এখানে SPP তুলে ধরা হলো। তবে পাঠকদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, এই “প্রকিউরমেন্টবিডি” তে উল্লেখিত আইন , বিধি, পলিসি, ইত্যাদির কোন কন্টেন্ট/পোষ্ট /বিষয় যাচাই ব্যতীত ব্যবহার না করার জন্য সতর্ক করা হচ্ছে। এখানে ব্যবহৃত যে কোন ধারা, বিধি, পলিসি, ইত্যাদি শুধু মাত্র বিভিন্ন আলোচনা ও সংশ্লিষ্ট প্রেক্ষাপট সহজে ও দ্রুত বোধগম্য করার জন্য উল্লেখ করা হয়েছে। যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করার পরও “প্রকিউরমেন্টবিডি” তে অনিচ্ছাকৃত ভূল-ক্রটি থাকতে পারে। বাস্তবিক/অফিসিয়াল প্রয়োজনে সিপিটিইউ এর ওয়েব-সাইটে সংযুক্ত আইন , বিধিমালা, পসিসি, ইত্যাদি থেকে তা ব্যবহার করতে হবে।
প্রজ্ঞাপন
টেকসই সরকারি ক্রয় (এসপিপি) নীতি, ২০২৩
Sustainable Public Procurement (SPP) Policy, 2023
রবিবার, ডিসেম্বর ১০, ২০২৩
নং ২১.০০.০০০০,৩৬৩,.২২.১৪৯.২৩,.১৩৭ তারিখঃ ১৬ নভেম্বর ২০২৩
১. প্রস্তাবনা
১.১ প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে জলবায়ু-পরিবর্তনে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর একটি হিসাবে বাংলাদেশ সামন্টিক-অর্থনৈতিক এবং বাজেট প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় জলবায়ু সমস্যাকে একীভূত করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে। সরকার এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জনে সক্ষম হয়েছে। পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনকে সরকারের পরিকল্পনা ও সরকারি ব্যয় প্রক্রিয়ার মূলধারায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে সরকার তার নীতি, প্রেক্ষাপট, আর্থিক ব্যবস্থাপনা, দুর্বলতা পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণের জন্য জলবায়ুসংক্রান্ত সরকারি ব্যয়ের প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো (CPEIR 2012) শীর্ষক একটি সমীক্ষা পরিচলনা করে। CPEIR 2012-এর সুপারিশ অনুসরণ করে সরকার ২০১৪ সালে একটি জলবায়ু সংক্রান্ত রাজস্ব কাঠামো (CFF) প্রণয়ন করে। এর দুটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য (পাঁচটির মধ্যে) ছিল:
(ক) জলবায়ু অর্থায়নে একটি বৃহত্তর জাতীয় অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠা করা; এবং
(খ) বাংলাদেশে “ঝুঁকিসহনীয় উন্নয়ন” এবং “সবুজ উন্নয়ন”-এর সুযোগ সম্প্রসারিত করা। বর্তমানে বাজেট পরিপত্র (BC)-4 জলবায়ু পরিবর্তনের বিভিন্ন দিক বিবেচিত হচ্ছে। মধ্যমেয়াদি বাজেট কাঠামো (Mid-term Budgetary Framework-MTBF)-এর অধীনে জলবায়ু নীতি, কৌশল ও কর্মপরিকল্পনা (যেমন – BCCSAP) অন্তর্ভুক্ত করে বাজেট প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। বর্তমানে ২৫ টি মন্ত্রণালয়/অধিদপ্তরকে জলবায়ু-সম্পৃক্ত বিবেচনা করা হয়েছে, যেখানে কার্বন নিঃসরণ কমানো এবং পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে সহায়তা করার জন্য দেশের সরকারি ক্রয়ের ক্ষেত্রে বাজেটের ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে।
১.২ সরকারি ক্রয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বছরে প্রায় ২৫ বিলিয়ন অর্থ ব্যয় করে, যা দেশটির বার্ষিক বাজেটের প্রায় ৪০%-এর সমপরিমাণ। কার্যকর সরকারি ক্রয় জনগণের কাছে যথাসময়ে মানসম্পন্ন সরকারি সেবা সরবরাহ নিশ্চিত করার মূল চাবিকাঠি। সরকারি ক্রয় এবং বিদ্যমান আইনি-কাঠামো অনুশীলনের ক্ষেত্রে কিছু “মান” যাচাইয়ের মাধ্যমে “সর্বনিম্ন-মূল্য” চুক্তি অনুসরণ করা হয়। সর্বনিম্ন মূল্য চুক্তি দীর্ঘমেয়াদে পণ্যগুলোর সর্বাধিক সুবিধা নিশ্চিত নাও করতে পারে। কারণ প্রথাগত ক্রয়, ক্রয়ের অন্যান্য সংশ্লিষ্ট ব্যয় বিবেচনা করে না।
