বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে ব্যাংক গ্যারান্টি দেয়া-নেয়া নিয়ে জালিয়াতির মাত্রা বেড়ে গেছে। কিছু অসাধু ব্যাংক কর্মকর্তার যোগসাজশে বিভিন্ন শ্রেণীর ব্যবসায়ী ও ঠিকাদার এই জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত। এতে ব্যক্তি হিসেবে ব্যাংকার ও ব্যবসায়ী দুপক্ষই লাভবান হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে প্রতিষ্ঠান হিসেবে ব্যাংক। সরকারও বঞ্ছিত হচ্ছে রাজস্ব আয় থেকে। বিশেষ করে টেন্ডার, পণ্য সরবরাহ, সরকারি কাজ সম্পাদনের ক্ষেত্রে ব্যাংক গ্যারান্টি দেয়া-নেয়ায় এই জালিয়াতি বেশি হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে বিষয়টি এতটাই ভয়াবহ রূপ নিয়েছে, ব্যাংক গ্যারান্টি নগদায়নের ক্ষেত্রে প্রায়ই ধরা পড়ছে ভুয়া বা জাল গ্যারান্টির ঘটনা। অনলাইন টেন্ডারও এর বাইরে নয়।
শুধুমাত্র Registered ব্যবহারকারিগন-ই সব ফিচার দেখতে ও পড়তে পারবেন। এক বছরের জন্য Registration করা যাবে। Registration করতে ক্লিক করুন।
ব্যাংক গ্যারান্টির সত্যতা সম্পর্কে টেলিফোনে বা সরেজমিনে নিশ্চিত হওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দেয়া হলেও এই জালিয়াতির প্রবণতা রোধ করা যাচ্ছে না। ফলে অনেক ক্ষেত্রে স্বল্প মেয়াদি এই ঋণ পরিণত হচ্ছে দীর্ঘ মেয়াদি ঋণে। ভুয়া গ্যারান্টির বিপরীতে টাকা আদায় সম্ভব হচ্ছে না বলে তা খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে। গ্যারান্টি নগদায়ন করতে না পাড়ায় গ্যারান্টি গ্রহীতা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আর্থিকভাবে। সংশ্লিস্ট ব্যাংক ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদন্তেও এর সত্যতা মিলেছে। এর মধ্যে সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী, মার্কেন্টাইল, ঢাকা, প্রাইম, এনসিসি, ন্যাশনাল, যমুনা ব্যাংকে গ্যারান্টি জালিয়াতির সন্ধান পাওয়া গেছে। এর কিছু গ্যারান্টির সঙ্গে ব্যাংক কর্মকর্তাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। আর কিছু প্রতরণার মাধ্যমে সৃষ্টি করা হয়েছে।
আরও দেখুন … ব্যাংক গ্যারান্টি কি ?
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক ম. মাহফুজুর রহমান বলেন, ভুয়া ব্যাংক গ্যারান্টির ব্যাপারে অভিযোগ এলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে। ইতিমধ্যে অনেক ব্যাংককে গ্যারান্টির অর্থ ফেরৎ দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে ব্যাংক গ্যারান্টি না দিয়ে ভুয়া কাগজপত্রের ভিত্তিতে কাজ হয়ে থাকলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কিছু করার থাকে না। তিনি বলেন, এই জন্য ব্যাংকগুলোকে গ্যারান্টি নেয়ার আগে তা যথাযথভাবে নিশ্চিত হওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, ব্যাংক গ্যারান্টির বিপরীতে সরকার নির্ধারিত হারে ভ্যাট আদায় করে। এছাড়া গ্যারান্টির টাকা যে হিসেবে জমা হয় তার বিপরীতেও সরকার আবগারি শুল্ক ও উৎসে আয়কর পেয়ে থাকে। গ্যারান্টি ভুয়া হওয়ায় সরকার এসব কিছুই পাচ্ছে না। অথচ অসাধু প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ করে যাচ্ছে।