CIPS-BN এর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হলো ব্লকচেইনের উপর Professional সেমিনার

গত ৩ নভেম্বর ২০১৮ ইং তারিখে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের কনফারেন্স কক্ষে “Blockchain Technology and its impact on Supply Chain Management” এর উপর একটি Professional Seminar অনুষ্ঠিত হয়েছে। “Chartered Institute of Procurement & Supply (CIPS)” এর Bangladesh Network দিনব্যাপী এই কর্মশালার আয়োজন করে।

Group Picture

CIPS, Bangladesh Branch এর সম্মানিত চেয়ারম্যান ও এলজিইডি’র প্রকল্প পরিচালক মোঃ নুরুল হুদা এর সভাপতিত্বে উক্ত সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী জনাব মোঃ আবুল কালাম আজাদ, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বব্যাংকের লিড প্রকিউরমেন্ট স্পেশালিষ্ট ডঃ জাফরুল ইসলাম এবং এলজিইডি’র অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোঃ খলিলুর রহমান, CIPS, Bangladesh Branch এর সম্মানিত সহ-সভাপতি মোঃ গোলাম ইয়াজদানী, সদস্য সচিব মোঃ হুমায়ুন কবির মোল্লা প্রমূখ। দিনব্যাপী উক্ত প্রোগ্রামে CIPS এর সদস্য ছাড়াও অন্যান্য প্রকিউরমেন্ট বিশেষজ্ঞ ও আগ্রহী জন অংশ নিয়েছেন।

সেমিনারে “Blockchain Technology and its impact on Supply Chain Management” এর উপর কি-নোট উপস্থাপন করেন জনাব মোঃ এনামুল হক। তিনি CIPS, Bangladesh Network এর সম্মানিত সদস্য এবং বাংলাদেশ সরকারের একজন উপসচিব। মূল উপস্থাপক হিসেবে জনাব মোঃ এনামুল হক ব্লকচেইন টেকনোলজির ইতিহাস, এই উপযোগিতা, বাংলদেশে এর সম্ভাবনা, সাপ্লাই চেইন এ এর প্রভাব, ইত্যাদি বিভিন্ন দিক পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে তুলে ধরেন। অতঃপর উন্মুক্ত আলোচনায় সবাই অংশ গ্রহন করেন।

প্রেজেন্টেশন চলছে

যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশেরও ব্লকচেইন প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করার সময় এসে গেছে। বিশ্বজুড়ে এখন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ব্লকচেইন প্রযুক্তি।

ব্লকচেইনকে আধুনিক কালের এক অভিনব উদ্ভাবন বলা হচ্ছে। ‘সাতোশী নাকামতো’ ছদ্মনামের এক ব্যক্তি বা গোষ্ঠী এ প্রযুক্তির উদ্ভাবক। ২০০৯ সালে প্রথমবারের মতো বিটকয়েন সফটওয়্যার প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে ব্লকচেইন প্রযুক্তির অনেক বিবর্তন ঘটে চলেছে। ব্লকচেইন হচ্ছে তথ্য সংরক্ষণ করার একটি নিরাপদ এবং উন্মুক্ত পদ্ধতি। তথ্যকে ডিজিটালরূপে বণ্টন করা এই ব্লকচেইন প্রযুক্তি এক নতুন ধরনের ইন্টারনেট সৃষ্টি করেছে। কেবল ডিজিটাল মুদ্রা বিটকয়েনের জন্য ব্লকচেইনের উদ্ভাবন করা হলেও এখন প্রযুক্তির নানা ক্ষেত্রে এর সম্ভাব্যতা যাচাই চলছে।

উন্মুক্ত আলোচনা পর্ব

সভায় উপস্থিত ব্যক্তিবর্গ সবার প্রশ্ন ছিল বর্তমান ই-জিপি সিস্টেমে এই ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহার করা যায় কি না ? উন্মুক্ত আলোচনার মাধ্যমে এই বিষয়টি পরিষ্কার করা হয়। ব্লকচেইন প্রযুক্তি উন্মুক্ত পদ্ধতিতে ডেটাবেইস বণ্টন করে থাকে। এটা কোন একক জায়গায় অবস্থান করে না বা সংরক্ষণ করা হয় না। আমরা যদি কেন্দ্রীভূত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার মানসিকতা ছাড়তে না পারি, তাহলে এ প্রযুক্তি কাজ করবে না।