১.৩ দেশের সরকারি ক্রয়-পদ্ধতিতে এখনও টেকসই ক্রয়ের বিভিন্ন দিক (সামাজিক, অর্থনৈতিক, পরিবেশ ও পরিচালন) বিবেচিত হয়নি; প্রত্যাশিত যে, টেকসই ক্রয়ের দিকগুলো অন্তর্ভূক্ত এবং “সমগ্র জীবনচক্র ব্যয়” (WLCC) বিবেচনা করে “সর্বোচ্চ সাশ্রয়ী সুবিধাজনক দরপত্র” (MEAT) নির্বাচন সর্বোচ্চ সুবিধা নিশম্চিতকরণে সহায়তা করতে পারে। বিদ্যমান আইনি কাঠামোতে টেকসই সরকারি ক্রয়ের (SPP) বিভিন্ন দিকের প্রবর্তন দেশকে টেকসই/সবুজ সরকারি ক্রয়ের দিকে এগিয়ে নিতে অবদান রাখতে পারে।
১.৪ টেকসই ফলাফল প্রবর্তন এবং অব্যাহত উন্নয়নের লক্ষ্য নিয়ে সরকার নতুন চুক্তির জন্য এই টেকসই সরকারি ক্রয় (এসপিপি) নীতি তৈরি করেছে, যার আলোকে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো (PSO) নিজেদের বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে ক্রয়সেবা প্রদান করে। সরকারি টেকসই ক্রয়নীতি নিম্নলিখিত বিষয়গুলো নিশ্চিত করার জন্য ক্রয়কারী সংস্থাকে (PE) নির্দেশনা প্রদান করবে:
- টেকসই ক্রয় বিষয়ক (সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশ) জ্ঞানের বিকাশ;
- টেকসই কর্মসূচির বিষয়ে কার্যকরভাবে সাড়া দেওয়ার সক্ষমতা বৃদ্ধি;
- সরবরাহ ব্যবস্থায় (supply chain) টেকসই-বিষয়ক এজেন্ডার দৃশ্যমানতা ও উপলব্ধির বিকাশ এবং এর সঙ্গে সম্পৃক্তকরণ; এবং
- টেকসই সরবরাহ সক্রিয়ভাবে পরিচালনা, পরিবীক্ষণ এবং প্রতিবেদন করার জন্য চুক্তি ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়ার উন্নয়ন।
১.৫ সরকারি ক্রয়কে তখনই টেকসই ক্রয় বলা হবে যখন এটি টেকসই সরকারি ক্রয় (SPP) চাহিদা, কারিগরি বিনির্দেশ এবং মানদণ্ডগুলোকে একীভূত করবে এবং যা সম্পদের কার্যকারিতা, পণ্যের মান ও সেবার গুণগতমান বৃদ্ধি এবং ক্রয়ের ক্ষেত্রে সামগ্রিক ব্যয় (TC) সমন্বয় করার মাধ্যমে পরিবেশ রক্ষা, সামাজিক অগ্রগতি ও অর্থনৈতিক উন্নয়নকে সমর্থন করবে।
১.৬ কার্যকর, সামঞ্জস্যপূর্ণ, ন্যায়সংগত ও জবাবদিহিমূলক পদ্ধতিতে টেকসই ব্যবস্থার সংজ্ঞার্থ অনুসরণ করে পণ্য, কার্য এবং সেবাসমূহ ক্রয়ের লক্ষ্যে ক্রয়কারী (PE)-S সহায়তার জন্য টেকসই সরকারি ক্রয় (SPP) নীতি পরিকল্পনা করা হয়েছে। সরকারি ক্রয়ে কীভাবে টেকসই গুণাগুণ নিশ্চিতকরণ এবং সর্বোচ্চ সাশ্রয়ী ও সুবিধাজনক ক্রয়-সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যায় সে-বিষয়ে এই নীতি প্রাসঙ্গিক তথ্য প্রদান করে। সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট (CPTU) টেকসই সরকারি ক্রয় (SPP) নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ক্রয়কারী (PE)-এর সুবিধা ও ব্যবহারের জন্য মানদন্ড (template) ও আদর্শ দরপত্র দলিল সরবরাহ করবে। অন্যান্য আইনি পাঠ সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত সিপিটিইউ থেকে সরবরাহকৃত এসপিপি নীতি এবং পরবর্তী মানদণ্ড ও নির্দেশিকা সকল সরকারি প্রতিষ্ঠান অনুসরণ করবে।
২. সাধারণ বিধান
