কালো তালিকাভুক্ত অনেক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এখন সুযোগ খুঁজছে

দীর্ঘ এক যুগ ধরে ই-টেন্ডারিং পদ্ধতির দুর্বলতা কাজে লাগিয়ে এবং জাল সনদ জমা দিয়ে একচেটিয়া ঠিকাদারি ব্যবসা করে আসছেন অনেক প্রতিষ্ঠান মর্মে অভিযোগ আছে।
এ বিষয়ে রিপোর্ট দেখুনঃ
- অভিজ্ঞতার সনদ (Experience Certificate) জালিয়াতির কিছু নমুনা
- ‘সড়কের ৫১% কাজ পেয়েছেন “প্রভাবশালীদের ঘনিষ্ঠ”৫ ঠিকাদার’
সড়কে গুটিকয়েক ঠিকাদারের বেশির ভাগ কাজ পাওয়ার বিষয়টি নিয়ে গত ৬ নভেম্বর ২০২৩ ইং তারিখে উচ্চ আদালতে একজন আইনজীবী রিট আবেদন করেন। আদালতের নির্দেশে গত ১৯ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে সওজ তদন্ত কমিটি গঠন করে। সওজের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এ কে এম রেজাউল করিমকে প্রধান করে গঠিত দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গত জানুয়ারি মাসে প্রতিবেদন জমা দেয়। ফেব্রুয়ারি থেকে ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়। তখন, ৪৭টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে জাল সনদ জমা দিয়ে কাজ পাওয়ার অভিযোগে তাদের কালোতালিকাভুক্ত করে সওজ। এরপর ঠিকাদারেরা আদালতে গিয়েও নিষেধাজ্ঞা তুলতে পারেননি। এখন সরকার পরিবর্তনের পর তাঁরা আবার নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে চাপ প্রয়োগ শুরু করেছেন মর্মে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।
গত রোববার তেজগাঁওয়ে সওজের প্রধান কার্যালয়ে এসব ঠিকাদার বিক্ষোভ করেন। এরপর প্রধান প্রকৌশলী বরাবর দেওয়া এক স্মারকলিপিতে ১০ দফা দাবি পেশ করেন তাঁরা। এরমধ্যে একটি দাবী হচ্ছে “অযৌক্তিকভাবে অভিজ্ঞ ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে নেওয়া বেআইনিভাবে অযোগ্য ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে“।
জালিয়াতির মাধ্যমে এক যুগ ধরে একচেটিয়া কাজ পাওয়া এসব ঠিকাদার নিজেদের বঞ্চিত হিসেবে এখন উপস্থাপন করছেন। এমনকি যেসব কর্মকর্তা জালিয়াতি ধরে ব্যবস্থা নিয়েছেন, তাঁদের বিগত সরকারের লোক হিসেবে চিহ্নিত করে চাপে রাখার কৌশল নিচ্ছেন।
এ বিষয়ে সড়ক, রেল ও সেতু বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা ফাওজুল কবির জানিয়েছেন কোনো ঠিকাদার জালিয়াতি করে থাকলে তাঁকে নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই থাকতে হবে। চাপ দিয়ে কোনো লাভ হবে না মর্মে আশ্বস্থ্য করেছেন।
সওজ সূত্র জানিয়েছে, এই কালোতালিকাভুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোই সড়কের ৯০% এর বেশি কাজ নিয়ন্ত্রণ করত। যদিও সড়কে কাজ করা ঠিকাদারের মোট সংখ্যা প্রায় ১ হাজার ১০০।
ইতিমধ্যেই, পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো), স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি), গণপূর্ত অধিদপ্তর, বাংলাদেশ রেলওয়েসহ বিভিন্ন সংস্থা থেকে এরকম অনেক অপতৎপরতার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। জালিয়াতি করা সুযোগ সন্ধানী অনেক ঠিকাদারেরা এখন সৎ ও যোগ্য কর্মকর্তাদেরই লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছেন। এই অপতৎপরতায় দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা পার পেয়ে যেতে পারে বলে অনেকেই মনে করছেন।

এই লেখকের অন্যান্য লেখা

টেকসই ক্রয় (Sustainable Procurement) এর কিছু বাস্তব উদাহরণ
টেকসই ক্রয় (Sustainable Procurement) হচ্ছে এমন একটি ক্রয় এবং বিনিয়োগ প্রক্রিয়া যাতে সামগ্রিক ভাবে ব্যয়ের অর্থনৈতিক, পরিবেশগত, সামাজিক এবং প্রাতিষ্ঠানিক

Bangladesh: Public Procurement Reform Stuck Even After the Ordinance Issued!
The Government of the People’s Republic of Bangladesh issued the “Public Procurement (Amendment) Ordinance, 2025” on May 4, 2025. Its

অধ্যাদেশ জারীর পরও পাবলিক প্রকিউরমেন্ট সংস্কার আটকে আছে কেন !
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক গত ৪ঠা মে ২০২৫ ইং তারিখে “পাবলিক প্রকিউরমেন্ট (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫” জারী করা হয়েছে। এর মূল

একাধিক ঠিকাদারের দর সমান হলে Past Performance Matrix দিয়ে কিভাবে Ranking করবেন
পিপিআর-০৮ এর সর্বশেষ সংশোধনী অনুযায়ি একাধিক ঠিকাদারের মধ্যে দর সমান হলে কিভাবে সর্বনিম্ন দরদাতা নির্ধারন হবে তা নিয়ে অনেকেই দ্বিধাদ্বন্দ্বে