আলোচনা পর্ব

বিশেষ অতিথি বিশ্বব্যাংকের লিড প্রকিউরমেন্ট স্পেশালিষ্ট ডঃ জাফরুল ইসলাম উল্লেখ করেন বিশ্বে এখন প্রায় ৯ ট্রিলিয়ন ডলারের প্রকিউরমেন্ট কার্যক্রম হয়ে থাকে। এর থেকে যদি ১ শতাংশও খরচ কমানো যায় তাহলে তা দাঁড়ায় বছরে প্রায় ৯ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশও এর থেকে ব্যতিক্রম নয়। বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারি ক্রয় কার্যক্রমে অনেক ভাল করছে। বিশ্বের অনেক দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো এর প্রশংসা করছে। এখন ব্লকচেইনের মতো নতুন প্রযুক্তি সামনের দিনগুলিতে এগিয়ে নেয়ার জন্য অনিবার্য হয়ে পড়তে পারে।

বিশেষ অতিথি এলজিইডি’র অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোঃ খলিলুর রহমান ব্লকচেইন প্রযুক্তিকে অনেক সম্ভাবনায় বলে উল্লেখ করেন। এর জন্য আমাদেরকে এখনই প্রস্তুত হবার জন্য উদ্যোগ নেয়ার আহবান জানান।

প্রধান অতিথি প্রধান প্রকৌশলী জনাব মোঃ আবুল কালাম আজাদ ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহারের পূর্বে আরও সতর্কভাবে তা যাচাই বাছাই করার অনুরোধ করেন। এটা যেহেতু একটি নতুন এবং অনেক উচ্চ প্রযুক্তিগত বিষয় কাজেই এর উপর আরও সেমিনার ও আলোচনার আয়োজন প্রয়োজন আছে বলে মতামত ব্যক্ত করেন।

উন্মুক্ত আলোচনা পর্ব
উন্মুক্ত আলোচনা পর্ব

সেমিনারের সভাপতি জনাব মোঃ নুরুল হুদা ব্লকচেইন প্রযুক্তি সম্পর্কে প্রাথমিক ধারনা দেয়ার জন্যেই এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান। তিনি সেমিনারে স্বতস্ফুর্তভাবে আলোচনায় অংশ নেয়ায় উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। CIPS, Bangladesh Branch এর উদ্যোগে ভবিষ্যতে এই ধরনের সেমিনার আরও আয়োজন করা হবে মর্মে উল্লেখ করেন।

এখন, বাংলাদেশেও এই ব্লকচেইন প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করার যথার্থ সময় এসে গেছে। তবে কাজ শুরু করার আগে মানসিকতার পরিবর্তন আনতে হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশের একটি প্রধান উদ্দেশ্য স্বচ্ছতা। তাই সরকারকেও বিকেন্দ্রিত ও বণ্টিত তথ্যভান্ডার সম্বন্ধে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করতে হবে। নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে। যদি আমরা এখনই নিজেদের মানিয়ে নিতে না পারি, তাহলে আমরা হয়তো এগোব ঠিকই, কিন্তু অন্যরা আমাদের থেকে অনেক বেশি এগিয়ে যাবে। নতুন প্রযুক্তিতে বাংলাদেশ নিশ্চয়ই পিছিয়ে পড়তে চাইবে না!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors
গ্রাহক হোন

শুধুমাত্র Registered ব্যবহারকারিগন-ই সব ফিচার দেখতে ও পড়তে পারবেন। এক বছরের জন্য Registration করা যাবে। Registration করতে এখানে ক্লিক করুন

ফ্রী রেজিস্ট্রেশন

“প্রকিউরমেন্ট বিডি news”, “সমসাময়িক”, “সূ-চর্চা”, “প্রশিক্ষণ” অথবা “ঠিকাদারী ফোরাম” ইত্যাদি বিষয়ে কমপক্ষে ২টি নিজস্ব Post প্রেরণ করে এক বছরের জন্য Free রেজিষ্ট্রেশন করুণ। Post পাঠানোর জন্য “যোগাযোগ” পাতা ব্যবহার করুণ।

সর্বশেষ

Scroll to Top