২.১ টেকসই সরকারি ক্রয় বাস্তবায়নে সরকারের নির্বাচিত ক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানসমূহকে সক্ষম করতে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীন বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (IMED)-এর সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট (CPTU) টেকসই সরকারি ক্রয় (SPP) নীতি প্রণয়ন করছে।
২.২ ক্রয়কারী (PE) টেকসই সরকারি ক্রয় (SPP) নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এবং এই নীতির আলোকে (বিভিন্ন সময়ে) নির্ধারিত ও উদ্ভাবিত মাপকাঠি অনুযায়ী টেকসই সরকারি ক্রয় সম্পন্ন করবে।
২.৩ সকল ক্রয়কারী (PE) টেকসই সরকারি ক্রয় (SPP)-এর জন্য উপযুক্ত শৃঙ্খলা এবং সকল সংস্থায় প্রয়োগকৃত যে-কোনো সংগতিপূর্ণ আইনি বা নীতিগত শর্ত নিশ্চিত করবে।
২.৪ টেকসই সরকারি ক্রয় টেকসই-সংক্রান্ত তিনটি স্তম্ভ যথা- পরিবেশগত, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক নীতি মেনে চলবে;
২.৫ টেকসই সরকারি ক্রয় এমনভাবে পরিচালিত হবে যা জবাবদিহিতা, ন্যায্যতা, প্রতিযোগিতা, সমানুপাতিকতা এবং স্বচ্ছতাকে উৎসাহিত করে।
২.৬ টেকসই সরকারি ক্রয়নীতি প্রয়োগের সময় “অর্থের সর্বোত্তম উপযোগিতা” (VfM) প্রধান বিবেচ্য হবে।
২.৭ টেকসই সরকারি ক্রয়নীতি সংক্রান্ত নির্দেশিকা এবং আদর্শ ছক (ফর্ম) এ নীতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে বিবেচিত হবে এবং তা সিপিটিইউ-এর ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।
৩. উদ্দেশ্য
৩.১ টেকসই সরকারি ক্রয়নীতির সাধারণ লক্ষ্য হলো সরকারি ক্রয়ে টেকসই ক্রয়ের মূলনীতি প্রবর্তন এবং বাংলাদেশের সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত আইনি-কাঠামোর সঙ্গে এর ক্রমান্বয়িক একীভূতকরণ ও বাস্তবায়ন।
৩.২ অভীষ্ট কর্মপ্রক্রিয়াসহ সুনির্দিষ্ট কতিপয় লক্ষ্যমাত্রা প্রণীত হবে, যা সেই লক্ষ্য অর্জনে কাজ করবে (সারণি-১)। সরকার এসডিজি-এর অধীন টেকসই-বিষয়ক উদ্দেশ্য ও প্রতিশ্রুতিসমূহ পূরণে ক্রয়কারী ও ব্যবসায়ী সংগঠনের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে, যাতে সরকারি ক্রয় কার্যক্রমকে টেকসইকরণ এবং শিশুশ্রম ও অপচয় হ্রাসকরণ বিষয়াদি অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
৩.৩ উল্লেখযোগ্য টেকসই প্রভাব থাকতে পারে এমন চুক্তির ক্ষেত্রে এই নীতিটি সকল সরকারি প্রতিষ্ঠান (PSO)-কে টেকসই পণ্য ও সেবা ক্রয়ের ক্ষেত্রে ক্রয়-প্রক্রিয়া শুরু করার পূর্বে অর্থনৈতিক, পরিবেশগত, সামাজিক সুবিধা এবং ঝুঁকিসমূহ বিবেচনা করতে দায়বদ্ধ করবে।
৩.৪ টেকসই সরকারি ক্রয় (SPP) নীতি বাস্তবায়নকল্পে এসপিপি গাইডসহ সকল দলিলাদি সিপিটিইউ-এর ওয়েবসাইটে (www.cptu.gov.bd) প্রকাশ করা হবে এবং যে-কোনো অংশীজন বিনামূল্যে তা ডাউনলোড করতে পারবে।
8. প্রয়োগ ও পরিধি
৪.১ উপর্যুক্ত লক্ষ্যমাত্রায় টেকসই সরকারি ক্রয় (SPP) নীতির পরিধি এবং আওতা হবে নিম্নবুপ :
৪.১.১ সারাদেশে সরকারি ক্রয়ের দরপত্র প্রক্রিয়াকরণ এবং চুক্তি ব্যবস্থাপনায় এ নীতিটি প্রযোজ্য হবে।
৪.১.২ কোনো সরকারি ক্রয়কারী সংস্থা কর্তৃক নিজস্ব ক্রয় সম্পাদন অথবা নির্বাহক এজেন্সি হিসাবে অন্য কোনো স্বত্বাধিকারী সংস্থার ক্রয়ের ক্ষেত্রে টেকসই সরকারি ক্রয় (SPP) নীতির ধারাগুলো প্রযোজ্য হবে৷
8.১.৩ টেকসই সরকারি ক্রয় (SPP) নীতি প্রার্থমিকভাবে নির্বাচিত SPP পণ্যগুলোর জন্য প্রযোজ্য হবে (পরিশিষ্ট-১); এবং বাজার অধ্যয়ন, প্রভাব মূল্যায়ন ও বাজার সৃষ্টির মাধ্যমে ক্রমাগতভাবে সম্প্রসারণ করা হবে৷
