণে তাহাদেরকে ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে সাময়িকভাবে বিরত করা হয় নাই; এবং
(উ) উপ-দফা (অ), (আ), (ই) এবং (ঈ) তে বর্ণিত কোন কারণে বা অন্য কোন কারণে তাহাদের বিরুদ্ধে কোন মামলা বিচারাধীন নাই;
(ঘ) কর পরিশোধ সংক্রান্ত বাধ্যবাধকতা প্রতিপালনের বিষয়ে উক্ত ব্যক্তি নিশ্চয়তা প্রদান করিবে যে, তাহারা প্রচলিত আইনের অধীন কর পরিশোধের শর্তাদি পূরণ করিয়াছেন; এবং
(ঙ) নৈতিক বিধি প্রতিপালনের ক্ষেত্রে, উক্ত ব্যক্তি নিশ্চয়তা প্রদান করিবে যে, আইনের ধারা ৬৪ এবং এই বিধিমালার অধীন কোন ক্রয়কারী কর্তৃক তাহাদেরকে কোন ক্রয়কার্যে অংশগ্রহণ করা হইতে বিরত করা হয় নাই বা কোন আদালত কর্তৃক তাহাদেরকে প্রতারণা, দুর্নীতি, ষড়যন্ত্র বা জবরদস্তিমূলক কার্যকলাপের জন্য দন্ড প্রদান করা হয় নাই।
(চ) উপ-দফা (ঙ) এর অধীন বিরতকরণ, তাহাদের স্বনামে, বেনামে বা ভিন্ন কোন নামে প্রতিষ্ঠানসমূহের ক্ষেত্রেও, যদি থাকে, প্রযোজ্য হইবে।
(৩) উপ-বিধি (২) এ বর্ণিত যোগ্যতার সাধারণ মানদণ্ড এবং কোন নির্দিষ্ট ক্রয়ের প্রকৃতি ও গুরুত্ব বিবেচনাক্রমে ক্রয়কারী প্রাক-যোগ্যতা, দরপত্র বা প্রস্তাব দলিলে কোন ব্যক্তির আবশ্যকীয় যোগ্যতা সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখকরিবে।
(৪) লটভিত্তিক দরপত্রের ক্ষেত্রে, দরপত্রদাতাগণ কর্তৃক এক বা একাধিক লটের জন্য দরপত্র দাখিল করা হইলে, যে লট বা লটসমূহের জন্য দরপত্র দাখিল করা হইবে, ক্রয়কারী শুধু সেই লট বা লটসমূহের জন্য দরপত্রদাতাদের কারিগরী ও আর্থিক যোগ্যতা প্রমাণের শর্ত আরোপ করিতে পারিবে।
(৫) কোন সম্ভাব্য (potential) ব্যক্তি এই বিধিতে বর্ণিত যোগ্যতার শর্ত পূরণ করে কিনা তাহা যাচাই করিবার উদ্দেশ্যে, ক্রয়কারী উক্ত ব্যক্তিকে যোগ্যতার শর্তাদি পূরণের সমর্থনে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ বা সংস্থার নিকট হইতে দলিলপত্র ও অন্য কোন তথ্য দাখিলের নির্দেশ দিতে পারিবে।
(৬) এই বিধিতে যাহা কিছু থাকুক না কেন, সীমিত দরপত্র পদ্ধতির আওতায় অনধিক ৩ (তিন) কোটি টাকাটার অভ্যন্তীরণ কার্যক্রমের ক্ষেত্রে ব্যক্তির যোগ্যতা নির্ধারণে অতীতে সম্পাদিত ক্রয় কার্যের অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হইবে না।
৪৯। ব্যক্তির যোগ্যতার সমর্থনে আবশ্যকীয় দলিলপত্র।-
(১) ক্রয়কারী, দরপত্রদাতা বা আবেদনকারীকে নিম্নবর্ণিত দলিলপত্র দাখিলের জন্য অনুরোধ জানাইতে পারিবে-
(ক) পেশাগত ও কারিগরী সক্ষমতার ক্ষেত্রে-
(অ) বাংলাদেশ, বা দরপত্রদাতা বা আবেদনকারী যে দেশের নাগরিক সেই দেশের সংশ্লিষ্ট পেশাগত বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে নিবন্ধিত হওয়ার কাগজপত্র, অথবা যোগ্যতার সমর্থনে শপথপূর্বক ঘোষণাপত্র, বা দরপত্র বা আবেদনকারীর মূল দেশের বা বাংলাদেশের প্রচলিত আইনের শর্ত মোতাবেক কোন পেশাগত প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদত্ত সনদপত্র;
(আ) ব্যক্তির কারিগরী সুবিধা-সুযোগ, বিদ্যমান যন্ত্রপাতি, মান নিশ্চিতকরণ ব্যবস্থা, (যেমন-আই এস ও সনদপত্র) এবং ডিজাইন, গবেষণা ও উন্নয়ন সুবিধাদির বিবরণ;
(ই) কোন নির্দিষ্ট সময়ে পৃথক পৃথক ক্রয় প্রক্রিয়ায় পণ্যের গুরুত্বপূর্ণ সরবরাহের বিবরণ এবং তৎসহ উহাতে জড়িত অর্থের পরিমাণ, সরবরাহের তারিখ এবং সরকারী বা বেসরকারী নির্বিশেষে সরবরাহ গ্রহীতার তথ্য সম্বলিত তালিকা;
(ঈ) ক্রয়কারী, প্রয়োজনে, যোগাযোগ করিতে পারে এইরূপ ক্রয়কারীগণের তালিকা;
(উ) সরবরাহের জন্য নির্ধারিত পণ্যের নমুনা, বিবরণ ও ছবি এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে, উক্ত পণ্যের বিশুদ্ধতার সমর্থনে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সনদপত্র; এবং
(ঊ) ব্যক্তি কর্তৃক নিযুক্ত কারিগরী এবং প্রশাসনিক জনবলের সংখ্যা সম্বলিত বিবরণ।
(খ) আর্থিক সামর্থ্যরে ক্ষেত্রে-
(অ) ব্যক্তির আর্থিক সামর্থ্য সম্পর্কিত যথোচিত ব্যাংক প্রতিবেদন;
(আ) ব্যক্তি যে দেশে প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে, সেই দেশের কোম্পানী আইনের বিধান অনুসারে ব্যালেন্স সীট প্রকাশ আবশ্যক হওয়া সাপেক্ষে উক্ত ব্যক্তির ব্যালেন্সসীট বা উহার প্রয়োজনীয় উদ্ধৃতাংশ;
(ই) ব্যক্তির বার্ষিক লেনদেন (Turnover) এবং কোন নির্দিষ্ট সময়ে সংশ্লিষ্ট চুক্তির সহিত সম্পর্কিত পণ্য সরবরাহ, কার্য সম্পাদন বা সেবা প্রদান সংক্রান্ত লেনদেনের বিবরণ; এবং
(ঈ) Tender capacity নিরূপণের লক্ষ্যে উহার সমর্থনে প্রয়োজনীয় দলিলাদি;
(গ) ক্রয়কারীর সহিত চুক্তি সম্পাদনের বিষয়ে কোন আদালত কর্তৃক সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা উহার কোন কর্ম চারীর উপর কোন বাধা নিষেধ আরোপ করা হয় নাই মর্মে উহার আইনগত সক্ষমতার সমর্থনে এফিডেভিট দাখিল করিতে হইবে; এবং
(ঘ) কর পরিশোধ করার বিষয়টি প্রমাণের ক্ষেত্রে ক্রয়কারী উক্ত বিষয়ে বাংলাদেশের কোন উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের সনদপত্র এবং দরপত্রদাতা বিদেশী নাগরিক হইলে তিনি যে দেশের নাগরিক সেই দেশের উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের সনদপত্র এবং উক্ত সনদপত্রে নিম্নবর্ণিত বিষয়সমূহের উল্লেখথাকিতে হইবে-
(অ) কর নিবন্ধন নম্বর বা করদাতার পরিচিতি নম্বর (tax payer’s identification number);
(আ) মূল্য সংযোজন কর নিবন্ধন নম্বর;
(২) বিধি ৪৮ (২) এ উল্লিখিত প্রতিকূল পরিস্থিতি বিদ্যমান না থাকার বিষয়ে ক্রয়কারীকে নিশ্চিত হইতে হইবে, তবে উক্ত কোন প্রতিকূল পরিস্থিতি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ক্ষেত্রে যে প্রযোজ্য নহে তদ্বিষয়ে উক্ত ব্যক্তিকে বাংলাদেশের বা সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের যথোপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ইস্যুকৃত দালিলিক প্রমাণ দাখিল করিতে হইবে।
