Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

নেলসন ম্যান্ডেলার দেশে (৩য় এবং শেষ পর্ব)

Facebook
Twitter
LinkedIn

এই সেশনে আলোচনার বিষয় দক্ষিন আফ্রিকার সরকারি ক্রয়ের অন লাইন পোর্টাল gCommerce নিয়ে।

এইদিকে প্রেজেন্টেশন চলছে। কিন্তু মাথার মধ্যে আপার্টহাইট শব্দটা এখনও ঘোরাঘুরি করছিল। সব যুদ্ধের শুরুই হয় বৈষম্য থেকে … তা বর্ণ বৈষম্যই হোক বা অর্থনৈতিক বৈষম্য বা হোক না কোন অধিকারের বৈষম্য। প্রতিটি জাতি-ই কোন কোন যুদ্ধের মধ্য দিয়ে গড়ে উঠে। আমরা যেমন মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ পেয়েছি। দক্ষিন আফ্রিকার যুদ্ধটা অন্য কারও সাথে না। তাদের নিজেদের মধ্যেই মুক্তির জন্য যুদ্ধ। সব যুদ্ধের একই স্বরূপ – সব যুদ্ধেই ধ্বংস আছে, সব যুদ্ধেই ভাঙ্গা আছে, সব যুদ্ধেই মৃত্যূ আছে … সব যুদ্ধেই একজন নেতা আছে। যুদ্ধে একজনকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে হয়, সামনে থেকে অনুপ্রাণিত করতে হয়। আমরা পেয়েছি বঙ্গবন্ধু। তারা পেয়েছে নেলসন ম্যান্ডেলা।

নেলসন ম্যান্ডেলা

বোর্ডিং স্কুল শেষ করার পর তরুণ ম্যান্ডেলা ভর্তি হয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকায় কৃষ্ণাঙ্গদের একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় ফোর্ট হেয়ারে। সেখানে তিনি কর্তৃপক্ষের বর্ণবাদী আচরণের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেন। পরিণতি বহিষ্কার। এভাবে বর্ণবাদী আচরণের শিকার হওয়ার পর ১৯৪৪ সালে এএনসিতে যোগ দেন ম্যান্ডেলা। নিরলসভাবে কাজ করেন দলটির যুব শাখা প্রতিষ্ঠায়। সিসুলু, অলিভার টাম্বোর মতো তরুণ, বুদ্ধিদীপ্ত ও নিবেদিতপ্রাণ একনিষ্ঠকর্মীদের একত্র করে এএনসিকে পুরোপুরি আন্দোলনমুখী দলে পরিণত করেন তিনি।

পঞ্চাশের দশকের শুরুতে অসহযোগ আন্দোলন সংগঠিত করতে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিটি প্রান্তে ছুটে বেড়ান ম্যান্ডেলা। ১৯৫২ সালে কমিউনিস্ট দমন আইনে অভিযুক্ত করা হয় তাঁকে। তাঁর সভা-সমাবেশ করা এবং ছয় মাস পর্যন্ত জোহানেসবার্গের বাইরে যাওয়া নিষিদ্ধ করা হয়। এ পর্যায়ে ম্যান্ডেলা এএনসির নতুন সাংগঠনিক পরিকল্পনা তৈরির কাজ শুরু করেন। একই সময়ে দেশে কৃষ্ণাঙ্গ পরিচালিত প্রথম আইন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন।