৪.১.৪ প্রাথমিকভাবে চুক্তির গ্রহণযোগ্যতা কেবল সর্বনিম্ন-মূল্যায়িত-গ্রহণযোগ্য দর হিসাবে নির্ধারণ করা হবে না, বরং ক্রয়কৃত যে-কোনো পণ্য এবং সেবার মেয়াদ পর্যন্ত বিদ্যমান উপযোগিতা বিবেচনা করা হবে। টেকসই-সংক্রান্ত প্রভাব মূল্যায়নে যে-কোনো সরঞ্জামের প্রত্যাহার এবং “সমগ্র জীবনচক্রে’ অন্য যে-কোনো বিষয় বিবেচিত হবে।
৪.১.৫ প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সমগ্র জীবনচক্র ব্যয় (WLC) এর বিশ্লেষণ আবশ্যিকভাবে ক্রয়-প্রক্রিয়ার অংশ হবে, যার ন্যুনতম আওতা :
- উৎপাদন, বিতরণ, স্থাপন (installation),
- জ্বালানি, পানির ব্যবহার এবং রক্ষণাবেক্ষণসহ পরিচালন ব্যয়;
- প্রত্যাহার এবং নিষ্পত্তিসহ মেয়াদোত্তীর্ণ ব্যয়।
৪.১.৬ এই টেকসই সরকারি ক্রয়নীতির প্রয়োগ প্রশ্নে অন্তর্ভুক্ত কার্যকলাপ সম্ভাব্য প্রভাবের সমানুপাতিক হবে। উদাহরণস্বরুপ: মুখ্য ও বহু-সরবরাহকারীর নিকট হতে ক্রয় এবং দীর্ঘমেয়াদি ফ্রেমচুক্তির ক্ষেত্রে সাধারণ ক্রয় কার্যক্রমের চেয়ে সূক্ষ্ম পর্যবেক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে।
৫. সংজ্ঞার্থ
৫.১ “পণ্যের মূল্য (CoP)” অর্থ একটি নির্দিষ্ট মূল্যে প্রাপ্য টেকসই পণ্য ও সেবা যা অ-টেকসই পণ্য ও সেবার মূল্যের তুলনায় ১০%-এর অধিক হবে না;
৫.২ “সবুজ ক্রয় (GP)” অর্থ এমন পণ্য বা সেবা ক্রয়, যা পরিবেশের উপর ন্যুনতম বিরুপ প্রভাব সৃষ্টি করে;
৫.৩ “সর্বোচ্চ সাশ্রয়ী সুবিধাজনক দরপত্র (MEAT)” অর্থ সেই দরপত্র যা কারিগরি গুণাগুণ, নান্দনিকতা ও কার্যকারিতা, পরিবেশেগত বৈশিষ্ট্য, চলমান ব্যয়, ব্যয় সাজুয্য, বিক্রয়োত্তর সেবা, কারিগরি সহায়তা, সরবরাহের তারিখ এবং সরবরাহকাল অথবা সরবরাহ সম্পন্নের সময়কাল ও অন্যান্য বিষয় (সংশ্লিষ্ট চুক্তি অনুযায়ী যা উপযুক্ত)-সহ পণ্যের গুণগতমান ও মূল্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকল ব্যয় বিবেচনায় রেখে পণ্য বা সেবার জীবনচক্রে ব্যয়িত অর্থের সর্বোত্তম উপযোগিতা দান করে;
৫.৪ “সরকারি খাতের সংস্থাসমূহ (PSOs)” অর্থ সরকারি খাতের মালিকানাধীন এবং সরকার কর্তৃক পরিচালিত সংস্থাগুলো;
৫.৫ “সরকারি ক্রয় (PP)” অর্থ জাতীয় বাজেট থেকে ক্রয়কারী (PE)-এর অনুকূলে বরাদ্দকৃত সরকারি অর্থ দিয়ে ক্রয়কারী সংস্থা (PE) কর্তৃক ক্রয়;
৫.৬ “টেকসই পণ্যসমূহ (SPs)” অর্থ নির্বাচিত পণ্য ও উপকরণ, যা বিকল্প পণ্য ও উপকরণের তুলনায় মানব স্বাস্থ্য এবং পরিবেশের উপর কম বিরুপ প্রভাব ফেলে; এই তুলনার মধ্যে কাঁচামাল অধিগ্রহণ, উৎপাদন, প্রস্তুতকরণ, মোড়কজাতকরণ, বিতরণ, পুনর্ব্যবহার বা নবায়ন, পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণ এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ ক্রয়তব্য সকল দরপত্রকৃত পণ্যের জীবন-চক্র মূল্যায়ন অন্তর্ভূক্ত থাকবে;
৫.৭ “টেকসই সেবা (SS)” অর্থ এমন সেবা, যা প্রতিযোগী সেবাগুলোর তুলনায় মানব স্বাস্থ্য এবং পরিবেশের জন্য অধিকতর উপকারী বা ন্যুনতম বিরুপ প্রভাব সম্পন্ন;
৫.৮ “টেকসই উন্নয়ন (SD)” অর্থ এমন এক ধরনের উন্নয়ন যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নিজস্ব চাহিদা পূরণের সক্ষমতার সঙ্গে আপস না করে বর্তমানের চাহিদা পূরণ করে। টেকসই উন্নয়ন অর্জনের জন্য তিনটি মূল উপাদানের সমন্বয় করা অত্যন্ত জরুরি : অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, সামাজিক অন্তর্ভুক্তি ও পরিবেশগত সুরক্ষা, যেগুলো পরস্পর সম্পর্কযুক্ত এবং ব্যক্তি ও সমাজের কল্যাণের জন্য অতীব গুরুত্বপূর্ণ;
