এখানে কয়েকটি বিধি নিয়ে আলোচনা করা হলো। তবে পাঠকদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, এই “প্রকিউরমেন্টবিডি” তে উল্লেখিত আইন বা বিধির কোন ধারা বা বিধিমালার কোন বিষয় যাচাই ব্যতীত ব্যবহার না করার জন্য সতর্ক করা হচ্ছে। এখানে ব্যবহৃত যে কোন ধারা বা বিধি শুধু মাত্র বিভিন্ন আলোচনা ও সংশ্লিষ্ট প্রেক্ষাপট বোধগম্য করার জন্য উল্লেখ করা হয়েছে। বাস্তবিক প্রয়োজনে সিপিটিইউ এর ওয়েব-সাইটে সংযুক্ত আইন বা বিধিমালা থেকে তা ব্যবহার করতে হবে।
৭৪। সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি।-
(১) ক্রয়কারী দরপত্র প্রক্রিয়া বা অন্য কোন ক্রয় পদ্ধতি প্রয়োগ ব্যতিরেকে, সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি প্রয়োগ করিয়া একটি উৎস হইতে পণ্য ও সংশ্লিষ্ট সেবা, বা কার্য ও ভৌত সেবা ক্রয় করিতে পারিবে, তবে কোন অবস্থাতেই অবাধ প্রতিযোগিতা এড়াইবার বা কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তি, সরবরাহকারী ও ঠিকাদারের প্রতি বৈষম্য সৃষ্টি বা আনুকূল্য প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে এই পদ্ধতি প্রয়োগ করা যাইবে না ।
(২) সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে অবাধ প্রতিযোগিতার সুফল পাওয়া যায় না বা স্বচ্ছতার অভাব থাকে বা অগ্রহণযোগ্য এবং প্রতারণামূলক তৎপরতাকে উৎসাহিত করা হইতে পারে বিধায় ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধান এই পদ্ধতির প্রয়োগ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করিবেন।
(৩) এই বিধিমালায় বর্ণিত পরিস্থিতিতেই যেন এই পদ্ধতির প্রয়োগ সীমিত থাকে এবং ইহার কোন অপব্যবহার না হয়, তাহা নিশ্চিত করার জন্য সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি প্রয়োগের সিদ্ধান্ত ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধান বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কর্তৃক অনুমোদিত হইতে হইবেঃ
তবে শর্ত থাকে যে, বিধি ৮১ এবং বিধি-৮২ এ বর্ণিত ক্রয় পদ্ধতির ক্ষেত্রে বাজেট বরাদ্দ এবং বাজেট বিভাজন অনুমোদন সাপেক্ষে, ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধান বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তার অনুমোদন প্রয়োজন হইবে না।
(৪) ব্যতিক্রমী ক্ষেত্রে, কোন মূল চুক্তির ব্যাপ্তি মোতাবেক কাজ জরুরী ভিত্তিতে সমাপ্ত করা আবশ্যক হইলে, যে অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ মূল চুক্তি সম্পাদনের অনুমোদন প্রদান করিয়াছিল, উহার পরবর্তী উচ্চতর পর্যায়ের কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে তফসিল-২ এ বর্ণিত মূল্যসীমার ঊর্ধ্বের ভেরিয়েশন অর্ডার বা অতিরিক্ত কার্যাদেশ বা পুনরাবৃত্ত ক্রয়াদেশ অথবা অতিরিক্ত পণ্য সরবরাহের আদেশ প্রদান করা যাইবে।
ব্যাখ্যা – মূল অনুমোদনকারী কর্তৃ পক্ষ ক্রয়কারী হইলে, ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধান, এবং ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধান মূল অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ ও সচিব পর্যায়ের নিন্মে হইলে, মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সচিব এবং অনুরূপভাবে পরবর্তী পর্যায়ের কর্তৃপক্ষ, তফসিল-২ এ বর্ণিত মূল্যসীমার ঊর্ধ্বের ভেরিয়েশন অর্ডার বা অতিরিক্ত কার্যাদেশ বা পুনরাবৃত্ত ক্রয়াদেশ অথবা অতিরিক্ত পণ্য সরবরাহের আদেশ অনুমোদন করিবে।
৭৫। সরাসরি ক্রয় চুক্তির ধরন।-
(১) প্রসঙ্গের পরিপন্থী না হওয়া সাপেক্ষে, নিুবর্র্ণিত যে কোন ক্ষেত্রে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি প্রয়োগ করা যাইতে পারে-
(ক) সরাসরি চুক্তি (direct contracting);
(খ) অতিরিক্ত সরবরাহ এবং পুনরাবৃত্ত ক্রয়াদেশ (additional deliveries and repeat orders);
(গ) ভেরিয়েশন অর্ডার (Variation orders);
(ঘ) অতিরিক্ত কার্যাদেশ (extra work order);
(ঙ) সরাসরি নগদ ক্রয় (direct cash purchase); বা
(চ) ফোর্স একাউন্ট (Force account).
