বাংলাদেশ থেকে ইলেকট্রনিক গভর্নমেন্ট প্রকিউরমেন্ট (ই-জিপি) সম্পর্কে ধারণা নিলেন মিসরের কর্মকর্তারা। ইলেকট্রনিক গভর্নমেন্ট প্রকিউরমেন্ট ব্যবস্থা চালু করতে চায় মিসর। তাই এ সম্পর্কে জানতে সম্প্রতি গত ৬-৭ মার্চ ২০২৩ ইং তারিখে ঢাকা ঘুরে গেল দেশটির সরকারি ক্রয় সম্পর্কিত একটি প্রতিনিধি দল।
সরকারি ক্রয়ে দক্ষতা, স্বচ্ছতা ও সুশাসন নিশ্চিত করতে সাম্প্রতিক সময়ে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে মিসর। দেশটি ইলেকট্রিনক গভর্নমেন্ট প্রকিউরমেন্ট চালুর প্রস্তুতি নিচ্ছে।
পাবলিক প্রকিউরমেন্ট সিস্টেমকে ডিজিটালাইজ এবং টেকসই করার জন্য বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা থেকে শেখা এবং পরামর্শ ও নির্দেশনা গ্রহন করা তাদের এবাবের ঢাকা সফরের উদ্দেশ্য।
মিসর থেকে আসা চার সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন বিশ্বব্যাংকের প্রকিউরমেন্ট স্পেশালিস্ট লিনা আব্বাসী। তিনি মূলত ইরাকের বাগদাদে কাজ করেন।
দু’দিনের বাংলাদেশ সফরে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট (সিপিটিইউ) প্রবর্তিত ই-জিপি সিস্টেম সম্পর্কে ধারণা নিয়েছে তারা। বেশ কয়েকটি লার্নিং সেশন এবং আলোচনায় অংশ নেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও পরামর্শকদের কাছ থেকে নানা পরামর্শও নিয়েছেন তাঁরা।
এছাড়াও গত ৬ মার্চ তারা এলজিইডি সদর দপ্তর পরিদর্শন করেন। সেখানে এলজিইডির ক্রয় কর্মকর্তাদের সাথে প্রতিনিধিদলের ই-জিপি বিষয়ে অভিজ্ঞতা বিনিময়ের জন্য একটি লার্নিং সেশন অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিনিধি দলের সদস্যরা তাদের দেশে ই-জিপি বাস্তবায়নের বিষয়ে নিজেদের ভাবনাগুলো তুলে ধরেন। উল্লেখ্য যে, ইলেকট্রনিক ক্রয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে শীর্ষস্থানীয় হিসেবে বিবেচিত। এক্ষেত্রে এলজিইডি সব থেকে এগিয়ে আছে। কয়েকবছর আগে থেকেই এলজিইডি তার ক্রয়ে শতভাগ ই-জিপি বাস্তবায়ন করেছে।
বাংলাদেশে ২০১১ সাল থেকে ই-জিপি চালু হয়েছে। সিপিটিইউ গত বেশ কয়েক বছর ধরে ই-জিপিতে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট প্রক্রিয়া এবং চুক্তি ব্যবস্থাপনা সিস্টেম (ই-সিএমএস), ই অডিট ম্যানুয়াল এবং টেন্ডারারদের ডাটাবেজ সম্পূর্ণ ডিজিটালাইজড করার জন্য অনেক নতুন বৈশিষ্ট্য যুক্ত করেছে। ই-জিপি সিস্টেমে ইতিমধ্যেই পণ্যের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র আহবান শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত ই-জিপির মাধ্যমে প্রায় ৬.৭০ লাখ দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে এবং এক লাখেরও বেশি দরপত্রদাতা এবং ১৪২৭টি ক্রয়কারী সংস্থা ই-জিপি সিস্টেমে নিবন্ধিত হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ইলেকট্রনিক গভর্নমেন্ট প্রকিউরমেন্ট সিস্টেম চালুর ক্ষেত্রে বিশ্বে অন্যতম পথিকৃৎ বাংলাদেশ। সরকারি ক্রয় ব্যবস্থার সংস্কার এবং ইলেকট্রনিক গভর্নমেন্ট প্রকিউরমেন্ট (ই-জিপি) সিস্টেম সম্পর্কে জানতে এ পর্যন্ত প্রায় ১৫টি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি দল বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ পরিদর্শন করেছেন।