রিপোর্টটি প্রস্তুতে সহযোগিতা করেছেন Md. Rasel Parvez
গত ১২ মার্চ, ২০২৩ ইং তারিখে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) তাদের অর্থায়নে বাস্তবায়িত UGIIP (Urban Governance and Urban Infrastructure Projects) প্রকল্পের মাধ্যমে অভিজ্ঞতা অর্জন বিষয়ে এক প্রকাশনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল, ঢাকায় আয়োজিত উক্ত অনুষ্ঠানে “Incentivizing Change – How Governance Reforms are Changing the Urban Landscape of Bangladesh” নামক প্রকাশনাটির বিষয়ে সবাইকে অবহিত করা হয়।
প্রকাশনাটির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অথিতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার, গ্রামীণ উন্নয়ন এবং সমবায় মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিব মুহম্মদ ইব্রাহিম, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী সেখ মোহাম্মদ মহসিন, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোঃ সরোয়ার হোসেন, এডিবি’র দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের পরিচালক নরিও সাইতো এবং এডিবির বাংলাদেশে কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিন্টিং। প্রত্যেকে তাঁদের বক্তব্যে বাংলাদেশের নগর উন্নয়নে ADB ও UGIIP প্রকল্পের অবদানের কথা উল্লেখ করেন।
এডিবি এবং UGIIP
এডিবি বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন সহযোগি সংস্থা। এই মুহূর্তে বাংলাদেশে বাংলাদেশ ও এডিবি’র অংশীদারত্বের ৫০ বছর পূর্তি উদ্যাপন চলছে। তন্মধ্যে ২০০২ সালে শুরু হওয়া UGIIP প্রকল্পে অর্থায়নের মাধ্যমে এডিবি দেশের পৌরসভার উন্নয়নে ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে কাজ করছে। এডিবি UGIIP প্রকল্পের মাধ্যমে পৌরসভাগুলোকে অধিক বসবাসযোগ্য করে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মান, নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য উন্নত পরিবেশের নিশ্চয়তাসহ নগর উন্নয়ন কৌশল বাস্তবায়নে সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং সমন্বয়ে সহায়তা করেছে।
UGIIP প্রকল্প হলো পৌরসভাগুলোকে শক্তিশালী করার জন্য ADB-এর সবচেয়ে শক্তিশালী এবং কার্যকর নগর উন্নয়ন প্রচেষ্টাগুলির মধ্যে একটি।
প্রকাশনাটির সারসংক্ষেপ
প্রকাশনাটির মাধ্যমে ২০০২ সালে শুরু হওয়া UGIIP প্রকল্পে ২০ বছরের ধারাবাহিক Governance Reforms এর উপর আলোকপাত করা হয়েছে। প্রকাশনাটির বিষয়বস্তু সকল নীতিনির্ধারক, বিভিন্ন উন্নয়ন অংশীদারদের পাশাপাশি Urban Governance নিয়ে কাজ করা অন্যান্য কর্মসূচি বাস্তবায়নকারীদের জন্যও সহায়ক হবে বলে প্রকাশনা অনুষ্ঠানে আশা ব্যক্ত করা হয়েছে। UGIIP প্রকল্পের বিশাল কর্মযজ্ঞের অভিজ্ঞতা থেকে সবাই টেকসই প্রকল্প বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ এবং এর সফলতা সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে পারবে।
বাংলাদেশে UGIIP এর যাত্রা ভালভাবেই সফলতার মুখ দেখেছে যা ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ক্রমাগত উন্নতি লাভ করছে। UGIIP এর ৩টি প্রকল্প (UGIIP-1, UGIIP-2, UGIIP-3) দেখিয়েছে “what works, what does not, and what still needs attention”। এই প্রকল্পের সফলতাই প্রমাণ করেছে যে সীমিত সম্পদ এবং সামর্থ থাকলেও জনসাধারণের কাছে জবাবদিহিতার মাধ্যমে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার সব বাধা দূর করা সম্ভব।
