উন্মুক্ত দরপত্র প্রক্রিয়ায় দরসীমা ঠিক করায় সরকারি কেনাকাটায় নানা সমস্যা হচ্ছে। এতে দরপত্র আহ্বান প্রক্রিয়ায় প্রতিযোগিতা কমেছে, বড় ঠিকাদারেরা বেশি কাজ পাচ্ছেন। সরকারি কেনাকাটা নিয়ে বিশ্বব্যাংকের সদ্য প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। এতে সরকারি কেনাকাটায় যেসব দুর্বলতা দেখা যায়, সেগুলোও উঠে এসেছে।
শুধুমাত্র Registered ব্যবহারকারি গন-ই সব ফিচার দেখতে ও পড়তে পারবেন। এক বছরের জন্য Registration করা যাবে। Registration করতে ক্লিক করুন।
২০১৬ সালে সরকারি ক্রয় আইনে পরিবর্তন আনা হয়েছে। যেকোনো সরকারি কেনাকাটায় একটি প্রাক্কলিত দাপ্তরিক দর থাকে এবং তা গোপন রাখতে হয়। ক্রয় আইনের ওই সংশোধনী অনুযায়ী, উন্মুক্ত দরপত্র প্রক্রিয়ায় কোনো কার্য ক্রয়ের (Works) প্রাক্কলিত দাপ্তরিক দর যদি ১০০ টাকা হয়, তাহলে দরপত্রে অংশ নেওয়া ঠিকাদারেরা যদি ওই দরের ১০ শতাংশ কম বা বেশির মধ্যে দর না দেন, তাহলে ওই ঠিকাদারকে অযোগ্য বিবেচনা করা হবে, যা দরসীমা বা ‘প্রাইস ক্যাপ’ হিসেবে পরিচিত। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে এই প্রাইস ক্যাপের বিষয়ে তীব্র আপত্তি তোলা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রাক্কলিত দাপ্তরিক দর একটি গোপনীয় বিষয়। কিন্তু উন্মুক্ত দরপত্র প্রক্রিয়ায় প্রাইস ক্যাপ দেওয়ায় প্রকৃত সর্বনিম্ন দরদাতা বাতিল হয়ে যেতে পারেন। আর দাপ্তরিক দর নির্ধারণের যথার্থতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। সে জন্য বিশ্বব্যাংক ও এডিবির মতো দাতা সংস্থাগুলোর সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পে এ ধরনের প্রাইস ক্যাপের দরপত্র গ্রহণযোগ্য নয়।
বিশ্বব্যাংক ‘অ্যাসেসমেন্ট অব বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট সিস্টেম’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে বাংলাদেশের সরকারি কেনাকাটার দুর্বলতা ও অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের সহায়তায় বিশ্বব্যাংক সমীক্ষা চালিয়ে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে। এতে ইলেকট্রনিক উপায়ের ২ লাখ ৯৭ হাজার কেনাকাটা (ই-জিপি) এবং সনাতন পদ্ধতির ১২ হাজার কেনাকাটার তথ্য ব্যবহার করা হয়েছে। এ ছাড়া দেশজুড়ে বিভিন্ন অংশীজনের মতামতও নেওয়া হয়েছে।
পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন, ২০০৬ এর ৩১ নং ধারা অনুযায়ী উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে আভ্যন্তরিন সরকারি কেনাকাটায় কার্যের ক্ষেত্রে কোনো দরদাতা দরপত্রের দাপ্তরিক প্রাক্কলনের ১০ ভাগ কম বা বেশি মূল্য দরপত্রে উল্লেখ করলে দরপত্র বাতিল হয়ে যাবে। জাতীয় সংসদে বিলটি উত্থাপিত হবার সময় উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে সরকারি কেনাকাটায় প্রাক্কলিক মূল্যের থেকে অনেক বেশি বা অনেক কম দরপত্র মূল্য দেখানোর প্রবণতারোধ করাকে কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল। এখন, বিষয়টি আরোও জটিল আকার ধারন করেছে।
চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন, ২০০৬ এর ৩১ নং ধারা সংশোধনীর সময়ও বিশ্বব্যাংক, এডিবিসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা নেতিবাচক অভিমত দিয়েছিল।
তথ্য সূত্র: প্রথম আলো।