ই-জিপি শুরু হবার পর ঠিকাদার, ক্রয়কারী সহ বিভিন্ন উপকারভোগী এবং ব্যবহারকারী সবাই এর সুফল ভোগ করছে। এ নিয়ে বিস্তুর রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। ই-জিপির কারনে যে সরকারি কেনা কাটায় গতি এসেছে এবং স্বচ্ছতা বৃদ্ধি পেয়েছে তা সবাই স্বীকার করছে। ২০১১ সালে ই-জিপি চালু হবার পর থেকে এর মধ্যে অনেক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। আগের চেয়ে অনেক বেশি ব্যবহার বান্ধব করা হয়েছে। সামনে আরও উন্নয়ন সাধন করা হবে। কিন্তু তারপরও অনেক ছোট ছোট সমস্যা রয়ে গেছে যা শুধু মাত্র কর্তৃপক্ষের ইচ্ছে ও সামান্য উদ্যোগের কারনে বাস্তবায়ন হচ্ছে না। আইন, বিধি, গাইডলাইন, ই-জিপি সিষ্টেমের মূল গঠন, ইত্যাদি পরিবর্তন না করেই তা করা যায়। ফলে ব্যবহারকারিরা সীমাহীন দূর্ভোগ পোহাচ্ছে। এ নিয়েই প্রকিউরমেন্ট বিডি’র ধারাবাহিক প্রতিবেদন।
ই-জিপি ব্যবহারে আপনার সমস্যার কথা আমাদের জানান। আমরা তা তুলে ধরার চেষ্টা করব।
পর্ব ২: ডিবারমেন্ট (Debarment) তালিকা ব্যবহার বান্ধব (User friendly) করা যায়
ই-জিপি সিস্টেমের হোম page এ ডিবারমেন্ট (Debarment) এর তালিকা দেখা যায়। ই-জিপির দরপত্রে কোন ঠিকাদার বা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ডিবার (Debar) হলে তা এখানে অটোমেটিক চলে আসে। এই তালিকার গূরুত্ব অনেক। এই তালিকা থেকেই পরবর্তীতে এই প্রতিষ্ঠান অন্যান্য দরপত্রের মূল্যায়নে Non-responsive হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। কাজেই এই তালিকার তথ্য ব্যবহার বান্ধব (user friendly) হওয়া প্রয়োজন। এই তালিকার সমস্যাগুলো নিচে আলোচনা করা হলঃ
১। ক্রয়কারী কর্তৃক ই-জিপি সিস্টেমে ডিবার করার সময় বাধ্যতামূলক ভাবে এর কারণ (Debarment Reason) সিলেক্ট করতে হয়। আর সাথে সাথে এই কারনের ব্যাক্ষা (Clarification) লিখতে হয়। এখন, ডিবারমেন্টের কারণটা (Debarment Reason) সুনির্দিষ্ট আর সাথে যে কারনের ব্যাক্ষা (Clarification) লিখতে হয় তা ক্রয়কারির মতো করে যা ইচ্ছে লিখা যায়। অনেকে শুধু ‘OK’, ‘Attached’, ‘see comments’, ইত্যাদিও এখানে লিখে থাকে। ফলে শুধু এই ব্যাক্ষা (Clarification) দেখে সব পরিষ্কার হয় না।
ই-জিপি সিস্টেমের হোম page এ ডিবারমেন্ট (Debarment) এর যে তালিকা দেখা যায় সেখানে “Reason” এর কলামে আসলে ক্রয়কারীর প্রদত্ত Clarification দেখা যায়। ফলে এর দ্বার প্রায়শঃই ডিবারমেন্টের বিষয় পরিষ্কার হয় না।
সুতরাং এখানে ই-জিপি সিস্টেমের হোম page এ ডিবারমেন্ট (Debarment) তালিকায় “Reason” এর কলামে ক্রয়কারীর প্রদত্ত “Debarment Reason” – ই দেখানো প্রয়োজন। এর সাথে ‘View Clarification’ নামে একটা লিঙ্কের মাধ্যমে Clarification দেখানো হলে তা অনেকটা পরিষ্কার হবে।
২। ই-জিপি সিস্টেমের হোম page এ ডিবারমেন্ট (Debarment) এর তালিকায় “Debar Period” কলামটাও অনেক সময় বিভ্রান্তিকর। এখানে আদালতের মামলার কারনে বা অন্য যে কোন কারনে এই ডিবারমেন্ট বাতিল বা রহিত করা হলে তা কমেন্টস আকারে লিখে রাখা হয়। সাধারন ব্যবহারকারিদের কাছে অনেকসময় বোধগম্য হয় না যে এই প্রাতিষ্ঠান এখন ডিবার অবস্থায় আছে কি না ?