৫০। বিশেষ কোন দরপত্রের ক্ষেত্রে অবশ্যপূরণীয় শর্ত সংশোধন।-
(১) ক্রয়কারী বিশেষ কোন দরপত্রের জন্য অবশ্যপূরণীয় শর্ত সম্প্রসারিত বা সংশোধন করিতে পারিবে, যথা-
(ক) টার্ন কী চুক্তি, যাহার ডিজাইন প্রণয়ন, নির্মাণ, যন্ত্রপাতি ক্রয় ও স্থাপন এবং চালুকরণ (commissioning) সম্পর্কিত দায়িত্ব কোন ঠিকাদারের উপর বর্তায়, সেই সকল কার্য কোন দরপত্রদাতা কর্তৃক সমন্বিতভাবে সম্পাদন করার সামর্থ্য আছে কিনা উহা নিশ্চিত করিবার উদ্দেশ্যে যোগ্যতা সম্পর্কিত অতিরিক্ত তথ্য প্রদানের জন্য; বা
(খ) পরিচালনা সংক্রান্ত কোন সেবা (commissioning) প্রদানের চুক্তির (যেমন-নিরাপত্তা বা ক্যাটারিং সেবা) ক্ষেত্রে, ক্রয়কারীর প্রয়োজনীয়তার নিরিখে অতিরিক্ত বা ভিন্নতর তথ্য প্রদানের জন্য।
(২) লটের ভিত্তিতে পণ্য ও কার্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে, প্রত্যেক লটের জন্য এবং লটের সমষ্টির জন্য যোগ্যতার ন্যূনতম শর্ত নির্ধারণ করা যাইতে পারে।
৫১। প্রাক-যোগ্যতার ক্ষেত্রে অনুসরণীয় কার্যপ্রণালী।-
(১) কোন ক্রয়কার্যে প্রাক-যোগ্যতা নির্ধারণ পদ্ধতি ব্যবহার করা হইলে দরপত্রদাতা বা আবেদনকারীকে যোগ্যতা সংক্রান্ত অবশ্যপূরণীয় সকল শর্ত সম্পর্কে অবহিত করিতে হইবে এবং উক্ত ক্ষেত্রে যোগ্যতা সংক্রান্ত অবশ্যপূরণীয় শর্তাদি সুস্পষ্টভাবে প্রাক-যোগ্যতার দলিলে উল্লেখ করিতে হইবে।
(২) উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে প্রাক-যোগ্যতা নির্ধারণ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা না হইলে, দরপত্র দলিলে যোগ্যতা সংক্রান্ত অবশ্যপূরণীয় শর্তাদি উল্লেখ করিতে হইবে।
(৩) ক্রয়কারী, প্রাক-যোগ্যতা বা দরপত্র দলিলে বর্ণিত মানদন্ড অনুসারে, আবেদনকারী কর্তৃক প্রদত্ত তথ্যাদি বিধি ৯৩ মোতাবেক মূল্যায়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।
(৪) আবেদনকারী কর্তৃক ন্যূনতম যোগ্যতার শর্ত পূরণ করা না হইলে, তাহাদেরকে অযোগ্য বলিয়া ঘোষণা করিতে হইবে –
তবে শর্ত থাকে যে-
(ক) কোন আবেদনপত্রে এক বা একাধিক শর্ত পূরণে ছোটখাট ত্রুটি বা ঘাটতি থাকিলেও যদি উক্ত ত্রুটি বা ঘাটতিসমূহ দরপত্র দাখিলের জন্য ধার্যকৃত তারিখের পূর্বে সংশোধনযোগ্য হয়, তাহা হইলে আবেদনকারীকে ‘‘শর্তযুক্তভাবে প্রাকযোগ্য” হিসাবে বিবেচনা করা যাইবে; এবং
(খ) উক্তরূপ শর্তযুক্ত প্রাক-যোগ্যতার ক্ষেত্রে আরোপিত শর্ত বা শর্তাদি পূরণ করা সাপেক্ষে উক্ত আবেদনকারী মূল দরপত্র কার্যক্রমে অংশ গ্রহণ করিতে পারিবে।
(৫) নির্দিষ্ট চুক্তির অধীন কার্য সম্পাদনের ক্ষেত্রে, আবেদনকারীর সামর্থ্য নিরূপণের জন্য ক্রয়কারী নিম্নবর্ণিত মানদন্ড অনুসরণ করিবে
(ক) একই ধরনের প্রকল্প বা কর্মসূচীতে অভিজ্ঞতা ও অতীত কর্মদক্ষতা নিরূপণের ক্ষেত্রে নিম্নবর্ণিত বিষয়সমূহ বিবেচনা করা যাইবে
(অ) সমাপ্ত অনুরূপ প্রকল্প বা কর্মসূচীর ন্যূনতম সংখ্যা;
(আ) অনুরূপ সমাপ্ত প্রকল্প বা কর্মসূচীর, পৃথক ও যৌথভাবে, চুক্তিমূল্যের পরিমাণ;
(ই) আবেদনকারী যে সকল দেশে ইতঃপূর্বে কার্য সম্পাদন করিয়াছে; এবং
(ঈ) সংশ্লিষ্ট ক্রয়কারী, বা দেশে বা বিদেশের অন্যান্য ক্রয়কারীর নিকট সরবরাহকৃত প্লান্ট (plant), সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতিসহ অন্যান্য পণ্যের কার্য সম্পাদন দক্ষতা।
(খ) লোকবল, যন্ত্রপাতি এবং নির্মাণ বা উৎপাদন সুবিধাদি সম্পর্কিত দক্ষতা নিরূপণার্থে নিম্নবর্ণিত বিষয়সমূহ বিবেচনা করা যাইবে
(অ) আবেদনকারীর প্রতিষ্ঠানের মুখ্য (শবু) লোকবলের পেশাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা;
(আ) চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য আবেদনকারীর হেফাজতে বা দখলে থাকা আবশ্যক বলিয়া বিবেচিত ন্যূনতম যন্ত্রপাতির ধরন ও সংখ্যা, বা চুক্তির অধীন কার্য সম্পাদনের প্রয়োজনে চুক্তির প্রত্যাশিত মেয়াদের মধ্যে উক্ত যন্ত্রপাতি ভাড়ায় বা লীজে সংগ্রহ করার জন্য কোন চুক্তিমূলক ব্যবস্থা (contractual arrangement);
(ই) প্রস্তুতকারকের সহিত সম্পাদিত কোন চুক্তি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ন্যূনতম উৎপাদন ক্ষমতা; এবং
(ঈ) আবেদনপত্র মূল্যায়নের অংশ হিসেবে ক্রয়কারী কর্তৃক যন্ত্রপাতি বা স্থাপনা পরিদর্শনের অভিপ্রায় আছে কিনা;
(গ) কারিগরী, আর্থিক ও আইনগত বিষয়সমূহে অবশ্যপূরণীয় শর্তাদি বিধি ৪৮(২) এ বর্ণিত শর্তাদির অনুরূপ হইবে।
(৬) ক্রয়কারী, উহার বিশেষ প্রয়োজনে, ধারা ৪৮, ৪৯, ৫০ এবং এই বিধিতে বর্ণিত আদর্শ প্রাক-যোগ্যতা মূল্যায়নের বিশেষ নির্ণায়কসমূহ এবং দলিলাদি দাখিলের আবশ্যকতার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করিতে পারিবে।
(৭) কোন আবেদনকারীই প্রাক-যোগ্যতার নির্ণায়কসমূহ পূরণ করিতে সক্ষম না হইলে, ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধানের অনুমোদনক্রমে, সকল আবেদনপত্র বাতিল করা যাইবে।
(৮) উপ-বিধি (৭) এর অধীন আবেদনপত্র বাতিল করা হইলে, ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধান বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তার অনুমোদন সাপেক্ষে ক্রয়কারী নিম্নবর্ণিত পদক্ষেপসমূহ গ্রহণ করিবে-