(২) এই বিধি অনুসরণে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি প্রয়োগের ক্ষেত্রে ক্রয়কারী উহার প্রয়োজনীয়তা এবং মান, পরিমাণ, এবং সরবরাহের সময় ও শর্তাদির বিস্তারিত বর্ণনা প্রণয়ন করিবে।
(৩) ক্রয়কারী প্রথমে সরাসরি দরপত্রদাতার নিকট হইতে মূল্য সম্বলিত প্রস্তাব (priced offer) আহ্বান করিবে এবং পরবর্তীতে নির্বাচিত একমাত্র দরপত্রদাতার সহিত নিগোসিয়েশন করিতে পারিবে।
(৪) সরাসরি ক্রয়ের ক্ষেত্রে কোন বিজ্ঞাপন প্রকাশের প্রয়োজন হইবে না।
(৫) সরাসরি ক্রয়ের ক্ষেত্রে দরপত্র জামানতের প্রয়োজন নাই, তবে সরবরাহকারী বা ঠিকাদারের নিকট হইতে, বিধি ২৭ এর উপ-বিধি (৯) এবং বিধি ৮১ ও ৮২ এর অধীন ক্রয়ের ক্ষেত্র ব্যতীত, কার্য সম্পাদন জামানত গ্রহণ করিতে হইবে।
(৬) বিধি ৮১ এবং ৮২ এর অধীন ক্রয় ব্যতিরেকে, নূতন চুক্তির ক্ষেত্রে উভয় পক্ষের মধ্যে নূতন চুক্তি স্বাক্ষর করিতে হইবে এবং ভেরিয়েশন অর্ডার, অতিরিক্ত কার্যাদেশ, পুনরাবৃত্ত ক্রয়াদেশ বা অতিরিক্ত পণ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে মূল চুক্তির সংশোধন সম্বলিত সংশোধিত চুক্তি স্বাক্ষর করিতে হইবে।
৭৬। সরাসরি চুক্তির প্রয়োগ।-
(১) নিম্নবর্ণিত যে কোন শর্ত প্রতিপালন সাপেক্ষে, ক্রয়কারী কেবল একজন সরবরাহকারী বা ঠিকাদারকে দরপত্র দাখিলের জন্য আহ্বান জানাইতে পারিবে –
(ক) যদি পেটেন্ট, ব্যবসায়িক গোপনীয়তা এবং একক স্বত্বাধিকারের (copyrights) কারণে একই ধরনের পণ্য প্রস্তুতকরণে অন্যদেরকে নিবৃত্ত রাখা হয়, সেইক্ষেত্রে একক স্বত্বাধিকারভুক্ত পণ্য ও সংশ্লিষ্ট সেবা কেবলমাত্র একক স্বত্বাধিকারীর নিকট হইতেই ক্রয়ের ক্ষেত্রে; বা
(খ) কোন নির্দিষ্ট উৎপাদনকারী, সরবরাহকারী বা পরিবেশকের প্রকল্পের কার্য সম্পাদনের দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে চুক্তির শর্তানুযায়ী উক্ত উৎপাদনকারী, সরবরাহকারী বা পরিবেশকের নিকট হইতে জটিল ধরনের প্লান্টের গুরুত্বপূর্ণ অংশসমূহ ক্রয় করিতে হইবে মর্মে কোন পূর্বশর্ত থাকিলে; বা
(গ) যে সকল পণ্য কোন একক ডিলার বা উৎপাদনকারী কর্তৃক বিক্রয় করা হয় এবং যাহার এমন কোন সাব-ডিলার নাই যাহারা নিম্নতর মূল্যে উক্ত পণ্য বিক্রয় করিতে পারে, বা অধিকতর সুবিধাজনক শর্তে উহার উপযুক্ত কোন বিকল্প পণ্য প্রাপ্তির সুযোগ নাই; বা
(ঘ) ক্রয়ের সময়ে বলবৎ যুক্তিসঙ্গত বাজারমূল্যে পচনশীল পণ্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে (যেমন- তাজা ফল, সব্জী এবং অনুরূপ পণ্য); বা
