শ্রমিকের মৃত্যুর দায় ঠিকাদার না ক্রয়কারির ?
ঠিকাদারি কাজেও শ্রমিকের মৃত্যুর দায় কেউ নেয় না।
শুধুমাত্র Registered ব্যবহারকারি গন-ই সব ফিচার দেখতে ও পড়তে পারবেন। এক বছরের জন্য Registration করা যাবে। Registration করতে ক্লিক করুন।
বহুতল ইমারত, বড় বড় ব্রীজ, মেট্রো রেল, ইত্যাদি বৃহৎ নির্মাণের পসরা এখন সবখানে। সেই সঙ্গে বাড়ছে নির্মাণশ্রমিকদের জীবনের ঝুঁকি। প্রায় প্রতিদিনই নির্মাণশ্রমিকের নিহত আহত হওয়ার খবর আসে। সেসব খবরে থাকে নির্মাণাধীন কোনো স্থাপনার ছাদ ধসে পড়ে কারও মৃত্যুর খবর, কেউবা প্রাণ হারান অনেক উঁচুতে ঝুলন্ত অবস্থায় কোনো সেফটি গার্ড না থাকার কারণে দড়ি ছিঁড়ে নিচে পড়ে যাওয়ায়, কিংবা নিচ থেকে মালামাল দড়ি দিয়ে বেঁধে ওপরে তুলতে গিয়ে দড়ি ছিঁড়ে নিচে পড়ে। তা ছাড়া ফুটপাত দিয়ে হাঁটার সময় হঠাৎ ওপর থেকে পাথর কিংবা ইটের টুকরো অথবা লোহার রড মাথার ওপর পড়ে প্রাণ হারানোর খবর নতুন কিছু নয়।
প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো নির্মাণশ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটছেই। এগুলো নিতান্তই উদাহরণমাত্র। কোভিডের মধ্যেও গত নয় মাসে সারা দেশে বাড়ি নির্মাণ ও ভাঙার কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের প্রায় ২০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ হিসাব সংবাদপত্র ও ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের যোগফলমাত্র। এর বাইরেও অনেক মৃত্যু ও আহত হওয়ার খবর নিশ্চয় আছে। নির্মাণশ্রমিকদের স্বার্থ নিয়ে কথা বলে ইমারত শ্রমিক ইউনিয়ন বাংলাদেশ (ইনসাব)। তাদের সংরক্ষিত তথ্য অনুযায়ী ২০০৭ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ১ হাজার ৭৩৯ জন নির্মাণশ্রমিক কর্মস্থলে দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। ইনসাবের হিসাব অনুযায়ী গত ১৫ বছরের গড় করলে বছরে কমবেশি ১২০ জন নির্মাণশ্রমিকের মৃত্যু ঘটছে তাঁদের কর্মস্থলে কাজ করার সময়। সেই হিসাবের প্রায় দ্বিগুণসংখ্যক নির্মাণশ্রমিক নিহত হয়েছেন করোনাকালে। তবে কি কর্মহীন মানুষ সব ঝুঁকি ভুলে পেটের দায়ে মৃত্যুকে বরণ করে নিচ্ছেন ? নাকি করোনা কালে দুপয়সা বাঁচানোর অছিলায় নিয়োগদাতারা আরও নির্মম আচরণ করছেন ?
শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করে—এমন সংস্থাগুলোর হিসাবমতে, নির্মাণকাজে দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ শ্রমিক মারা যান নির্মাণস্থলে উঁচু থেকে নিচে পড়ে, ৭ থেকে ৮ শতাংশ শ্রমিক মারা যান আগুনে পুড়ে ও চোখে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে এবং প্রায় ৪০ শতাংশ শ্রমিক দুর্ঘটনায় হাত-পা কেটে যাওয়া, আঙুল কেটে পড়ে যাওয়া বা এমন নানা মাত্রার অঙ্গহানির শিকার হয়ে থাকেন।
নির্মাণ খাতের প্রধান উপাদান শ্রমিকেরা সবাই অস্থায়ী। ইমারত নির্মাণের কোম্পানিগুলো মূলত ঠিকাদারদের মাধ্যম শ্রমিক নিয়োগ দিয়ে থাকে আর শ্রমিকদের আয় থেকে একটি অংশ নিয়মিতভাবে নিয়ে নেন ওই ঠিকাদারেরা। কিন্তু দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থলে কিংবা পরে হতাহত শ্রমিকদের দায়িত্ব নেওয়ার মতো কেউ থাকে না। সবাই তখন অচেনা হয়ে যায়।
শ্রম আইন অনুযায়ী কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকদের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব নিয়োগকারীদের। ইমারত নির্মাণ আইন-১৯৫২, জাতীয় ইমারত নির্মাণ বিধিমালা-২০০৬, ঢাকা মহানগর ইমারত (নির্মাণ, উন্নয়ন, সংরক্ষণ ও অপসারণ) বিধিমালা-২০০৮, পিপিআর-০৮, প্রভৃতি আইন ও বিধানে নির্মাণশ্রমিকদের কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দায়িত্ব নির্ধারণ করা আছে। এ ছাড়া শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের এক নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ভবন নির্মাণের সময় চারপাশে নিরাপত্তাবেষ্টনী দিতে হবে। উঁচু স্থানে কাজ করার সময় লিফট, সেফটি বেল্ট, শক্ত দড়ি-মাচা ব্যবহার; কাজের সময় মাথায় হেলমেট, পায়ে গামবুট ও মুখে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। নির্মাণ ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অতিরিক্ত মুনাফার লোভে এই খাতে কোনো বিনিয়োগ করে না।
নির্মাণকাজে প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জাম রাখতে হবে এবং সেফটি রেকর্ড বুক সংরক্ষণ করতে হবে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ক্রয়কারি বা প্রশাসনের উদাসীনতা, নজরদারির অভাব এবং আইন প্রয়োগের দুর্বলতা বড়ই পীড়াদায়ক।
এ বিষয়ে আরও পড়তে ক্লিক করুনঃ সরকারি ক্রয় প্রক্রিয়া কি শ্রমিকের অধিকার সংরক্ষন করছে ?
এই লেখকের অন্যান্য লেখা
সরকারি ক্রয় কার্যক্রমে ‘বাংলা’ কতটুকু গূরুত্ব পাচ্ছে
অন্তত একটি জায়গায় বিতর্ক তুলনামূলক কম, তা হলো ৫২ এর ভাষা আন্দোলন। মাতৃভাষার জন্য আত্মত্যাগের ইতিহাসে বাঙালির তুলনা বিশ্ব-ইতিহাসে নেই।
UN Contract Types within the UN common system
Interested in UN jobs but not sure where you fit in? UN agencies offers various categories of employment requiring different
Variations and Performance Security
Variations and Performance Security are closely interconnected concepts that serve as the foundation of risk management and contract enforcement in
Variations in Construction Contracts
Variations in construction contracts are changes or adjustments to the original scope of work. These can occur due to unforeseen
2 thoughts on “শ্রমিকের মৃত্যুর দায় ঠিকাদার না ক্রয়কারির ?”
This is a goods package under OTM done through e-GP . The tenderer’s evaluated price is 45% lower than the official cost estimate. Can the Performance Security be increased up to 25% ?
দেখুনঃ কোন ক্ষেত্রে Performance Security এর পরিমান বৃদ্ধি করা যায় ?