(ক) প্রাক-যোগ্যতা নির্ধারণের জন্য আহবানপত্রে অন্তর্ভুক্ত বিষয়সমূহ পুনরীক্ষণক্রমে সন্তোষজনক বলিয়া বিবেচিত হইলে, ক্রয়কারী উক্ত আহবান সম্বলিত বিজ্ঞাপন বহুল প্রচারের উদ্দেশ্যে পুনরায় প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে, এবং বিপুল ব্যয় সাপেক্ষ ও জটিল ধরনের ক্রয়ের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিকভাবে প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে।
(খ) প্রাক-যোগ্যতা নির্ধারণের জন্য আহবানপত্রে অন্তভুর্ক্ত বিষয়সমূহ সংশোধন করিবার প্রয়োজন হইলে, উক্তরূপে সংশোধিত আহ্বানপত্র ইতঃপূর্বে আবেদনপত্র দাখিলকারী সকল ব্যক্তি বা ফার্মের অনুকূলে বিতরণের ব্যবস্থা করা যাইতে পারে; বা
(গ) দফা (ক) ও (খ) তে বর্ণিত উভয় কারণই সম্মিলিতভাবে গ্রহণযোগ্য আবেদনপত্র দাখিল না হওয়ার কারণ বলিয়া বিবেচিত হইলে, পুন- বিজ্ঞাপন প্রদান করাসহ সংশোধিত আহ্বানপত্র পূর্ববর্তী সকল আবেদনকারীর নিকট প্রেরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাইতে পারে।
(৯) কোন আবেদনকারী কর্তৃক যোগ্যতা অর্জনের উদ্দেশ্যে দাখিলকৃত তথ্য কোন সময় অসম্পূর্ণ বা অসত্য বলিয়া প্রমাণিত হইলে, ক্রয়কারী উক্ত আবেদনকারীকে অযোগ্য বলিয়া ঘোষণা করিবে, তবে সেই ক্ষেত্রে অযোগ্য ঘোষণার কারণ মূল্যায়ন প্রতিবেদনে উল্লেখ করিতে হইবে।
৫২। ক্রয়কারী কর্তৃক যোগ্যতাসম্পন্ন সরবরাহকারী বা ঠিকাদারদের তালিকা সংরক্ষণ।-
(১) শুধু সীমিত দরপত্র পদ্ধতি প্রয়োগের মাধ্যমে কোন ক্রয়কার্য সম্পাদনের ক্ষেত্রে, ক্রয়কারী যোগ্যতাসম্পন্ন সম্ভাব্য বা তালিকাভুক্ত দরপত্রদাতাগণের তালিকা সংরক্ষণ করিবে এবং উক্ত ক্ষেত্রে, দরপত্রদাতার যোগ্যতা বৎসরভিত্তিক পুনর্বিবেচনাক্রমে হালনাগাদ করিতে হইবে।
(২) ক্রয়কারী সীমিত দরপত্র পদ্ধতির অধীন ক্রয়কার্যে অংশগ্রহণে আগ্রহী সম্ভাব্য সরবরাহকারী এবং ঠিকাদারদের তালিকাভুক্তির উদ্দেশ্যে তাহাদের যোগ্যতার সমর্থনে প্রয়োজনীয় দলিলাদি দাখিলের জন্য আহবান জানাইতে পারিবে।
(৩) ক্রয়কারী কর্তৃক, সরবরাহকারী বা ঠিকাদারের তালিকাভুক্ত করার ক্ষেত্রে, নিম্নবর্ণিত পদ্ধতি অনুসরণ করিতে হইবে-
(ক) ক্রয়কারী সরবরাহ বা কার্যের ধরনের ভিত্তিতে তালিকা সংরক্ষণ করিবে;
(খ) দফা (ক) তে বর্ণিত তালিকা, তফসিল-২ অনুসারে গঠিত একটি কমিটি কর্তৃক প্রস্তুত করিতে হইবে এবং উক্ত তালিকা ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধান বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা কর্তৃক অনুমোদিত হইতে হইবে;
(ঘ) বার্ষিক বিজ্ঞাপনে প্রয়োজনীয় যোগ্যতা সংক্রান্ত তথ্য প্রদানের জন্য সকল আগ্রহী ব্যক্তিকে তফসিল-২ এ বর্ণিত সময় প্রদান করিতে হইবে; এবং
(ঙ) তালিকাভুক্তিকরণ এবং নবায়ন ফি তফসিল-২ এ উল্লিখিত পরিমাণে নির্ধারণ করিত হইবে।
(৪) উপ-বিধি (২) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, বিধি ৪৮(৬) অনুযায়ী সীমিত দরপত্র পদ্ধতির আওতায় অনধিক ৩ (তিন) কোটি টাকার অভ্যন্তরীণ কার্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে অতীতে সম্পাদিত ক্রয়কার্যের অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হইবে না।
৫৩। সহ-ঠিকাদার বা সহ-পরামর্শক নিয়োগ।-
(১) ক্রয়কারী, আদর্শ দরপত্র বা প্রস্তাব দাখিলের অনুরোধ সম্বলিত দলিলে উল্লিখিত যথাযথ যোগ্যতা থাকার সমর্থনে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল করা সাপেক্ষে, কোন সরবরাহকারী, ঠিকাদার বা পরামর্শককে সহ-ঠিকাদার বা সহ-পরামর্শক নিয়োগের অনুমতি প্রদান করিতে পারিবে।
(২) সহ-পরামর্শক হিসাবে কোন প্রস্তাবে উল্লিখিত কোন প্রতিষ্ঠান (firm) একাধিক প্রস্তাবে অংশগ্রহণ করিতে পারিবে, তবে উক্ত অংশগ্রহণ শুধু সহ-পরামর্শক হিসাবেই করিতে হইবে।
(৩) দরপত্রে সুনির্দিষ্টভাবে উল্লিখিত সহ-ঠিকাদারের যোগ্যতা ঠিকাদারের যোগ্যতা মূল্যায়নে শুধু তাহার (সহ-ঠিকাদারের) জন্য নির্ধারিত কাজের ক্ষেত্রে বিবেচনা করা যাইতে পারে।
(৪) সহ-ঠিকাদারের সাধারণ অভিজ্ঞতা এবং আর্থিক সম্পদ দরপত্রদাতার সাধারণ অভিজ্ঞতা ও আর্থিক সম্পদের সহিত যোগ করা যাইবে না।
(৫) কোন আবেদনকারী যদি ব্যক্তিগতভাবে, বা যৌথ উদ্যোগের অংশীদার হিসাবে কোন প্রস্তাব দাখিল করে, তাহা হইলে একই ক্রয় প্রক্রিয়ায় অন্য কোন আবেদনকারীর সহ-পরামর্শক হিসাবে তিনি গ্রহণযোগ্য হইবেন না।
(৬) সহ-ঠিকাদার বা সহ-পরামর্শক নিয়োগ সত্ত্বেও, সংশ্লিষ্ট ক্রয় চুক্তির অধীন পালনযোগ্য দায়-দায়িত্ব সম্পূর্ণরূপে সরবরাহকারী, ঠিকাদার ও পরামর্শকের উপর ন্যস্ত থাকিবে এবং উক্ত দায়দায়িত্ব সহ-ঠিকাদার বা সহ-পরামর্শকের নিকট হস্তান্তর করা যাইবে না, বা কোন অবস্থাতেই চুক্তিবদ্ধ দায়-দায়িত্ব সহ-ঠিকাদার বা সহ-পরামর্শকের নিকট অর্পণের অনুমতি প্রদান করা যাইবে না।
(৭) মুখ্য সরবরাহকারী বা ঠিকাদার বা পরামর্শক তাহার সহ-ঠিকাদার বা সহ-পরামর্শকগণের ব্যবস্থাপনার জন্য দায়ী থাকিবে, এবং সাব-কন্ট্রাক্টসমূহের ব্যাপারে ক্রয়কারীর পর্যালোচনা সাধারণত মুখ্য সরবরাহকারী বা ঠিকাদার বা পরামর্শক কর্তৃক সাব-কন্ট্রাক্টসমূহের ব্যবস্থাপনাগত মূল্যায়নের মধ্যেই সীমিত থাকিবে।
অংশ-১০: যৌথ উদ্যোগ (JVCA)
৫৪। যৌথ উদ্যোগ।-
(১) ক্রয়কারী, এককভাবে বা যৌথ উদ্যোগ গঠনের মাধ্যমে, কোন ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গকে কার্য ও ভৌত সেবা এবং বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত সেবা ক্রয় কার্যক্রমে অংশগ্রহণের সুযোগ প্রদান করিতে পারিবে –
(২) যৌথ উদ্যোগ সংক্রান্ত চুক্তি তফসিল-২ এ বর্ণিত মূল্যের নন-জুডিশিয়াল ষ্টাম্পে সম্পাদন করিতে হইবে এবং উক্ত চুক্তির পক্ষভুক্ত সকল ব্যক্তির আইনসম্মতভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধিগণ কর্তৃক স্বাক্ষরিত হইতে হইবে।