১৯৫৫ সালে এএনসির ‘স্বাধীনতার সনদ’ প্রণয়নে মূল ভূমিকা ছিল ম্যান্ডেলার। সেই সনদে বলা হয়, ‘দক্ষিণ আফ্রিকা তাদেরই, যারা এ দেশের জনগণ। দক্ষিণ আফ্রিকা কৃষ্ণাঙ্গ-শ্বেতাঙ্গ সবার। সব জনগণের অংশগ্রহণের ভিত্তিতে গঠিত না হলে কোনো সরকার দেশের কর্তৃপক্ষ বলে দাবি করতে পারে না।’ পরের বছর ম্যান্ডেলাসহ ১৫৬ জন রাজনৈতিক নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের অধিকাংশই এএনসির নেতৃস্থানীয় নেতা। সবার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ আনা হয়। ১৯৬১ সালে সবাইকে মুক্তি দেওয়া হয়। এর দুই বছর পর বর্ণভিত্তিক আন্দোলন বন্ধে ‘পাস ল’জ আইন করা হলে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। এমন এক বিক্ষোভে গুলিতে ৬৯ জন নিহত হলে সরকার জরুরি অবস্থা জারি করে; সেই সঙ্গে এএনসিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। ম্যান্ডেলাসহ শতাধিক রাজনৈতিক নেতাকে গ্রেপ্তার করে বিনা বিচারে বন্দী রাখা হয়। এর পরই মূলত সশস্ত্র সংগ্রামের ঘোষণা দেন ম্যান্ডেলা। তিনি বলেন, যে সরকার নিরস্ত্র জনগণের ওপর নির্মম আক্রমণ চালায়, সে সরকারের সঙ্গে শান্তির কথা বলে বা অহিংস আন্দোলন করে এগুনো যাবে না।

মুক্তি পাওয়ার পর ম্যান্ডেলা পিটারমারিৎজবার্গে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে দেওয়া বক্তৃতায় বলেন, সরকার গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আলোচনা শুরু না করলে দেশজুড়ে ধর্মঘট করা হবে। কিন্তু শ্বেতাঙ্গ সরকার তার অবস্থানে অনড় থাকে। ধর্মঘটের নেতৃত্ব দিতে আত্মগোপনে চলে যান ম্যান্ডেলা। সিদ্ধান্ত হয় সশস্ত্র সংগ্রামের। এএনসির নবগঠিত সামরিক শাখার প্রধান নির্বাচিত হন ম্যান্ডেলা। সংগ্রামে সমর্থন পেতে দক্ষিণ আফ্রিকার বাইরেও যান তিনি। পরে ১৯৬২ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় আবার গ্রেপ্তার হন। পাঁচ বছর কারাদণ্ড হয় তাঁর। এর দুই বছর পর অন্তর্ঘাতমূলক কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে রিভোনিয়া ট্রায়ালে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয় তাঁকে। পরে পাঠানো হয় কুখ্যাত রোবেন দ্বীপের কারাগারে। ১৯৬৪ সালে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ পাওয়ার পর বিশ্বব্যাপী বর্ণবাদবিরোধী লড়াইয়ের প্রতীক হয়ে ওঠেন দক্ষিণ আফ্রিকার সদ্যপ্রয়াত অবিসংবাদিত নেতা নেলসন ম্যান্ডেলা।

রোবেন আইল্যান্ড ছিল এক কুখ্যাত কারাগার। বন্দী অবস্থায় এখানে আসার প্রথম দিনই তাঁকে বলা হয়েছিল জীবিত অবস্থায় তিনি আর কোনো দিনই এই দ্বীপ ছেড়ে যেতে পারবেন না। বড় ছেলে মারা গেলে তিন দিন বাদে খবর দেয়া হয়। অন্ত্যেষ্টিতে যাওয়ার অনুমতি পর্যন্ত পান নি। ম্যান্ডেলাকে ছমাসে একটা চিঠি লিখতে দেয়ার অনুমতি দেয়া হতো, তাও সেই চিঠি প্রাপকের হাতে পৌঁছাতো না। আবার পরিবার পরিজনের যে চিঠি তাঁর হাতে পৌঁছায় তা এমন ভাবে কাটাছেড়া করা হতো যা আর পাঠযোগ্য থাকতো না।

ম্যান্ডেলাকে লোকচক্ষুর আড়ালে রেখে তাকে শারীরিক,মানসিক আর রাজনৈতিকভাবে শেষ করে দিতে চেয়েছিল বর্ণবাদী সরকার। রাজনৈতিক লড়াই ম্যান্ডেলার কাছে ছিল আসলে বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই। তাই কারাগারেও তিনি প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছেন। কৃষ্ণাঙ্গ বন্দীদের ফুলপ্যান্ট দেয়া হতো না, সবচেয়ে নিকৃষ্ট মানের খাবার দেয়া হতো, অন্ধকার প্রকোষ্ঠে রাখা হতো। কারাগারে রাজনৈতিক বন্দীদের অভাব-অভিযোগ জানাতে ম্যান্ডেলা সব সময়ই এগিয়ে আসতেন। তিনি অনশন করে এর প্রতিবাদ করতেন। মাঝে মাঝে জেল কর্তৃপক্ষ মানতে বাধ্য হয়েছে সেসব দাবি।