(ঙ) ব্যতিক্রমী সুবিধাজনক শর্তে পণ্য ও সংশ্লিষ্ট সেবা ক্রয়, যদি উক্ত পণ্য অতি সাম্প্রতিক কালে উৎপাদিত, অব্যবহৃত এবং উৎপাদনকারীর গ্যারান্টিযুক্ত হয়; বা
(চ) কৃষকের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিতকল্পে সরকার কর্র্তৃক নির্ধারিত মূল্যে কৃষকদের নিকট হইতে সরাসরি কৃষিপণ্য এবং অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ক্রয় করা হইলে; বা
(ছ) বিশেষ ক্ষেত্রে সরকারি মালিকানাধীন শিল্প ও কারখানায় সংযোজিত ও উৎপাদিত পণ্য ও সংশ্লিষ্ট সেবা সরকারের নিজস্ব অর্থে ক্রয় করা হইলে;
ব্যাখ্যা: “সরকারি মালিকানাধীন শিল্প ও কারখানায় সংযোজিত ও উৎপাদিত পণ্য” বলিতে জাহাজে করিয়া ইতোমধ্যে অধিক পরিমাণে কোন বিভাজ্য পণ্য যেমন, খাদ্যশস্য, গম, চিনি, সার, ইত্যাদি বন্দরে আসিয়াছে, তাহা জরুরি প্যাকেটজাত করিবার লক্ষ্যে সরকারি মালিকানাধীন শিল্প ও কারখানা হইতে সরকারের নিজস্ব অর্থে বস্তা ক্রয়, সরকারি কারখানা হইতে যানবাহন বা যন্ত্রপাতি মেরামত, সরকারি কারখানার বিদ্যমান সরঞ্জামাদি অন্য সরকারি কারখানা হইতে মেরামত, ১৫ সেপ্টেম্বর, ১৯৮৯/ ৩১ শে ভাদ্র ১৩১৬ তারিখে শিল্প মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারীকৃত শিল্প/স্বস-৩/পার-১১/৮৮/২৫৫ নং প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী কর্পোরেশন, রাষ্ট্রায়ত্ব শিল্প প্রতিষ্ঠান/কারখানা এবং ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের মধ্যে সাব-কন্ট্রাকটিং ব্যবস্থাধীনের মাধ্যমে লিংকেজ স্থাপনপূর্বক ধাতব, প্লাষ্টিক, চীনামাটি প্রভৃতি হইতে প্রস্তুত যন্ত্রপাতি/যন্ত্রাংশ সংগ্রহের জন্য প্রণীত বিধিমালা ও জাতীয় শিল্পনীতি, ২০১০ এর নীতি ১৫.৪ এর (খ) এর আলোকে প্রয়োজনীয় খুচরা যন্ত্রাংশ বা যন্ত্রপাতির চাহিদা দেশীয় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের মাধ্যমে পূরণ, ইত্যাদিকে বুঝাইবে;
(জ) কোন সরকারী বা বিধিবদ্ধ সংস্থা কর্তৃক অনুমোদিত বিনির্দেশ অনুসারে স্থানীয় ক্ষুদ্র শিল্প প্রতিষ্ঠান হইতে কোন বিশেষায়িত পণ্য ক্রয় করা হইলে; বা
(ঝ) বিদ্যমান সরঞ্জামাদির খুচরা যন্ত্রাংশ ক্রয়ের ক্ষেত্রে, সরবরাহকারীর পরিবর্তনের ফলে যদি সংগৃহীতব্য বা প্রাপ্তব্য খুচরা যন্ত্রাংশ বা সেবা, বিদ্যমান স্থাপনা ও সরঞ্জামাদি, যন্ত্রাংশ বা সেবার ক্ষেত্রে প্রতিস্থাপনযোগ্য না হয়; বা