(৩) উপ-বিধি (২) এর বিকল্প ব্যবস্থা হিসাবে, দরপত্র বা প্রস্তাব কৃতকার্য হইলে যৌথ উদ্যোগ চুক্তি সম্পাদন করা হইবে মর্মে সকল অংশীদার কর্তৃক স্বাক্ষরিত একটি লেটার অফ ইনটেন্ট প্রস্তাবিত চুক্তিপত্রসহ দরপত্র বা প্রস্তাবের সঙ্গে দাখিল করিতে হইবে – তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত লেটার অফ ইনটেন্ট যৌথ উদ্যোগের সকল অংশীদার কর্তৃক স্বাক্ষরিত এবং নোটারী পাবলিক কর্তৃক প্রমাণীকৃত হইতে হইবে।
(৪) যৌথ উদ্যোগের ক্ষেত্রে, উহার প্রত্যেক অংশীদার চুক্তির অধীন সকল দায় এবং নৈতিক বা আইনগত বাধ্যবাধকতার ক্ষেত্রে যৌথভাবে এবং পৃথকভাবে দায়ী থাকিবে।
(৫) ক্রয় প্রক্রিয়া চলাকালে এবং চুক্তি সম্পাদন করা হইলে চুক্তি বাস্তবায়নকালে, উপ-বিধি (২) ও (৩) এর অধীন গঠিত যৌথ উদ্যোগের কোন অংশীদার বা অংশীদারগণের পক্ষে সকল কর্ম সম্পাদন এবং সকল পাওনা গ্রহণের জন্য ক্ষমতা অর্পণপূর্বক যৌথ উদ্যোগ কর্তৃক একজন প্রতিনিধি মনোনীত করিতে হইবে।
(৬) যৌথ উদ্যোগের মুখ্য অংশীদার এবং অন্যান্য অংশীদারগণের ন্যূনতম যোগ্যতার শর্ত প্রাক-যোগ্যতা, দরপত্র বা প্রস্তাব দাখিলের অনুরোধ সম্বলিত দলিলে উল্লেখকরা যাইতে পারে।
(৭) উদ্ভুত কোন বিরোধের কারণে কোন যৌথ উদ্যোগের অংশীদারদের বিরুদ্ধে কোন আইনগত কার্যধারা গ্রহণ করা হইলে, যৌথ উদ্যোগের সকল অংশীদারের বিরুদ্ধে, প্রাপ্তিসাধ্য হওয়া সাপেক্ষে, উক্ত আইনগত কার্যধারা গ্রহণ করা হইবে এবং শুধু একজন অংশীদার পাওয়া গেলে, উক্ত অংশীদার সকল অংশীদারের পক্ষে জবাব প্রদান করিবে এবং দায়েরকৃত অভিযোগ প্রমাণিত হইলে, সকল অংশীদারকে যে দণ্ড প্রদেয় হইত, উহা তাহার উপর এককভাবে প্রয়োগযোগ্য হইবে –
তবে শর্ত থাকে যে, আইনগত কার্যধারা সমাপ্ত হইবার পূর্বে যদি অন্যান্য অংশীদারদের পাওয়া যায়, তাহা হইলে উক্ত অংশীদারদের বিরুদ্ধেও ক্রয়কারী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে।
(৮) উপ-বিধি (৬), (৭) এবং (৮) এর শর্তাদি পূরণ সাপেক্ষে, শুধু বাংলাদেশী নাগরিকগণের অংশীদারিত্বে গঠিত যৌথ উদ্যোগকে স্থানীয় অগ্রাধিকার (domestic preference) প্রদান করা যাইবে।
(৯) কোন নির্দিষ্ট ক্রয় কার্যের জন্য গঠিত যৌথ উদ্যোগ, একবার গঠিত হইলে চুক্তি সম্পাদনের পূর্বে উহাতে কোন পরিবর্তন আনয়ন করা যাইবে না, তবে চুক্তি সম্পাদন পরবর্তী সময়ে ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধানের পূর্বানুমোদন গ্রহণপূর্বক কোন পরিবর্তন সাধন করা যাইবে।
(১০) কোন নির্দিষ্ট ক্রয়কার্যের জন্য গঠিত যৌথ উদ্যোগের কোন অংশীদার অযোগ্য বলিয়া প্রতিভাত হইলে বা সামগ্রিক কার্যসম্পাদনে বিরূপ প্রভাব ফেলিতে পারে এইরূপ গুরুতর কোন অসুবিধার সম্মুখীন হইলে, শুধু সেই ক্ষেত্রে কোন অংশীদার পরিবর্তনের অনুমতি দেওয়া যাইবে, তবে নূতন অংশীদারকে বিদায়ী অংশীদার অপেক্ষা উচ্চতর যোগ্যতাসম্পন্ন হইতে হইবে।
(১১) যৌথ উদ্যোগের কোন অংশীদার আইনের ধারা ৬৪ মোতাবেক দুর্নীতি, প্রতারণা, চক্রান্ত বা জবরদস্তিমূলক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ততার কারণে ক্রয়কার্যে অংশগ্রহণের অযোগ্য (debarred) বলিয়া ঘোষিত হইয়া থাকিলে, উক্ত যৌথ উদ্যোগ কোন ক্রয়কার্যে অংশগ্রহণের জন্য যোগ্য বলিয়া বিবেচিত হইবে না এবং অনুরূপভাবে কোন যৌথ উদ্যোগ উক্ত ধারা মোতাবেক ক্রয়কার্যে অংশগ্রহণের অযোগ্য বলিয়া ঘোষিত হইয়া থাকিলে, উক্ত ঘোষণা যৌথ উদ্যোগের প্রত্যেক অংশীদারের ক্ষেত্রেও সমভাবে প্রযোজ্য হইবে।
(১২) যেক্ষেত্রে বিশেষ কোন অংশের (component) জন্য মনোনীত যৌথ উদ্যোগের কোন অংশীদার উক্ত অংশের জন্য আবশ্যক ন্যূনতম যোগ্যতার শর্ত পূরণে সক্ষম, সেইক্ষেত্রে যৌথ উদ্যোগের জন্য আবশ্যকীয় সর্বমোট যোগ্যতা নিরূপণের ক্ষেত্রে উক্ত অংশীদারের অতীত অভিজ্ঞতা এবং অন্যান্য সামর্থ্য অন্যান্য অংশীদারের যোগ্যতার সহিত যোগ করিতে হইবে।
(১৩) নিম্নের উদাহরণসমূহের অনুরূপ ক্ষেত্রসমূহে, যৌথ উদ্যোগের অংশীদারদের বা তাহাদের মুখ্য জনবলের (key staff) নির্দিষ্ট কারিগরী অভিজ্ঞতা ন্যূনতম যোগ্যতার শর্ত পূরণের ক্ষেত্রে যোগ করা যাইবে না।
উদাহরণ।-(১)- কোন ক্রয় দলিলে প্রকল্প ব্যবস্থাপকের যোগ্যতার শর্তে অনুরূপ ধরনের ও পরিমাণের কাজে ৫(পাঁচ) বৎসরের অভিজ্ঞতার শর্ত থাকিলে, উক্ত ক্ষেত্রে যৌথ উদ্যোগের কোন একজন অংশীদারের প্রকল্প ব্যবস্থাপকের ৩(তিন) বৎসর এবং অপর আরেক অংশীদারের প্রকল্প ব্যবস্থাপকের ২ (দুই) বৎসরের অভিজ্ঞতা যোগ করিয়া মোট ৫(পাঁচ) বৎসরের অভিজ্ঞতার শর্ত পূরণ হইয়াছে বলিয়া নিরূপণ করা যাইবে না।
উদাহরণ।-(২) – কোন ক্রয় দলিলে দরপত্রদাতার কমপক্ষে ১০০ (একশত) মিটার স্প্যানের আরসিসি ব্রিজ নির্মাণের অতীত অভিজ্ঞতার শর্ত থাকিলে, যৌথ উদ্যোগের অংশীদারগণের অনুরূপ ব্রিজ নির্মাণের পৃথক পৃথক অভিজ্ঞতা একত্রে গণনা করিয়া (যেমন-৫০মি-+৩০মি-+২০মি-=১০০মি-) উক্ত নির্ণায়ক বা শর্ত পূরণ হইয়াছে বলিয়া নিরূপণ করা যাইবে না।
উদাহরণ।-(৩) – কোন ক্রয় দলিলে যৌথ উদ্যোগের যোগ্যতার শর্তে কোন নির্দিষ্ট ধরনের নির্মাণ কাজে দরপত্র বা প্রস্তাব দাখিলকারী প্রতিষ্ঠানের ৫(পাঁচ) বৎসরের অভিজ্ঞতা অবশ্যই থাকিতে হইবে মর্মে শর্ত থাকিলে, উক্ত ক্ষেত্রে যৌথ উদ্যোগের কোন একটি অংশীদার প্রতিষ্ঠানের ৩(তিন) বৎসর এবং অপর আরেক অংশীদার প্রতিষ্ঠানের ২(দুই) বৎসরের অভিজ্ঞতা যোগ করিয়া মোট ৫(পাঁচ) বৎসরের অভিজ্ঞতার শর্ত যৌথ উদ্যোগের দ্বারা পূরণ হইয়াছে বলিয়া নিরূপণ করা যাইবে না।
অংশ-১১: স্বার্থের সংঘাত
৫৫। স্বার্থের সংঘাত।-