৫.৯ অর্থের সর্বোত্তম উপযোগিতা (VfM)” অর্থ সম্ভাব্য ঝুঁকি এবং সম্পদের প্রাপ্যতা বিবেচনায় রেখে ব্যবহারকারীর প্রয়োজনীয়তা পূরণকল্পে, সমগ্র জীবনচক্র ব্যয় এবং প্রয়োজনীয় গুণমানের বিন্যাসসাধন; VfM-এর নীতি গ্রাহকের প্রত্যাশা পূরণের উদ্দেশ্যে সমগ্র জীবনচক্র ব্যয় এবং গুণমান বা উদ্দেশ্য পূরণের সক্ষমতার সর্বোত্তম সময় নিশ্চিত করে। একটি টেকসই অবস্থা বা সনদপত্র অর্জনের জন্য একটি পণ্যের টেকসই গুণমান এবং এর টেকসই উৎপাদনের শর্তাদি পূরণ করতে হবে;
৫.১০ “সমগ্র জীবনচক্র ব্যয় (WLCC)” অর্থ একটি পণ্যের ক্রয় থেকে শুরু করে নিঃশেষ হওয়া পর্যন্ত (জীবনচক্র ব্যয়) উক্ত পণ্যের জন্য কত ব্যয় করতে হবে, তা প্রাক্কলন করার প্রক্রিয়া; এবং
৫.১১ “জীবনচক্র ব্যয় (LCC)” অর্থ সকল ব্যয় যা পণ্য বা সেবার মেয়াদকালে নির্বাহ করা হবে; প্রাথমিক ক্রয়মূল্যসহ সরবরাহ, স্থাপন (installation), বিমা ইত্যাদির সঙ্গে যুক্ত ব্যয়ও এর অন্তর্ভূক্ত হবে; এছাড়াও শক্তি, জ্বালানি ও পানির ব্যবহার, খুচরা যন্ত্রাংশ ও রক্ষণাবেক্ষণসহ পরিচালনা ব্যয় এবং মেয়াদকালীন খরচ যেমন- প্রত্যাহার বা নিষ্পত্তি বা অবশিষ্ট মূল্য, যা পণ্য বিক্রয়লব্ধ এবং নেতিবাচক পরোক্ষ প্রভাব হতে উদ্ভুত ব্যয় (cost of externalities), যেমন – গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণ ইত্যাদিসহ বিশেষ পরিস্থিতিতে অন্যান্য ব্যয়, যা পরিবেশগত ও সামাজিক প্রভাবের সম্পর্কযুক্ত, তা এর অন্তর্ভূক্ত হবে।
৬. ধারণা
৬.১. টেকসই ক্রয়কে এভাবে সংজ্ঞিত করা যায় যে, “এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান তার পণ্য, কার্য বা সেবা এবং উপযোগসমূহের (utilities) চাহিদা এমনভাবে পূরণ করে, যা শুধু এ প্রতিষ্ঠানের জন্যই নয় বরং সমাজ ও অর্থনীতির জন্যও সুবিধা সৃষ্টির ক্ষেত্রে সমগ্র জীবনের ভিত্তিতে অর্থের সর্বোত্তম উপযোগিতা (VfM) নিশ্চিত করে; পাশাপাশি পরিবেশের ক্ষতিও হ্রাস করে।” এই সংজ্ঞার্থটি টেকসই-সংক্রান্ত তিনটি স্তম্ভের ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত; সেগুলো হলো : পরিবেশগত, সামাজিক ও অর্থনৈতিক স্তম্ভ।
৬.২ সরকারি ক্রয়কে টেকসই বলা হবে যখন এর প্রয়োজনীয়তা, বিনির্দেশ (specifications) ও নির্ণায়ক (determinant)-কে একীভূত করে যেগুলো সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং পরিবেশের সুরক্ষা, সামাজিক অগ্রগতির অনুকূল এবং সম্পদের সক্ষমতা সন্ধানের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়নকে সমর্থন জোগায়, পণ্য ও সেবার মান উন্নত করে এবং শেষ পর্যন্ত ব্যয়কে সর্বোত্তমভাবে বিন্যস্ত করে।
৬.৩ উল্লিখিত তিনটি স্তম্ভ আন্তঃসম্পর্কযুক্ত; সেগুলো টেকসই সরকারি ক্রয় (SPP) এর উপাদানগুলোকে অনুসরণ করে এবং টেকসই ফলাফল তৈরিতে পরস্পরের সঙ্গে সংযুক্ত।
৭. টেকসই সরকারি ক্রয়ের মানদন্ডের আলোকে সরকারি ক্রয়চক্র
৭.১ প্রাক-ক্রয় (Pre-procurement)
৭.১.১ নিম্নোক্ত যে-কোনো একটি বিষয় মূল্যায়নের জন্য ক্রয়কারী (PE)-কে চাহিদা নিরুপণ, বাজার বিশ্লেষণ এবং বাজার সংযোগ স্থাপন করতে হবে:
- পণ্য ক্রয়ের প্রয়োজনীয়তা অথবা সেই প্রয়োজনীয়তা অন্য কোনো উপায়ে পূরণের উপায়;
- ক্রয় করা হবে এমন টেকসই পণ্যের প্রভাব যাচাই;
- একই সেবা প্রাপ্তির সঙ্গে আপস না করে পণ্য বা সেবার পরিমাণ বা মাত্রা হ্রাস করার সম্ভাবনা;
- তাদের চাহিদা পূরণের জন্য বিকল্প পণ্য বা সেবার প্রাপ্যতা;