(ঞ) প্রাকৃতিক দুর্যোগ হইতে উদ্ভূত কোন জরুরী পরিস্থিতি বা অনুরূপ সংকট মোকাবেলায় তফসিল-২ এ বর্ণিত মূল্যসীমার মধ্যে পণ্য, কার্য এবং সেবা ক্রয় করা হইলে; বা
(ট) তফসিল-২ এ বর্ণিত মূল্যসীমা অতিক্রম না করা সাপেক্ষে, অতি জরুরী বা প্রয়োজনীয় পণ্য, কার্য এবং সেবা ক্রয় (যথা: ক্যাটারিং সেবা, অ্যামবুলেন্স সেবা, পরিবহণ সেবা, অনুষ্ঠান ব্যবস্থাপনা, মেরামত বা রক্ষণাবেক্ষণ কাজ, প্লামবিং সেবা, কাঠের কাজ সংক্রান্ত সেবা, স্থাপত্য সেবা, ইত্যাদি)।
(২) সরকার, আইনের ধারা ৬৮ অনুসারে, জরুরী প্রয়োজনে তফসিল-২ এ বিধি-৭৬(১) এর বিপরীতে বর্ণিত মূল্যসীমার ঊর্ধ্বের ক্রয়ের ক্ষেত্রে, অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সুপারিশক্রমে, সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি প্রয়োগ করিয়া ক্রয়কার্য সম্পন্ন করিতে পারিবে।
(৩) দারিদ্র্য নিরসনের লক্ষ্য সম্বলিত প্রকল্পের প্রকল্প দলিলে বা কর্মসূচীতে অথবা অন্য কোন অনুমোদিত প্রকল্প দলিল বা কর্মসূচীতে, সংস্থান থাকা সাপেক্ষে, প্রকল্পের বা কর্মসূচীর পরিচালন ম্যানুয়াল (Operation manual) অনুসরণক্রমে প্রকল্পের বা কর্মসূচীর সুবিধাভোগী সংগঠন, ভূমিহীন জনগোষ্ঠী অথবা গ্রামীণ সংগঠনের সহিত ক্রয়কারী সরাসরি চুক্তি সম্পাদন করিতে পারিবেঃ
তবে শর্ত থাকে যে, প্রকল্প বা কর্মসূচী বাস্তবায়ন কমিটি উক্ত ম্যানুয়াল অনুসরণে ক্ষুদ্র কার্য, আনুষঙ্গিক মালামাল অথবা সরাসরি শ্রম ক্রয় করিবে।
(৪) স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহ (জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদ) প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি, শ্রম চুক্তি সমিতি, স্কীম বাস্তবায়ন কমিটি বা অন্য কোন কমিটি, উহা যেই নামে অভিহিত করা হউক না কেন, এর মাধ্যমে স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক সময় সময় জারীকৃত নির্দেশিকায় বর্ণিত আর্থিক সীমা ও পদ্ধতি অনুসরণপূর্বক কোন প্রকল্পের জন্য ক্ষুদ্র কার্য, পণ্য এবং সরাসরি শ্রম ক্রয় করিতে পারিবে।
(৫) ক্যাটারিং সার্ভিস, নিরাপত্তা সেবা, কুরিয়ার ডাক সেবা বা অনুরূপ অন্য কোন সেবার ন্যায় একক সেবাদানমূলক কাজ (stand alone service) সংক্রান্ত মূল ঠিকাদারের সহিত সম্পাদিত চুক্তি বৎসরভিত্তিক বা সীমিত কালের জন্য অনধিক দুইবারের জন্য বৃদ্ধি করা যাইবে, যদি প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে উক্ত ঠিকাদারকে মূল কার্যাদেশ প্রদান করা হইয়া থাকে।