(১) বিদ্যমান বা সম্ভাব্য স্বার্থের সংঘাত যাহা ক্রয়কারীকে সর্বোত্তম সেবা প্রদানে বিঘœ সৃষ্টি করিতে পারে বা সংশ্লিষ্ট কাজের ক্ষেত্রে উহা বিরূপ প্রভাব ফেলিবে বলিয়া যুক্তিসঙ্গতভাবে ধারণা করা যায়, উক্ত পরিস্থিতি সম্পর্কে ক্রয়কারীকে অবহিতকরণ আবেদনকারীর দায়িত্ব বলিয়া গণ্য হইবে এবং উহা অবহিতকরণে ব্যর্থতার কারণে তফসিল-৯ (Schedule-IX) এর অংশ-ক তে বর্ণিত সারণী (Consultants’ conflicts of interest: Range of possible cases) তে বর্ণিত পরিস্থিতিতে উক্ত পরামর্শক অযোগ্য ঘোষিত বা উহার চুক্তি বাতিল হইতে পারে।
(২) কোন পরামর্শক এবং উহার সহিত সম্বন্ধযুক্ত বা সহযোগী প্রতিষ্ঠানসমূহ বস্তুনিষ্ঠ ও পেশাগত পরামর্শ প্রদান এবং সর্বদা ক্রয়কারীর স্বার্থ সমুন্নত রাখার শর্তের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকিয়া অন্য কোন কার্যসম্পাদন বা উহার স্বীয় যৌথ স্বার্থের সহিত সংঘাত সৃষ্টি হইতে পারে এইরূপ কার্যকলাপ হইতে বিরত থাকিবে এবং ভবিষ্যতে কোন দায়িত্ব প্রাপ্তির প্রত্যাশায় কার্য সম্পাদন করিবে না।
(৩) কোন ক্রয়কারী কর্তৃক ইতঃপূর্বে কোন প্রকল্পে পণ্য সরবরাহ, কার্য সম্পাদন, বা ভৌত সেবা প্রদানের জন্য যদি কোন ব্যক্তি নিয়োজিত হইয়া থাকে, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি বা উহার সহিত সম্বন্ধযুক্ত কোন প্রতিষ্ঠান পরবর্তীতে উক্ত পণ্য, কার্য বা সেবার ক্ষেত্রে পরামর্শক সেবা প্রদানের অযোগ্য বিবেচিত হইবে।
(৪) কোন প্রকল্প প্রণয়ন বা বাস্তবায়নের জন্য কোন ব্যক্তিকে পরামর্শক সেবা প্রদানের জন্য নিয়োজিত করা হইয়া থাকিলে, উক্ত ব্যক্তি বা উহার সহিত সম্বন্ধযুক্ত কোন প্রতিষ্ঠান পূর্বে প্রদত্ত পরামর্শক সেবা হইতে উদ্ভূত বা সরাসরি সম্পর্কযুক্ত পণ্য সরবরাহ, পরামর্শক সেবা, ভৌত সেবা বা কার্য সম্পাদনের জন্য অযোগ্য বিবেচিত হইবে।
(৫) কোন পরামর্শক, উহার লোকবল ও সহ-পরামর্শকবৃন্দসহ, বা উহার সহিত সম্বন্ধযুক্ত কোন প্রতিষ্ঠানকে কোন দায়িত্ব পালনের জন্য নিযুক্ত করা যাইবে না, যদি উক্ত পরামর্শক কর্তৃক একই ক্রয়কারী বা অন্য কোন ক্রয়কারীর জন্য একই ধরনের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সংঘাতের সৃষ্টি করে।
(৬) ক্রয়কার্যে জড়িত ক্রয়কারীর কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীর সহিত কোন পরামর্শক এবং উহার সহ-পরামর্শক ও কর্মীবৃন্দের কাহারও কোন ব্যবসায়িক সম্পর্ক থাকিলে উহার সহিত চুক্তি সম্পাদন করা যাইবে না, যদি না পরামর্শক নির্বাচন প্রক্রিয়া চলাকালে উক্ত সম্পর্কজনিত সংঘাতের বিষয়টি যথাযথভাবে বিবেচনা করা হইয়া থাকে।
(৭) ক্রয়কার্যে অংশগ্রহণ করিতেছে বা করিয়াছে এইরূপ কোন প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির সহিত সংশ্লিষ্ট ক্রয়কার্যে জড়িত ক্রয়কারীর কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীর সরাসরি বা পরোক্ষভাবে কোন স্বার্থের সংশ্লিষ্ট তা থাকিলে, উক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সহিত উহার সম্পর্কের বিষয়ে একটি ঘোষণা প্রদান করিবে এবং উক্ত ক্রয়কার্যের বিনির্দেশ এবং যোগ্যতার নির্ণায়কসমূহ প্রস্তুতকরণ হইতে আরম্ভ করিয়া সংশ্লিষ্ট পণ্য সরবরাহ বা কার্য সম্পন্ন এবং ক্রয় সংক্রান্ত দায়বদ্ধতা পরিপূর্ণভাবে পালিত না হওয়া পর্যন্ত ক্রয়ের কোন পর্যায়ে উক্ত কর্মকর্তা বা কর্মচারী অংশগ্রহণ করিতে পারিবে না।
অংশ-১২: অভিযোগ ও আপীল
৫৬। অভিযোগ করার অধিকার।-
নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে বা পরিস্থিতিতে কোন ক্রয়কারীর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করা যাইবে, যথা –
(ক) প্রাক-যোগ্যতা নির্ধারণের ক্ষেত্রে-
(১) বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হওয়ার তারিখে প্রাক-যোগ্যতার দলিল প্রস্তুত করা না থাকিলে বা সম্ভাব্য আবেদনকারীর অনুরোধে উহা প্রাপ্তিসাধ্য না করা গেলে; বা
(২) সম্ভাব্য আবেদনকারীর স্পষ্টীকরণের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে যথাসময়ে তৎসম্পর্কে ব্যাখ্যা প্রদান না করা হইলে; বা
(৩) প্রাক-যোগ্যতার দলিলে উল্লিখিত নির্ণায়কের আলোকে মূল্যায়ন কমিটি যোগ্যতা মূল্যায়ন করিতে ব্যর্থ হইলে; বা
(৪) প্রাক-যোগ্যতা নির্ধারণে অন্যায়ভাবে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করা হইয়াছে মর্মে ধারণা করিবার সঙ্গত কারণ থাকিলে; বা
(৫) দুর্নীতি বা চক্রান্তমূলক কার্যকলাপ সম্পর্কে সন্দেহ হইলে।
(খ) উন্মুক্ত, সীমিত, সরাসরি, দুই-পর্যায় ও কোটেশন পদ্ধতির ক্ষেত্রে-
(১) প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, বিধি ৯০ অনুসরণক্রমে বিজ্ঞাপন প্রদান করা না হইয়া থাকিলে; বা
(২) প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হওয়ার তারিখে দরপত্র দলিল প্রস্তুত না হইয়া থাকিলে বা সম্ভাব্য দরপত্রদাতা বা কোটেশনদাতার অনুরোধে উহা প্রাপ্তিসাধ্য করা না গেলে; বা
(৩) সম্ভাব্য দরপত্রদাতার অনুরোধে যথাসময়ে ব্যাখ্যা প্রদান না করা হইলে; বা
(৪) কেবল একটি বা স্বল্পসংখ্যক প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক পূরণ করা সম্ভব, এইরূপ কারিগরী বিনির্দেশ প্রস্তুত করা হইলে; বা
(৫) প্রকাশিত বিজ্ঞাপনের শর্ত মোতাবেক, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, প্রাক-দরপত্র সভা অনুষ্ঠান করিতে ব্যর্থ হইলে বা উক্ত সভার জন্য পূর্ব নির্ধারিত তারিখ, স্থান ও সময় পরিবর্তিত হইলে যথাসময়ে উহা সম্ভাব্য দরপত্রদাতাগণকে অবহিত না করার কারণে সম্ভাব্য কতিপয় দরপত্রদাতা সভায় যোগদান করিতে সক্ষম না হইলে; বা
(৬) দরপত্র আহ্বানের বিজ্ঞাপনে প্রদত্ত বিবৃতি মোতাবেক দরপত্র উন্মুক্ত করিতে ব্যর্থ হইলে বা দরপত্র উন্মুক্তকরণের সময় অসঙ্গত আচরণ করা হইলে; বা