অবশেষে ১৯৯০ সালে আলোচনায় রাজি হয় দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার। বর্ণবাদ-বিরোধী সংগ্রামের দায়ে ২৭ বছর শ্বেতাঙ্গ বর্ণবাদী শাসকদের হাত বন্দী থাকার পরে ১৯৯০ সালে ৭১ বছর বয়সে রোবেন আইল্যান্ড কারাগার থেকে মুক্ত হন ম্যান্ডেলা। তাঁর মোট ২৭টি বসন্ত কাটে কারান্তরালে, যার মধ্যে ১৮ বছরই কাটে এই নির্জন দ্বীপে। তাঁর মুক্তির মধ্য দিয়ে দক্ষিন আফ্রিকাতে শ্বেত-বর্ণবাদের অনানুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটে। ১৯৯৪ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম গণতান্ত্রিক নির্বাচনে জয়ী হয়ে প্রেসিডেন্ট হন ম্যান্ডেলা। তিনিই দেশটির প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট।

ম্যান্ডেলা প্রেসিডেন্ট হবার পর প্রথমেই রোবেন আইল্যান্ডে এসেছিলেন, কারারক্ষীদের মধ্যাহ্ন ভোজে আপ্যায়িত করেছিলেন। যে সব রক্ষী তাঁদের ওপর অত্যাচার চালিয়েছিল, নিমন্ত্রিতের তালিকা থেকে বাদ পড়েনি তারাও। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকেও প্রাক্তন জেলার, কর্মী, কয়েদিরা সবাই ছুটে এসেছিল সেই মিলনমেলায়। সেখান থেকেই ঘোষণা দেয়া হয়ে এই রোবেন আইল্যান্ড একটি মিউজিয়াম হিসেবে সংরক্ষিত হবে। এই প্রোগ্রামে আসার আগে সেই বিখ্যাত রোবেন আইল্যান্ড যাবার সুযোগ হয়েছিল। সেই গল্প অন্য কোথাও, অন্য কোনদিন।

এই বিচ্ছিন্ন দ্বীপ ম্যান্ডেলাকে বিশ্বের সঙ্গে একাত্ম হওয়ার সেতুবন্ধনের কাজ করেছিল। বিচ্ছিন্ন থেকেও জনস্রোতে থাকা যায় … জনস্রোতে থেকেও বিচ্ছিন্ন থাকা যায়। রোবেন আইল্যান্ড দ্বীপ হয়েও বিচ্ছিন্ন নয়। কারাগারের অন্ধকার থেকে বাইরে আসা একটি আলো এতোটাই উজ্জ্বল যে তাকে কারাগারের দেয়ালের পেছনে শত চেষ্টা করেও লুকানো যায়নি। মহাসাগরে ছড়িয়ে থাকা আরও বহু অজানা দ্বীপের মধ্যেই এই দ্বীপটাও হারিয়ে যেতে পারত। দক্ষিণ আফ্রিকা তথা বিশ্বের মুক্তিকামী আন্দোলনের অন্যতম পীঠস্থান এখন এই রোবেন আইল্যান্ড।

এই ম্যান্ডেলার গড়া দেশে আমরা বাংলাদেশ থেকে এসেছি প্রকিউরমেন্ট বিষয়ক অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য। বাস্তবে ফিরে আসি …  এখন প্রজেন্টেশনে আলোচনা চলছে দক্ষিন আফ্রিকার অন লাইন পোর্টাল gCommerce নিয়ে।

gCommerce কি ?

