বাংলাদেশে বেশিরভাগ প্রকল্পের – বিশেষত অবকাঠামো প্রকল্পগুলো প্রকৃত বাস্তবায়নের সময়কালের মধ্যে ঠিকমতো বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না, বা সেগুলো ধীরগতিতে এগোচ্ছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে দুর্বল প্রস্তুতির অন্যতম কারণ হচ্ছে– ক্রয় প্রক্রিয়া বা দরপত্র আহবানে বিলম্ব। গত ৬ – ৭ মার্চ ঢাকায় বাংলাদেশে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)-র অর্থায়নকৃত প্রকল্পগুলোর এক ত্রিপক্ষীয় পোর্টফোলিও পর্যালোচনা সভায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
উন্নয়ন প্রকল্পের ধীর গতির ফলে অর্থ ছাড় না হওয়া এবং চুক্তি না হওয়ার দিক থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)-র যথাক্রমে ৫৯৮ কোটি ডলার এবং ৩১৫ কোটি ডলার দিতে পারেনি। এই পরিস্থিতি প্রকল্প বাস্তবায়নে অদক্ষতাই তুলে ধরে। উন্নয়ন কাজের প্রত্যাশিত ফলাফল, দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও প্রকল্পের ওপর জনসাধারণের আস্থার ওপর যা নানান রকম বিরূপ প্রভাব ফেলছে বলে প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়েছে। বিশেষত অবকাঠামো প্রকল্পগুলো প্রকৃত বাস্তবায়নের সময়কালের মধ্যে ঠিকমতো বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না, বা সেগুলো ধীরগতিতে এগোচ্ছে।
সংস্থাটির একটি নথি অনুসারে, ২০২৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশকে দেওয়া মোট প্রতিশ্রুত ঋণের মধ্যে ছাড় না হওয়া ঋণের স্থিতি বেড়ে ৪৪ দশমিক ৯ শতাংশ হয়েছে। ২০২২ সালের ১০ মার্চ পর্যন্ত যা ছিল ৪০ দশমিক ৩ শতাংশ বা ৪৭৯ কোটি ডলার।
একইভাবে, ২০২৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মোট অর্থায়নের পোর্টফলিও’র মধ্যে ২৩ দশমিক ৭ শতাংশের ক্রয়চুক্তি হয়নি। কারণ গত এক বছরে বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলো দরপত্র প্রক্রিয়ায় সামান্যই অগ্রগতি করেছে। ২০২২ সালের ১০ মার্চ পর্যন্ত ক্রয় চুক্তিহীন ঋণের স্থিতি ছিল মোট পোর্টফোলিও’র ২০ শতাংশ।
বেশিরভাগ প্রকল্পেরই বাস্তবায়ন শুরুর চার বছর পরে প্রকল্পের ক্রয়চুক্তির মাত্র ৩৩ দশমিক ৮ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। অবকাঠামো খাতের প্রকল্পগুলো তাদের মোট ঋণের মাত্র ২৯ দশমিক ৬ শতাংশের জন্য ক্রয়চুক্তি সম্পন্ন করেছে। ঋণ ছাড়ের হিসাবে, মোট ঋণের মাত্র ২২ শতাংশ ছাড় হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রথম চার বছরে অবকাঠামো খাত তাঁদের মোট ঋণ প্রতিশ্রুতির মাত্র ১৪ দশমিক ৬ শতাংশ ছাড় করাতে পেরেছে।