রাস্তা এবং ড্রেন নির্মাণ কাজের মাধ্যমে UGIIP-3 প্রকল্পে সবচেয়ে বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছিল। UGIIP-3 এর gender action plan (GAP) অনুযায়ি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের প্রতিটি প্যাকেজেই অন্তত ২০% মহিলা শ্রমিক নিয়োজিত করার বাধ্যবাধকরা ছিল। কিন্তু এই প্রকাশনায় উল্লেখ করা হয়েছে যে পুরো প্রকল্পে গড়ে প্রায় ৩০% মহিলা শ্রমিক হিসেবে নিয়োজিত ছিল যা ধারাবাহিক ভাবে UGIIP প্রকল্প বাস্তবায়নেরই ১টি উল্লেখযোগ্য সাফল্য। এছাড়াও, UGIIP এর Gender action plan গাইডলাইন অনুযায়ি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে কাজ চলমান থাকার সময় মহিলা কর্মীদের জন্য আলাদা টয়লেট, পূরুষ শ্রমিকদের সমান বেতন, ইত্যাদি সম-অধিকার প্রতিষ্ঠা নিশ্চিত করতে হয়েছে।
আবার, UGIIP-2 প্রকল্পে প্রায় ৫০০টি নির্মাণ প্যাকেজ থাকা সত্ত্বেও, প্রকল্পের মেয়াদ এক দিনও বাড়ানোর প্রয়োজন হয়নি। এটাও একটা দারুণ সাফল্য যা এই প্রকাশনাটিতে সুন্দর ভাবে তুলে ধরা হয়েছে। নিয়মিত মনিটরিং এর কারনেই তা সম্ভব হয়েছে মর্মে ব্যক্ত করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী এই প্রকল্পের টেন্ডারিং প্রক্রিয়া নিয়ে কিছু উক্তি করেছেন যা হুবহু তুলে ধরা হলঃ “The tendering process under UGIIP was good. We followed the public procurement rules, but outside of UGIIP it is a monopoly system, not very competitive. We need to work on this. Small contractors cannot compete.” ছোট ঠিকাদাররা যে টেন্ডারিং প্রক্রিয়ায় প্রতিযোগিতা করতে পারছে না, পিছিয়ে যাচ্ছে এই বিষয়ে তিনি বর্তমান বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটই আসলে তুলে ধরেছেনা।
এছাড়াও, UGIIP এর ৩টি প্রকল্প বাস্তবায়নের আলোকে এই প্রকাশনাতে যে যে সাফল্য এবং অভিজ্ঞতা অর্জনের বিষয়গুলো উঠে এসেছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলোঃ
-
- What mayors initially feared has been their greatest success: public accountability
- Incentive-driven policy
- Performance-based budget allocations
- Intensive project support required
- A visible municipal presence overseeing contractors is the best quality assurance
- Pourashavas need more responsive human resources
- Introduction of volumetric meters and tariffs is a tough challenge
- Slum communities need greater equity in development spending
- Decentralize municipal staffing decisions
- Encourage systematic knowledge sharing and transfer of good practice
প্রকাশনাটি দেখতে ক্লিক করুনঃ Incentivizing Change
আয়োজিত অনুষ্ঠানের শেষের দিকে এডিবি’র অর্থায়নে পরবর্তী Water এবং Urban সেক্টরের সাম্ভাব্য কার্যক্রমের উপর একটি উন্মুক্ত আলোচনা হয়। Water এবং Urban সেক্টরের পরবর্তী বিভিন্ন পাইপলাইন প্রকল্পসমূহ তুলে ধরা হয়। তাছাড়া এডিবি এবং সরকার কিভাবে বাংলাদেশের উন্নয়নের আরও অবদান রাখতে পারে তা নিয়েও আলোচনা হয়।