জুন’২৪ এ সমাপ্তির জন্য নির্ধারিত ৩৯৫টি প্রকল্প সমাপ্ত হচ্ছে না
প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব অবহেলায় এডিপিতে নির্ধারিত ৩৯৫টি উন্নয়ন প্রকল্প যথাসময়ে সমাপ্ত হচ্ছে না। জুনে এসব প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে। নিয়মানুযায়ী মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার তিন মাস আগেই এগুলোর বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার কথা। কিন্তু এক মাস বাকি থাকলেও কোনো ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। ফলে এসবের অর্থছাড় ও ব্যয় বন্ধের প্রস্তাব দেওয়া হবে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (এনইসি) সভায়। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন। এতে ভবিষ্যতে এসব প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। ১৬ মে অনুষ্ঠেয় এনইসির বৈঠকে সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামনে বিষয়টি উপস্থাপন করা হবে।
তবে একেবারেই বাতিল না করে আগামী বাজেটের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) বিশেষ ব্যবস্থায় রাখা হচ্ছে প্রকল্পগুলো। এসব প্রকল্পে মনিটরিং ঠিকমতো হয়নি বলে ধরে নেয়া যায়।এতে প্রকল্প পরিচালকসহ জড়িতদের গাফিলতির চিত্র স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। কিন্তু পরিকল্পনা কমিশন সেই গাফিলতিকে ছাড় দিয়ে নীতিমালার বাইরে আগামী অর্থবছরের এডিপিতে প্রকল্পগুলো যোগ করবে। ভবিষ্যতে যারা দায়িত্বে অবহেলা করবেন, এর মাধ্যমে তাদের উৎসাহিত করা হবে।
এডিপি তৈরির নীতিমালায় বলা হয়েছে-যেসব প্রকল্পের মেয়াদ ৩০ জুন শেষ হবে, সেসব প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি ছাড়া পরবর্তী অর্থবছরের এডিপিতে অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব করা যাবে না। কিন্তু এটি না মেনেই আগামী অর্থবছরের এডিপিতে অন্তর্ভুক্তির জন্য ৩৯৫টি প্রকল্পের প্রস্তাব করা হচ্ছে। তবে পরিকল্পনা কমিশন বলছে, অতীত অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায়, মেয়াদ বৃদ্ধি যথাসময়ে না হওয়ায় অর্থবছরের প্রথম ৪/৫ মাস এসব প্রকল্পের অনুকূলে বরাদ্দ করা টাকা ছাড় বা ব্যয় করা সম্ভব হয় না। ফলে এডিপির বরাদ্দ কমে যায় এবং সামগ্রিকভাবে এডিপি বাস্তবায়নে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। প্রকল্পগুলো ৩০ জুনের মধ্যে মেয়াদ বৃদ্ধি বা সংশোধনের সব প্রক্রিয়া শেষ করা প্রয়োজন। যাতে অর্থবছরের শুরুতেই অর্থছাড় বা ব্যয় করা যায়। এজন্য আগামী অর্থবছরের এডিপিতে ‘তারকাচিহ্ন’ দিয়ে রাখা যেতে পারে। তবে বাস্তবায়ন মেয়াদ বৃদ্ধি ছাড়া কোনো প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ অর্থছাড় বা ব্যয় করা যাবে না। এ বিষয়ে এনইসির নির্দেশনা জানতে চাওয়া হবে।
প্রকল্পের অগ্রগত বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর সভাপতিত্বে এডিপি বাস্তবায়ন সভা হয়। পাশাপাশি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) এবং প্রকল্প স্টিয়ারিং কমিটির (পিএসসি) বৈঠকগুলোয়ও এ নিয়ে অবশ্যই আলাপ-আলোচনা হয়। তারপরও যথাসময়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন না হওয়া গ্রহনযোগ্য হতে পারে না।
সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরের (২০২৩-২৪) এডিপিতেও ঘটেছিল একই ঘটনা। ২০২২-২৩ অর্থবছরের এডিপি থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ উন্নয়ন প্রকল্প তারকাচিহ্ন দিয়ে যোগ করা হয়। এসব প্রকল্পের মধ্যে ১৫ বছর চলমান প্রকল্প ছিল একটি এবং ১৩ বছর চলমান একটি। এছাড়া এক যুগ বা এরও বেশি সময়ের তিনটি, ১১ বছর ও এর বেশি দুটি, ১০ বছর ও এর বেশি সময়ের পাঁচটি এবং নয় বছর ও এর বেশি সময় চলা প্রকল্প ছিল ছয়টি। আগামী অর্থবছরের মেয়াদোত্তীর্ণ প্রকল্প গুলোরও প্রায় একই অবস্থা।
এই লেখকের অন্যান্য লেখা
সরকারি ক্রয়ে Conflicts of Interest কি ?
দ্বন্দ্ব বা Conflicts দৈনন্দিন জীবনে দেখা যায় এবং এটি একটি স্বাভাবিক, প্রায়শই স্বার্থপর এবং কখনও কখনও উৎপাদনশীল ঘটনা (productive phenomenon)।
Conflicts of Interest বা স্বার্থের দ্বন্দ্ব কি ?
দ্বন্দ্ব বা Conflicts দৈনন্দিন জীবনে দেখা যায় এবং এটি একটি স্বাভাবিক, প্রায়শই স্বার্থপর এবং কখনও কখনও উৎপাদনশীল ঘটনা (productive phenomenon)।
প্রকিউরমেন্ট অডিট কি, কেন, কে করবে ?
সরকারি ক্রয় নিরীক্ষা (Procurement Audit) সরকারি নিরীক্ষা (Government Audit) এর একটি অবিচ্ছেদ্দ অংশ। এই প্রকিউরমেন্ট অডিট ছাড়াও আরও অনেক ধরনের
এলসি এবং ব্যাংকের গ্যারান্টি মধ্যে পার্থক্য কি ?
টেন্ডারে “ব্যাংক গ্যারান্টি (Bank Guarantee)” এবং “লেটার অব ক্রেডিট (letter of credit) বা এলসি (LC)” শব্দ দুটি প্রায়ই দেখা যায়। বেশিরভাগ