gCommerce (https://www.gcommerce.gov.za/) একটি সরকারী মালিকানাধীন, পরিচালিত একটি অনলাইন ক্রয় ব্যবস্থাপনার পোর্টাল। এই ওয়েবসাইটটি কেন্দ্রীয়ভাবে পরিচালিত হয়। এর মাধ্যমে ক্রয়কারি এবং সরবরাহকারি সবাই তাদের সরকারি ক্রয়ের প্রয়োজনীয় কার্যকলাপ সম্পন্ন করতে পারেন। এতে একেবারে ক্রয়ের উৎস খোঁজা থেকে শুরু করে বিল প্রদান পর্যন্ত ব্যবস্থা আছে (source-to-pay)। এই ওয়েবসাইটটির মাধ্যমে স্বংক্রিয় ভাবে Supply Chain Management-ও করা যায়।

gCommerce এর মাধ্যমে সরকারী ক্রয়ে compliance রক্ষিত হয় এবং তা সরকারী ক্রয় ব্যবস্থাকে সুষ্ঠু, ন্যায়সঙ্গত, স্বচ্ছ, প্রতিযোগিতামূলক ও স্বল্পব্যায়ী করেছে। এর সাথে প্রয়োজনে বিভিন্ন ইআরপি (ERP) সিস্টেম যেমন Oracle, SAP, ইত্যাদিরও সমন্বয় সম্ভব।

ক্রয় কার্যক্রমকে সহজ ও কেন্দ্রীভূত করার জন্য “National Treasury” এবং “জাতীয় স্বাস্থ্য অধিদফতর” এর সহযোগিতায় সরকারি সংস্থা “SITA” এর মাধ্যমে এই পোর্টালটি তৈরি করা হয়েছিল। রাষ্ট্রীয় তথ্য প্রযুক্তি সংস্থা “SITA” (State Information Technology Agency) এর সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে National Treasury এর অন্তর্গত চিফ প্রকিউরমেন্ট অফিসারের (OCPO) কার্যালয় প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সরকারের ক্রয় ব্যবস্থাকে আধুনিকীকরণের জন্য এই উদ্যোগ নিয়েছিল। এই সরকারি সংস্থা “SITA” পোর্টালটির প্রযুক্তিগত সহায়তা, রক্ষণাবেক্ষণ এবং হোস্টিং সমন্বয় করে থাকে। কিন্তু পোর্টালটি National Treasury এর অন্তর্গত চিফ প্রকিউরমেন্ট অফিসারের (OCPO) কার্যালয়ের মাধ্যমে পরিচালিত হয়।

২০১৫ সালের এপ্রিল থেকে এই পোর্টালের মাধ্যমে দক্ষিণ আফ্রিকার জাতীয়, প্রাদেশিক ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলির সরকারী দরপত্র বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়ে আসছে।

gCommerce এ মোট ১৬ টি মডিউল আছেঃ

• BuySite (Closed Community Online Purchasing Solution)
• Transversal Sourcing Panel
• Procurement Planning
• Supplier Management
• Contract Management
• Asset Management
• Item Master Management
• Catalogue Management
• Requisitions Management
• Purchase Order Management
• Quotations
• Bids
• eTender
• eAuctions
• Stores and Warehouse Management
• Reporting

তবে, gCommerce ৪টি প্লাটফর্মে কাজ করে, যেমনঃ

    • Planning & Demand Management: Supplier Management, Item Master, Procurement Plan, e-Tender Portal
    • Sourcing: Requisitions, Quotations, Bids, e-Auctions
    • Contracting: Purchase Orders, Contract Management, Catalogue, Buy Site
    • Add-On Modules: Stores and Warehouses, Asset Management

এই পোর্টালটি সরবরাহকারিদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়, কারণঃ

• একটি মাত্র পোর্টাল যার দ্বারা দরপত্র গ্রহন, জমা, ক্রয় করা ইত্যাদি কাজ করা যায়,
• নিরাপদ,
• নোটিফিকেশন সুবিধা,
• ব্যবহার বান্ধব,
• খরচ কম, ইত্যাদি

দক্ষিন আফ্রিকার সরকার তাদের নিজেদের জন্য সরকারী ক্রয়-কার্যক্রমে অধিকতর স্বচ্ছতা, transactions খরচ কমানো, প্রসেস সহজীকরণ এবং প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র নিশ্চিতের জন্য Item Master Management মডিউলটি তাদের সিস্টেম অন্তর্ভূক্ত করেছে। এই মডিউলটা আমার দৃষ্টি কেড়েছে।