- ক্রয় করা হবে এমন পণ্য বা কার্যের জন্য সমগ্র জীবনচক্র যাচাইয়ের প্রযোজ্যতা;
- টেকসই বিকল্পের প্রাপ্যতা।
৭.১.২ ক্রয়সংক্রান্ত দলিল যেমন – ক্রয়-পরিকল্পনা, দরপত্র দলিল ইত্যাদির বিকাশ, লেটিং এবং ব্যবস্থাপনা সরকারি শর্তের অধীনের আবশ্যক বাধ্যবাধকতাসমূহ পূরণকল্পে ত্রয়কারীর সামর্থকে সহায়তা প্রদান করবে এবং এই এসপিপি নীতি ও কৌশলের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে।
৭.২ ক্রয়-পদ্ধতি নির্ধারণ
৭.২.১ প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র প্রক্রিয়া আবশ্যিকভাবে অনুসরণ করতে হবে।
৭.২.২ দরপত্র প্রক্রিয়ায় নারী উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান (WOEs)-সহ ক্ষুদ্র ও মাবারি প্রতিষ্ঠানের (SMEs) সর্বোচ্চ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য যতটা সম্ভব নমনীয় ক্রয়-পদ্ধতি বিবেচনা করা যেতে পারে।
৭.২.৩ নারী উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান (WOEs)-সহ ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠান (SMEs) সম্প্রসারিত করার উপায় যেমন – টেন্ডার ডকুমেন্টেশনের জটিলতা হ্রাস করা, চুক্তিগুলোকে ছোটো লটে বিভক্ত করা, একজন দরপত্রদাতাকে দেওয়া যেতে পারে এমন লটের সংখ্যা সীমিত করা, যাতে দরপত্র ও আগ্রহ ব্যক্তকরণপত্র (EoI) দাখিলের জন্য দীর্ঘ সময়ের অনুমতি দেওয়া যায় এবং উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের অনুমোদন-সাপেক্ষে দরপত্র প্রদান করা যায়।
৭.৩ চুক্তির বিষয় ব্যাখ্যাকরণ
৭.৩.১ চুক্তির বিষয় ব্যাখ্যা করার জন্য অনুসৃত মানকে একটি ব্যাকস্টপ (Backstop) হিসাবে গণ্য করা এবং সংশ্লিষ্ট পণ্য ও সেবা ক্রয় করার সময় ন্যুনতম মান অবশ্যই বজায় রাখা উচিত।
৭.৩.২ এক্ষেত্রে চুক্তির বিষয়বস্তু টেকসই পণ্য ও সেবা ক্রয় করার বিষয়টি স্পষ্টভাবে নির্দেশ করবে।
৭.৪ দরপত্রদাতা নির্বাচন/বিযুক্তকরণ
৭.8.১ আদর্শ দরপত্র দলিল (STDs)-এ টেকসই সরবরাহকারী, সেবাদানকারী এবং ঠিকাদারদের নির্বাচন/বাতিলের নির্ণায়ক (যা সময়ের সঙ্গে নির্ধারণ করা যেতে পারে) অন্তর্ভূক্ত হবে।
৭.৫ কারিগরি বিনির্দেশ
৭.৫.১ একটি আদর্শ পণ্য প্রত্যয়ন পদ্ধতি (যেমন – BSTI, ISO ইত্যাদি) থাকবে যা টেকসই পণ্য এবং সেবা নির্ধারণে প্রত্যয়নের জন্য ব্যবহৃত হবে।
৭.৫.২ সকল ক্রয়কারী এবং সরবরাহকারীকে অবশ্যই ক্রয়-দলিলে উল্লিখিত বাধ্যতামূলক সরকারি মানদন্ড গুলো মেনে চলতে হবে।
৭.৫.৩ ক্রয়-দলিলে উল্লিখিত মানদন্ডগুলোকে অতিক্রম করে যায় এমন প্রস্তাব, যা সর্বোত্তম প্রস্তাব হিসাবে পরিগণিত, তা উপস্থাপনের জন্য সরবরাহকারীদের উৎসাহিত করতে হবে।
৭.৬ বিজয়ী দরদাতা নির্বাচনের মানদণ্ড
৭,৬.১ টেকসই সরকারি ক্রয় (SPP) বাস্তবায়নে দরপত্র মূল্যায়নে ক্রয়কারী টেকসই সরকারি ক্রয় (SPP) নীতি পর্যালোচনা ও অনুসরণ করবে।
৭.৬.২ যে দরপত্রগুলো ন্যুনতম সাধারণ মানদণ্ড আর্থিক মানদণ্ড এবং যোগ্যতা ও দক্ষতার মানদণ্ড পূরণ করেছে সেগুলিকে টেকসই সংক্রান্ত ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কাজের মানদন্ডের বিপরীতে যোগ্য কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বিভিন্ন সময়ে নির্ধারিত সামাজিক মানদণ্ড অর্থনৈতিক মানদণ্ড এবং পরিবেশগত মানদন্ডের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা যেতে পারে।