(৫) ভৌত সেবা প্রদানকারীর সহিত সম্পাদিত চুক্তি, সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি অনুসরণপূর্বক, বৎসরভিত্তিক বা তদপেক্ষা সল্পতর সময়ের জন্য বৃদ্ধি করা যাইবে, যদি প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে উক্ত সেবা প্রদানকারীকে কার্যাদেশ প্রদান করা হইয়া থাকে এবং ইতঃপূর্বেকার চুক্তি অনুযায়ী প্রদত্ত সেবা সন্তোষজনকভাবে প্রতিপালিত হয়।
৭৭। পণ্যের অতিরিক্ত সরবরাহ এবং পুনরাবৃত্ত ক্রয়াদেশ।-
(১) মূল সরবরাহকারী বা ঠিকাদারকে সমধর্মী পণ্য ও সংশ্লিষ্ট সেবার অতিরিক্ত সরবরাহের আদেশ, অথবা পণ্য বা কার্যের পুনরাবৃত্ত ক্রয়াদেশ প্রদানের ক্ষেত্রে নিম্নবর্ণিত সকল শর্ত প্রতিপালন করিতে হইবে –
(ক) চুক্তিমূল্য তফসিল-২ এ বর্ণিত মূল্যসীমা অতিক্রম করিতে পারিবে না, তবে মূল্য যাচাই করিবার পর উক্ত মূল্য তখনও ক্রয়কারীর ক্ষেত্রে সুবিধাজনক হইতে হইবে;
(খ) আইন ও বিধিমালায় নির্ধারিত শর্ত পালন এবং বিকল্প ক্রয় পদ্ধতিসমূহের আবশ্যকতাকে কোন উপায়ে পরিহার করিবার উদ্দেশ্যে সামগ্রিক চুক্তি বা ক্রয়াদেশকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সংখ্যায় এবং মূল্যসীমায় বিভক্ত করিয়া অথবা চুক্তি বাস্তবায়নকে কৃত্রিম পর্বে অথবা সাব-কন্ট্রাক্টে বিভাজনপূর্বক পুনরাবৃত্ত ক্রয়াদেশ (repeat order) প্রদানের মাধ্যমে ক্রয় করা যাইবে না; এবং
(গ) সরবরাহ, সেবা বা স্থাপন সংক্রান্ত বিদ্যমান চুক্তি বর্দ্ধিতকরণ, যদি প্রতিযোগিতামূলক ক্রয় প্রক্রিয়া অনুসরণক্রমে মূল চুক্তি স¤পাদিত হইয়া থাকে।
৭৮। ভেরিয়েশন অর্ডার বা অতিরিক্ত কার্যাদেশ জারী।-
(১) বাস্তব অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে পরিকল্পনা, ডিজাইন অথবা বিন্যাসের পরিবর্তনজনিত কারণে কার্যের সংযোজন বা বিয়োজন, প্রকল্পের সাধারণ ব্যাপ্তি ও ভৌত সীমানার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকা সাপেক্ষে, কার্যের নূতন আইটেম অন্তর্ভুক্তিসহ পরিমাণগত বৃদ্ধি বা হ্রাসের জন্য ক্রয়কারী মূল ঠিকাদারের নিকট হইতে কার্য ও ভৌত সেবা ক্রয়ের জন্য ভেরিয়েশন অর্ডার জারী করিতে পারিবে।
(২) ক্রয়কারী, প্রকল্প এলাকার ভূ-গর্ভস্থ অথবা প্রচ্ছন্ন ভৌত অবস্থা চুক্তিতে বর্ণিত অবস্থা হইতে ঊল্লেখযোগ্যভাবে ভিন্নতর হওয়ার কারণে, অথবা সাধারণভাবে চুক্তির সংস্থান মোতাবেক প্রত্যাশিত বা স্বীকৃত নহে প্রকল্পস্থলের এইরূপ অজ্ঞাত এবং অস্বাভাবিক ধরনের ভৌত অবস্থার কারণে মূল কার্যের সমাপ্তি, উন্নতিবিধান অথবা সংরক্ষণের প্রয়োজনে মূল চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত ছিল না এইরূপ কোন নূতন কার্যের জন্য অতিরিক্ত কার্যাদেশ জারী করিতে পারিবে।
