সরকারের ব্যয় সাশ্রয়ের অংশ হিসেবে নতুন অর্থবছরে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য সব ধরনের যানবাহন কেনা বন্ধ রাখার পাশাপাশি সব উন্নয়ন প্রকল্পের সভার সম্মানী ভাতা দেওয়া স্থগিত করা হয়েছে।
এরমধ্যে রয়েছে-প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি), প্রকল্প স্টিয়ারিং কমিটি (পিএসসি), বিভাগীয় প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (ডিপিইসি), বিশেষ প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (এসপিইসি) এবং বিভাগীয় বিশেষ প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (ডিএসপিইসি)।
রোববার অর্থ মন্ত্রণালয়ের বাজেট শাখার পৃথক পরিপত্রে সরকারের এসব সিদ্ধান্ত জানানো হয়। একই সঙ্গে আপ্যায়ন ও ভ্রমণ ব্যয়, কম্পিউটার ও আসবাবপত্রসহ অন্যান্য কেনাকাটায় বরাদ্দ অর্থের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ ব্যয় করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
কোভিড মহামারীর প্রভাব কিছুটা কমে যাওয়ার পর গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেইনের ওপর রাশিয়ার আগ্রাসনকে কেন্দ্র করে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে মন্দা দেখা দেয়। দেশে দেশে মুদ্রার দরপতন, আমদানি খরচ বেড়ে যাওয়া, কাঁচামালের মূল্য বাড়াসহ বিভিন্ন কারণে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যায়।
এর প্রভাব দেখা যায় বাংলাদেশের আমদানির ক্ষেত্রেও। চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ সংকট তৈরি হওয়ায় ডলারের দামে রেকর্ড হয়েছে। টাকার মান নিয়মিত বিরতিতে কমছে।
এমন পরিস্থিতিতে গত জুন মাস থেকে খরচ কমানোর জন্য একের পর এক কৃচ্ছতার সিদ্ধান্ত দিচ্ছে সরকার। খুব গুরুত্বপূর্ণ নয় এমন সব প্রকল্পের ব্যয় স্থগিত করা, বিদেশ সফর স্থগিত করা, বিলাসপণ্য আমদানি নিরুৎসাহিত করা, আমদানির ক্ষেত্রে এলসি মার্জিন বাড়িয়ে দেওয়া, বিদেশে পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনাসহ আরও কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সূত্রমতে, কৃচ্ছ সাধনের লক্ষ্যে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সব মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। ওই বৈঠকে কোন কোন খাতে কৃচ্ছ সাধন করা হবে সেটি শনাক্ত করা হয়। এর ধারাবাহিকতায় অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সরকার এসব সিদ্ধান্তের মাধ্যমে কমপক্ষে ৫০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয়ের চিন্তা করছে।
তবে, সরকারি ক্রয় কার্যে দরপত্র ও প্রস্তাব উন্মুক্তকরণ ও মূল্যায়ন সভার সম্মানী ভাতা আগের মতোই বহাল থাকবে।