৭.৬.৩ দরপত্র আহবানের ক্ষেত্রে রেটিং পদ্ধতিসহ ব্যবহৃত সকল টেকসই-বিষয়ক মানদন্ড সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে।
৭.৭ চুক্তি ব্যবস্থাপনা
৭.৭.১ সকল চুক্তি সামাজিক ও পরিবেশগত আইনের সঙ্গে অবশ্যই বিদ্যমান প্রাসঙ্গিক সরকারি ক্রয় আইন প্রতিপালন যতদূর সম্ভব ক্রয়-দলিলে উল্লেখ করতে হবে।
৭.৭.২ সরবরাহকারী এবং সরবরাহকৃত পণ্যের নির্দিষ্টকৃত বৈশিষ্ট্যগুলো ও চুক্তির শর্তাবলি প্রতিপালন করা হচ্ছে কি না, তা নিশ্চিত করার জন্য চুক্তি চলাকালীন কর্মকৃতি পর্যবেক্ষণ করা প্রয়োজন। টেকসই ফলাফলের জন্য আবশ্যিক শর্ত পূরণ করে কি না, তা যাচাই করার জন্য চুক্তির সমগ্র মেয়াদে পর্যালোচনা সভা এবং সরবরাহকারীর পর্যায়ক্রমিক নিরীক্ষা সম্পাদন করতে হবে।
৭.৭.৩ ক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদন যেমন – বার্ষিক প্রতিবেদনে প্রকাশ্যে ও স্বচ্ছভাবে টেকসই- বিষয়ক ফলাফল উপস্থাপন করতে হবে।
৮. পরিচালন
৮.১ টেকসই সরকারি ক্রয় ক্রয় বিষয়ক সময়াবদ্ধ কৌশলগত কার্যক্রম (পরিশিক্ট-২) অনুযায়ী এই নীতির কার্যকরী বাস্তবায়নের দায়িত্ব পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট (সিপিটিইউ)-এর উপর ন্যস্ত থাকবে। অধিকন্তু প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সিপিটিইউ, আইএমইডি এই নীতির এক্তিয়ারের মধ্যে থাকা ব্যক্তিবর্গকে উল্লিখিত দায়িত্ব অর্পণ করতে পারে।
৮.২ টেকসই সরকারি ক্রয় নীতির বাস্তবায়ন এবং নির্দেশনার জন্য পরিকল্পনা মন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি উচ্চ পর্যায়ের টেকসই সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত স্টিয়ারিং কমিটি (SPPSC) গঠন করা হবে। সিপিটিইউ, আইএমইডি নির্দিষ্ট কর্মপরিধি (ToR)-সহ SPPSC গঠন করবে (পরিশিষ্ট-৩)।
৮.৩ টেকসই ক্রয় লক্ষ্যমাত্রা পূরণকল্পে সিপিটিইউ, আইএমইডি প্রয়োজনীয় নির্দেশিকা, স্পষ্টীকরণ প্রদান ও জারি করবে।
৮.৪ বাস্তবায়নের সহায়তা করার জন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো (PSO) সরবরাহকারীদের সঙ্গে কাজ করবে এবং টেকসই পণ্য ও সেবাগুলো নির্ধারণ করবে, যা মানব স্বাস্থ্য এবং পরিবেশের উপর ন্যুনতম বিরুপ প্রভাব ফেলবে।
৮.৫ SPPSC বার্ষিকভাবে ক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্য থেকে টেকসই ক্রয়ের ভিত্তিতে একটি প্রতিষ্ঠানকে “শ্রেষ্ট” (champion) হিসাবে নির্বাচন করবে:
- প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে টেকসই ক্রয় সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা;
- প্রতিবেদন প্রস্তুত প্রক্রিয়া (Reporting) এবং কর্মক্ষমতা ট্র্যাকিং সিস্টেম এর বিকাশ সাধন করা;
- সামগ্রিক টেকসই সরকারি ক্রয়নীতির অধীনে চুক্তির সংখ্যা এবং টেকসই সরকারি ক্রয়ে গুণগতমান বিবেচনা করে অধিকসংখ্যক চুক্তির সফল বাস্তবায়ন;
- প্রস্তুতকারক ও সরবরাহকারী এবং পরামর্শদাতা ও ঠিকাদারদের জন্য “আচরণবিধি” (Code of conduct) তৈরি।
৮.৬ পরিবর্তিত প্রয়োজন, পরিস্থিতি ও অবস্থার সঙ্গে খাপ খাইয়ে টেকসই সরকারি ক্রয় নীতিটি পর্যায়ক্রমিক বাস্তাবায়নের নিমিত্ত টেকসই সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত স্টিয়ারিং কমিটি কর্তৃক (SPP নীতি) প্রতি ছয় মাসে পর্যালোচনা করা হবে।
৮.৭ টেকসই সরকারি ক্রয় SPP প্রক্রিয়ার সমন্বয়, সক্ষমতা বিকাশ, আইনি কাঠামো সংশোধনে সিপিটিইউ, আইএমইডি নেতৃত্ব প্রদান করবে। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, আদর্শ দরপত্র দলিল প্রস্তুত করবে এবং দলিলগুলো সরকারি প্রতিষ্ঠান (PSO)-এর প্রাপ্তিসাধ্য করবে।