Item Master Management মডিউল

এটা আসলে এক ধরনের price index এবং একক দাপ্তরিক প্রাক্কলিত ব্যয় প্রস্তুতের Tool। এই মডিউলে বিভিন্ন পণ্য, সেবা বা কার্যের বিবরণ, পরিমাপের একক, মাত্রা, শ্রেণিবিন্যাস, specification এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক তথ্য তালিকাভুক্ত করে সংরক্ষন করে। ফলে, সকল ক্রয়কারী ও সরবরাহকারি সমান সুবিধা পেয়ে থাকে। এতে বেসিক রেট এর তথ্য আপডেট এবং সংরক্ষনের কাজ করে থাকে। এর ফলে দাপ্তরিক প্রাক্কলন Standard হয় এবং তা সঠিক ভাবে হচ্ছে কিনা তা তদারকিও করা যায়।

ক্রয়কারী তার দরপত্র দলিল প্রস্তুতির সময় এই Item Master মডিউল ব্যবহার করে খুব সহজেই Bill Of Quantity প্রস্তুত করতে পারে। দরপত্রদাতারাও খুব সহজেই এই Bill Of Quantity বুঝতে পারে। এই মডিউলের সাথে অন্যান্য মডিউল যেমন Requisition, Quotation, Bid, Contract, Purchase, Warehouse, Asset Management, ইত্যাদি মডিউলগুলোর মধ্যে integration আছে। ফলে gCommerce সিস্টেমের ক্রয় প্রক্রিয়া ও পণ্য ব্যবস্থাপনার জন্য এটা দারুণ কার্যকরী সমাধান হিসেবে কাজ করছে। এর ফলে যে সুবিধাগুলো পাওয়া যাচ্ছে তা হুবুহু তাদের প্রেজেন্টেশন থেকে তুলে দিলামঃ

• Standardised and codified items
• No more capturing of items – items should already exists in the system
• Ability to report on spend per actual commodity
• Ability to track buying trends related to items procured

এই Item Master মডিউল নিয়ে কিছুক্ষন প্রশ্নউত্তর পর্ব চললো। ক্ষুধায় সবার পেট চো চো করছে। এর মধ্যে এতো জ্ঞানগর্ভ আলোচনা কার ভাল লাগে। দেখতে দেখতেই এই সেশন শেষ হল। এটাই ছিল আলোচনার শেষ পর্ব। আমাদের এই প্রোগ্রামের প্রোগ্রাম ডাইরেক্টর ছিল Sinno Maseko। তিনি বাংলাদেশি ডেলিগেটদের ধন্যবাদ জানিয়ে এই প্রশিক্ষন ও ওয়ার্কশপের পরিসমাপ্তি টানলেন।

এখন লাঞ্চ টাইম। চিফ প্রকিউরমেন্ট অফিস (OCPO) আমাদের সম্মানে লাঞ্চের ব্যবস্থা রেখেছে। উপস্থিন কর্মকর্তারাসহ আমরা সবাই একসাথেই লাঞ্চ করলাম।

লাঞ্চের ফাঁকে কথা হচ্ছিল চিফ প্রকিউরমেন্ট অফিস (OCPO) এর Chief Director Tumelo Ntlaba এর সাথে … দক্ষিণ আফ্রিকান কৃষ্ণাঙ্গ। চিফ প্রকিউরমেন্ট অফিস (OCPO) এর বেশিরভাগই মনে হল কালো বর্ণের প্রতিনিধিত্বকারী। বিষয়টা উল্লেখ করায় তিনি বললেন দক্ষিণ আফ্রিকান কৃষ্ণাঙ্গদের প্রতিনিধিত্ব ধীরে ধীরে সব জায়গায় বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে নতুন প্রজন্ম এভাবে প্রতিনিধিত্ব চায় না। তারা সম অধিকার সচেতন। নতুন প্রজন্মই দেশকে চূড়ান্ত মুক্তির স্বপ্ন দেখাচ্ছে।