এই কলামে শুধুমাত্র প্রযোজ্য ডিবারমেন্টের সময়-ই উল্লেখ করা প্রয়োজন। বাকি সব কমেন্টস নামে একটা কলাম যুক্ত করে সেখানে উল্লেখ করা যেতে পারে।
৩। উপরের ২ নং এ উল্লেখিত কারনে সিপিটিইউ কর্তৃক ডিবারমেন্টের সময় সংশোধন বা পরিবর্তন করা হলে তার একটা ডকুমেন্টেশন থাকা প্রয়োজন। অনেক সময় পূর্বের ডিবারমেন্টের সময় জানার প্রয়োজন হতে পারে।
সেক্ষেত্রে “Debar Period modification history” নামে একটা লিঙ্ক থাকা প্রয়োজন। কারন ক্রয়কারী, মূল্যায়ন কমিটি বা অনুমোদনকারি কর্তৃপক্ষ পরবর্তীতে এ নিয়ে বিভ্রান্তিতে পরতেই পারে।
৪। ই-জিপি তে কোন প্রতিষ্ঠানকে ডিবার করার পাশাপাশি অফ-লাইনেও তা কার্যকর হবে কি না ক্রয়কারির এরকম একটা অপশন থাকা প্রয়োজন। তাহলে ক্রয়কারিকে এক জায়গা থেকেই অনলাইন এবং অফলাইনের জন্য ডিবার করা সহজ হবে।
৫। সিপিটিইউ এর ওয়েবসাইটেও একটি ডিবারমেন্টের তালিকা আছে। যা মূলক অফ-লাইনের ডিবারের তালিকা। এখন ই-জিপির জন্য একটা আর অফ-লাইনের জন্য একটা তালিকা না করে একটা তালিকা হলে ভূলভ্রান্তি কম হতো।
৬। ক্রয়কারী কর্তৃক ডিবারমেন্ট প্রক্রিয়া শুরু করে তা HOPE কর্তৃক অনুমোদিত হবার পর সে অনুয়ায়ি ডিবার কার্যকর করতে অনেক সময় লাগে। ই-জিপির ক্ষেত্রে এই সময়টা যদি ডিবারমেন্ট লিষ্টে ‘pending’ নামে একটি তালিকা করে দেখানো যায় তাহলে তা মূল্যায়ন কমিটি বা অনুমোদনকারি জন্য এবং পরিশেষে ক্রয়কারীর জন্য ভাল হতো। কারণ মূল্যায়ন প্রতিবেদন অনুমোদন হয়ে যাওয়ার পর ডিবার হলে তা ক্রয়কারির আর কিছুই করার থাকে না। তখন NOA ইস্যূ না করে বসে থাকতে হয়।
উপরের সমস্যাগুলো চাইলেই সমাধান করা যায়। এখন কর্তৃপক্ষ নজর দিলেই হয়।
শুধুমাত্র Registered ব্যবহারকারি গন-ই সব ফিচার দেখতে ও পড়তে পারবেন। একবছরের জন্য Registration করা যাবে। Registration করতে ক্লিক করুন।