৮.৮ পরিশিষ্ট-২-এ উল্লেখিত টেকসই সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত সময়াবদ্ধ কৌশলগত কার্যক্রম বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
৯. যোগাযোগ
এই নীতির উন্নয়নে কোনো প্রশ্ন বা পরামর্শের জন্য অনুগ্রহ করে সিপিটিইউ, আইএমইডি (www.cptu.gov.bd বা www.imed.gov.bd)-তে যোগাযোগ করুন।
পরিশিষ্ট-১
পরীক্ষামূলক বাস্তবায়নের জন্য প্রাথমিকভাবে অনুসরণীয় এসপিপি পণ্য ও সেবার তালিকা
১. কাগজ ও কাগজজাত পণ্য;
২. অফিস সামগ্রী;
৩. কম্পিউটার এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম ও সামগ্রী;
৪. অফিস আসবাবপত্র বা সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কাঠের সরঞ্জাম;
৫. যানবাহন ও অন্যান্য পরিবহণ সরঞ্জাম;
৬. মুদ্রণ সামগ্রী
পরিশিষ্ট-২
টেকসই সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত সময়াবদ্ধ কৌশলগত কার্যক্রম
১. সরকারি ক্রয়ের ক্ষেত্রে টেকসই নীতি প্রবর্তন এবং এই টেকসই সরকারি ক্রয় নীতি ২০২৩ গ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশের সরকারি ক্রয়-কাঠামোর সঙ্গে ধীরে ধীরে একীভূত করা।
২. একটি বাধ্যতামূলক নির্দেশিকা জারির মাধ্যমে আদর্শ দরপত্র দলিলে ন্যুনতম টেকসই সরকারি ক্রয় নীতির বিধান অন্তর্ভূক্ত করা এবং ২০২৪ সালে এর পরীক্ষামূলক বাস্তবায়ন।
৩. আইনি পরিধিতে অন্তর্ভূক্তির জন্য ২০২৫ সালে টেকসই সরকারি ক্রয় নির্দেশিকা এবং আদর্শ দরপত্র দলিলের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ থেকে প্রাপ্ত শিখনের ওপর ভিত্তি করে প্রাসঙ্গিক টেকসই সরকারি ক্রয় বিধানগুলোকে অন্তর্ভূক্ত করে সরকারি ক্রয় আইন, ২০০৬ (পিপিএ ২০০৬) এবং সরকারি ক্রয় বিধি ২০০৮ (পিপিআর ২০০৮) সংশোধন করা।
৪. কমপক্ষে দুটি গুরুত্বপূর্ণ টেকসই-সংক্রান্ত মূল সূচকের নিয়মিত পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে উপরিউক্ত কৌশলগত উদ্যোগের মূল্যায়ন: ক) সরকারি ক্রয়-প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী নারী উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানের অংশীদারিত্ব; এবং খ) প্রাসঙ্গিক চুক্তিপত্র টেকসই সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত নির্ধারিত মানদন্ড ব্যবহার করে এমন সরকারি সংস্থার সংখ্যা।
৫. সম্ভাব্যতা যাচাই এবং ২০২৬ সালের পরে এর প্রভাবসহ অগ্রগতি প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সারাদেশে টেকসই সরকারি ক্রয় নীতি চালু করা।
পরিশিষ্ট-৩
টেকসই সরকারি ত্রয় সংক্রান্ত স্টিয়ারিং কমিটির কর্মপরিধি
১. টেকসই সরকারি ক্রয় নীতি, কৌশল ও কর্মপরিকল্পনা অনুমোদন।
২. সিপিটিইউ/আইএমইডি-কে নীতি নির্দেশাবলি প্রদান।
৩. টেকসই পণ্য, কার্য ও সেবা নির্বাচনের জন্য নির্দেশনা প্রদান।
৪. টেকসই সরকারি ক্রয়নীতি, ব্যবহৃত ক্রয়-দলিল এবং টেকসই উপাদান কাঠামোতে অন্তর্ভুক্ত করার সময়ের ওপর ভিত্তি করে টেকসই-সংক্রান্ত উপাদান অনুমোদন।
৫. অংশীজনদের সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে সমন্বয় সাধন।
৬. অংশীজনদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং তাদের টেকসই ক্রয় বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনা।
৭. টেকসই পণ্য, কার্য ও সেবার জন্য বাজার সৃষ্টির নির্দেশনা প্রদান।