যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে গত শুক্রবার (২৮ জুলাই ২০১৭) অনুষ্ঠিত বিশ্বব্যাংকের বোর্ড সভায় সরকারি কেনাকাটায় বিশ্বব্যাংকের নতুন প্রকল্পের ঋণ অনুমোদিত হয়। ডিজিটাইজিং ইমপ্লিমেন্টেশন মনিটরিং এন্ড পাবলিক প্রকিউরমেন্ট প্রজেক্ট নামে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট সাড়ে ৫ কোটি ডলার দেয়া হবে। বিশ্বব্যাংকের তথ্য মতে প্রতি বছর বাংলাদেশ মোট ৭০০ কোটি ডলারের কেনাকাটা করে। এর মধ্যে ৭০ শতাংশই কেনা কাটা হয় বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীতে (এডিপি)।
প্রকল্পটির উদ্দেশ্য হচ্ছে সরকারি কেনাকাটা পদ্ধতির উন্নয়ন এবং তদারকি ব্যবস্থা আরও জোরদার করা। এ প্রকল্পের মাধ্যমে সরকারের চলমান ই-জিপি কার্যক্রমকে সম্প্রসারিত করা হবে। এতে সরকারি ক্রয় কার্যক্রমের উন্নয়নের পাশাপাশি উন্নয়ন প্রকল্প তদারকিতে প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি করা হবে। ফলে জনগনের টাকার সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত হবে বলে বিশ্বব্যাংক মনে করছে।
ঢাকায় নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর চিমিয়াও ফান বলেন, প্রকল্পটি বাস্তকবায়নের মধ্য দিয়ে কার্যকর সরকারি কেনাকাটার মাধ্যমে সরকারি সম্পদের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা যাবে। ফলে সরকারের উচ্চ-মধ্য আয়ের দেশে যাওয়ার পথ সুগম করবে।
প্রকল্পটির একটি বড় উপাদান হচ্ছে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান সমূহে ই-জিপি বাস্তবায়ন। ৫ বছর ব্যাপী নতুন প্রকল্পটির মাধ্যমে অন্তত মোট ১৩০০ টি ক্রয়কারি দপ্তরে ই-জিপি বাস্তবায়ন করা হবে যার মধ্যে মোট ৮৮৮টি দপ্তররে ই-জিপি বাস্তবায়ন ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকবে এলজিইডি। এলজিইডির মাধ্যমে আরো পেশাদারী দৃষ্টি-ভংগিতে ই-জিপি বাস্তবায়নের জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতায় ৩২৭টি পৌরসভা, ৪৯১টি উপজেলা পরিষদ, ৬১টি জেলা পরিষদ এবং ৯টি সিটি কর্পোরেশন কে (ঢাকা উত্তর এবং ঢাকা দক্ষিন বাদে) অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এর আধীন স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতায় সকল স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে গত ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখের মধ্যে ১০০% ই-জিপি বাস্তবায়নের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে সকল প্রতিষ্ঠানে এখনও তা বাস্তবায়িত হয় নাই।
বর্তমান সরকার গত ২০১১ ইং তারিখে উন্নয়ন কার্যক্রমকে আরও গতিশীল এবং সরকারী অর্থ ব্যয়ে অধিকতর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ই-টেণ্ডারিং ব্যবস্থা প্রবর্তন করে। ইলেকট্রনিক গভর্নমেন্ট প্রকিউরমেন্ট (ই-জিপি) সিস্টেম টি সরকারী দপ্তরগুলো তে ইতোমধ্যেই জনপ্রিয় হয়েছে এবং এর মাধ্যমে দিন দিন দরপত্র আহবানের পরিমানও উল্লখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ১ লক্ষ ৬ হাজারের মত ই-জিপিতে দরপত্র আহবান করা হয়েছে যার মধ্যে প্রায় ৪৮% দরপত্র-ই এলজিইডির। বাংলাদেশে ই-জিপি বাস্তবায়নে এলজিইডির ভূমিকা অগ্রগন্য যা বিশ্বব্যাংক এবং সরকারের বিভিন্ন প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নে এই বিশাল সংখ্যক অফিসে ই-জিপি বাস্তবায়ন একটি চেলেঞ্জ হবে বলে সবাই মনে করছে। তবে এলজিইডির ই-জিপি বাস্তবায়নে অতীত সাফল্যের হার এবং দাতা সংস্থাদের সাথে কাজ করার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা এই চেলেঞ্জ মোকাবেলায় অনুপ্রেরণা যোগাবে বলে আশা করা যায়।
পূর্বের রিপোর্ট দেখতে ক্লিক করুনঃ উপজেলা পরিষদে অনলাইন টেন্ডার
1 thought on “স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠাগুলোর ই-জিপি রূপায়ণে সহযোগি হিসেবে কাজ করবে এলজিইডি”
Bangladesh /Madaripur