বাংলাদেশ ব্যাংক
বাংলাদেশের সব সরকারি, আধাসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকেই প্রথম ই-টেন্ডার পদ্ধতি বাস্তবায়িত হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব উন্নয়নকৃত ও সফলভাবে ব্যবহৃত ‘BB procurement Regulation, 2004’ অনুযায়ী ই-টেন্ডার সিস্টেম ২০১০ সাল থেকে নিরাপত্তার সঙ্গে ব্যাংকের সব ধরনের দরপত্র কার্যক্রম পরিচালনা করছে । দরপত্র প্রস্তুতি, দরদাতা নিবন্ধন ও অংশগ্রহণ, ইত্যাদে মডিউলে ভাগ করা হয়েছে। দরপত্র প্রস্তুতি মডিউলে ব্যবহারকারীরা খুব সহজেই বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকিউরমেন্ট রেগুলেশন অনুসারে টেন্ডার প্রস্তুত করে অনলাইনে জমা দিতে পারবেন।
দরদাতা নিবন্ধন ও অংশগ্রহণ মডিউলে অনলাইনে নিবন্ধনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এ ছাড়া দরদাতা কোন কোন ক্যাটাগরির টেন্ডারে অংশ নিতে ইচ্ছুক তার তালিকা তৈরি করা, নতুন কোনো টেন্ডার আহ্বান করা হলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ই-মেইলে নিবন্ধিত দরদাতাদের কাছে পৌঁছে যাবে। দরদাতারা অনলাইনে শিডিউল ফরমসহ অন্যান্য ডকুমেন্ট পূরণ করে দরপত্র দাখিল করতে পারবেন। এ ছাড়া দরপত্রবিষয়ক অন্য সব ডকুমেন্টের সফট কপি অনলাইনে দাখিল করা এবং প্রয়োজনে এসব ডকুমেন্ট সংশোধন করা যাবে। টেন্ডার খোলার দিন দরদাতাদের সশরীরে বাংলাদেশ ব্যাংকে হাজির না হয়ে অনলাইনে সব টেন্ডারের সার-সংক্ষেপ দেখার সুযোগ পাবেন। পরবর্তী সময়ে দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির মূল্যায়ন করা তুলনামূলকভাবে রিপোর্ট দেখার সুযোগ পাবেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ঃ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাদের নিজস্ব উন্নয়নকৃত ই-টেন্ডার সিস্টেম ব্যবহার করে থাকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি ইনস্টিটিউট এই সিস্টেমটি উন্নয়ন করেছে। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র দরপত্র প্রস্তুতি, দরদাতা নিবন্ধন ও অংশগ্রহণ, দরপত্র খোলা পর্যন্ত মডিউল সমূহে অংশ নেয়া যায়। অনলাইনে টেন্ডার খোলার পরবর্তী ৩ কার্যদিবসের মধ্যে জমাকৃত টেন্ডারের হার্ডকপি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জমা দিতে হবে।
প্রস্তাবিত ব্যবস্থায় আগ্রহী দরদাতাদের প্রথমে নিবন্ধন করতে হয়। নিবন্ধনের পর ঠিকাদারি সংস্থাটি সিস্টেমে একটি অ্যাকাউন্ট পাবে।এরপর নির্দিষ্ট টেন্ডার কেনার জন্য সিস্টেম থেকে একটি ই-টোকেন সংগ্রহ করে প্রাইম ব্যাংকের যেকোনো শাখায় শিডিউলের মূল্য পরিশোধ করলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সেই সংস্থাকে অনলাইনে দরপত্র ও সংশ্লিস্ট কাগজপত্র (টেন্ডার ডকুমেন্ট) প্রেরণ করে।
দরপত্র ক্রয়ের পর একই সিস্টেমে আর্নেস্ট মানি জমা দেওয়ার জন্য ই-টোকেন দেওয়া হয়, যা প্রাইম ব্যাংকে জমা দেওয়া যাবে। এরপর দরদাতা তাঁর তৈরি করা টেন্ডারটিকে একটি বিশেষ নিয়মে এনক্রিপটেড করবেন। এনক্রিপটেড করার সময় দরদাতা তাঁর ইচ্ছেমতো শব্দবন্ধ (কি) ব্যবহার করবেন এবং সিস্টেমের মাধ্যমে তা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্ভারে জমা দেবেন। যেহেতু টেন্ডারটি এনক্রিপটেড, কাজেই সিস্টেমের কেউ এই দলিলটি পড়তে পারবেন না। এরপর টেন্ডার খোলার দিন দরদাতা তাঁর শব্দবন্ধটি (কি) বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে দিলে তখন সেই দরপত্রটি খোলা যাবে। দরদাতা ইচ্ছে করলে নিজে উপস্থিত না হয়ে এসএমএসের মাধ্যমে তাঁর কি-টি প্রেরণ করতে পারবেন।
বিভিন্ন সরকারী দপ্তরে ই-জিপি এর ব্যবহার
e-GP বা ই-গভর্নমেন্ট প্রকিউরমেন্ট (ই-জিপি) বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় ‘পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রিফর্ম প্রজেক্ট-২’ এর আওতায় বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সেণ্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট (CPTU) কর্তৃক তৈরী, গৃহীত ও পরিচালিত যা বিভিন্ন সরকারী ক্রয়কারী সংস্থা এবং ক্রয়কারী – সমূহের ক্রয়কার্য সম্পাদনের জন্য একটি অনলাইন প্লাটফর্ম বা পোর্টাল (http://eprocure.gov.bd) । গত ০২ জুন ২০১১ তারিখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ইলেকট্রনিক গভর্ণমেণ্ট প্রকিউরমেণ্ট (ই-জিপি) পোর্টালটি উদ্বোধন করা হয়েছে। বর্তমানে (৩০ মে ২০১৬ইং অনুযায়ী) প্রায় ২৫৩ টি সরকারী সংস্থা/অফিসের আওতায় ২৪৪১ সংখ্যক ক্রয়কারী দপ্তরে ই-জিপি মাধ্যম ব্যবহার করে দরপত্র আহবান ও চুক্তি স্বাক্ষর করা হচ্ছে।
ই-জিপি সংক্রান্ত Video Clip