(৩) ভেরিয়েশন অর্ডার এর ক্রমপুঞ্জিত মূল্য তফসিল-২ এ উল্লিখিত সীমার অতিরিক্ত হইলে এবং উক্তরূপ কার্য মূল চুক্তি হইতে আলাদা করা সম্ভব হইলে, উহার জন্য দরপত্র আহ্বান করিয়া পৃথক চুক্তি সম্পাদনের মাধ্যমে উক্ত কার্য সম্পাদন করিতে হইবে।
৭৯। ভেরিয়েশন অর্ডার বা অতিরিক্ত কার্যাদেশ প্রণয়ন।-
(১) যে কোন ভেরিয়েশন অর্ডার এর দাবী উপস্থাপনের জন্য যে কোন অতিরিক্ত ব্যয়ের পূর্র্ণ এবং পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণসহ ঠিকাদার তফসিল-২ এ বর্ণিত সময় সীমার মধ্যে লিখিত নোটিশ প্রদান করিবে, যাহাতে উক্ত সময়ে বিষয়টি তদন্ত করা যাইতে পারে এবং এইরূপ নোটিশ দাখিলে ব্যর্থতার ক্ষেত্রে ঠিকাদার কোন দাবী উপস্থাপন করিতে পারিবেন না।
(২) ভেরিয়েশন অর্ডার নিম্নবর্ণিতরূপে প্রণয়ন এবং দাখিল করিতে হইবে-
(ক) যদি প্রকল্প ব্যবস্থাপক প্রয়োজনীয় বলিয়া মনে করেন যে, ভেরিয়েশন অর্ডার বা অতিরিক্ত কার্যাদেশ জারী করা আবশ্যক, তাহা হইলে তিনি প্রস্তাবিত আদেশ প্রণয়ন করিবেন এবং উক্ত আদেশে ঠিকাদার কর্তৃক দাখিলকৃত নোটিশসহ প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা, সম্পাদিতব্য কার্যের যৌক্তিকতাসহ আইটেম অনুসারে অতিরিক্ত কার্যের পরিমাণ ভিত্তিক হিসাব, পরিদর্শন ও অনুসন্ধানের তারিখ, লগ বহি, উক্ত কার্যের প্রতি আইটেমের প্রাক্কলিত ইউনিট মূল্যের বিবরণাদি অন্তর্ভুক্ত করিয়া অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষের নিকট দাখিল করিবেন;
(খ) কার্যের সহিত সংশ্লিষ্ট পরিকল্পনা, পরিমাণ এবং নূতন কার্যের আইটেমসমূহের জন্য প্রস্তাবিত একক মূল্য পুনরীক্ষণের পর ভেরিয়েশন অর্ডার বা অতিরিক্ত কার্যাদেশ সঠিক ও সন্তোষজনক হইলে এবং উক্ত ভেরিয়েশন অর্ডার বা অতিরিক্ত কার্যাদেশ তফসিল-২ এ বর্ণিত মূল্যসীমার মধ্যে থাকিলে অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ, আর্থিক ক্ষমতা অর্পণ আদেশ অনুযায়ী, উহা অনুমোদন করিবেন, অথবা ধারা ৭৪(৪) অনুসারে মূল চুক্তি অনুমোদনকারী কর্মকর্তার পরবর্তী ধাপের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার অনুমোদন গ্রহণের ব্যবস্থা করিবেন;
