স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান সমূহে ই-জিপি বাস্তবায়নের জন্য এলজিইডি মোট ২২ টি ই-জিপি রিসোর্স সেন্টার বা ই-জিপি ল্যাব প্রস্তুত করছে। এই রিসোর্স সেন্টারগুলোর মাধ্যমেই এলজিইডির নিয়মিত কর্মকর্তাগন ছাড়াও দেশের প্রায় সকল পৌরসভা, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ এবং সিটি কর্পোরেশনের মোট ৮৮৮টি দপ্তরের কর্মকর্তাগন প্রশিক্ষন গ্রহন করবেন। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান সমূহের প্রশিক্ষন প্রদানের জন্য এই রিসোর্স সেন্টারগুলো প্রস্তুত করা হলেও আসলে এখানে বিভিন্ন স্টেক-হোল্ডার যেমন ঠিকাদার, অন্যান্য সরকারী দপ্তর, স্থানীয় আগ্রহী জনগন এর অত্যাধুনিক সুবিধা ব্যবহার করে হাতে কলমে শিখতে পারবে বলে জানা গেছে।
বিশ্বব্যাংকের সাহায্যপুষ্ট ডিজিটাইজিং ইমপ্লিমেন্টেশন মনিটরিং এন্ড পাবলিক প্রকিউরমেন্ট প্রজেক্ট এর মাধ্যমে এই ২২ টি ই-জিপি রিসোর্স সেন্টার নির্মান/সম্প্রসারনের কাজ প্রক্রিয়াধীন আছে। আগামী জুলাই-আগষ্ট ২০১৮ সাল নাগাদ তা ব্যবহার উপযোগি হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এলজিইডির ১৪ টি আঞ্চলিক অফিস (ঢাকা, চট্রগ্রাম, সিলেট, বরিশাল, কুমিল্লা, ফরিদপুর, খুলনা, পটুয়াখালী, ময়মনসিংহ, রাজশাহী, বগুড়া, যশোর, রংপুর ও দিনাজপুর) ছাড়াও আরও ৮ টি জেলায় (নারায়গঞ্জ, রাঙ্গামাটি, মৌলভীবাজার, নোয়াখালী, মাদারীপুর, জামালপুর, কুষ্টিয়া ও পাবনা) এই সেন্টার গুলো অবস্থিত। এ ছাড়াও এলজিইডি’র সদর দপ্তরে আরও ৩টি কেন্দ্রীয় ই-জিপি ল্যাব এ এ বিষয়ক প্রশিক্ষন কার্যক্রম চলমান আছে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব জনাব ড. জাফর আহমেদ খান গত ১৬ই এপ্রিল ২০১৮ ইং তারিখে এলজিইডির একটি কেন্দ্রীয় ই-জিপি ল্যাব পরিদর্শন করে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। তখন তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন এলজিইডির মাননীয় প্রধান প্রকৌশলী জনাব মোঃ আবুল কালাম আজাদ সহ এলজিইডির আরও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ। পরিদর্শনকালীন সময়ে তিনি এই ল্যাবগুলো এলজিইডি তথা বাংলাদেশে ই-জিপি বাস্তবায়নে বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
প্রতিটি ই-জিপি রিসোর্স সেন্টার ১টি ল্যাপটপ, ২০টি ডেস্কটপ কম্পিউটার ও প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র (কম্পিউটার টেবিল ও চেয়ার) সহ প্রজেক্টর, অত্যাধুনিক Interactive Board, সাউন্ড সিষ্টেম, নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতের লক্ষ্যে সার্বক্ষনিক জেনারেটর ও On-line IPS, দ্রুত গতির ইন্টারনেট সংযোগ, শীতাতপ নিয়ন্ত্রন ব্যাবস্থা, ইত্যাদি সকল সুযোগ সুবিধা থাকবে।
এ সকল ই-জিপি রিসোর্স সেন্টারে প্রশিক্ষনসমূহ স্থানীয় পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে প্রশিক্ষণ প্রদানে যোগ্যদের দ্বারা গঠিত প্রশিক্ষক পুল (Trainer Pool) এর মাধ্যমে পরিচালনা করা হবে। ই-জিপি’র বিশেষ প্রশিক্ষণ (e-Tender, e-CMS), সরকারী ক্রয় আইন ও বিধিমালা, আইসিটি প্রশিক্ষন সহ অন্যান প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা থাকবে।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এর আধীন স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতায় সকল স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে গত ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখের মধ্যে ১০০% ই-জিপি বাস্তবায়নের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে সকল প্রতিষ্ঠানে এখনও তা বাস্তবায়িত হয় নাই। এই রিসোর্স সেন্টারগুলো তথা এলজিইডির মাধ্যমে আরো পেশাদারী দৃষ্টি-ভংগিতে ই-জিপি বাস্তবায়নের জন্য এই উদ্যোগ এবং এপ্রোচ ইতিমধ্যেই সবার প্রশংসা পেয়েছে।
বর্তমান সরকার গত ২০১১ ইং তারিখে উন্নয়ন কার্যক্রমকে আরও গতিশীল এবং সরকারী অর্থ ব্যয়ে অধিকতর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ই-টেণ্ডারিং ব্যবস্থা প্রবর্তন করে। ইলেকট্রনিক গভর্নমেন্ট প্রকিউরমেন্ট (ই-জিপি) সিস্টেম টি সরকারী দপ্তরগুলো তে ইতোমধ্যেই জনপ্রিয় হয়েছে এবং এর মাধ্যমে দিন দিন দরপত্র আহবানের পরিমানও উল্লখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ১ লক্ষ ৭০ হাজারের মত ই-জিপিতে দরপত্র আহবান করা হয়েছে যার মধ্যে প্রায় ৫০% দরপত্র-ই এলজিইডির। বাংলাদেশে ই-জিপি বাস্তবায়নে এলজিইডির ভূমিকা অগ্রগন্য যা বিশ্বব্যাংক এবং সরকারের বিভিন্ন প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
এখন, এলজিইডির মাধ্যমে প্রস্তুতকৃত এই ই-জিপি রিসোর্স সেন্টার গুলো সার্বিকভাবে দেশের ই-জিপি সম্প্রসারনে গূরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যায়।
পূর্বের রিপোর্ট দেখতে ক্লিক করুনঃ স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠাগুলোর ই-জিপি রূপায়ণে সহযোগি হিসেবে কাজ করবে এলজিইডি