CPTU বিলুপ্ত হয়ে কর্তৃপক্ষ গঠনের খসড়া আইন অনুমোদন

সরকারি তহবিলের অর্থ দ্বারা কোনো পণ্য, কার্য বা সেবা ক্রয়ের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে “বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটি আইন (বিপিপিএ) ২০২৩” নামে একটি কর্তৃপক্ষ গঠন করতে যাচ্ছে সরকার। এ লক্ষ্যে সোমবার (১৩ মার্চ) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আইনটির খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
আইনের সার-সংক্ষেপে বলা হয়, ‘সরকারি তহবিলের অর্থ দ্বারা কোনো পণ্য, কার্য বা সেবা ক্রয়ের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চত করা এবং উক্তরূপ ক্রয়কার্যে অংশগ্রহণে ইচ্ছুক সকল ব্যক্তির প্রতি সম-আচরণ ও অবাধ প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করিবার জন্য অনুসরণীয় পদ্ধতি নির্ধারণসহ আনুষঙ্গিক বিষয়াদি সম্পর্কে বিধান করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়। আইনের খসড়ায় কর্তৃপক্ষ গঠনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা হয়েছে, সরকারি তহবিলের টাকা দিয়ে কেনাকাটা করার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা, দক্ষতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা এবং এ ধরনের কার্যক্রমে অংশগ্রহণে ইচ্ছুক সকল ব্যক্তির প্রতি সম-আচরণ ও অবাধ প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করার জন্য ক্রয়সংক্রান্ত আইনগুলোর যথাযথ বাস্তবায়ন, নিয়ন্ত্রণ এবং এই উদ্দেশ্যে সরকারি ক্রয় ব্যবস্থাপনা, দক্ষতা বাড়ানো ও পেশাদারিত্ব সৃষ্টির জন্য এই কর্তৃপক্ষ গঠন করা প্রয়োজন। এই কর্তৃপক্ষ সিপিটিইউর চেয়ে অধিকতর ক্ষমতা পাবে।’
সরকারি কেনাকাটায় কোথাও আইন লঙ্ঘন বা অর্থের অপচয় হওয়ার আশঙ্কা দেখা গেলে কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনে নথি তলব করতে পারবে। বর্তমানে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের বিপুল পরিমাণ কেনাকাটায় নজরদারি করার জন্য কোনো কর্তৃপক্ষ নেই দেশে।
প্রথম আলোর রিপোর্টঃ কর্তৃপক্ষের ভিড়ে আরও একটি কর্তৃপক্ষ হচ্ছে
সিপিটিইউ বর্তমানে গণখাতে পাবলিক সেক্টরের ক্রয়ের ক্ষেত্রে আইন, বিধি প্রণয়ন করে, টেকনিকেল সাপোর্ট দেয়, পরামর্শ দেয়। অথরিটিও এ কাজগুলো অব্যাহত রাখবে।
২০০১-০২ সালের দিকে সরকারি খাতে সব মিলিয়ে ক্রয় হতো ১৮-১৯ হাজার কোটি টাকা। এখন এক বছরে গড়ে দুই লাখ ২০ হাজার থেকে ২ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা। ১১ থেকে ১২ গুণ বেড়েছে। বর্তমান সিপিটিইউ এর আইনি কাঠামো, সিদ্ধান্ত গ্রহণে স্বায়ত্তশাসনের অভাব এবং এর বিদ্যমান জনবল দিয়ে এগুলো মনিটর এবং ব্যবস্থাপনা করা খুবই দূরূহ বলে জানানো হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে অথরিটির অফিস ঢাকা কেন্দ্রীক হবে। প্রয়োজন হলে তারা ঢাকার বাইরে অফিস করতে পারবে।
বিপিপিএর পরিচালনা পর্ষদ
-
- আইএমইডি, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং ৪টি ক্রয় কার্যালয়ের প্রধানদের নিয়ে গঠিত হবে পরিচালনা পর্ষদ।
- পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান হবেন পরিকল্পনামন্ত্রী এবং ভাইস-চেয়ারম্যান হবেন আইএমইডি সচিব।
- বিপিপিএর প্রধান নির্বাহী হবেন একজন অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা। তিনিও পর্ষদের সদস্য হবেন।
- বিগত অর্থবছরের উন্নয়ন বাজেটে সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাওয়া ক্রয় কার্যালয়ের প্রধান হবেন ২ জন পর্ষদ সদস্য। সকল সদস্য অন্তত যুগ্ম সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তা হবেন।
- সরকারি ক্রয়ে ৩ বছরের অভিজ্ঞতা বা ক্রয় বিধি ও প্রবিধানের ওপর ব্যাপক জ্ঞান বিবেচনা করে বেসরকারি খাত থেকে ২ জন সদস্যকে এই পর্ষদে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
- পরিচালনা পর্ষদের মেয়াদ হবে সর্বোচ্চ ৩ বছরের এবং সরকার প্রয়োজনে পর্ষদের আকার বাড়াতে বা কমাতে পারবে।
বর্তমানে সরকারি কেনাকাটার তথ্য রাখার কাজ করছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) অধীন সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট (সিপিটিইউ)। অধিকতর ক্ষমতাসম্পন্ন কর্তৃপক্ষ গঠন হওয়ার পর সিপিটিইউ বিলুপ্ত হবে। তবে সিপিটিইউর বিদ্যমান জনবল নতুন কর্তৃপক্ষের অধীনে ন্যস্ত হবে।
আরও দেখুনঃ CPTU বিলুপ্ত হচ্ছে … …

এই লেখকের অন্যান্য লেখা

সরকারি দরপত্রে এনজিওদের অংশগ্রহণঃ যুক্তি-তর্ক-বিতর্ক
বাংলাদেশ সরকার সম্প্রতি সরকারি ক্রয় আইন সংশোধন করেছে যাতে এনজিও (NGO) বিষয়ক কিছু পরিবর্ধন করা হয়েছে। পাবলিক প্রকিউরমেন্ট (সংশোধন) অধ্যাদেশ,

NGOs in Public Tenders: Prospects and Pitfalls ?
Recently, the Bangladesh Government has revised the public procurement law to let NGOs to compete on tenders. In the evolving

কারিগরী প্রস্তাব মূল্যায়নে স্কোরিং বা গ্রেডিং সিস্টেমের গুরুত্ব
বুদ্ধিবৃত্তিক এবং পেশাগত সেবা (Consultancy Service) ক্রয়ের জন্য সফল পরামর্শক নির্বাচনের ক্ষেত্রে পরামর্শকের কারিগরী প্রস্তাবের গুণগত মানই প্রধান বিবেচ্য বিষয়

MAPS এবং বাংলাদেশ
MAPS বা Methodology for Assessing Procurement Systems হলো একটি হাতিয়ার (Tools) যা বিশ্বব্যাপী পাবলিক প্রকিউরমেন্ট সিস্টেমকে মূল্যায়ন করার জন্য ব্যবহৃত