(৭) বিশৃঙ্খলভাবে পরিচালনার ফলে এক বা একাধিক দরপত্র নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই উন্মুক্তক্রমে উহার গোপনীয়তা ফাঁস করিয়া দেওয়া বা প্রকাশ্য সভায় দরপত্র উন্মুক্তকরণে ব্যর্থ হইলে; বা
(৮) দরপত্র দাখিলের জন্য নির্ধারিত সময়ের পূর্বে প্রাপ্ত সকল দরপত্র উন্মুক্তকরণ করা না হইলে; বা
(৯) মূল্যায়ন কমিটি দরপত্র দলিলে উল্লিখিত নির্ণায়ককের আলোকে দরপত্র মূল্যায়ন করিতে ব্যর্থ হইলে; বা
(১০) ক্রয়কারী কর্তৃক কৃতকার্য দরপত্রদাতার সহিত নিগোসিয়েশনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হইলে; বা
(১১) দুর্নীতি বা চক্রান্তমূলক কার্যকলাপ সম্পর্কে সন্দেহ হইলে; বা
(১২) ত্রুটিপূর্ণ বা অন্যায্যভাবে চুক্তি সম্পাদন করা হইয়াছে বলিয়া ধারণা করিবার সঙ্গত কারণ থাকিলে; বা
(১৩) দুই পর্যায় বিশিষ্ট দরপত্র পদ্ধতি প্রয়োগের ক্ষেত্রে, প্রথম পর্যায়ে দরপত্র মূল্যায়নের সময় প্রত্যেক ব্যক্তির নিকট হইতে ব্যাখ্যা গ্রহণের সময় গোপনীয়তা রক্ষার শর্ত লংঘন করা হইলে।
(গ) প্রস্তাব দাখিলের অনুরোধ জ্ঞাপনের ক্ষেত্রে,-
(১) কারিগরী প্রস্তাবের খাম উন্মুক্তকরণের পর ক্রয়কারী উহার গোপনীয়তা রক্ষা করিতে ব্যর্থ হইলে; বা
(২) কারিগরী প্রস্তাব উন্মুক্তকরণের সময় আর্থিক প্রস্তাব খোলা হইলে; বা
(৩) প্রস্তাব দলিলে উল্লিখিত নির্ণায়কের ভিত্তিতে প্রস্তাব মূল্যায়ন করিতে ব্যর্থ হইলে; বা
(৪) মূল্য যেখানে মূল্যায়নের একটি নিয়ামক (factor), সেইক্ষেত্রে নিগোসিয়েশনের সময় আবেদনকারীকে তৎপ্রস্তাবিত ফিসের হার পরিবর্তনের জন্য চাপ প্রয়োগ করা হইলে; বা
(৫) দুর্নীতি বা চক্রান্তমূলক কার্যকলাপ সম্পর্কে সন্দেহ হইলে; বা
(৬) অন্যায্য ও পক্ষপাতিত্বপূর্ণভাবে চুক্তি সম্পাদন করা হইয়াছে বলিয়া ধারণা করিবার সঙ্গত কারণ থাকিলে।
৫৭। প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের নিকট অভিযোগ দায়ের, নিস্পত্তি, ইত্যাদি।-
(১) কোন ব্যক্তিকে তফসিল-২ এ বর্ণিত সময়সীমার মধ্যে লিখিতভাবে তাহার অভিযোগ দাখিল করিতে হইবে।
(২) ক্রয়কারী কার্যালয়ের যে কর্মকর্তা কর্তৃক দরপত্র বা প্রস্তাব দলিল ইস্যু করা হইয়াছে প্রথমত সেই কর্মকর্তার নিকট (যেমন-প্রকল্প পরিচালক, লাইন ডাইরেক্টর, প্রকল্প ব্যবস্থাপক, ক্রয় কর্মকর্তা, ক্রয়ের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) কোন ব্যক্তি লিখিতভাবে অভিযোগ দাখিল করিবে।
(৩) উপ-বিধি (২) এ উল্লিখিত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা অভিযোগের বিষয়বস্তু বিবেচনাক্রমে উহা বাতিল বা কোন সংশোধনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হইবে কিনা তদ্বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিবেন।
(৪) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, তফসিল-২ এ বর্ণিত সময়সীমার মধ্যে, অভিযোগ বাতিলের কারণ বা উক্ত অভিযোগের ভিত্তিতে কি কি সংশোধনমূলক ব্যবস্থা (যেমন- দরপত্র বা প্রস্তাব দলিলের অগ্রহণযোগ্য শর্তের সংশোধনী আদেশ জারী) গ্রহণ করা হইয়াছে বা হইবে তদ্বিষয়ে লিখিত সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে অবহিত করিবেন।
(৫) কোন ব্যক্তি উপ-বিধি (৪) এর অধীন ক্রয়কারী কর্তৃক প্রদত্ত সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট না হইলে এবং অভিযোগ নিস্পত্তির বিষয়ে আগ্রহী হইলে, তফসিল-২ এ বর্ণিত সময়সীমার মধ্যে ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধানের নিকট লিখিতভাবে পুনরায় একই অভিযোগ দায়ের করিতে পারিবে।
(৬) কোন ব্যক্তি কর্তৃক উপ-বিধি (৫) এর অধীন ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধানের নিকট অভিযোগ দাখিল করা হইলে-
(ক) ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধান যদি মূল্যায়ন কমিটির চেয়ারপারসন বা সদস্য হন, তাহা হইলে তিনি উক্ত অভিযোগ প্রাপ্তির পর তফসিল-২ এ বর্ণিত সময়সীমার মধ্যে, উহা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সচিবের নিকট প্রেরণপূর্বক তৎসম্পর্কে সংশ্লিষ্ট অভিযোগকারীকে অবহিত করিবেন; বা
(খ) উক্ত অভিযোগ নিস্পত্তির বিষয়টি তাহার আওতাভুক্ত হইলে, তিনি অভিযোগের বিষয়বস্তু বিবেচনাক্রমে উহা বাতিল বা কোন সংশোধনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হইবে কিনা তদ্বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিবেন এবং তফসিল-২ এ বর্ণিত সময়সীমার মধ্যে কারণ উল্লেখপূর্বক অভিযোগ বাতিল বা গৃহীত সংশোধনমূলক ব্যবস্থা সম্পর্কে তাহার সিদ্ধান্ত লিখিতভাবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে অবহিত করিবেন।
(৭) কোন ব্যক্তি ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধান কর্তৃক প্রদত্ত সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট না হইলে, তফসিল-২ এ বর্ণিত সময়সীমার মধ্যে, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সচিবের নিকট উহার অভিযোগ দায়ের করিতে পারিবে।
(৮) সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সচিব, তফসিল-২ এ বর্ণিত সময়ের মধ্যে, উপ-বিধি (৬) অথবা (৭) এর অধীন দাখিলকৃত অভিযোগের বিষয়বস্তু বিবেচনাক্রমে উহা বাতিল বা কোন সংশোধনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ হইবে কিনা তদ্বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিবেন এবং কারণ উল্লেখপূর্বক অভিযোগ বাতিল বা কি কি সংশোধনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হইয়াছে তদ্বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে লিখিতভাবে অবহিতক্রমে উক্ত সিদ্ধান্তের কপি সংশ্লিষ্ট ক্রয়কারী ও সিপিটিইউকে প্রদান করিবেন।