দক্ষিণ আফ্রিকার নতুন প্রজন্ম

তারা দক্ষিণ আফ্রিকার তরুণ সমাজ৷ দক্ষিণ আফ্রিকার অধিবাসীদের এক চতুর্থাংশ ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সি তরুণ৷ অন্যান্য দেশের তরুণদের সঙ্গে তাদের বেশ পার্থক্য রয়েছে৷ তারা ‘বর্ন ফ্রি’ প্রজন্ম৷ ১৯৯০-এ দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রনায়ক নেলসন ম্যান্ডেলা হাত ধরে ভেঙে পড়ে জাতিভেদ প্রথা৷ অন্য এক দক্ষিণ আফ্রিকার সৃষ্টি হয়৷ এই মুক্ত সমাজে জন্ম হয় নতুন প্রজন্মের৷ যাদের বলা হয় ‘বর্ন ফ্রি’ প্রজন্ম৷ দক্ষিণ আফ্রিকাকে বর্ণবাদহীন দেশ হিসাবে চেনে তারা৷ নেলসন ম্যান্ডেলার পথ ধরে একটি মুক্ত ও বৈষম্যহীন সমাজ দেখতে চায় এই তরুণরা৷

Mandela_Quotes

দক্ষিণ আফ্রিকায় এখনও বৈষম্য রয়েছে৷ এতো শিগগির এটা শেষ হবে না৷ তবে এতে রাগ করে লাভ নেই৷ ইতিবাচক চিন্তা করতে শিখেছে ‘বর্ন ফ্রি’ প্রজন্ম৷ এই প্রজন্মের দুই তৃতীয়াংশ বেকার, সুপ্রশিক্ষণও নেই৷ কিন্তু ‘বর্ন ফ্রি’ প্রজন্ম আত্মপ্রত্যয়ী৷ কঠোর পরিশ্রম করলে লক্ষ্যে পৌঁছানো যাবে এবং বর্ণ-বিদ্বেষকে দূর করতে হলে আরো কিছুটা সময় প্রয়োজন বলে মনে করেন তারা৷

শুধুমাত্র Registered ব্যবহারকারিরাই “প্রকিউরমেন্টবিডি.কম” ওয়েবসাইটের সব ফিচার দেখতে ও পড়তে পারবেন। একবছরের জন্য Registration করা যাবে। Registration করতে ক্লিক করুন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই লেখকের অন্যান্য লেখা

সংবাদপত্রের পাতা থেকে

সরকারি কেনাকাটায় ১০% মার্জিন বাতিলের উদ্যোগ

কেনাকাটায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি প্রতিযোগীতা বাড়ানো, নতুন দরদাতাদের জন্য সুযোগ তৈরি করা ছাড়াও বিশ্বব্য‍াংকের চলমান বাজেট সহায়তা প্রাপ্তির শর্ত

Read More »
সূ-চর্চা

গেম থিওরির আদর্শ মডেল ও বিভিন্ন ধরণের গেমঃ প্রকিউরমেন্টের সাথে যার আছে নিবিড় সম্পর্ক

গেম থিওরিকে বাংলায় বলা যায় ক্রীড়াতত্ত্ব। গেম থিওরি কোথায় ব্যবহৃত হয় ? আসলে প্রশ্ন হবে কোথায় ব্যবহার হয় না। গেম

Read More »
ক্রয়কারি ফোরাম

পাবলিক প্রকিউরমেন্টে গেম থিউরি’র ভূমিকা ও প্রয়োগ

গেম থিওরি (Game Theory) কে বাংলায় বলা যায় ক্রীড়াতত্ত্ব। গেম থিওরি নিয়ে সহজ বাংলায় বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন। এই গেম

Read More »
Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors
গ্রাহক হোন

শুধুমাত্র Registered ব্যবহারকারিগন-ই সব ফিচার দেখতে ও পড়তে পারবেন। এক বছরের জন্য Registration করা যাবে। Registration করতে এখানে ক্লিক করুন

 

** সীমিত সময়ের জন্য Discount চলছে।

ফ্রী রেজিস্ট্রেশন

“প্রকিউরমেন্ট বিডি news”, “সমসাময়িক”, “সূ-চর্চা”, “প্রশিক্ষণ” অথবা “ঠিকাদারী ফোরাম” ইত্যাদি বিষয়ে কমপক্ষে ২টি নিজস্ব Post প্রেরণ করে এক বছরের জন্য Free রেজিষ্ট্রেশন করুণ। Post পাঠানোর জন্য “যোগাযোগ” পাতা ব্যবহার করুণ।

সূচীঃ PPR-08

Scroll to Top