সমুদ্রে তেল–গ্যাস অনুসন্ধানে প্রতিযোগিতামূলক দরপত্রঃ নতুন সম্ভাবনা

বঙ্গোপসাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে ঠিকাদার নিয়োগ দিতে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করেছে বাংলাদেশ তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা)। এতে অংশ নিতে বিশ্বের শীর্ষ পর্যায়ের একাধিক কোম্পানি ইতিমধ্যে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এছাড়াও, ৫৫টি কোম্পানিকে আলাদা ভাবে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে পেট্রোবাংলা।
আগামী ৯ সেপ্টেম্বর বেলা ১টার মধ্যে আগ্রহী তেল-গ্যাস কোম্পানিকে দরপত্র জমা দিতে হবে।
সমুদ্রে তেল–গ্যাস অনুসন্ধানে আন্তর্জাতিক দরপত্রের বৈশিষ্টগুলো কি কি দেখতে ক্লিক করুন।
২০১২ সালে ভারতের সঙ্গে ও ২০১৪ সালে মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা–বিরোধ নিষ্পত্তি হয়। সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে সর্বশেষ দরপত্র ডাকা হয়েছিল ২০১৬ সালে। এরপর ২০১৯ সালে নতুন উৎপাদন অংশীদারি চুক্তি (পিএসসি) করা হলেও দরপত্র ডাকা হয়নি। গত বছরের জুলাইয়ে নতুন পিএসসি চূড়ান্ত অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা। বিদেশি কোম্পানির আগ্রহ বাড়াতে এতে আগের চেয়ে সুবিধা বাড়ানো হয়েছে।
এখন গভীর সমুদ্রে ১৫টি ও অগভীর সমুদ্রে ১১টি ব্লক আছে। এর মধ্যে ২০১০ সালে গভীর সমুদ্রে দুটি ব্লকে কাজ নেয় কনোকোফিলিপস। তারা দ্বিমাত্রিক জরিপ চালালেও পরে গ্যাসের দাম বাড়ানোর দাবি পূরণ না হওয়ায় কাজ ছেড়ে চলে যায়। এ ছাড়া একইভাবে চুক্তির পর কাজ ছেড়ে চলে যায় অস্ট্রেলিয়ার স্যান্তোস ও দক্ষিণ কোরিয়ার পস্কো দাইয়ু। এখন একমাত্র কোম্পানি হিসেবে অগভীর সমুদ্রের দুটি ব্লকে অনুসন্ধান চালাচ্ছে ভারতের কোম্পানি ওএনজিসি। এ দুটি বাদ দিয়ে বাকি ২৪টি ব্লকে দরপত্র আহ্বান করা হচ্ছে।
পেট্রোবাংলা সূত্র বলছে, সমুদ্রে গ্যাস প্রাপ্তির প্রাথমিক সম্ভাবনা যাচাই করতে জার্মানির কোম্পানি স্লামবার্জার বহুমাত্রিক জরিপ চালিয়েছে। এ জরিপের তথ্য কিনে নিতে পারবে দরপত্রে আগ্রহী যেকোনো কোম্পানি। এ ছাড়া কনোকোফিলিপসের পরিচালিত দ্বিমাত্রিক জরিপের তথ্যও আছে পেট্রোবাংলার কাছে। এতেও গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা দেখা গেছে বঙ্গোপসাগরে। যদিও অনুসন্ধান কূপ খনন ছাড়া উত্তোলনযোগ্য গ্যাসের মজুত আবিষ্কার করা যায় না। এখন পর্যন্ত কোনো কূপ খনন করা হয়নি সাগরে। তবে একই সমুদ্রে গ্যাস পেয়েছে প্রতিবেশী দুই রাষ্ট্র ভারত ও মিয়ানমার।
১৯৭৪ সালে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে প্রথম দরপত্র আহ্বান করা হয়। এতে ছয়টি বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে পিএসসি সই হয়। তবে খন্দকার মোশতাক সরকার ক্ষমতায় আসার পর সব কোম্পানি দেশ ছেড়ে চলে যায়। এরপর ১৯৮৮ সালে দরপত্র ডাকা হলেও কেউ অংশ নেয়নি। পিএসসি-১৯৯৪–এর আওতায় অস্ট্রেলিয়ার স্যান্তোসের সঙ্গে চুক্তি হয়। তারা চট্টগ্রামের সাঙ্গু গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার করে। ১৯৯৮ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত এখান থেকে গ্যাস উৎপাদন করা হয়। বাণিজ্যিকভাবে উত্তোলনযোগ্য মজুত অবশিষ্ট না থাকায় এরপর এটি বন্ধ হয়ে যায়।
তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে ঠিকাদার নিয়োগ প্রক্রিয়া আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে আসায় এটা প্রতিযোগিতামূলক হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

এই লেখকের অন্যান্য লেখা

“মাসিক ভিত্তিতে গাড়ী ভাড়া” দরপত্রে কোন STD ব্যবহার করবেন ?
সরকারি অফিসগুলোতে অফিসের জন্য মাসিক ভিত্তিতে গাড়ি ভাড়া এখন অনেক জনপ্রিয় হয়ে গিয়েছে। দরপত্র আহবানের মাধ্যমে অনেক ক্ষেত্রেই এই গাড়ি

২০২৪ সালে আন্তর্জাতিক ক্রয় সংক্রান্ত উল্লেখযোগ্য ঘটনাসমূহ
২০২৪ সালে প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদাররা (trading partners) নতুন ক্রয় বাজার উন্মুক্ত করার চেয়ে তাদের অভ্যন্তরীণ ক্রয় স্বার্থ রক্ষার দিকে বেশি

Supply Chain VS Procurement
Supply Chain Management (SCM) and Procurement are two closely related but distinct functions in business operations. While procurement focuses on

ট্রাম্পের শুল্ক আরোপ: সরকারি ক্রয় এবং বিশ্ব বানিজ্য
শুল্ক আরোপ (Tariff Imposition) এবং সরকারি ক্রয় (Public Procurement) অর্থনীতির দুটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র, যা একে অপরকে সরাসরি প্রভাবিত করে। শুল্ক