(গ) ভেরিয়েশন অর্ডার বা অতিরিক্ত কার্যাদেশ প্রক্রিয়াকরণের ক্ষেত্রে, উহা প্রস্তুতকরণ হইতে শুরু করিয়া অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ কর্তৃক উহা অনুমোদিত হওয়া পর্যন্ত সময়সীমা তফসিল-২ এ বর্ণিত সময়সীমার অধিক হইবে না।
৮০। ভেরিয়েশন বা অতিরিক্ত কার্যের মূল্যনির্ধারণ।-
(১) অতিরিক্ত আইটেমের কার্যের জন্য নিম্নবর্ণিত পদ্ধতি অনুসরণক্রমে ঠিকাদারকে উহার মূল্য প্রদান করিতে হইবে-
(ক) অতিরিক্ত কার্যের আইটেমসমূহ মূল চুক্তির অনুরূপ বা একই হইলে, উক্ত অতিরিক্ত আইটেমসমূহের মূল্য পরিশোধের ক্ষেত্রে মূল চুক্তির একক মূল্য প্রযোজ্য হইবে;
(খ) নূতন কার্যের যে সকল আইটেম মূল চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত ছিল না, সেই সকল আইটেমের একক মূল্য নির্ধারণের ভিত্তি নিম্নরুপ হইবে –
(অ) ঠিকাদারের ব্যয়-প্রাক্কলনে (cost estimate) প্রদত্ত মূল্য বিভাজনে (price breakdown) থাকা সাপেক্ষে, অন্যান্য আইটেমের জন্য মূল চুক্তিতে ব্যবহৃত প্রত্যক্ষ একক মূল্য (direct unit cost), (যেমন, সিমেন্ট, রড, শ্রম দর, যন্ত্রপাতির ভাড়া ইত্যাদির একক মূল্য); বা
(আ) ক্রয়কারী এবং ঠিকাদার উভয়ের নিকট গ্রহণযোগ্য বাজার মূল্য অনুযায়ী স্থিরমূল্য (fixed prices); বা
(ই) উপ দফা (অ) ও (আ) এর ভিত্তিতে নূতন কার্যের আইটেমের প্রত্যক্ষ একক ব্যয় নির্ধারণের জন্য ঠিকাদার কর্তৃক দরপত্রে ব্যবহৃত মার্ক-আপ ফ্যাক্টর (যেমন: কর, ওভারহেড ও মুনাফা) যোগ করিয়া নূতন কার্যের আইটেমসমূহের একক দর নির্ধারণ করিতে হইবে।
(২) কোন অতিরিক্ত কার্যের বিপরীতে ঠিকাদার কর্তৃক মূল্য পরিশোধের অনুরোধের সহিত দাবীকৃত পাওনার বিস্তারিত হিসাব ও পরিমাণের ঊল্লেখসহ অনুমোদিত ছকে একটি বিবরণ দাখিল করিতে হইবে এবং পাওনা পরিশোধের দাবী ঠিকাদারের ধারাবাহিক মূল্য পরিশোধ (progress payment) প্রতিবেদনের সহিত অন্তর্ভুক্ত করিতে হইবে।
(৩) অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ব্যতিরেকে কোন অবস্থাতেই কোন ঠিকাদার ভেরিয়েশন অর্ডার বা অতিরিক্ত কার্যাদেশের অধীন কোনরূপ কার্য-সম্পাদনের উদ্যোগ গ্রহণ করিবে না।
(৪) উপ-বিধি (৩) এর ব্যতিক্রম হিসাবে, তহবিলের সংস্থান থাকা সাপেক্ষে ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধান কোন ভেরিয়েশন অর্ডার বা অতিরিক্ত কার্যাদেশের অধীন নিম্নবর্ণিত যে কোন শর্তে অনতিবিলম্বে কার্য-সম্পাদন শুরু করার আদেশ প্রদান করিতে পারিবেঃ