(৯) কোন ব্যক্তি প্রত্যেকটি স্তরের জন্য নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে লিখিত সিদ্ধান্ত প্রাপ্ত না হইলে, উক্ত ব্যক্তি তফসিল-২ এ বর্ণিত সময়সীমার মধ্যে সরাসরি উক্ত কর্তৃপক্ষের পরবর্তী উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট অভিযোগ দায়ের করিতে পারিবে।
(১০) কোন ব্যক্তি যদি সচিব কর্তৃক প্রদত্ত সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট না হয়, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি রিভিউ প্যানেলের নিকট আপীল করিতে পারিবে।
(১১) এই বিধির অধীন প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের নিকট অভিযোগ দায়েরের সকল বিধান নিঃশেষ করিবার পরই কেবল কোন ব্যক্তি রিভিউ প্যানেলের নিকট আপীল করিতে পারিবে।
(১২) কোন ব্যক্তি, উপবিধি (৮) এর অধীন মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সচিব কর্তৃক প্রদত্ত সিদ্ধান্ত প্রাপ্তির পর, বা তফসিল-২ এ বর্ণিত সময়সীমার মধ্যে কোন সিদ্ধান্ত প্রাপ্ত না হইলে রিভিউ প্যানেলের চেয়ারম্যানকে সম্বোধন করিয়া “গোপনীয়” বলিয়া চিহ্নিত একটি সীলগালা করা খামে সিপিটিইউ এর ঠিকানায় নিম্নবর্ণিতভাবে অভিযোগ দায়ের করিতে পারিবেন-
(ক) অভিযোগ এবং উহার সমর্থনে দলিলাদি একটি সীলগালা করা খামে দায়ের করিবেন, যাহা কেবল রিভিউ প্যানেলের চেয়ারপারসন কর্তৃক খোলা হইবে;
(খ) দফা (ক) তে বর্ণিত সীলগালা করা ‘গোপনীয়’ খাম মহাপরিচালক, সিপিটিইউ কে সম্বোধনক্রমে একটি অগ্রায়নপত্রে রিভিউ প্যানেলের নিকট আপীল করিবার ইচ্ছা ব্যক্ত করিয়া এবং অভিযোগের ধরন উল্লেখকরিয়া প্রেরণ করিবেন; এবং
(গ) দফা (খ) তে বর্ণিত অগ্রায়নপত্রের সহিত তফসিল-২ এ বর্ণিত অংকের নিবন্ধন ফী এবং ফেরতযোগ্য নিরাপত্তা জামানত মহা-পরিচালক, সিপিটিইউ-এর অনুকূলে ব্যাংক ড্রাফট আকারে সংযোজন করিবেন।
(১৩) ক্রয়কারী এবং অন্যান্য স্তরের প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ একটি “অভিযোগ রেজিষ্টার” খুলিয়া উহাতে অভিযোগের সংক্ষিপ্ত বিবরণ ও সিদ্ধান্ত লিপিবদ্ধ করিবে।
৫৮। রিভিউ প্যানেল গঠন।-
(১) সিপিটিইউ দায়েরকৃত কোন আপীল পর্যালোচনা এবং তৎসম্পর্কে সিদ্ধান্ত প্রদানের জন্য উপ-বিধি (২) এ উল্লিখিত বিশেষজ্ঞগণের সমন্বয়ে রিভিউ প্যানেল গঠন করিবে।
(২) আইনের ধারা ৩০ অনুসারে, রিভিউ প্যানেল গঠন করিবার উদ্দেশ্যে সিপিটিইউ, তফসিল-২ অনুযায়ী এবং নিম্নবর্ণিতভাবে সুবিদিত বিশেষজ্ঞগণের একটি তালিকা প্রস্তুত করিবে-
(ক) নিম্নবর্ণিত ৩ (তিন) শ্রেণীর প্রতিটি হইতে ১ (এক) জন করিয়া সদস্য সমন্বয়ে রিভিউ প্যানেল গঠন করিতে হইবে;
(অ) ক্রয় সংক্রান্ত আইনগত বিষয়ে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন সুখ্যাত বিশেষজ্ঞগণ, যাহাদের মধ্যে সরকারী, আধা-সরকারী, স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানসমূহ বা কর্পোরেশনের অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র কর্মকর্তাগণ অন্তর্ভুক্ত হইতে পারেন;
(আ) কারিগরী বিশেষ জ্ঞানসম্পন্ন এবং ক্রয়কার্যে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন সুখ্যাত বিশেষজ্ঞগণ; এবং
(ই) ক্রয়কার্য ও চুক্তি ব্যবস্থ াপনার রীতিনীতি এবং অভিযোগ ও বিরোধ নিস্পত্তির বিষয়ে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন সুখ্যাত বিশেষজ্ঞগণ, যাহারা ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রী কর্তৃক মনোনীত হইতে পারেন –
তবে শর্ত থাকে যে প্রজাতন্ত্রের চাকুরীতে কর্মরত কোন কর্মকর্তা রিভিউ প্যানেলে অন্তর্ভুক্ত হইতে পারিবে না।
(খ) তফসিল-২ অনুসারে বিশেষজ্ঞগণকে কতিপয় রিভিউ প্যানেলে শ্রেণীভুক্ত করিতে হইবে;
(গ) রিভিউ প্যানেল কমপক্ষে ৩(তিন) জন সদস্য সমন্বয়ে গঠিত হইবে এবং তাহাদের মধ্যে একজন চেয়ারপারসন হিসেবে মনোনীত হইবেন;
(ঘ) সিপিটিইউ, উহার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রীর পূর্বানুমোদনক্রমে যথোপযুক্ত শর্তে রিভিউ প্যানেলের সদস্য ও চেয়ারপারসন মনোনীত করিবেন;
(ঙ) রিভিউ প্যানেল, অভিযোগের প্রকৃতি বিবেচনায়, সিপিটিইউ কর্তৃক সংরক্ষিত তালিকা হইতে সর্বোচ্চ ২ (দুই) জন সদস্য কেস-বাই-কেস ভিত্তিতে কো-অপট করিবার জন্য সিপিটিইউ কে অনুরোধ জানাইতে পারিবে।
(৩) রিভিউ প্যানেল ও বিশেষজ্ঞগণের তালিকা সিপিটিইউ সংরক্ষণ করিবে এবং উহা আগ্রহী ব্যক্তিদের প্রাপ্তিসাধ্য করিবে।
(৪) রিভিউ প্যানেলের কার্যপরিচালনা সহজতর করিবার বিষয়টি নিশ্চিত করিবার জন্য রিভিউ প্যানেলের প্রত্যেক সদস্যকে তফসিল-২ এ বর্ণিত আকারে উৎসাহ ভাতা বা সম্মানী প্রদানের সংস্থান রাখিতে হইবে।
(৫) সিপিটিইউ, রিভিউ প্যানেলের কার্যক্রম পরিচালনায় অনুসরণীয় একটি বিস্তারিত কার্যপদ্ধতি জারী করিবে।
(৬) সিপিটিইউ কোন অবস্থাতেই কোন অভিযোগ বা আপীল কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হইতে পারিবে না, তবে রিভিউ প্যানেলের দায়িত্ব ও কার্যাবলী সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের সুবিধার্থে প্রয়োজনীয় লজিষ্টিক সুবিধা প্রদান করিবে।
৫৯। আপীলের নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত চুক্তি সম্পাদনের নোটিশ জারী করা হইতে বিরত থাকার জন্য নির্দেশ প্রদানের ক্ষমতা।-
