পারমাণবিক দূর্ঘটনায় বিমার দায় কার

রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ব্যাচের পারমাণবিক জ্বালানি (ইউরেনিয়াম) রাশিয়া থেকে আসছে আগামী অক্টোবর। ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে এ জ্বালানি নেওয়া হবে পাবনার ঈশ্বরদীতে প্রকল্প এলাকায়। তবে জ্বালানি পরিবহনের সময় কোনো ঘটনা ঘটলে এর আর্থিক দায় কে নেবে, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
আইন অনুযায়ী, পারমাণবিক ঘটনাজনিত (Incident) ক্ষতির আর্থিক দায় মেটাতে বিমার ব্যবস্থা করবে প্রকল্পের অপারেটর ‘নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (এনপিসিবিএল)’। তবে পরমাণু শক্তি কমিশনের অধীনে থাকা এ কোম্পানি বলছে, বিদ্যুৎকেন্দ্রটি এখনো উৎপাদনে আসেনি। তাদের আয় শুরু হয়নি। প্রতিবছর প্রিমিয়ামের টাকা দেওয়ার মতো পরিস্থিতি হয়নি। সার্বিক দিক বিবেচনায় পারমাণবিক ঘটনাজনিত বিমা করার মতো অবস্থায় তারা নেই। সরকার এই দায়িত্ব নিতে পারে। সরকারের কাছে সেই আর্থিক নিশ্চয়তাপত্র চেয়েছে পরমাণু শক্তি কমিশন।
বিশেষজ্ঞদের মতে বর্তমানে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মতো একটি প্রযুক্তিঘন স্থাপনার বিমা করার অভিজ্ঞতা ও সক্ষমতা বাংলাদেশের সরকারি বা বেসরকারি বিমা প্রতিষ্ঠানের নেই। রূপপুরের মতো এত বড় প্রকল্পে পারমাণবিক ঘটনাজনিত ক্ষতির বিমা করার অভিজ্ঞতা দেশের কারও মধ্যে দেখা যায় না। এ ক্ষেত্রে অন্য কোনো দেশের সহযোগিতা নিতে হবে।
যেকোনো পারমাণবিক ঘটনাজনিত ক্ষতির ক্ষেত্রে রাষ্ট্র দায়িত্ব নিতে পারে। তবে বিমা করতে হলে দেশীয় কোনো বিমা কোম্পানিতেই করতে হবে। বিমাকরণের ক্ষেত্রে সরকারের মালিকানাধীন বিমা প্রতিষ্ঠানে বিমা করা যৌক্তিক হবে।
অনেকে মনে করেন, দেশে এত বড় বিমা করার মতো অবস্থা কারও নেই। কিন্তু সাধারণ বিমা করপোরেশন বলছে, এই বিমা করার সক্ষমতা তাদের আছে। রূপপুরের মতো বড় প্রকল্পে বিমা করার মাধ্যমে দেশের বিমা খাত সম্পর্কে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন আসবে। এতে মানুষের আস্থা বাড়বে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের নির্মাণকালীন বিমা তাঁরাই করেছেন। বিশ্বের বড় বড় বিমা কোম্পানির সঙ্গে তাঁদের পুনর্বিমা করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের নির্মাণকালীন ঝুঁকির বিমাও সাধারণ বিমা করপোরেশনে করেছে প্রকল্প অপারেটর এনপিসিবিএল।

এই লেখকের অন্যান্য লেখা

টেকসই ক্রয় (Sustainable Procurement) এর কিছু বাস্তব উদাহরণ
টেকসই ক্রয় (Sustainable Procurement) হচ্ছে এমন একটি ক্রয় এবং বিনিয়োগ প্রক্রিয়া যাতে সামগ্রিক ভাবে ব্যয়ের অর্থনৈতিক, পরিবেশগত, সামাজিক এবং প্রাতিষ্ঠানিক

Bangladesh: Public Procurement Reform Stuck Even After the Ordinance Issued!
The Government of the People’s Republic of Bangladesh issued the “Public Procurement (Amendment) Ordinance, 2025” on May 4, 2025. Its

অধ্যাদেশ জারীর পরও পাবলিক প্রকিউরমেন্ট সংস্কার আটকে আছে কেন !
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক গত ৪ঠা মে ২০২৫ ইং তারিখে “পাবলিক প্রকিউরমেন্ট (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫” জারী করা হয়েছে। এর মূল

একাধিক ঠিকাদারের দর সমান হলে Past Performance Matrix দিয়ে কিভাবে Ranking করবেন
পিপিআর-০৮ এর সর্বশেষ সংশোধনী অনুযায়ি একাধিক ঠিকাদারের মধ্যে দর সমান হলে কিভাবে সর্বনিম্ন দরদাতা নির্ধারন হবে তা নিয়ে অনেকেই দ্বিধাদ্বন্দ্বে