(ক) জরুরী ভিত্তিতে কার্য-সম্পাদন শুরু করা না হইলে যদি জনসেবা (public service) বিঘ্নিত হইবার বা জীবন ও সম্পত্তি বা উভয়ের ক্ষতির আশঙ্কা থাকে; বা
(খ) সময় যখন মুখ্য বিবেচ্য –
তবে শর্ত থাকে যে,-
(অ) সংশ্লিষ্ট সময় পর্যন্ত অনুমোদিত হয় নাই প্রকল্পের এইরূপ কার্য মূল্যের ক্রমপুঞ্জিত বৃদ্ধির পরিমাণ, তফসিল-২ এ বর্ণিত শতকরা হারের মধ্যে সীমিত থাকিবে; এবং
(আ) কার্য শুরুর অব্যবহিত পরে এই ধরনের ভেরিয়েশন অর্ডার বা অতিরিক্ত আদেশ প্রণয়ন করিয়া বিধি ৩৬ অনুসারে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট অনুমোদনের জন্য দাখিল করিতে হইবে।
(৫) যথাযথ অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের পর ভেরিয়েশন অর্ডার বা অতিরিক্ত কার্যাদেশের অধীন সন্তোষজনকভাবে সম্পাদিত কার্যের মূল্য পরিশোধ করা যাইতে পারে।
(৬) ভেরিয়েশন অর্ডার বা অতিরিক্ত কার্যাদেশের সহিত জড়িত ক্রমপুঞ্জিত কার্যের মূল্যের পরিমাণ তফসিল-২ এ বিধি ৭৮(৩) এর বিপরীতে মূল চুক্তিমূল্যের অতিরিক্ত হইলে, যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত না হওয়া পর্যন্ত উক্ত কার্যাদেশের অধীন সম্পাদিতব্য কার্য শুরু করা যাইবে না।
৮১। সরাসরি নগদ ক্রয়।-
(১) ক্রয়কারী, তফসিল-২ এ বর্ণিত মূল্য ও বাৎসরিক মোট ব্যয় সীমার মধ্যে স্বল্প মূল্যের পণ্য এবং জরুরী ও আবশ্যকীয় সেবা (যেমন- রক্ষণাবেক্ষণ, মেরামত,পরিবহণ এবং অন্যান্য সেবা, ইত্যাদি) সরাসরি ক্রয় করিতে পারিবে।
(২) ক্রয়কারী, ক্রয়ের প্রকৃতি বিবেচনায়, কোন কর্মকর্তা বা, তৎকর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে গঠিত অনধিক ৩ (তিন) সদস্য বিশিষ্ট ক্রয় কমিটি এর মাধ্যমে এই ধারার অধীন কোন ক্রয়কার্য সম্পন্ন করিতে পারিবে।
(৩) উপ-বিধি (১) এর অধীন ক্রয়ের ক্ষেত্রে নগদ বা চেকের মাধ্যমে মূল্য পরিশোধ করা যাইবে এবং উক্ত ক্ষেত্রে কোন ক্রয় আদেশ বা চুক্তি স্বাক্ষর করা আবশ্যক হইবে না।
৮২। ফোর্স একাউন্ট এর প্রয়োগ।-
(১) তফসিল-২ এ বর্ণিত মূল্যসীমার মধ্যে ব্যয় সীমিত থাকা সাপেক্ষে, বিভাগীয় প্রয়োজনে মজুরীর বিনিময়ে সরাসরি শ্রমিক নিয়োগের ক্ষেত্রে Force Account প্রয়োগ করা যাইতে পারে।
(২) ফোর্স একাউন্ট এর অধীন বিভাগীয় কার্য সম্পাদনের লক্ষ্যে উপকরণ ও যন্ত্রপাতি ক্রয় এবং অতিরিক্ত সরঞ্জামাদি ভাড়া করিবার ক্ষেত্রে অন্যান্য ক্রয়পদ্ধতি যথা- কোটেশন প্রদানের অনুরোধ জ্ঞাপন পদ্ধতি বা ধারা ৭৬ এর অধীন সরাসরি চুক্তি পদ্ধতি ব্যবহার করা যাইতে পারে।