সরকারি ক্রয় কার্যক্রমে ‘বাংলা’ কতটুকু গূরুত্ব পাচ্ছে

অন্তত একটি জায়গায় বিতর্ক তুলনামূলক কম, তা হলো ৫২ এর ভাষা আন্দোলন।
মাতৃভাষার জন্য আত্মত্যাগের ইতিহাসে বাঙালির তুলনা বিশ্ব-ইতিহাসে নেই। মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার রক্তাক্ত পথ বেয়ে বাংলাদেশ আজ স্বাধীন রাষ্ট্।
১৯৮৭ সালের বাংলা ভাষা প্রচলন আইন, ২০১৪ সালে উচ্চ আদালতের রায় এবং ডজন খানেকেরও বেশি সরকারি আদেশ, পরিপত্র বা বিধিতে বাংলা ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
জীবনের সর্বস্তরে বাংলা ভাষা ব্যাবহারযোগ্য। সরকারের সকল দপ্তর ও সংস্থায় বর্তমানে বাংলা ভাষা ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু এখনও অনেক কাজ বাকি রয়ে গেছে। সরকারি ক্রয় কার্যক্রমও এর মধ্যে পরে।
সরকারি ক্রয় কার্যক্রম একটি দেশের অর্থনীতির জন্য খুবই গূরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে জাতীয় বাজেটের প্রায় ৪০ শতাংশ এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) ৮০ শতাংশই ব্যয় হচ্ছে সরকারি ক্রয়ে। ক্রয়কারিকে আদর্শ দরপত্র দলিল ব্যবহার করে দরপত্র আহবান করতে হয় এবং ঠিকাদার বা সরবরাহকারিদের সে অনুযায়ি দরপত্র দাখিল করতে হয়। বর্তমানে সিপিটিউ কর্তৃক মোট ৩৮ টি আদর্শ দরপত্র দলিল প্রকাশ করা হয়েছে যার মধ্যে ৩৩ টি ইংরেজীতে।
সিপিটিউ/BPPA এর ওয়েব সাইটে মোট ৫টি আদর্শ দরপত্র দলিল (PG1, PG2, PG3, PW1 এবং PW3) বাংলায় পাওয়া যাচ্ছে। গত প্রায় ৩ বছরের মধ্যে এই অগ্রগতি হয়েছে।
এ বিষয়ে পূর্বের রিপোর্টগুলো দেখুনঃ
- পৃথিবীর কোথাও বাংলায় আদর্শ দরপত্র দলিল (STD) নাই
- প্রথমবারের মতো বাংলায় কোটেশন ডকুমেন্ট প্রকাশ করা হয়েছে
- দরপত্র দলিল PW3 বাংলা ভার্সনের খসড়া প্রকাশ করা হয়েছে
বর্তমানে বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটি (বিপিপিএ, সাবেক সিপিটিইউ) থেকে রিভিউ প্যানেল (Review Panel) এর অনেক রিভিউ বাংলাতে দেয়া হচ্ছে যা অত্যন্ত আশার কথা।
বিপিপিএ থেকে প্রকাশিত অফলাইন দরপত্রের এই ৫টি আদর্শ দরপত্র দলিল বা STD গুলো প্রকৃতপক্ষে কতগুলো এবং কি পরিমানে ক্রয় কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে তার কোন পরিসংখ্যান নেই। এই বাংলা STD গুলো ব্যবহার করা নিয়ে বিপিপিএ থেকে আলাদা কোন প্রচারণা দেখা যায় নি। উৎসাহ দেয়ার মতো ভুমিকা দেখা যাচ্ছে না। ঠিকাদার বা সরবরাহকারিগন-ও এ বিষয়ে খুব বেশি জানেন না বলে প্রকিউরমেন্টবিডি এর পক্ষ থেকে মাঠ পর্যবেক্ষনে জানা গিয়েছে।
বর্তমানে এই ৫টি আদর্শ দরপত্র দলিল বা STD (PG1, PG2, PG3, PW1 এবং PW3) গুলো শুধু অফলাইন দরপত্রের জন্য। এই STD গুলো প্রকৃতপক্ষে ব্যবহারে উদ্যোগ নেয়ার জন্য আসলে তা ই-জিপি তে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। না হলে এগুলো খুব বেশি কাজে আসবে বলে মনে হচ্ছে না।
দরপত্র কার্যক্রমের একটি উল্লেখযোগ্য প্লাটফর্ম হচ্ছে ই-জিপি পোর্টাল। ২০১১ সালে বাংলাদেশে ই-জিপি চালু হবার পর হতে তা দ্রুত জনপ্রিয় হয়েছে। কিন্তু ই-জিপি পোর্টাল সাইট টির শুধুমাত্র হোম পেইজের কিছু অংশ বাংলায় আছে। ভেতরের সকল কাজ ও নির্দেশনা ইংরেজীতে। ই-জিপি গাইডলাইনটি-ও ইংরেজীতে রয়ে গেছে।
প্রকিউরমেন্টবিডি এর পক্ষ থেকে অন্তত PG1 ও PW1 (কোটেশন) দরপত্র দলিল ২টি ই-জিপি তে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য এবং রিভিউ প্যানেল (Review Panel) এর সব রিভিউ প্রতিবেদন বাংলাতে দেয়ার অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।
তারপর “পৃথিবীর কোথাও বাংলায় আদর্শ দরপত্র দলিল (STD) নাই” এই কথা টি এখন অন্তত আর সত্য নয়। এটাও একটা গূরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি।

এই লেখকের অন্যান্য লেখা

Kamikaze Bidding: A Risky Strategy
The word “kamikaze” (神風) literally means “divine wind” in Japanese, referring to a typhoon that dispersed a Mongol fleet attempting

Agile Expressions: A brief dictionary for New Practitioners
Agile methodology is a project management framework that breaks down projects into phases, or sprints. It’s an iterative process that emphasizes teamwork,

অবশেষে সরকারি কেনাকাটায় ১০% মার্জিন বাতিল
টেন্ডারে সিন্ডিকেট ভাঙতে প্রকিউরমেন্ট অধ্যাদেশ সংশোধন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সরকারি কেনাকাটায়

ই-জিপিতে মূল্যায়ন কমিটির কলেবর বৃদ্ধিঃ সদস্যদের সম্মানী পাওয়াতে বঞ্চনা বৃদ্ধির আশংকা
আমরা ইতিমধ্যেই জানি যে গত ১২ মার্চ ২০২৫ ইং তারিখে ই-জিপি গাইড লাইন (সংশোধিত) ২০২৫ [Bangladesh e-Government Procurement (e-GP) Guidelines