(১) সিপিটিইউ, তফসিল-২ এ উল্লিখিত নির্ধারিত নিবন্ধন ফী এবং নিরাপত্তা জামানতসহ কোন আপীল আবেদন প্রাপ্তির পর, তফসিল-২ এ বর্ণিত সময়সীমার মধ্যে, পালাক্রমে একটি রিভিউ প্যানেল নির্বাচন করিয়া উহার নিকট উক্ত আপীল আবেদন নিস্পত্তির জন্য প্রেরণ করিবে এবং উক্ত বিষয়ে রিভিউ প্যানেলের সিদ্ধান্ত না পাওয়া পর্যন্ত রিভিউ প্যানেল এর বিবেচনাধীন কোন ক্রয়কার্য বিষয়ে চুক্তি সম্পাদন করা হইতে বিরত থাকার জন্য ক্রয়কারীকে নির্দেশ প্রদান করিয়া সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সচিব ও আবেদনকারীকে গৃহীত ব্যবস্থা সম্পর্কে পত্র মারফত অবহিত করিবে।
(২) ক্রয়কারী বা রিভিউ প্যানেলের নিকট কোন অভিযোগ বা আপীল বিবেচনাধীন থাকিলে উক্ত অভিযোগ বা আপীলের উপর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত চুক্তি সম্পাদনের নোটিশ জারী করা যাইবে না, তবে অভিযোগ বিবেচনাধীন থাকাকালীন দরপত্র মূল্যায়ন ও উহার অনুমোদন প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখা যাইবে।
(৩) উপ-বিধি (১) এর অধীন চুক্তি সম্পাদনের নোটিশ জারী করা হইতে বিরত থাকার নির্দেশনা প্রদানের বিষয়টি প্রযোজ্য হইবে না যদি ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধান, সংশ্লিষ্ট সচিব বা মন্ত্রীর অনুমোদন গ্রহণপূর্বক, এই মর্মে সার্টিফিকেট প্রদান করে যে জনস্বার্থ বিবেচনায় সংশ্লিষ্ট ক্রয় কার্য পরিচালনা করা অপরিহার্য।
(৪) উপ-বিধি (৩) এর অধীন প্রদত্ত সনদপত্রে উক্ত ক্রয়কার্য পরিচালনার অপরিহার্যতা বিবেচনার ভিত্তি ক্রয় কার্যক্রমের রেকর্ডে সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করিতে হইবে এবং উক্ত সনদপত্র বিচার বিভাগীয় পুনর্বিবেচনা ব্যতীত অভিযোগের সকল পর্যায়ে চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।
(৫) কোন আপীল আবেদনের সহিত উপ-বিধি (১) এর অধীন নির্ধারিত নিবন্ধন ফিস এবং নিরাপত্তা জামানত জমা না দেওয়া হইলে, উক্ত কারণে আবেদনটি রিভিউ প্যানেলের নিকট উপস্থাপন করা যাইবে না মর্মে সিপিটিইউ সংশ্লিষ্ট আপীল আবেদনকারীকে অবহিত করিয়া ক্রয়কারীকে উহার অনুলিপি প্রদান করিবে।
(৬) নিয়োগপ্রাপ্ত হওয়ার অব্যবহিত পরে রিভিউ প্যানেলের চেয়ারপারসন সিপিটিইউ কর্তৃক জারীকৃত কার্যপ্রণালী মোতাবেক উহার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিবে।
৬০। রিভিউ প্যানেল কর্তৃক আপীল নিস্পত্তি।-
(১) কোন আপীল আবেদন রিভিউ প্যানেলের সিদ্ধান্তের জন্য প্রেরণ করা হইলে এবং উক্ত আপীল যথাযথ নিরাপত্তা জামানত ও নিবন্ধন ফিসসহ দায়েরকৃত হইলে রিভিউ প্যানেল, উহার সিদ্ধান্ত প্রদানের সময় পর্যন্ত, চুক্তি সম্পাদনের নোটিশ জারী সংক্রান্ত স্থগিতাদেশ অব্যাহত রাখিতে ক্রয়কারীকে পরামর্শ দিবে।
(২) রিভিউ প্যানেল, তফসিল-২ এ বর্ণিত সময়সীমার মধ্যে উহার লিখিত সিদ্ধান্ত প্রদান করিবে এবং উক্ত সিদ্ধান্তের কপি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সচিব, সিপিটিইউ এবং ক্রয়কারীকে প্রদান করিবে।
(৩) তুচ্ছ (frivolous) কারণে অভিযোগ দায়েরের কারণে উহা খারিজ এবং, ক্ষেত্রমত, নিরাপত্তা জামানত বাজেয়াপ্ত করার ক্ষেত্র ব্যতীত, আপীল নিস্পত্তির ক্ষেত্রে, রিভিউ প্যানেল নিম্নবর্ণিত যে কোন সিদ্ধান্ত স্বতন্ত্রভাবে বা সম্মিলিতভাবে প্রদান করিতে পারিবে, যথা –
(ক) কারণ উল্লেখপূর্বক আপীল আবেদন খারিজ করিয়া ক্রয়কারীকে ক্রয় কার্যক্রম পরিচালনা অব্যাহত রাখার পরামর্শ প্রদান;
(খ) আপীল আবেদনে উত্থাপিত অভিযোগের বিষয়বস্তু নিস্পত্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য বিধিবিধান ও নীতি ঊল্লেখপূর্বক উহার আওতায় অভিযোগকৃত বিষয় নিস্পত্তির জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পক্ষবৃন্দকে পরামর্শদান;
(গ) ক্রয়কারী কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপ এই বিধিমালার পরিপন্থী হইলে উহার প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ প্রদান;
(ঘ) ক্রয় সংক্রান্ত চুক্তি কার্যকরণে গৃহীত ব্যবস্থা বা সিদ্ধান্ত ব্যতীত, ক্রয়কারী কর্তৃক বিধি-বিধানের সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ নহে এইরূপ কোন কার্য বা সিদ্ধান্ত, সম্পূর্ণ বা আংশিক, বাতিলের সুপারিশ প্রদান;
(ঙ) ক্রয়কারী, এই বিধিমালার অধীন উহার বাধ্যবাধকতা প্রতিপালনে ব্যর্থ হইয়া থাকিলে, রিভিউ প্যানেল আপীল আবেদন দাখিলকারী ব্যক্তিকে দরপত্র দলিল প্রস্তুতকরণ ও আইন সংক্রান্ত ব্যয় এবং অভিযোগ দাখিল সংক্রান্ত অন্যান্য ব্যয় বাবদ ক্ষতিপূরণসহ বিধি ৫৭ (১২) (গ) এর অধীন প্রদত্ত নিরাপত্তা জামানত ফেরত প্রদানের সুপারিশ প্রদান; এবং
(চ) ক্রয় কার্যক্রম সমাপ্তির জন্য সুপারিশ প্রদান।
(৪) রিভিউ প্যানেলের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গৃহীত হইবে।
(৫) রিভিউ প্যানেলের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হইবে এবং সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষ উক্ত সিদ্ধান্ত মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।
(৬) রিভিউ প্যানেলের সিদ্ধান্ত প্রদানের পর, অবিলম্বে আপীলে উত্থাপিত অভিযোগ ও প্রদত্ত সিদ্ধান্ত সর্বসাধারণের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত রাখিতে হইবে –
তবে শর্ত থাকে যে, নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে কোন তথ্য প্রকাশ করা যাইবে না, যদি উক্ত প্রকাশ-
(ক) কোন আইনের পরিপন্থী হয়;
(খ) কোন আইনের প্রয়োগকে বাধাগ্রস্ত করে;
(গ) জনস্বার্থের পরিপন্থী হয়;
(ঘ) পক্ষবৃন্দের আইনানুগ ব্যবসায়িক স্বার্থকে বিঘ্নিত করে; বা
(ঙ) ক্রয় কার্যের অবাধ প্রতিযোগিতাকে বাধাগ্রস্ত করে।
(৭) ক্রয়কারী বা রিভিউ প্যানেল কর্তৃক এই বিধির অধীন গৃহীত সিদ্ধান্ত, উহার সমর্থনে যৌক্তিকতা ও অনুষাঙ্গিক বিষয়াদি রেকর্ডের অংশ হইবে।