ব্লকচেইন এবং বাংলাদেশের পাবলিক প্রকিউরমেন্ট

বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারি ক্রয় কার্যক্রমে অনেক ভাল করছে। বিশ্বের অনেক দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো এর প্রশংসা করছে। সরকারি ক্রয়ের ক্ষেত্রে বছরে বাংলাদেশ প্রায় ২৫ বিলিয়ন টাকা ব্যয় করে, যা দেশের মোট বার্ষিক বাজেটের ৪০ শতাংশের সমপরিমাণ।
২০১১ সালে সরকারি ক্রয়ের ডিজিটাইজেশনের সূচনা হয়। বর্তমানে ই-জিপি সিস্টেম দ্রুত সম্প্রসারিত হচ্ছে। কিন্তু সরকারি কেনাকাটা পদ্ধতিতে এখনো টেকসই ক্রয়ের বিভিন্ন দিক বিবেচিত হয়নি। এছাড়াও তথ্য সংগ্রহ ও তথ্যের বিশ্বস্ততা নিয়ে মাঝে মাঝেই আলোচনা হয়। কাজেই বাংলাদেশের সরকারি ক্রয়ে এখনও অনেক চ্যালেঞ্জ রয়ে গিয়েছে। সুষ্ঠূ ও টেকসই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে যদি ১% ব্যয়ও সাশ্রয় করা যায় তা দেশেরই উপকার বয়ে আনবে।
যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশেরও ব্লকচেইন প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করার সময় এসে গেছে। বিশ্বজুড়ে এখন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ব্লকচেইন প্রযুক্তি। ব্লকচেইনকে আধুনিক কালের এক অভিনব উদ্ভাবন বলা হচ্ছে। ব্লকচেইন প্রযুক্তি সাম্প্রতিক বছরগুলিতে বিভিন্ন শিল্পে বিপ্লব ঘটানোর ক্ষমতার কারণে উল্লেখযোগ্য মনোযোগ পেয়েছে। সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট এবং সরকারি ক্রয় হচ্ছে এরকম ক্ষেত্র যেখানে ব্লকচেইন যথেষ্ট প্রভাব ফেলতে পারে।
আরও দেখুনঃ ব্লকচেইন কিভাবে সাপ্লাই চেইন এবং সরকারি ক্রয়ে বিপ্লব ঘটাতে পারে
তবে ব্লকচেইন প্রযুক্তি নিয়ে কাজ শুরু করার আগে মানসিকতার পরিবর্তন আনতে হবে। সরকারি ক্রয়ের প্রধান মূলনীতি হচ্ছে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা। তাই সরকারকেও বিকেন্দ্রিত ও বণ্টিত তথ্যভান্ডার সম্বন্ধে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করতে হবে।
বর্তমান ই-জিপি সিস্টেমে এই ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহার করা যায় কি না এটা নিয়ে উন্মুক্ত আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি পরিষ্কার করা দরকার।
ব্লকচেইন প্রযুক্তি উন্মুক্ত পদ্ধতিতে ডেটাবেইস বণ্টন করে থাকে। এটা কোন একক জায়গায় অবস্থান করে না বা সংরক্ষণ করা হয় না। আমরা যদি কেন্দ্রীভূত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার মানসিকতা ছাড়তে না পারি, তাহলে এ প্রযুক্তি কাজ করবে না।
নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে। যদি আমরা এখনই নিজেদের মানিয়ে নিতে না পারি, তাহলে আমরা হয়তো এগোব ঠিকই, কিন্তু অন্যরা আমাদের থেকে অনেক বেশি এগিয়ে যাবে। নতুন প্রযুক্তিতে বাংলাদেশ নিশ্চয়ই পিছিয়ে পরতে চাইবে না!
এখন ব্লকচেইনের মতো নতুন প্রযুক্তি সামনের দিনগুলিতে এগিয়ে নেয়ার জন্য অনিবার্য হয়ে পড়তে পারে। ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহারের পূর্বে আরও সতর্কভাবে তা যাচাই বাছাই করতে হবে। এটা যেহেতু একটি নতুন এবং অনেক উচ্চ প্রযুক্তিগত বিষয় কাজেই এর উপর আরও সেমিনার ও আলোচনার আয়োজন প্রয়োজন আছে।

এই লেখকের অন্যান্য লেখা

Moral hazard এর সাথে প্রকিউরমেন্টের কি সম্পর্ক ?
মোরাল হ্যাজারড! এটা একটা খুবই আকর্ষণীয় বিষয়। Moral Hazard নিয়ে প্রাথমিক ধারণা পেতে দেখুনঃ Moral Hazard কি ? সরকারি ক্রয়

Moral hazard কি ?
মোরাল হ্যাজারড! এটা একটা খুবই আকর্ষণীয় বিষয়। Moral Hazard বা নৈতিক ঝুঁকি হল অর্থনীতি ও ফাইন্যান্সের একটা ধারণা যেটা এমন

দরপত্র দলিলের মূল্য কত হবে ? কিভাবে নির্ধারণ করবেন ?
ক্রয়কারী কর্তৃক দরপত্রদাতার নিকট সরবরাহের জন্য প্রস্তুতকৃত দলিল হচ্ছে দরপত্র দলিল বা টেন্ডার ডকুমেন্ট (Tender document) বা টেন্ডার সিডিউল। বিজ্ঞাপন

Agency theory and its relevance in procurement
Agency theory, also known as principal-agent theory, is a theory that explains the relationship between a principal and an agent.